সূরা মারইয়াম ডাউনলোড, নামাজের শেষে সুরা মারইয়াম পাঠের গুরুত্ব, ৫ ওয়াক্ত সালাতে মারইয়াম পড়ার গুরুত্ব,৫ ওয়াক্ত নামাজে মারইয়াম আমল ও ফজিলত, ৫০৫ বার সূরা মারইয়াম, ৯৯৯ বার সূরা মারইয়াম,

সূরা মারইয়াম ডাউনলোড, নামাজের শেষে সুরা মারইয়াম পাঠের গুরুত্ব, ৫ ওয়াক্ত সালাতে মারইয়াম পড়ার গুরুত্ব,৫ ওয়াক্ত নামাজে মারইয়াম আমল ও ফজিলত, ৫০৫ বার সূরা মারইয়াম, ৯৯৯ বার সূরা মারইয়াম,

 ১৯ . মারইয়াম - ( مريم ) | মারইয়াম (ঈসা আঃ এর মা)

মাক্কী, মোট আয়াতঃ ৯৮


بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ


كهيعص


কাফ হা-ইয়া-‘আঈূন সোয়াদ ।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

কাফ-হা-ইয়া-‘আইন-সাদ। ১


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

কাফ-হা-ইয়া-আইন-সাদ


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

কাফ্-হা-ইয়া-আইন-সোয়াদ ;


তাফসীরঃ

১. সূরা বাকারার শুরুতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন সূরার শুরুতে যে বিচ্ছিন্ন হরফসমূহ আছে, যাকে ‘আল-হুরূফুল মুকাত্তাআত’ বলা হয়, তার প্রকৃত অর্থ আল্লাহ তাআলা ছাড়া কেউ জানে না। সুতরাং অহেতুক এর অর্থ সন্ধানের পেছনে না পড়ে এই ঈমান রাখাই যথেষ্ট যে, এটা আল্লাহর কালামের অংশ এবং এর প্রকৃত অর্থ আল্লাহ তাআলাই জানেন।



ذِكْرُ رَحْمَتِ رَبِّكَ عَبْدَهُ زَكَرِيَّا


যিকরু রাহমাতি রাব্বিকা ‘আবদাহূঝাকারিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এটা সেই রহমতের বর্ণনা, যা তোমার প্রতিপালক নিজ বান্দা যাকারিয়ার প্রতি করেছিলেন।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এটা আপনার পালনকর্তার অনুগ্রহের বিবরণ তাঁর বান্দা যাকারিয়ার প্রতি।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এটা তোমার প্রতিপালকের অনুগ্রহের বিবরণ তাঁর বান্দা যাকারিয়্যার প্রতি,



إِذْ نَادَىٰ رَبَّهُ نِدَاءً خَفِيًّا


ইযনা-দা-রাব্বাহূনিদাআন খাফিইইয়া-।

আরো পড়ুন :-

স্মরণ শক্তি বৃদ্ধির দোয়া,মেধা বৃদ্ধির দোয়া,স্মৃতি শক্তি বাড়ানোর দোয়া!নামাজের পর ২১ বাড় পড়ুন

গর্ভের সন্তান কখন নষ্ট করা যাবে?,কতদিনের বাচ্চা নষ্ট করলে গুনাহ হবে না?, বাচ্চা নষ্ট করা জায়েজ আছে?, 

দোয়াটি পড়লে সাথে সাথে রাগ কমে যায়, রাগ কমানোর দোয়া,শিশুদের রাগ কমানোর আমল

(ads1)

(getButton) #text=(আল কোরআন বাংলা অনুবাদ সহ এক সাথে ) #icon=(demo) #size=(2)

অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

যখন সে নিজ প্রতিপালককে ডেকেছিল চুপিসারে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যখন সে তাঁর পালনকর্তাকে আহবান করেছিল নিভৃতে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যখন সে তার প্রতিপালককে আহ্বান করেছিল নিভৃতে,



قَالَ رَبِّ إِنِّي وَهَنَ الْعَظْمُ مِنِّي وَاشْتَعَلَ الرَّأْسُ شَيْبًا وَلَمْ أَكُن بِدُعَائِكَ رَبِّ شَقِيًّا


কা-লা রাব্বি ইন্নী ওয়াহানাল ‘আজমুমিন্নী ওয়াশতা‘আলার রা’ছুশাইবাওঁ ওয়ালাম আকুম বিদু‘আইকা রাব্বি শাকিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

সে বলেছিল, হে আমার প্রতিপালক! আমার অস্থিরাজি পর্যন্ত জীর্ণ হয়ে গেছে, মাথা বার্ধক্যজনিত শুভ্রতায় উজ্জ্বলিত হয়ে উঠেছে এবং হে আমার প্রতিপালক! আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করে কখনও ব্যর্থকাম হইনি।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

সে বললঃ হে আমার পালনকর্তা আমার অস্থি বয়স-ভারাবনত হয়েছে; বার্ধক্যে মস্তক সুশুভ্র হয়েছে; হে আমার পালনকর্তা! আপনাকে ডেকে আমি কখনও বিফলমনোরথ হইনি।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

সে বলেছিল, ‘হে আমার রব! আমার অস্থি দুর্বল হয়েছে, বার্ধক্যে আমার মস্তক শুভ্রোজ্জ্বল হয়েছে; হে আমার প্রতিপালক! তোমাকে আহ্বান করে আমি কখনও ব্যর্থকাম হই নাই।



وَإِنِّي خِفْتُ الْمَوَالِيَ مِن وَرَائِي وَكَانَتِ امْرَأَتِي عَاقِرًا فَهَبْ لِي مِن لَّدُنكَ وَلِيًّا


ওয়া ইন্নী খিফতুল মাওয়া-লিয়া মিওঁ ওয়ারাঈওয়াকা-নাতিম রাআতী ‘আ-কিরান ফাহাব লী মিল্লা দুনকা ওয়ালিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আমি আমার পর আমার চাচাত ভাইদের ব্যাপারে শঙ্কা বোধ করছি ২ এবং আমার স্ত্রী বন্ধ্যা। সুতরাং আপনি আপনার নিকট থেকে আমাকে এমন এক উত্তরাধিকারী দান করুন


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি ভয় করি আমার পর আমার স্বগোত্রকে এবং আমার স্ত্রী বন্ধ্যা; কাজেই আপনি নিজের পক্ষ থেকে আমাকে এক জন কর্তব্য পালনকারী দান করুন।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘আমি আশংকা করি আমার পর আমার স্বগোত্রীয়দের সম্পর্কে; আমার স্ত্রী বন্ধ্যা। সুতরাং তুমি তোমার নিকট হতে আমাকে দান কর উত্তরাধিকারী,


তাফসীরঃ

২. অর্থাৎ, আমার নিজের তো কোন সন্তান নেই আবার আমার চাচাত ভাইয়েরাও জ্ঞান-গরিমা ও তাকওয়া-পরহেজগারীতে এ পর্যায়ের নয় যে, তারা আমার মিশন অব্যাহত রাখবে। তারা দীনের খেদমত কতটুকু আঞ্জাম দিতে পারবে সে ব্যাপারে আমার যথেষ্ট ভয়। সুতরাং আমার নবুওয়াতী ইলমের উত্তরাধিকারী হতে পারে এমন এক পুত্র সন্তান আমাকে দান করুন। হযরত যাকারিয়া আলাইহিস সালামের এ দু‘আ এবং আল্লাহ তাআলার দরবারে তা গৃহীত হওয়া এবং সেমতে তাঁকে পুত্র সন্তান দান করা, এ সবই পূর্বে সূরা আলে ইমরানে (৩ : ৩৮-৪০) বর্ণিত হয়েছে এবং টীকায় প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়েছে। সুতরাং টীকাসহ সেই সকল আয়াত দেখে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।



يَرِثُنِي وَيَرِثُ مِنْ آلِ يَعْقُوبَ ۖ وَاجْعَلْهُ رَبِّ رَضِيًّا


ইয়ারিছু নী ওয়া ইয়ারিছুমিন আ-লি ইয়া‘কূবা ওয়াজ‘আলহু রাব্বি রাদিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

যে আমারও উত্তরাধিকারী হবে এবং ইয়াকুব (আলাইহিস সালাম)-এর উত্তরাধিকারও লাভ করবে ৩ এবং হে আমার প্রতিপালক! তাকে এমন বানান, যে (আপনার নিজেরও) সন্তুষ্টিপ্রাপ্ত হবে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

সে আমার স্থলাভিষিক্ত হবে ইয়াকুব বংশের এবং হে আমার পালনকর্তা, তাকে করুন সন্তোষজনক।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘যে আমার উত্তরাধিকারিত্ব করবে এবং উত্তরাধিকারিত্ব করবে ইয়া‘ক‚বের বংশের এবং হে আমার প্রতিপালক! তাকে কর সন্তোষভাজন’।


তাফসীরঃ

৩. আয়াতের শব্দাবলী দ্বারা এটা স্পষ্ট যে, হযরত যাকারিয়া আলাইহিস সালাম বৈষয়িক উত্তরাধিকার বোঝাতে চাননি। বরং তিনি নবুওয়াতী ইলমের উত্তরাধিকার লাভ করার কথা বুঝিয়েছিলেন। কেননা হযরত ইয়াকুব আলাইহিস সালামের আওলাদ থেকে বৈষয়িক উত্তরাধিকার লাভের কোন প্রশ্নই আসে না। সুতরাং প্রসিদ্ধ হাদীসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে ইরশাদ করেছেন, ‘নবীগণের রেখে যাওয়ার সম্পদ তাদের ওয়ারিশদের মধ্যে বণ্টন হয় না”, হযরত যাকারিয়া আলাইহিস সালামের দু‘আ তার সাথে সাংঘর্ষিক নয়।



يَا زَكَرِيَّا إِنَّا نُبَشِّرُكَ بِغُلَامٍ اسْمُهُ يَحْيَىٰ لَمْ نَجْعَل لَّهُ مِن قَبْلُ سَمِيًّا


ইয়া-ঝাকারিইইয়াইন্না-নুবাশশিরুকা বিগুলা-মি নিছমুহূইয়াহইয়া- লাম নাজ‘আল লাহূমিন কাবলুছামিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

(উত্তর আসল) হে যাকারিয়া! আমি তোমাকে একটি ছেলের সুসংবাদ দিচ্ছি, তার নাম ইয়াহইয়া! আমি আগে তার সমনামধারী কাউকে সৃষ্টি করিনি।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

হে যাকারিয়া, আমি তোমাকে এক পুত্রের সুসংবাদ দিচ্ছি, তার নাম হবে ইয়াহইয়া। ইতিপূর্বে এই নামে আমি কারও নাম করণ করিনি।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তিনি বললেন, ‘ হে যাকারিয়্যা! আমি তোমাকে এক পুত্রের সুসংবাদ দিচ্ছি, তার নাম হবে ইয়াহ্ইয়া; এই নামে পূর্বে আমি কারও নামকরণ করি নাই।’



قَالَ رَبِّ أَنَّىٰ يَكُونُ لِي غُلَامٌ وَكَانَتِ امْرَأَتِي عَاقِرًا وَقَدْ بَلَغْتُ مِنَ الْكِبَرِ عِتِيًّا


কা-লা রাব্বি আন্না-ইয়াকূনুলী গুলা-মুওঁ ওয়াকা-নাতিমরাআতী ‘আ-কিরাওঁ ওয়া কাদ বালাগতুমিনাল কিবারি ‘ইতিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

যাকারিয়া বলল, হে আমার প্রতিপালক! আমার কিভাবে পুত্র-সন্তান জন্ম নেবে, যখন আমার স্ত্রী বন্ধ্যা এবং আমি এমন বার্ধক্যে উপনীত হয়েছি যে, আমার দেহ শুকিয়ে গেছে? ৪


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

সে বললঃ হে আমার পালনকর্তা কেমন করে আমার পুত্র হবে অথচ আমার স্ত্রী যে বন্ধ্যা, আর আমিও যে বার্ধক্যের শেষ প্রান্তে উপনীত।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

সে বলল, ‘হে আমার প্রতিপালক! কেমন করে আমার পুত্র হবে যখন আমার স্ত্রী বন্ধ্যা ও আমি বার্ধক্যের শেষ সীমায় উপনীত।’


তাফসীরঃ

৪. হযরত যাকারিয়া আলাইহিস সালামের এ বিস্ময় প্রকাশ নাউযুবিল্লাহ আল্লাহ তাআলার কুদরতের ব্যাপারে কোনরূপ সন্দেহ থেকে উৎপন্ন নয়; বরং এটা ছিল আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে এ অভাবনীয় নি‘আমতের কারণে আনন্দ প্রকাশের ভাষা এবং শোকর আদায়ের এক বিশেষ ভঙ্গি।



قَالَ كَذَٰلِكَ قَالَ رَبُّكَ هُوَ عَلَيَّ هَيِّنٌ وَقَدْ خَلَقْتُكَ مِن قَبْلُ وَلَمْ تَكُ شَيْئًا


কা-লা কাযা-লিকা কা-লা রাব্বুকা হুওয়া ‘আলাইইয়া হাইয়িনুওঁ ওয়াকাদ খালাকতুকা মিন কাবলুওয়া লাম তাকুশাইআ-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তিনি বললেন, এভাবেই হবে। তোমার প্রতিপালক বলেছেন, এটা তো আমার পক্ষে মামুলি ব্যাপার। তাছাড়া এর আগে তো আমি তোমাকেও সৃষ্টি করেছি, যখন তুমি কিছুই ছিলে না। ৫


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তিনি বললেনঃ এমনিতেই হবে। তোমার পালনকর্তা বলে দিয়েছেনঃ এটা আমার পক্ষে সহজ। আমি তো পুর্বে তোমাকে সৃষ্টি করেছি এবং তুমি কিছুই ছিলে না।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তিনি বললেন, ‘এইরূপই হবে।’ তোমার প্রতিপালক বললেন, ‘এটা আমার জন্যে সহজসাধ্য ; আমি তো পূর্বে তোমাকে সৃষ্টি করেছি যখন তুমি কিছুই ছিলে না।’


তাফসীরঃ

৫. অর্থাৎ, তুমি নিজেও তো এক সময় অস্তিত্বহীন ছিলে। যেই আল্লাহ তাআলা তোমাকে তা থেকে অস্তিত্বে আনয়ন করেছেন, তিনি তোমাকে তোমার বৃদ্ধ বয়সে সন্তান দিতে পারবেন না? আলবৎ পারবেন!


১০


قَالَ رَبِّ اجْعَل لِّي آيَةً ۚ قَالَ آيَتُكَ أَلَّا تُكَلِّمَ النَّاسَ ثَلَاثَ لَيَالٍ سَوِيًّا


কা-লা রাব্বিজ‘আললীআ-য়াতান কা-লা আ-ইয়াতুকা আল্লা-তুকালিলমান্না-ছা ছালা-ছা লাইয়া-লিন ছাবিইইয়া-


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

যাকারিয়া বলল, হে আমার প্রতিপালক! আমার জন্য কোন নিদর্শন স্থির করে দিন। ৬ তিনি বললেন, তোমার নিদর্শন হল তুমি সুস্থ থাকা সত্ত্বেও তিন রাত পর্যন্ত মানুষের সাথে কথা বলতে পারবে না। ৭


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

সে বললঃ হে আমার পালনকর্তা, আমাকে একটি নির্দশন দিন। তিনি বললেন তোমার নিদর্শন এই যে, তুমি সুস্থ অবস্থায় তিন দিন মানুষের সাথে কথাবার্তা বলবে না।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যাকারিয়্যা বলল, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে একটি নিদর্শন দাও।’ তিনি বললেন, ‘তোমার নিদর্শন এই যে, তুমি সুস্থ থাকা সত্ত্বেও কারও সঙ্গে তিন দিন বাক্যালাপ করবে না।’


তাফসীরঃ

৬. অর্থাৎ, যখন গর্ভ সঞ্চার হয়ে যাবে, তখন তিন দিনের জন্য তোমার বাকশক্তি কেড়ে নেওয়া হবে। অবশ্য আল্লাহ তাআলার তাসবীহ ও হামদ আদায় করতে পারবে। [এস্থলে তিন রাত এবং সূরা আলে ‘ইমরানে তিন দিন বলা হয়েছে। প্রতিটি শব্দ দ্বারাই মূলত দিন-রাতের সমষ্টি বোঝানো হয়েছে। সুতরাং তিনি পূর্ণ তিন দিন তিন রাত মানুষের সাথে কোন কথা বলতে পারতেন না। কিন্তু যিকর, তাসবীহ ও কিতাব তিলাওয়াত করতে পারতেন। এভাবে সন্তান জন্মের এমনই আলামত তাকে দান করা হল, যা ছিল আল্লাহর ইবাদত ও শুকর। মহামানবের জন্য মহতী আলামতই বটে। -অনুবাদক


৭. অর্থাৎ, এমন কোন আলামত বলে দিন, যা দ্বারা আমি বুঝতে পারব গর্ভ সঞ্চার হয়ে গেছে।


১১


فَخَرَجَ عَلَىٰ قَوْمِهِ مِنَ الْمِحْرَابِ فَأَوْحَىٰ إِلَيْهِمْ أَن سَبِّحُوا بُكْرَةً وَعَشِيًّا


ফাখারাজা ‘আলা- কাওমিহী মিনাল মিহরা-বি ফাআওহা ইলাইহিম আন ছাব্বিহূবুকরাতাওঁ ওয়া ‘আশিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

সুতরাং সে ইবাদতখানা থেকে বের হয়ে নিজ সম্প্রদায়ের সামনে আসল এবং তাদেরকে ইশারায় হুকুম দিল, তোমরা সকাল ও সন্ধ্যায় আল্লাহর তাসবীহ (পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা) কর।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

অতঃপর সে কক্ষ থেকে বের হয়ে তার সম্প্রদায়ের কাছে এল এবং ইঙ্গিতে তাদেরকে সকাল সন্ধ্যায় আল্লাহকে স্মরণ করতে বললঃ


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরপর সে কক্ষ হতে বের হয়ে তার সম্প্রদায়ের নিকট এলো এবং ইঙ্গিতে তাদেরকে সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহ্ র পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করতে বলল।


১২


يَا يَحْيَىٰ خُذِ الْكِتَابَ بِقُوَّةٍ ۖ وَآتَيْنَاهُ الْحُكْمَ صَبِيًّا


ইয়া-ইয়াহইয়া-খুযিল কিতা-বা বিকুওয়াতিওঁ ওয়াআ-তাইনা-হুল হুকমা সাবিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

(অতঃপর যখন ইয়াহইয়া জন্মগ্রহণ করল এবং সে বড়ও হয়ে গেল, তখন আমি তাকে বললাম) হে ইয়াহইয়া! (আল্লাহর) কিতাবকে দৃঢ়ভাবে আকড়ে ধর। ৮ আমি তাকে তার শৈশবেই জ্ঞানবত্তা দান করেছিলাম ৯


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

হে ইয়াহইয়া দৃঢ়তার সাথে এই গ্রন্থ ধারণ কর। আমি তাকে শৈশবেই বিচারবুদ্ধি দান করেছিলাম।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘হে ইয়াহ্ইয়া! এই কিতাব দৃঢ়তার সঙ্গে গ্রহণ কর।’ আমি তাকে শৈশবেই দান করেছিলাম জ্ঞান,


তাফসীরঃ

৮. অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা তাঁকে শৈশবেই সমঝদারি, বুদ্ধিমত্তা, জ্ঞান ও প্রজ্ঞা এবং অন্তর্দৃষ্টি দান করেছিলেন, কিতাব ও শরীয়তী জ্ঞানের অধিকারী করেছিলেন এবং ইবাদত-বন্দেগীর রীতি-নীতি ও সেবামূলক কাজের পথ ও পদ্ধতি সম্পর্কে গভীর উপলব্ধি দান করেছিলেন। -অনুবাদক, তাফসীরে উসমানীর বরাতে।


৯. কিতাব দ্বারা তাওরাত-গ্রন্থ বোঝানো হয়েছে। দৃঢ়ভাবে আকড়ে ধরার অর্থ হল নিজেও তার অনুসরণ করা অন্যকেও তার অনুসরণ করার জন্য উপদেশ দেওয়া।


১৩


وَحَنَانًا مِّن لَّدُنَّا وَزَكَاةً ۖ وَكَانَ تَقِيًّا


ওয়াহানা-নাম মিল্লাদুন্না-ওয়াঝাকা-তাও ওয়াকা-না তাকিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এবং বিশেষভাবে আমার নিজের পক্ষ থেকে হৃদয়ের কোমলতা ও পবিত্রতাও। আর সে ছিল বড়ই পরহেজগার।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এবং নিজের পক্ষ থেকে আগ্রহ ও পবিত্রতা দিয়েছি। সে ছিল পরহেযগার।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এবং আমার নিকট হতে হৃদয়ের কোমলতা ও পবিত্রতা; সে ছিল মুত্তাকী,


১৪


وَبَرًّا بِوَالِدَيْهِ وَلَمْ يَكُن جَبَّارًا عَصِيًّا


ওয়া বাররাম বিওয়া-লিদাইহি ওয়া-লাম ইয়াকুন জাব্বা-রান ‘আসিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এবং নিজ পিতা-মাতার খেদমতগার। সে অহংকারী ও অবাধ্য ছিল না।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

পিতা-মাতার অনুগত এবং সে উদ্ধত, নাফরমান ছিল না।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

পিতা-মাতার অনুগত এবং সে ছিল না উদ্ধত ও অবাধ্য।


১৫


وَسَلَامٌ عَلَيْهِ يَوْمَ وُلِدَ وَيَوْمَ يَمُوتُ وَيَوْمَ يُبْعَثُ حَيًّا


ওয়া ছালা-মুন ‘আলাইহি ইয়াওমা উলিদা ওয়া ইয়াওমা ইয়ামূতুওয়া ইয়াওমা ইউব‘আছু হাইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এবং (আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে) তার প্রতি সালাম যে দিন সে জন্মগ্রহণ করেছে, যে দিন তার মৃত্যু হবে এবং যে দিন সে জীবিত অবস্থায় পুনরুত্থিত হবে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তার প্রতি শান্তি-যেদিন সে জন্মগ্রহণ করে এবং যেদিন মৃত্যুবরণ করবে এবং যেদিন জীবিতাবস্থায় পুনরুত্থিত হবে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তার প্রতি শান্তি যেদিন সে জন্মলাভ করে, যেদিন তার মৃত্যু হবে এবং যেদিন সে জীবিত অবস্থায় উত্থিত হবে।


১৬


وَاذْكُرْ فِي الْكِتَابِ مَرْيَمَ إِذِ انتَبَذَتْ مِنْ أَهْلِهَا مَكَانًا شَرْقِيًّا


ওয়াযকুর ফিল কিতা-বি মারইয়াম । ইযিন তাবাযাত মিন আহলিহা-মাকা-নান শারকিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এ কিতাবে মারয়ামের বৃত্তান্তও বিবৃত কর। সেই সময়ের বৃত্তান্ত, যখন সে তার পরিবারবর্গ থেকে পৃথক হয়ে পূর্ব দিকের এক স্থানে চলে গেল।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এই কিতাবে মারইয়ামের কথা বর্ণনা করুন, যখন সে তার পরিবারের লোকজন থেকে পৃথক হয়ে পূর্বদিকে এক স্থানে আশ্রয় নিল।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

বর্ণনা কর এই কিতাবে উল্লিখিত মারইয়ামের কথা, যখন সে তার পরিবারবর্গ হতে পৃথক হয়ে নিরালায় পূর্বদিকে এক স্থানে আশ্রয় নিল,


১৭


فَاتَّخَذَتْ مِن دُونِهِمْ حِجَابًا فَأَرْسَلْنَا إِلَيْهَا رُوحَنَا فَتَمَثَّلَ لَهَا بَشَرًا سَوِيًّا


ফাত্তাখাযাত মিন দূ নিহিম হিজা-বান ফাআরছালনাইলাইহা-রূহানাফাতামাছছালা লাহা-বাশারান ছাবিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তারপর সে তাদের ও নিজের মাঝখানে একটি পর্দা ফেলে দিল। ১০ এ সময় আমি তার কাছে আমার রূহ (অর্থাৎ একজন ফিরিশতা) পাঠালাম, যে তার সামনে এক পূর্ণ মানবাকৃতিতে আত্মপ্রকাশ করল।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

অতঃপর তাদের থেকে নিজেকে আড়াল করার জন্যে সে পর্দা করলো। অতঃপর আমি তার কাছে আমার রূহ প্রেরণ করলাম, সে তার নিকট পুর্ণ মানবাকৃতিতে আত্নপ্রকাশ করল।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরপর এদের হতে সে পর্দা করল। এরপর আমি তার নিকট আমার রূহ্কে পাঠালাম, সে তার নিকট পূর্ণ মানবাকৃতিতে আত্মপ্রকাশ করল।


তাফসীরঃ

১০. হযরত মারয়াম আলাইহিস সালাম পৃথক স্থানে গিয়ে পর্দা ফেলেছিলেন কেন এ সম্পর্কে মুফাসসিরদের বিভিন্ন মত আছে। কেউ বলেন, তিনি গোসল করতে চাচ্ছিলেন। কারও মতে তাঁর উদ্দেশ্য ছিল ইবাদত-বন্দেগীর জন্য নির্জনতা অবলম্বন করা। আল্লামা কুরতুবী (রহ.) এ মতকেই শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন।


১৮


قَالَتْ إِنِّي أَعُوذُ بِالرَّحْمَـٰنِ مِنكَ إِن كُنتَ تَقِيًّا


কা-লাত ইন্নীআ‘ঊযুবিররাহমা-নি মিনকা ইন কুনতা তাকিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

মারয়াম বলল, আমি তোমার থেকে দয়াময় আল্লাহর আশ্রয় গ্রহণ করছি যদি তুমি আল্লাহকে ভয় কর (তবে এখান থেকে সরে যাও)।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

মারইয়াম বললঃ আমি তোমা থেকে দয়াময়ের আশ্রয় প্রার্থনা করি যদি তুমি আল্লাহভীরু হও।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

মারইয়াম বলল, আল্লাহ্কে ভয় কর যদি তুমি ‘মুত্তাকী হও’, আমি তোমা হতে দয়াময়ের শরণ নিচ্ছি।


১৯


قَالَ إِنَّمَا أَنَا رَسُولُ رَبِّكِ لِأَهَبَ لَكِ غُلَامًا زَكِيًّا


কা-লা ইন্নামাআনা রাছূলুরাব্বিকি লিআহাবা লাকি গুলা-মান ঝাকিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

ফিরিশতা বলল, আমি তো তোমার প্রতিপালকের প্রেরিত (ফিরিশতা আর আমি এসেছি) তোমাকে এক পবিত্র পুত্র দান করার জন্য। ১১


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

সে বললঃ আমি তো শুধু তোমার পালনকর্তা প্রেরিত, যাতে তোমাকে এক পবিত্র পুত্র দান করে যাব।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

সে বলল, ‘আমি তো তোমার প্রতিপালক-প্রেরিত, তোমাকে এক পবিত্র পুত্র দান করার জন্যে।’


তাফসীরঃ

১১. পবিত্র পুত্র বলতে এমন পুত্র বোঝানো হয়েছে, যে বংশ-পরিচয় ও স্বভাব-চরিত্রের দিক থেকে পবিত্র ও নিষ্পাপ হবে।


২০


قَالَتْ أَنَّىٰ يَكُونُ لِي غُلَامٌ وَلَمْ يَمْسَسْنِي بَشَرٌ وَلَمْ أَكُ بَغِيًّا


কা-লাত আন্না-ইয়াকূনুলী গুলা-মুওঁ ওয়া লাম ইয়ামছাছনী বাশারুওঁ ওয়া লাম আকু বাগিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

মারয়াম বলল, আমার পুত্র হবে কেমন করে, যখন আমাকে কোন পুরুষ স্পর্শ করেনি এবং আমি নই কোন ব্যভিচারিণী নারী?


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

মরিইয়াম বললঃ কিরূপে আমার পুত্র হবে, যখন কোন মানব আমাকে স্পর্শ করেনি এবং আমি ব্যভিচারিণীও কখনও ছিলাম না ?


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

মারইয়াম বলল, ‘কেমন করে আমার পুত্র হবে যখন আমাকে কোন পুরুষ স্পর্শ করে নাই এবং আমি ব্যভিচারিণীও নই ?’


২১


قَالَ كَذَٰلِكِ قَالَ رَبُّكِ هُوَ عَلَيَّ هَيِّنٌ ۖ وَلِنَجْعَلَهُ آيَةً لِّلنَّاسِ وَرَحْمَةً مِّنَّا ۚ وَكَانَ أَمْرًا مَّقْضِيًّا


কা-লা কাযা-লিকি কা-লা রাব্বুকি হুওয়া ‘আলাইইয়া হাইয়িনুওঁ ওয়ালিনাজ‘আলাহূআ-য়াতাল লিন্না-ছি ওয়ারাহমাতাম মিন্না- ওয়াকা-না আমরাম মাকদিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

ফিরিশতা বলল, এভাবেই হবে। তোমার রব্ব বলেছেন, আমার পক্ষে এটা একটা মামুলি কাজ। আমি এটা করব এজন্য যে, তাকে বানাব মানুষের জন্য (আমার কুদরতের) এক নিদর্শন ও আমার নিকট হতে রহমত। ১২ এটা সম্পূর্ণরূপে স্থিরীকৃত হয়ে গেছে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

সে বললঃ এমনিতেই হবে। তোমার পালনকর্তা বলেছেন, এটা আমার জন্যে সহজ সাধ্য এবং আমি তাকে মানুষের জন্যে একটি নিদর্শন ও আমার পক্ষ থেকে অনুগ্রহ স্বরূপ করতে চাই। এটা তো এক স্থিরীকৃত ব্যাপার।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

সে বলল, ‘এইরূপই হবে।’ তোমার প্রতিপালক বলেছেন, ‘এটা আমার জন্যে সহজসাধ্য এবং আমি একে এজন্যে সৃষ্টি করব যেন সে হয় মানুষের জন্যে এক নিদর্শন ও আমার নিকট হতে এক অনুগ্রহ; এটা তো এক স্থিরীকৃত ব্যাপার।’


তাফসীরঃ

১২. দুনিয়ায় মানুষের আগমনের সাধারণ নিয়ম এই যে, সে নর-নারীর মিলনের ফলে জন্ম নেয়। কিন্তু আল্লাহ তাআলা হযরত আদম আলাইহিস সালাম, হযরত হাওয়া ও হযরত ঈসা আলাইহিস সালামকে এ নিয়মের অধীনে সৃষ্টি করেননি। হযরত আদম আলাইহিস সালামের সৃজনে তো পুরুষ ও নারী কারোই কোন ভূমিকা ছিল না। হযরত হাওয়াকে যেহেতু তাঁরই পাঁজর থেকে সৃষ্টি করা হয়, সে হিসেবে তাঁর সৃজনে পুরুষের তো এক রকম ভূমিকা ছিল, কিন্তু নারীর কোন ভূমিকা ছিল না। আল্লাহ তাআলা চাইলেন মানব সৃষ্টির চতুর্থ এক পন্থার মাধ্যমে মানুষকে নিজ কুদরতের মহিমা দেখাবেন। সুতরাং তিনি হযরত ঈসা আলাইহিস সালামকে পিতার ভূমিকা ছাড়া কেবল মা হতে সৃষ্টি করলেন। এর দ্বারা আল্লাহ তাআলার এক উদ্দেশ্য তো ছিল মানুষকে নিজ কুদরতের প্রকাশ দেখিয়ে দেওয়া, দ্বিতীয়ত এটা স্পষ্ট করে দেওয়া যে, হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম একজন নবীরূপে মানুষের জন্য রহমত স্বরূপ আগমন করছেন।


২২


۞ فَحَمَلَتْهُ فَانتَبَذَتْ بِهِ مَكَانًا قَصِيًّا


ফাহামালাতহু ফানতাবাযাত বিহী মাকা-নান কাসিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

অতঃপর এই ঘটল যে, মারয়াম সেই শিশুকে গর্ভে ধারণ করল (এবং যখন জন্মের সময় কাছে এসে গেল) তখন সে তাকে নিয়ে দূরে এক নিভৃত স্থানে চলে গেল।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

অতঃপর তিনি গর্ভে সন্তান ধারণ করলেন এবং তৎসহ এক দূরবর্তী স্থানে চলে গেলেন।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তৎপর সে গর্ভে একে ধারণ করল; এরপর তৎসহ এক দূরবর্তী স্থানে চলে গেল;


২৩


فَأَجَاءَهَا الْمَخَاضُ إِلَىٰ جِذْعِ النَّخْلَةِ قَالَتْ يَا لَيْتَنِي مِتُّ قَبْلَ هَـٰذَا وَكُنتُ نَسْيًا مَّنسِيًّا


ফাআজাআহাল মাখা-দুইলা-জিয‘ইন নাখলাতি কা-লাত ইয়া-লাইতানী মিত্তু কাবলা হা-যা-ওয়াকুনতুনাছইয়াম মানছিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তারপর প্রসব-বেদনা তাকে একটি খেজুর গাছের কাছে নিয়ে গেল। সে বলতে লাগল, হায়! আমি যদি এর আগেই মারা যেতাম এবং সম্পূর্ণ বিস্মৃত-বিলুপ্ত হয়ে যেতাম! ১৩


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

প্রসব বেদনা তাঁকে এক খেজুর বৃক্ষ-মূলে আশ্রয় নিতে বাধ্য করল। তিনি বললেনঃ হায়, আমি যদি কোনরূপে এর পূর্বে মরে যেতাম এবং মানুষের স্মৃতি থেকে বিলুপ্ত হয়ে, যেতাম!


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

প্রসব-বেদনা তাকে এক খর্জুর-বৃক্ষতলে আশ্রয় নিতে বাধ্য করল। সে বলল, ‘হায়, এটার পূর্বে আমি যদি মরিয়া যেতাম ও লোকের স্মৃতি হতে সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হতাম!’


তাফসীরঃ

১৩. একজন সতী-সাধ্বী কুমারী নারী গর্ভবতী হয়ে পড়লে তাতে তার উদ্বেগ ও অস্থিরতা কী পরিমাণ হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। যদিও সাধারণ অবস্থায় মৃত্যু কামনা করা নিষেধ, কিন্তু কোন দীনী ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিলে এরূপ কামনা দূষনীয় নয়। খুব সম্ভব হযরত মারয়াম আলাইহিস সালাম প্রচণ্ড মানসিক চাপের কারণে সাময়িকভাবে ফিরিশতার দেওয়া সুসংবাদের প্রতি বে-খেয়াল হয়ে পড়েছিলেন এবং সেই অবকাশে হঠাৎ তাঁর মুখ থেকে এ কথাটি বের হয়ে পড়ে।


২৪


فَنَادَاهَا مِن تَحْتِهَا أَلَّا تَحْزَنِي قَدْ جَعَلَ رَبُّكِ تَحْتَكِ سَرِيًّا


ফানা-দা-হা-মিন তাহতিহাআল্লা-তাহঝানী কাদ জা‘আলা রাব্বুকি তাহতাকি ছারিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তখন ফিরিশতা তার নিচে এক স্থান থেকে তাকে ডাক দিয়ে বলল, তুমি দুঃখ করো না, তোমার প্রতিপালক তোমার নিচে একটি উৎস সৃষ্টি করেছেন।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

অতঃপর ফেরেশতা তাকে নিম্নদিক থেকে আওয়ায দিলেন যে, তুমি দুঃখ করো না। তোমার পালনকর্তা তোমার পায়ের তলায় একটি নহর জারি করেছেন।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

ফেরেশতা তার নিম্নপার্শ্ব হতে আহ্বান করে তাকে বলল, ‘তুমি দুঃখ কর না, তোমার পাদদেশে তোমার প্রতিপালক এক নহর সৃষ্টি করেছেন;


২৫


وَهُزِّي إِلَيْكِ بِجِذْعِ النَّخْلَةِ تُسَاقِطْ عَلَيْكِ رُطَبًا جَنِيًّا


ওয়া হুঝঝীইলাইকি বিজিয‘ইন্নাখলাতি তুছা-কিত‘আলাইকি রুতাবান জানিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এবং খেজুর গাছের ডালাকে নিজের দিকে নাড়া দাও, তা থেকে পাকা তাজা খেজুর তোমার উপর ঝরে পড়বে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আর তুমি নিজের দিকে খেজুর গাছের কান্ডে নাড়া দাও, তা থেকে তোমার উপর সুপক্ক খেজুর পতিত হবে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘তুমি তোমার দিকে খর্জুর-বৃক্ষের কাণ্ডে নাড়া দাও, তা তোমাকে সুপক্ব তাজা খর্জুর দান করবে।


২৬


فَكُلِي وَاشْرَبِي وَقَرِّي عَيْنًا ۖ فَإِمَّا تَرَيِنَّ مِنَ الْبَشَرِ أَحَدًا فَقُولِي إِنِّي نَذَرْتُ لِلرَّحْمَـٰنِ صَوْمًا فَلَنْ أُكَلِّمَ الْيَوْمَ إِنسِيًّا


ফাকুলী ওয়াশরাবী ওয়াকাররী ‘আইনান ফাইম্মা-তারায়িন্না মিনাল বাশারি আহাদান ফাকূলীইন্নী নাযারতুলিররাহমা-নি সাওমান ফালান উকালিলমাল ইয়াওমা ইনছিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তারপর খাও ও পান কর এবং চোখ জুড়াও, ১৪ মানুষের মধ্যে কাউকে আসতে দেখলে (ইশারায়) বলে দিও, আজ আমি দয়াময় আল্লাহর উদ্দেশ্যে একটি রোজা মানত করেছি। সুতরাং আজ আমি কোন মানুষের সাথে কথা বলব না। ১৫


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যখন আহার কর, পান কর এবং চক্ষু শীতল কর। যদি মানুষের মধ্যে কাউকে তুমি দেখ, তবে বলে দিওঃ আমি আল্লাহর উদ্দেশে রোযা মানত করছি। সুতরাং আজ আমি কিছুতেই কোন মানুষের সাথে কথা বলব না।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

সুতরাং আহার কর, পান কর ও চোখ জুড়াও। মানুষের মধ্যে কাউকেও যদি তুমি দেখ তখন বল, ‘আমি দয়াময়ের উদ্দেশ্যে মৌনতা অবলম্বনের মানত করেছি। সুতরাং আজ আমি কিছুতেই কোন মানুষের সঙ্গে বাক্যালাপ করব না।’


তাফসীরঃ

১৪. বিগত শরীয়তসমূহের কোন-কোনটিতে কথাবার্তা না বলে চুপচাপ থাকাও এক ধরনের রোযা ও ইবাদত ছিল। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শরীয়তে ইবাদতের এ পন্থা রহিত করে দেওয়া হয়েছে। এখন এরূপ রোযা রাখা জায়েয নয়। আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে হযরত মারয়াম আলাইহিস সালামকে নির্দেশ করা হয়েছিল, তিনি যেন এরূপ রোযার মানত করেন। অতঃপর যদি কথা বলার প্রয়োজন পড়ে, তবে তা যেন ইশারা দ্বারা সেরে নেন এবং বুঝিয়ে দেন আমি রোযা রেখেছি। এতে করে মানুষের অহেতুক সওয়াল-জওয়াবের ঝামেলা থেকে বেঁচে যাবেন এবং কিছুটা হলেও স্বস্তিতে থাকতে পারবেন।


১৫. হযরত মারয়াম আলাইহিস সালাম যেখানে গিয়েছিলেন, তা কিছুটা উঁচুতে অবস্থিত ছিল (সম্ভবত এ স্থানকেই বায়তুল লাহম বা ‘বেথেলহাম’ বলে। এটা বায়তুল মুকাদ্দাস থেকে মাইল কয়েক দূরে অবস্থিত)। এর নিচের সমতল থেকে ফেরেশতা তাকে লক্ষ্য করে সান্তনামূলক কথা বলেছিল। ফিরিশতা তাকে বলেছিল, আল্লাহ তাআলা আপনার জন্য এখানে পানাহারের কী উত্তম ব্যবস্থা করেছেন দেখুন। নিচে একটা উৎস প্রবহমান রয়েছে আর সামান্য চেষ্টাতেই আপনি পেতে পারেন পাকা তাজা খেজুর। গাছের ডালা ধরে ঈষৎ ঝাঁকুনি দিলেই তা আপনার উপর ঝরে পড়বে। এর ভেতর খাদ্যগুণ তো আছেই। সেই সঙ্গে আছে শক্তিরও উপাদান।


২৭


فَأَتَتْ بِهِ قَوْمَهَا تَحْمِلُهُ ۖ قَالُوا يَا مَرْيَمُ لَقَدْ جِئْتِ شَيْئًا فَرِيًّا


ফাআতাত বিহী কাওমাহা-তাহমিলুহূ কা-লূইয়া-মারইয়ামুলাকাদ জি’তি শাইআন ফারিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তারপর সে শিশুটি নিয়ে নিজ সম্প্রদায়ের কাছে আসল। ১৬ তারা বলে উঠল, মারয়াম! তুমি তো বড় খতরনাক কাজ করেছ!


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

অতঃপর তিনি সন্তানকে নিয়ে তার সম্প্রদায়ের কাছে উপস্থিত হলেন। তারা বললঃ হে মারইয়াম, তুমি একটি অঘটন ঘটিয়ে বসেছ।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরপর সে সন্তানকে নিয়ে তার সম্প্রদায়ের নিকট উপস্থিত হল; এরা বলল, ‘হে মারইয়াম! তুমি তো এক অদ্ভুত কাণ্ড করে বসেছ।


তাফসীরঃ

১৬. শিশুর জন্মের পর হযরত মারয়াম আলাইহিস সালাম পরিপূর্ণ নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলেন যে, যেই আল্লাহ নিজের বিশেষ কুদরত দ্বারা এই শিশুটির জন্ম দিয়েছেন, তিনিই মানুষের কাছে পরিষ্কার করে দেবেন যে, তাঁর গায়ে কোন কলঙ্ক নেই। তিনি সম্পূর্ণ পবিত্র। কাজেই তিনি নিশ্চিত মনে নিজেই শিশুটিকে কোলে নিয়ে নিজ সম্প্রদায়ের কাছে চলে আসলেন।


২৮


يَا أُخْتَ هَارُونَ مَا كَانَ أَبُوكِ امْرَأَ سَوْءٍ وَمَا كَانَتْ أُمُّكِ بَغِيًّا


ইয়াউখতা হা-রূনা মা-কা-না আবূকিম রাআ ছাওইওঁ ওয়ামা-কানাত উম্মুকি বাগিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

ওহে হারূনের বোন! ১৭ তোমার পিতাও কোন খারাপ লোক ছিল না এবং তোমার মাও ছিল না অসতী নারী।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

হে হারূণ-ভাগিনী, তোমার পিতা অসৎ ব্যক্তি ছিলেন না এবং তোমার মাতাও ছিল না ব্যভিচারিনী।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘হে হারূন-ভগ্নি! তোমার পিতা অসৎ ব্যক্তি ছিল না এবং তোমার মাতাও ছিল না ব্যভিচারিণী।’


তাফসীরঃ

১৭. ‘হারূনের বোন’ কথাটির দু’টি অর্থ হতে পারে। (ক) সম্ভবত হযরত মারয়াম আলাইহাস সালাম হযরত হারূন আলাইহিস সালামের বংশধর ছিলেন আর সে হিসেবেই তাকে ‘হারূনের বোন’ বলা হয়েছে, যেমন হযরত হুদ আলাইহিস সালামকে ‘আদের ভাই’ বলা হয়েছে। (খ) আবার এটাও সম্ভব যে, তাঁর কোন ভাইয়ের নাম ছিল হারূন, যিনি একজন বুযুর্গ লোক ছিলেন। এ কারণে হয়ত তিরস্কারকে তীব্রতর করার লক্ষ্যে তারা তাঁর নাম উল্লেখ করেছিল।


২৯


فَأَشَارَتْ إِلَيْهِ ۖ قَالُوا كَيْفَ نُكَلِّمُ مَن كَانَ فِي الْمَهْدِ صَبِيًّا


ফাআশা-রাত ইলাইহি কা-লূকাইফা নুকালিলমুমান কা-না ফিল মাহদি সাবিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তখন মারয়াম শিশুটির দিকে ইশারা করলেন। তারা বলল, আমরা এই দোলনার শিশুর সাথে কিভাবে কথা বলব?


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

অতঃপর তিনি হাতে সন্তানের দিকে ইঙ্গিত করলেন। তারা বললঃ যে কোলের শিশু তার সাথে আমরা কেমন করে কথা বলব?


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরপর মারইয়াম সন্তানের প্রতি ইঙ্গিত করল। এরা বলল, ‘যে কোলের শিশু তার সঙ্গে আমরা কেমন করে কথা বলব ?’


৩০


قَالَ إِنِّي عَبْدُ اللَّهِ آتَانِيَ الْكِتَابَ وَجَعَلَنِي نَبِيًّا


কা-লা ইন্নী ‘আবদুল্লা-হি আ-তা-নিয়াল কিতা-বা ওয়া জা‘আলানী নাবিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

অমনি শিশুটি বলে উঠল, আমি আল্লাহর বান্দা। তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন এবং নবী বানিয়েছেন। ১৮


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

সন্তান বললঃ আমি তো আল্লাহর দাস। তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন এবং আমাকে নবী করেছেন।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

সে বলল, ‘আমি তো আল্লাহ্ র বান্দা। তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন, আমাকে নবী করেছেন,


তাফসীরঃ

১৮. অর্থাৎ, বড় হলে আমাকে ইনজীল দেওয়া হবে এবং আমাকে নবী বানানো হবে। আর এ বিষয়টা এমনই নিশ্চিত, যেন ঘটে গেছে। এ কারণেই তিনি কথাটি অতীতবাচক ক্রিয়াপদে ব্যক্ত করেছেন। সবগুলো কথাই অত্যন্ত স্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন। তেজস্বী ও ওজনদারও বটে। দুধের শিশুর এ রকম ভাষণ ছিল আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে একটি খোলা মুজিযা। এর মাধ্যমে তিনি হযরত মারয়াম আলাইহাস সালামের চারিত্রিক নির্মলতা ও পবিত্রতা পরিষ্কার করে দিয়েছেন।


৩১


وَجَعَلَنِي مُبَارَكًا أَيْنَ مَا كُنتُ وَأَوْصَانِي بِالصَّلَاةِ وَالزَّكَاةِ مَا دُمْتُ حَيًّا


ওয়াজা‘আলানী মুবা-রাকান আইনা মা-কুনতু,ওয়াআওসা-নী বিসসালা-তি ওয়াঝঝাকা-তি মা-দুমতুহাইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এবং আমি যেখানেই থাকি না কেন আমাকে বরকতময় করেছেন এবং যত দিন জীবিত থাকি আমাকে নামায ও যাকাত আদায়ের হুকুম দিয়েছেন। ১৯


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি যেখানেই থাকি, তিনি আমাকে বরকতময় করেছেন। তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন, যতদিন জীবিত থাকি, ততদিন নামায ও যাকাত আদায় করতে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘যেখানেই আমি থাকি না কেন তিনি আমাকে বরকতময় করেছেন, তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন যত দিন জীবিত থাকি তত দিন সালাত ও যাকাত আদায় করতে-


তাফসীরঃ

১৯. অর্থাৎ, আমি যত দিন দুনিয়ায় জীবিত থাকব আমার উপর নামায ও যাকাত ফরয থাকবে।


৩২


وَبَرًّا بِوَالِدَتِي وَلَمْ يَجْعَلْنِي جَبَّارًا شَقِيًّا


ওয়াবাররাম বিওয়া-লিদাতী ওয়ালাম ইয়াজ‘আলনী জাব্বা-রান শাকিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এবং আমাকে আমার মায়ের প্রতি অনুগত বানিয়েছেন। আমাকে উদ্ধত ও রূঢ় বানাননি।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এবং জননীর অনুগত থাকতে এবং আমাকে তিনি উদ্ধত ও হতভাগ্য করেননি।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘আর আমাকে আমার মাতার প্রতি অনুগত করেছেন এবং তিনি আমাকে করেন নাই উদ্ধত ও হতভাগ্য;


৩৩


وَالسَّلَامُ عَلَيَّ يَوْمَ وُلِدتُّ وَيَوْمَ أَمُوتُ وَيَوْمَ أُبْعَثُ حَيًّا


ওয়াছছালা-মূ‘আলাইইয়া ইয়াওমা উলিততুওয়া ইয়াওমা আমূতুওয়া ইয়াওমা উব ‘আছু হাইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এবং (আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে) আমার প্রতি সালাম যে দিন আমি জন্মগ্রহণ করেছি, যে দিন আমার মৃত্যু হবে এবং যে দিন আমাকে পুনরায় জীবিত করে ওঠানো হবে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমার প্রতি সালাম যেদিন আমি জন্মগ্রহণ করেছি, যেদিন মৃত্যুবরণ করব এবং যেদিন পুনরুজ্জীবিত হয়ে উত্থিত হব।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘আমার প্রতি শান্তি যেদিন আমি জন্মলাভ করেছি, যেদিন আমার মৃত্যু হবে এবং যেদিন জীবিত অবস্থায় আমি উত্থিত হব।’


৩৪


ذَٰلِكَ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ ۚ قَوْلَ الْحَقِّ الَّذِي فِيهِ يَمْتَرُونَ


যা-লিকা ‘ঈছাবনুমারইয়ামা কাওলাল হাক্কিল্লাযী ফীহি ইয়ামতারূন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এই হল মারয়ামের পুত্র ঈসা। তার (প্রকৃত অবস্থা) সম্পর্কে এটাই সত্য কথা, যে সম্পর্কে তারা তর্ক-বিতর্ক করছে। ২০


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এই মারইয়ামের পুত্র ঈসা। সত্যকথা, যে সম্পর্কে লোকেরা বিতর্ক করে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এই-ই মারইয়াম-তনয় ‘ঈসা। আমি বললাম সত্য কথা, যে বিষয়ে এরা বিতর্ক করে।


তাফসীরঃ

২০. এই সম্পূর্ণ ঘটনাটি উল্লেখ করার মূল উদ্দেশ্য হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরা। এ ঘটনার দ্বারা আপনা-আপনিই এ সিদ্ধান্ত বের হয়ে আসে যে, ইয়াহুদী ও খ্রিস্টান সম্প্রদায় তাঁর সম্পর্কে যে বিপরীতমুখী অবস্থান গ্রহণ করেছে এবং আপন-আপন অবস্থানে তারা যে চরম বাড়াবাড়ি করছে তা সর্বৈব ভ্রান্ত ও ভিত্তিহীন। ইয়াহুদী সম্প্রদায় তাঁর সম্পর্কে যে অভিযোগ করছে তা যেমন মিথ্যাচার, তেমনি খ্রিস্ট সম্প্রদায় যা বলছে তাও সত্যের অপলাপ। তাদের এ বিশ্বাস বিলকুল ভ্রান্ত যে, তিনি আল্লাহ তাআলার পুত্র। আল্লাহ তাআলার কোন পুত্রের দরকার নেই। এটাই সত্য কথা যে, তিনি আল্লাহর বান্দা ও নবী।


৩৫


مَا كَانَ لِلَّهِ أَن يَتَّخِذَ مِن وَلَدٍ ۖ سُبْحَانَهُ ۚ إِذَا قَضَىٰ أَمْرًا فَإِنَّمَا يَقُولُ لَهُ كُن فَيَكُونُ


মা-কা-না লিল্লা-হি আইঁ ইয়াত্তাখিযা মিওঁ ওয়ালাদিন ছুবহা-নাহূ ইযা-কাদা আমরান ফাইন্নামা-ইয়াকূলুলাহূকুন ফাইয়াকূন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এটা আল্লাহর শান নয় যে, তিনি কোন পুত্র গ্রহণ করবেন। তাঁর সত্তা পবিত্র। তিনি যখন কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত স্থির করেন, তখন কেবল বলেন, ‘হয়ে যাও’। অমনি তা হয়ে যায়।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আল্লাহ এমন নন যে, সন্তান গ্রহণ করবেন, তিনি পবিত্র ও মহিমাময় সত্তা, তিনি যখন কোন কাজ করা সিদ্ধান্ত করেন, তখন একথাই বলেনঃ হও এবং তা হয়ে যায়।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

সন্তান গ্রহণ করা আল্লাহ্ র কাজ নয়, তিনি পবিত্র মহিমময়। তিনি যখন কিছু স্থির করেন তখন সেই সম্পর্কে বলেন ‘হও’ এবং তা হয়ে যায়।


৩৬


وَإِنَّ اللَّهَ رَبِّي وَرَبُّكُمْ فَاعْبُدُوهُ ۚ هَـٰذَا صِرَاطٌ مُّسْتَقِيمٌ


ওয়া ইন্নাল্লা-হা রাববী ওয়ারাব্বুকুম ফা‘বুদূ হু হা-যা-সিরা-তুম মুছতাকীম।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

(হে নবী! মানুষকে) বলে দাও, নিশ্চয়ই আল্লাহ আমার প্রতিপালক এবং তোমাদেরও প্রতিপালক। সুতরাং তোমরা তাঁর ইবাদত কর। এটাই সরল পথ।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তিনি আরও বললেনঃ নিশ্চয় আল্লাহ আমার পালনকর্তা ও তোমাদের পালনকর্তা। অতএব, তোমরা তার এবাদত কর। এটা সরল পথ।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আল্লাহ্ই আমার প্রতিপালক ও তোমাদের প্রতিপালক ; সুতরাং তোমরা তাঁর ‘ইবাদত কর, এটাই সরল পথ।


৩৭


فَاخْتَلَفَ الْأَحْزَابُ مِن بَيْنِهِمْ ۖ فَوَيْلٌ لِّلَّذِينَ كَفَرُوا مِن مَّشْهَدِ يَوْمٍ عَظِيمٍ


ফাখতালাফাল আহঝা-বুমিম বাইনিহিম ফাওয়াইলুল লিল্লাযীনা কাফারূমিম মাশহাদি ইয়াওমিন ‘আজীম।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তা সত্ত্বেও তাদের বিভিন্ন দল বিভিন্ন মত সৃষ্টি করেছে। ২১ সুতরাং যারা কুফর অবলম্বন করেছে মহাদিবস প্রত্যক্ষ করার দিন তাদের জন্য রয়েছে ধ্বংস।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

অতঃপর তাদের মধ্যে দলগুলো পৃথক পৃথক পথ অবলম্বন করল। সুতরাং মহাদিবস আগমনকালে কাফেরদের জন্যে ধবংস।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরপর দলগুলি নিজেদের মধ্যে মতানৈক্য সৃষ্টি করল, সুতরাং দুর্ভোগ কাফিরদের জন্যে মহাদিবস আগমনকালে।


তাফসীরঃ

২১. খ্রিস্টানগণ বলছে, তিনি আল্লাহর পুত্র, ইয়াহুদীরা বলছে তিনি অসতী মায়ের পুত্র, আবার খোদ খ্রিস্টানদের মধ্যেও একদল বলছে, তিনি ঈশ্বরের পুত্র এবং ঈশ্বরের তিন এককের একজন, অন্যদল বলছে তিনি স্বয়ং ঈশ্বর। এ সবগুলোই কুফরী বিশ্বাস এবং এর পরিণতি জাহান্নামবাস। -অনুবাদক


৩৮


أَسْمِعْ بِهِمْ وَأَبْصِرْ يَوْمَ يَأْتُونَنَا ۖ لَـٰكِنِ الظَّالِمُونَ الْيَوْمَ فِي ضَلَالٍ مُّبِينٍ


আছমি‘বিহিম ওয়া আবসির ইয়াওমা ইয়া’তূনানা-লা-কিনিজ্জা-লিমূনাল ইয়াওমা ফী দালা-লিম মুবীন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

যে দিন তারা আমার কাছে আসবে সে দিন তারা কতইনা শুনবে এবং কতইনা দেখবে! কিন্তু জালেমগণ আজ স্পষ্ট গোমরাহীতে নিপতিত।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

সেদিন তারা কি চমৎকার শুনবে এবং দেখবে, যেদিন তারা আমার কাছে আগমন করবে। কিন্তু আজ জালেমরা প্রকাশ্য বিভ্রান্তিতে রয়েছে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরা যেদিন আমার নিকট আসবে সেই দিন এরা কত স্পষ্ট শুনবে ও দেখবে! কিন্তু জালিমরা আজ স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে আছে।


৩৯


وَأَنذِرْهُمْ يَوْمَ الْحَسْرَةِ إِذْ قُضِيَ الْأَمْرُ وَهُمْ فِي غَفْلَةٍ وَهُمْ لَا يُؤْمِنُونَ


ওয়া আনযিরহুম ইয়াওমাল হাছরাতি ইযকুদিয়াল আমর । ওয়াহুম ফী গাফলাতিওঁ ওয়াহুম লা-ইউ’মিনূন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

(হে নবী!) তাদেরকে আক্ষেপের দিন সম্পর্কে সতর্ক করুন, যে দিন সকল বিষয়ে চূড়ান্ত ফায়সালা হয়ে যাবে, অথচ মানুষ গাফলতিতে পড়ে আছে এবং তারা ঈমান আনছে না।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আপনি তাদেরকে পরিতাপের দিবস সম্পর্কে হুশিয়ার করে দিন যখন সব ব্যাপারের মীমাংসা হয়ে যাবে। এখন তারা অনবধানতায় আছে এবং তারা বিশ্বাস স্থাপন করছে না।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এদেরকে সতর্ক করে দাও পরিতাপ দিবস সম্বন্ধে, যখন সকল সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে। এখন এরা গাফিল এবং এরা বিশ্বাস করে না।


৪০


إِنَّا نَحْنُ نَرِثُ الْأَرْضَ وَمَنْ عَلَيْهَا وَإِلَيْنَا يُرْجَعُونَ


ইন্না-নাহনুনারিছুল আরদা ওয়ামান ‘আলাইহা-ওয়া ইলাইনা-ইউরজা‘ঊন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

নিশ্চয়ই পৃথিবী এবং এর উপর যারা আছে, সকলের ওয়ারিশ হব আমিই এবং আমারই কাছে তাদের সকলকে ফিরিয়ে আনা হবে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমিই চুড়ান্ত মালিকানার অধিকারী হব পৃথিবীর এবং তার উপর যারা আছে তাদের এবং আমারই কাছে তারা প্রত্যাবর্তিত হবে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

নিশ্চয়ই পৃথিবীর ও এর ওপর যারা আছে তাদের চূড়ান্ত মালিকানা আমারই থাকবে এবং এরা আমারই নিকট প্রত্যানীত হবে।


৪১


وَاذْكُرْ فِي الْكِتَابِ إِبْرَاهِيمَ ۚ إِنَّهُ كَانَ صِدِّيقًا نَّبِيًّا


ওয়াযকুর ফিল কিতা-বি ইবরা-হীমা ইন্নাহূকা-না সিদ্দীকান নাবিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এ কিতাবে ইবরাহীমের বৃত্তান্তও বিবৃত কর। নিশ্চয়ই সে ছিল সত্যনিষ্ঠ নবী।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আপনি এই কিতাবে ইব্রাহীমের কথা বর্ণনা করুন। নিশ্চয় তিনি ছিলেন সত্যবাদী, নবী।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

স্মরণ কর, এই কিতাবে উল্লিখিত ইব্রাহীমের কথা; সে ছিল সত্যনিষ্ঠ, নবী।


৪২


إِذْ قَالَ لِأَبِيهِ يَا أَبَتِ لِمَ تَعْبُدُ مَا لَا يَسْمَعُ وَلَا يُبْصِرُ وَلَا يُغْنِي عَنكَ شَيْئًا


ইয কা-লা লিআবীহি ইয়া আবাতি লিমা তা‘বুদুমা-লা-ইয়াছমা‘উ ওয়ালা-ইউবসিরূ ওয়ালা-ইউগনী ‘আনকা শাইআ-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

স্মরণ কর, যখন সে নিজ পিতাকে বলেছিল, আব্বাজী! আপনি এমন জিনিসের ইবাদত কেন করেন, যা কিছু শোনে না, দেখে না এবং আপনার কোন কাজও করতে পারে না? ২২


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যখন তিনি তার পিতাকে বললেনঃ হে আমার পিতা, যে শোনে না, দেখে না এবং তোমার কোন উপকারে আসে না, তার এবাদত কেন কর?


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যখন সে তার পিতাকে বলল, ‘হে আমার পিতা! তুমি তার ‘ইবাদত কর কেন যে শুনে না, দেখে না এবং তোমার কোনই কাজে আসে না ?’


তাফসীরঃ

২২. হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামের পিতা আযর ছিল পৌত্তলিক। সে কেবল মূর্তির পূজাই করত না; মূর্তি নির্মাণও করত।


৪৩


يَا أَبَتِ إِنِّي قَدْ جَاءَنِي مِنَ الْعِلْمِ مَا لَمْ يَأْتِكَ فَاتَّبِعْنِي أَهْدِكَ صِرَاطًا سَوِيًّا


ইয়াআবাতি ইন্নী কাদ জাআনী মিনাল ‘ইলমি মা-লাম ইয়া’তিকা ফাত্তাবি‘নীআহদিকা সিরা-তান ছাবিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আব্বাজী! আমার নিকট এমন এক জ্ঞান এসেছে যা আপনার কাছে আসেনি। কাজেই আপনি আমার কথা শুনুন, আমি আপনাকে সরল পথ বাতলে দেব।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

হে আমার পিতা, আমার কাছে এমন জ্ঞান এসেছে; যা তোমার কাছে আসেনি, সুতরাং আমার অনুসরণ কর, আমি তোমাকে সরল পথ দেখাব।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘হে আমার পিতা! আমার নিকট তো এসেছে জ্ঞান যা তোমার নিকট আসে নাই; সুতরাং আমার অনুসরণ কর, আমি তোমাকে সঠিক পথ দেখাব।


৪৪


يَا أَبَتِ لَا تَعْبُدِ الشَّيْطَانَ ۖ إِنَّ الشَّيْطَانَ كَانَ لِلرَّحْمَـٰنِ عَصِيًّا


ইয়াআবাতি লা-তা‘বুদিশশাইতা-না ইন্নাশশাইতা-না কা-না লিররাহমা-নি আ‘সিইইয়া- ।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আব্বাজী! শয়তানের ইবাদত করবেন না। ২৩ নিশ্চয়ই শয়তান দয়াময়ের অবাধ্য।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

হে আমার পিতা, শয়তানের এবাদত করো না। নিশ্চয় শয়তান দয়াময়ের অবাধ্য।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘হে আমার পিতা! শয়তানের ‘ইবাদত কর না। শয়তান তো দয়াময়ের অবাধ্য।


তাফসীরঃ

২৩. মূর্তিপূজার ধারণাটি মূলত শয়তানের উদ্ভাবিত। কাজেই মূর্তিপূজা প্রকারান্তরে শয়তানেরই পূজা। মানুষ যেন শয়তানকে আনুগত্যের উপযুক্ত মনে করে তারই ইবাদত করছে।


৪৫


يَا أَبَتِ إِنِّي أَخَافُ أَن يَمَسَّكَ عَذَابٌ مِّنَ الرَّحْمَـٰنِ فَتَكُونَ لِلشَّيْطَانِ وَلِيًّا


ইয়াআবাতি ইন্নীআখা-ফুআইঁ ইয়ামাছছাকা ‘আযা-বুম মিনার রাহমা-নি ফাতাকূনা লিশশাইতা-নি ওয়ালিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আব্বাজী! আমার আশঙ্কা দয়াময়ের পক্ষ হতে কোন শাস্তি আপনাকে স্পর্শ করবে। ফলে আপনি শয়তানের সঙ্গী হয়ে যাবেন। ২৪


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

হে আমার পিতা, আমি আশঙ্কা করি, দয়াময়ের একটি আযাব তোমাকে স্পর্শ করবে, অতঃপর তুমি শয়তানের সঙ্গী হয়ে যাবে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘হে আমার পিতা! আমি তো আশংকা করি যে, তোমাকে দয়াময়ের শাস্তি স্পর্শ করবে, তখন তুমি হয়ে পড়বে শয়তানের বন্ধু।’


তাফসীরঃ

২৪. শয়তানের সঙ্গী হয়ে যাওয়ার অর্থ, শয়তানের যে পরিণাম হবে অর্থাৎ, জাহান্নাম বাস, সেই পরিণাম আপনাকেও ভোগ করতে হবে।


৪৬


قَالَ أَرَاغِبٌ أَنتَ عَنْ آلِهَتِي يَا إِبْرَاهِيمُ ۖ لَئِن لَّمْ تَنتَهِ لَأَرْجُمَنَّكَ ۖ وَاهْجُرْنِي مَلِيًّا


কা-লা আরা-গিবুন আনতা ‘আন আ-লিহাতী ইয়াইবরা-হীমু লাইল্লাম তানতাহি লাআরজুমান্নাকা ওয়াহজুরনী মালিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তার পিতা বলল, ইবরাহীম! তুমি কি আমার উপাস্যদের থেকে বিমুখ? তুমি যদি এর থেকে নিবৃত্ত না হও, তবে আমি অবশ্যই তোমার উপর পাথর নিক্ষেপ করব। আর এখন তুমি চিরদিনের জন্য আমার থেকে দূর হয়ে যাও।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

পিতা বললঃ যে ইব্রাহীম, তুমি কি আমার উপাস্যদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছ? যদি তুমি বিরত না হও, আমি অবশ্যই প্রস্তরাঘাতে তোমার প্রাণনাশ করব। তুমি চিরতরে আমার কাছ থেকে দূর হয়ে যাও।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

পিতা বলল, ‘হে ইব্রাহীম! তুমি কি আমার দেব-দেবী হতে বিমুখ ? যদি তুমি নিবৃত্ত না হও তবে আমি প্রস্তরাঘাতে তোমার প্রাণ নাশ করবই; তুমি চিরদিনের জন্যে আমার নিকট হতে দূর হয়ে যাও।’


৪৭


قَالَ سَلَامٌ عَلَيْكَ ۖ سَأَسْتَغْفِرُ لَكَ رَبِّي ۖ إِنَّهُ كَانَ بِي حَفِيًّا


কা-লা ছালা-মুন ‘আলাইকা ছাআছতাগফিরুলাকা রাববী ইন্নাহূকা-না বী হাফিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

ইবরাহীম বলল, আপনার প্রতি (বিদায়ী) সালাম। ২৫ আমি আমার প্রতিপালকের কাছে আপনার মাগফিরাতের জন্য দু‘আ করব। ২৬ নিঃসন্দেহে তিনি আমার প্রতি অত্যন্ত দয়ালু।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

ইব্রাহীম বললেনঃ তোমার উপর শান্তি হোক, আমি আমার পালনকর্তার কাছে তোমার জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করব। নিশ্চয় তিনি আমার প্রতি মেহেরবান।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

ইব্রাহীম বলল, ‘তোমার প্রতি সালাম। আমি আমার প্রতিপালকের নিকট তোমার জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করব, নিশ্চয় তিনি আমার প্রতি অতিশয় অনুগ্রহশীল।


তাফসীরঃ

২৫. সূরা তাওবায় (৯ : ১১৪) আল্লাহ তাআলা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামের এই প্রতিশ্রুতির কথা উল্লেখ করেছেন। এর দ্বারা স্পষ্ট হয়ে ওঠে, হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম পিতার মাগফিরাতের জন্য দু‘আ করার এ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেই সময়, যখন ‘পিতার ভাগ্যে ঈমান নেই’-একথা তার জানা ছিল না। পরবর্তীতে যখন এটা তিনি জানতে পারলেন, তখন এরূপ দু‘আ করা থেকে নিবৃত্ত হলেন।


২৬. সাধারণ অবস্থায় কাফেরদেরকে নিজের থেকে সালাম দেওয়া জায়েয নয়, কিন্তু যদি এমন কোন বিশেষ পরিস্থিতি দেখা দেয়, যখন সালাম দেওয়ার ভেতর দীনী স্বার্থ হাসিলের আশা থাকে, তবে ‘আল্লাহ তাকে ইসলাম গ্রহণের তাওফীক দিয়ে শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে রাখুন’ এই নিয়তে কাফেরকে সালাম দেওয়ার অবকাশ আছে।


৪৮


وَأَعْتَزِلُكُمْ وَمَا تَدْعُونَ مِن دُونِ اللَّهِ وَأَدْعُو رَبِّي عَسَىٰ أَلَّا أَكُونَ بِدُعَاءِ رَبِّي شَقِيًّا


ওয়া আ‘তাঝিলুকুম ওয়ামা-তাদ‘ঊনা মিন দূ নিল্লা-হি ওয়া আদ‘ঊ রাববী ‘আছাআল্লা আকূনা বিদু‘আই রাববী শাকিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আমি আপনাদের থেকেও পৃথক হয়ে যাচ্ছি এবং আপনারা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের ইবাদত করেন তাদের থেকেও। আমি আমার প্রতিপালককে ডাকতে থাকব। আমি পরিপূর্ণ আশাবাদী যে, আমি আমার প্রতিপালককে ডেকে ব্যর্থকাম হব না।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি পরিত্যাগ করছি তোমাদেরকে এবং তোমরা আল্লাহ ব্যতীত যাদের এবাদত কর তাদেরকে; আমি আমার পালনকর্তার এবাদত করব। আশা করি, আমার পালনকর্তার এবাদত করে আমি বঞ্চিত হব না।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘আমি তোমাদের হতে ও তোমরা আল্লাহ্ ব্যতীত যাদের ‘ইবাদত কর তাদের হতে পৃথক হচ্ছি; আমি আমার প্রতিপালককে আহ্বান করি; আশা করি, আমার প্রতিপালককে আহ্বান করে আমি ব্যর্থকাম হব না।’


৪৯


فَلَمَّا اعْتَزَلَهُمْ وَمَا يَعْبُدُونَ مِن دُونِ اللَّهِ وَهَبْنَا لَهُ إِسْحَاقَ وَيَعْقُوبَ ۖ وَكُلًّا جَعَلْنَا نَبِيًّا


ফালাম্মা‘ তাঝালাহুম ওয়ামা-ইয়া‘বুদূ না মিন দূ নিল্লা-হি ওয়াহাবনা-লাহূইছহা-কা ওয়া ইয়া‘কূবা ওয়া কুল্লান জা‘আলনা-নাবিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

সুতরাং যখন সে তাদের থেকে এবং তারা আল্লাহর পরিবর্তে যাদেরকে (অর্থাৎ যেই প্রতিমাদেরকে) ডাকত তাদের থেকে পৃথক হয়ে গেল, তখন আমি তাকে ইসহাক ও ইয়াকুব (-এর মত সন্তান) দান করলাম এবং তাদের প্রত্যেককে নবী বানালাম।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

অতঃপর তিনি যখন তাদেরকে এবং তার আল্লাহ ব্যতীত যাদের এবাদত করত, তাদের সবাইকে পরিত্যাগ করলেন, তখন আমি তাকে দান করলাম ইসহাক ও ইয়াকুব এবং প্রত্যেককে নবী করলাম।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরপর সে যখন তাদের হতে ও তারা আল্লাহ্ ব্যতীত যাদের ‘ইবাদত করত সেই সকল হতে পৃথক হয়ে গেল তখন আমি তাকে দান করলাম ইসহাক ও ইয়া‘ক‚ব এবং প্রত্যেককে নবী করলাম।


৫০


وَوَهَبْنَا لَهُم مِّن رَّحْمَتِنَا وَجَعَلْنَا لَهُمْ لِسَانَ صِدْقٍ عَلِيًّا


ওয়া ওয়াহাবনা-লাহুম মির রাহমাতিনা- ওয়া জা‘আলনা- লাহুম লিছা-না সিদকিন ‘আলিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এবং তাদেরকে দান করলাম আমার রহমত আর তাদের দিলাম সমুচ্চ সুখ্যাতি। ২৭


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি তাদেরকে দান করলাম আমার অনুগ্রহ এবং তাদেরকে দিলাম সমুচ্চ সুখ্যাতি।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এবং তাদেরকে আমি দান করলাম আমার অনুগ্রহ ও তাদের নাম-যশ সমুচ্চ করলাম।


তাফসীরঃ

২৭. সুতরাং হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামকে কেবল মুসলিমগণই নয়, ইয়াহুদী ও খ্রিস্টানরাও নিজেদের আদর্শ মনে করে।


৫১


وَاذْكُرْ فِي الْكِتَابِ مُوسَىٰ ۚ إِنَّهُ كَانَ مُخْلَصًا وَكَانَ رَسُولًا نَّبِيًّا


ওয়াযকুর ফিল কিতা-বি মূছাইন্নাহূকা-না মুখলাসাও ওয়া কা-না রাছূলান নাবিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এ কিতাবে মূসার বৃত্তান্তও বিবৃত কর। নিশ্চয়ই সে ছিল আল্লাহর মনোনীত বান্দা এবং (তাঁর) রাসূল ও নবী। ২৮


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এই কিতাবে মূসার কথা বর্ণনা করুন, তিনি ছিলেন মনোনীত এবং তিনি ছিলেন রাসূল, নবী।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

স্মরণ কর, এই কিতাবে মূসার কথা, সে ছিল বিশেষ মনোনীত এবং সে ছিল রাসূল, নবী।


তাফসীরঃ

২৮. হযরত মূসা ও হযরত হারূন আলাইহিমাস সালামের ঘটনা বিস্তারিতভাবে সামনের সূরায় আসছে।


৫২


وَنَادَيْنَاهُ مِن جَانِبِ الطُّورِ الْأَيْمَنِ وَقَرَّبْنَاهُ نَجِيًّا


ওয়া না-দাইনা-হু মিন জা-নিবিততূরিল আইমানি ওয়া কাররাবনা-হু নাজিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আমি তাকে তূর পাহাড়ের ডান দিক থেকে ডাক দিলাম এবং তাকে আমার অন্তরঙ্গরূপে নৈকট্য দান করলাম।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি তাকে আহবান করলাম তূর পাহাড়ের ডান দিক থেকে এবং গুঢ়তত্ত্ব আলোচনার উদ্দেশে তাকে নিকটবর্তী করলাম।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তাকে আমি আহ্বান করেছিলাম তূর পর্বতের দক্ষিণ দিক হতে এবং আমি অন্তরঙ্গ আলাপে তাকে নৈকট্য দান করেছিলাম।


৫৩


وَوَهَبْنَا لَهُ مِن رَّحْمَتِنَا أَخَاهُ هَارُونَ نَبِيًّا


ওয়া ওয়াহাবনা-লাহূমিররাহমাতিনাআখা-হু হা-রূনা নাবিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আর আমি নিজ রহমতে তাকে দান করলাম তার ভাই হারূনকে নবীরূপে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি নিজ অনুগ্রহে তাঁকে দান করলাম তাঁর ভাই হারুনকে নবীরূপে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আমি নিজ অনুগ্রহে তাকে দিলাম তার ভাই হারূনকে নবীরূপে।


৫৪


وَاذْكُرْ فِي الْكِتَابِ إِسْمَاعِيلَ ۚ إِنَّهُ كَانَ صَادِقَ الْوَعْدِ وَكَانَ رَسُولًا نَّبِيًّا


ওয়াযকুর ফিল কিতা-বি ইছমা-ঈলা ইন্নাহূকা-না সা-দিকাল ওয়া‘দি ওয়া কা-না রাছূলান নাবিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এবং এ কিতাবে ইসমাঈলের বৃত্তান্তও বিবৃত কর। নিশ্চয়ই সে ছিল প্রতিশ্রুতির ক্ষেত্রে সত্যবাদী এবং রাসূল ও নবী। ২৯


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এই কিতাবে ইসমাঈলের কথা বর্ণনা করুন, তিনি প্রতিশ্রুতি পালনে সত্যাশ্রয়ী এবং তিনি ছিলেন রসূল, নবী।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

স্মরণ কর, এই কিতাবে ইসমাঈলের কথা, সে তো ছিল প্রতিশ্রুতি পালনে সত্যাশ্রয়ী এবং সে ছিল রাসূল, নবী;


তাফসীরঃ

২৯. পূর্বে ৪৯ নং আয়াতে হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামের আওলাদের মধ্যে পুত্র ইসহাক আলাইহিস সালাম ও পৌত্র ইয়াকুব আলাইহিস সালামের নাম তো উল্লেখ করা হয়েছে, কিন্তু হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালামের নাম উল্লেখ করা হয়নি। এর কারণ খুব সম্ভব এই যে, তাঁর বিশেষ গুরুত্বের কারণে স্বতন্ত্রভাবে তাঁর বৃত্তান্ত বর্ণনা করা উদ্দেশ্য ছিল, যা এ আয়াতে করা হয়েছে। এমনিতে প্রত্যেক নবীই ওয়াদা রক্ষায় সত্যনিষ্ঠ হয়ে থাকেন। তা সত্ত্বেও হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালামকে বিশেষভাবে এ বিশেষণে বিশেষিত করা হয়েছে এ সম্পর্কিত তাঁর এক অসাধারণ ঘটনার কারণে। যখন আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে তাঁকে যবাহ করার হুকুম দেওয়া হয়েছিল, তখন তিনি পিতার সঙ্গে ওয়াদা করেছিলেন, যবাহকালে তিনি পরিপূর্ণ ধৈর্য ধারণ করবেন (সূরা সাফফাতে সে ঘটনা বিস্তারিত আসবে)। পিতা যখন আল্লাহ তাআলার নির্দেশ মত তাকে যবাহ করতে উদ্যত হন এবং তিনি সাক্ষাত মৃত্যুর সম্মুখীন হন, তখনও নিজ ওয়াদার কথা ভোলেননি; বরং ধৈর্য-স্থৈর্যের চরম পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করেছিলেন। মুফাসসিরগণ তাঁর ওয়াদা রক্ষার এ ছাড়া আরও কয়েকটি ঘটনা উল্লেখ করেছেন।


৫৫


وَكَانَ يَأْمُرُ أَهْلَهُ بِالصَّلَاةِ وَالزَّكَاةِ وَكَانَ عِندَ رَبِّهِ مَرْضِيًّا


ওয়া কা-না ইয়া’মুরু আহলাহূবিসসালা-তি ওয়াঝঝাকা-তি ওয়া কা-না ‘ইনদা রাব্বিহী মার দিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

সে নিজ পরিবারবর্গকে সালাত ও যাকাত আদায়ের হুকুম করত এবং সে ছিল নিজ প্রতিপালকের সন্তোষভাজন।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তিনি তাঁর পরিবারবর্গকে নামায ও যাকাত আদায়ের নির্দেশ দিতেন এবং তিনি তাঁর পালনকর্তার কাছে পছন্দনীয় ছিলেন।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

সে তার পরিজনবর্গকে সালাত ও যাকাতের নির্দেশ দিত এবং সে ছিল তার প্রতিপালকের সন্তোষভাজন।


৫৬


وَاذْكُرْ فِي الْكِتَابِ إِدْرِيسَ ۚ إِنَّهُ كَانَ صِدِّيقًا نَّبِيًّا


ওয়াযকুর ফিল কিতা-বি ইদরীছা ইন্নাহূকা-না সিদ্দীকান নাবিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এ কিতাবে ইদরীসের বৃত্তান্তও বিবৃত কর। নিশ্চয়ই সে ছিল একজন সত্যনিষ্ঠ নবী!


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এই কিতাবে ইদ্রীসের কথা আলোচনা করুন, তিনি ছিলেন সত্যবাদী নবী।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

স্মরণ কর, এই কিতাবে ইদ্রীসের কথা, সে ছিল সত্যনিষ্ঠ, নবী;


৫৭


وَرَفَعْنَاهُ مَكَانًا عَلِيًّا


ওয়া রাফা‘না-হু মাকা-নান ‘আলিয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আমি তাকে এক উচ্চ মর্যাদায় উন্নীত করেছিলাম। ৩০


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি তাকে উচ্চে উন্নীত করেছিলাম।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এবং আমি তাকে উন্নীত করেছিলাম উচ্চ মর্যাদায়।


তাফসীরঃ

৩০. ‘উচ্চ মর্যাদা’ দ্বারা নবুওয়াত ও রিসালাত এবং তাকওয়া ও পরহেজগারী বোঝানো হয়েছে। মানুষের পক্ষে এটাই সর্বোচ্চ মর্যাদা। হযরত ইদরীস আলাইহিস সালামের যামানায় আল্লাহ তাআলা তাঁকেই এ মর্যাদা দান করেছিলেন। বাইবেলে তাঁর সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে যে, আল্লাহ তাআলা তাঁকে জীবিত অবস্থায় আসমানে তুলে নিয়েছিলেন। কোন-কোন তাফসীর গ্রন্থেও এ রকমের কিছু রিওয়ায়াত উদ্ধৃত হয়েছে এবং তার ভিত্তিতে কেউ কেউ বলছেন, আয়াতের ইশারা সে ঘটনার দিকেই। কিন্তু সনদের বিচারে সেসব রিওয়ায়াত নিতান্তই দুর্বল, যার উপর মোটেই নির্ভর করা যায় না।


৫৮


أُولَـٰئِكَ الَّذِينَ أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَيْهِم مِّنَ النَّبِيِّينَ مِن ذُرِّيَّةِ آدَمَ وَمِمَّنْ حَمَلْنَا مَعَ نُوحٍ وَمِن ذُرِّيَّةِ إِبْرَاهِيمَ وَإِسْرَائِيلَ وَمِمَّنْ هَدَيْنَا وَاجْتَبَيْنَا ۚ إِذَا تُتْلَىٰ عَلَيْهِمْ آيَاتُ الرَّحْمَـٰنِ خَرُّوا سُجَّدًا وَبُكِيًّا ۩


উলাইকাল্লাযীনা আন‘আমাল্লা-হু ‘আলাইহিম মিনান নাবিইয়ীনা মিন যুররিইইয়াতি আ-দামা ওয়া মিম্মান হামালনা-মা‘আ নূহিওঁ ওয়া মিন যুররিইইয়াতি ইবরা-হীমা ওয়া ইছরাঈলা ওয়া মিম্মান হাদাইনা-ওয়াজতাবাইনা- ইযা-তুতলা-‘আলাইহিম আয়া-তুররাহমা-নি খাররূ ছুজ্জাদাওঁ ওয়া বুকিইইয়া-(ছিজদাহ-৫)।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আদমের বংশধরদের মধ্যে এরাই সেই সকল নবী, যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন। এদের কতিপয় সেই সব লোকের বংশধর, যাদেরকে আমি নূহের সাথে (নৌকায়) আরোহণ করিয়েছিলাম এবং কতিপয় ইবরাহীম ও ইসরাঈল (অর্থাৎ হযরত ইয়াকুব আলাইহিস সালাম)-এর বংশধর। আমি যাদেরকে হিদায়াত দিয়েছিলাম ও (আমার দীনের জন্য) মনোনীত করেছিলাম, এরা তাদের অন্তর্ভুক্ত। তাদের সামনে যখন দয়াময় আল্লাহর আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করা হত, তখন তারা কাঁদতে কাঁদতে সিজদায় লুটিয়ে পড়ত। ৩১


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এরাই তারা-নবীগণের মধ্য থেকে যাদেরকে আল্লাহ তা’আলা নেয়ামত দান করেছেন। এরা আদমের বংশধর এবং যাদেরকে আমি নূহের সাথে নৌকায় আরোহন করিয়েছিলাম, তাদের বংশধর, এবং ইব্রাহীম ও ইসরাঈলের বংশধর এবং যাদেরকে আমি পথ প্রদর্শন করেছি ও মনোনীত করেছি, তাদের বংশোদ্ভূত। তাদের কাছে যখন দয়াময় আল্লাহর আয়াতসমূহ পাঠ করা হত, তখন তারা সেজদায় লুটিয়ে পড়ত এবং ক্রন্দন করত।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরাই তারা, নবীদের মধ্যে যাদেরকে আল্লাহ্ অনুগ্রহ করেছেন, আদমের বংশ হতে ও যাদেরকে আমি নূহের সঙ্গে নৌকায় আরোহণ করিয়েছিলাম এবং ইব্রাহীম ও ইসরাঈলের বংশোদ্ভূত ও যাদেরকে আমি পথনির্দেশ করেছিলাম ও মনোনীত করেছিলাম; তাদের নিকট দয়াময়ের আয়াত আবৃত্তি করা হলে তারা সিজ্দায় লুটিয়ে পড়িত ক্রন্দন করতে করতে।


তাফসীরঃ

৩১. এটা সিজদার আয়াত। যে ব্যক্তি আরবীতে এ আয়াত পড়বে বা শুনবে তার উপর সিজদা ওয়াজিব হয়ে যাবে।


৫৯


۞ فَخَلَفَ مِن بَعْدِهِمْ خَلْفٌ أَضَاعُوا الصَّلَاةَ وَاتَّبَعُوا الشَّهَوَاتِ ۖ فَسَوْفَ يَلْقَوْنَ غَيًّا


ফাখালাফা মিম বা‘দিহিম খালফুনআদা-‘উসসালা-তা ওয়াত তাবা‘উশশাহাওয়া-তি ফাছাওফা ইয়ালকাওনা গাইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তারপর তাদের স্থলাভিষিক্ত হল এমন লোক, যারা নামায নষ্ট করল এবং ইন্দ্রিয়-চাহিদার অনুগামী হল। সুতরাং তারা অচিরেই তাদের পথভ্রষ্টতার সাক্ষাত পাবে। ৩২


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

অতঃপর তাদের পরে এল অপদার্থ পরবর্তীরা। তারা নামায নষ্ট করল এবং কুপ্রবৃত্তির অনুবর্তী হল। সুতরাং তারা অচিরেই পথভ্রষ্টতা প্রত্যক্ষ করবে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এদের পরে এলো অপদার্থ পরবর্তীরা, তারা সালাত নষ্ট করল ও লালসা-পরবশ হল। সুতরাং এরা অচিরেই কুকর্মের শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে,


তাফসীরঃ

৩২. ‘পথভ্রষ্টতার সাক্ষাৎ পাওয়া’-এর অর্থ পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত হওয়ার পরিণামে তারা কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে শাস্তির সম্মুখীন হবে। হযরত ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত আছে যে, ‘গায়্য’ হল জাহান্নামের একটি গর্ত, যার উত্তাপ অত্যন্ত বেশি যদ্দরুন জাহান্নামের অন্যান্য গর্ত আল্লাহ তাআলার কাছে তার থেকে পানাহ চায়- কুরতুবী (-অনুবাদক)


৬০


إِلَّا مَن تَابَ وَآمَنَ وَعَمِلَ صَالِحًا فَأُولَـٰئِكَ يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ وَلَا يُظْلَمُونَ شَيْئًا


ইল্লা-মান তা-বা ওয়া আ-মানা ওয়া ‘আমিলা সা-লিহান ফাউলাইকা ইয়াদখুলূনাল জান্নাতা ওয়ালা-ইউজলামূনা শাইআ-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

অবশ্য যারা তাওবা করেছে, ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে, তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের প্রতি বিন্দুমাত্র জুলুম করা হবে না।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

কিন্তু তারা ব্যতীত, যারা তওবা করেছে, বিশ্বাস স্থাপন করেছে। সুতরাং তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের উপর কোন জুলুম করা হবে না।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

কিন্তু এরা নয়-যারা তওবা করেছে, ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে। এরা তো জান্নাতে প্রবেশ করবে। এদের প্রতি কোন জুলুম করা হবে না।


৬১


جَنَّاتِ عَدْنٍ الَّتِي وَعَدَ الرَّحْمَـٰنُ عِبَادَهُ بِالْغَيْبِ ۚ إِنَّهُ كَانَ وَعْدُهُ مَأْتِيًّا


জান্না-তি ‘আদনি নিল্লাতী ওয়া আ‘দার রাহমা-নু‘ইবা-দাহূবিলগাইবি ইন্নাহূকা-না ওয়া‘দুহূমা’তিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

(তারা প্রবেশ করবে) এমন স্থায়ী উদ্যানরাজিতে, দয়াময় আল্লাহ নিজ বান্দাদেরকে যার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তাদের অলক্ষ্যে। নিশ্চয়ই তাঁর প্রতিশ্রুতি এমন যে, তারা সে পর্যন্ত অবশ্যই পৌঁছবে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তাদের স্থায়ী বসবাস হবে যার ওয়াদা দয়াময় আল্লাহ তাঁর বান্দাদেরকে অদৃশ্যভাবে দিয়েছেন। অবশ্যই তাঁর ওয়াদার তারা পৌঁছাবে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এটা স্থায়ী জান্নাত, যে অদৃশ্য বিষয়ের প্রতিশ্রুতি দয়াময় তাঁর বান্দাদেরকে দিয়েছেন। তাঁর প্রতিশ্রুত বিষয় অবশ্যম্ভাবী।


৬২


لَّا يَسْمَعُونَ فِيهَا لَغْوًا إِلَّا سَلَامًا ۖ وَلَهُمْ رِزْقُهُمْ فِيهَا بُكْرَةً وَعَشِيًّا


লা-ইয়াছমা‘ঊনা ফীহা-লাগওয়ান ইল্লা-ছালা-মাওঁ ওয়ালাহুম রিঝকুহুম ফীহিাবুকরাতাওঁ ওয়া ‘আশিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তারা সেখানে শান্তিমূলক কথা ছাড়া কোন বেহুদা কথা শুনবে না এবং তারা সেখানে সকাল-সন্ধ্যায় জীবিকা লাভ করবে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তারা সেখানে সালাম ব্যতীত কোন অসার কথাবার্তা শুনবে না এবং সেখানে সকাল-সন্ধ্যা তাদের জন্যে রুযী থাকবে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

সেখানে তারা ‘শান্তি’ ব্যতীত কোন অসার বাক্য শুনবে না এবং সেখানে সকাল-সন্ধ্যা তাদের জন্যে থাকবে জীবনোপকরণ।


৬৩


تِلْكَ الْجَنَّةُ الَّتِي نُورِثُ مِنْ عِبَادِنَا مَن كَانَ تَقِيًّا


তিলকাল জান্নাতুল্লাতী নূরিছুমিন ‘ইবা-দিনা-মান কা-না তাকিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এটাই সেই জান্নাত যার ওয়ারিশ বানাব আমার বান্দাদের মধ্যে যারা মুত্তাকী তাদেরকে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এটা ঐ জান্নাত যার অধিকারী করব আমার বান্দাদের মধ্যে পরহেযগারদেরকে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এই সেই জান্নাত, যার অধিকারী করব আমার বান্দাদের মধ্যে মুত্তাকীদেরকে।


৬৪


وَمَا نَتَنَزَّلُ إِلَّا بِأَمْرِ رَبِّكَ ۖ لَهُ مَا بَيْنَ أَيْدِينَا وَمَا خَلْفَنَا وَمَا بَيْنَ ذَٰلِكَ ۚ وَمَا كَانَ رَبُّكَ نَسِيًّا


ওয়ামা-নাতানাঝঝালুইল্লা-বিআমরি রাব্বিকা লাহূমা-বাইনা আইদীনা-ওয়ামাখালফানা ওয়ামা-বাইনা যা-লিকা ওয়ামা-কা-না রাব্বুকা নাছিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

(এবং ফেরেশতাগণ তোমাকে বলে,) আমরা আপনার প্রতিপালকের হুকুম ছাড়া অবতরণ করি না। ৩৩ যা-কিছু আমাদের সামনে, যা-কিছু আমাদের পিছনে এবং যা-কিছু এ দু’য়ের মাঝখানে আছে, তা সব তাঁরই মালিকানাধীন। তোমার প্রতিপালক ভুলে যাওয়ার নন।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

(জিব্রাইল বললঃ) আমি আপনার পালনকর্তার আদেশ ব্যতীত অবতরণ করি না, যা আমাদের সামনে আছে, যা আমাদের পশ্চাতে আছে এবং যা এ দুই-এর মধ্যস্থলে আছে, সবই তাঁর এবং আপনার পালনকর্তা বিস্মৃত হওয়ার নন।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘আমরা আপনার প্রতিপালকের আদেশ ব্যতীত অবতরণ করি না; যা আমাদের সামনে ও পশ্চাতে আছে ও যা এই দুই-এর অন্তর্বর্তী তা তাঁরই এবং আপনার প্রতিপালক ভুলার নন।’


তাফসীরঃ

৩৩. বুখারী শরীফে বর্ণিত হয়েছে, একবার হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আসতে বেশ বিলম্ব করছিলেন। তখন কতিপয় কাফের এই বলে উপহাস করছিল যে, তার আল্লাহ তাকে পরিত্যাগ করেছে (নাউযুবিল্লাহ)। অবশেষে হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম যখন আসলেন মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বললেন, আপনি আমার কাছে আরও ঘন ঘন আসেন না কেন? সেই প্রেক্ষাপটেই এ আয়াত নাযিল হয়েছে। এতে আল্লাহ তাআলা হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালামের উত্তর বর্ণনা করেছেন যে, আমাদের অবতরণ সর্বদা আল্লাহ তাআলার আদেশক্রমেই হয়ে থাকে। বিশ্বজগতের পক্ষে কখন কোনটা কল্যাণকর একমাত্র তিনিই তা ভালো জানেন, যেহেতু আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী এবং এদের অন্তর্গত সবকিছুর মালিক তিনিই। আমার আগমন কখনও দেরীতে হলে তার পেছনেও আল্লাহ তাআলার কোন হেকমত নিহিত থাকে, যা কেবল তিনিই জানেন। আমার আগমন বিলম্বিত হওয়ার কারণ এ নয় যে, তিনি ওহী নাযিল করার বিষয়টা ভুলে গেছেন (নাউযুবিল্লাহ)।


৬৫


رَّبُّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا فَاعْبُدْهُ وَاصْطَبِرْ لِعِبَادَتِهِ ۚ هَلْ تَعْلَمُ لَهُ سَمِيًّا


রাব্বুছ ছামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদিওয়ামা-বাইনাহুমা-ফা‘বুদ হু ওয়াসতাবির লি‘ইবা-দাতিহী হাল তা‘লামুলাহূছামিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর মালিক এবং এ দু’য়ের মাঝখানে যা আছে তারও। সুতরাং তুমি তাঁর ইবাদত কর এবং তাঁর ইবাদতে অবিচলিত থাক। তোমার জানা মতে তাঁর সমগুণসম্পন্ন কেউ আছে কি?


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তিনি নভোমন্ডল, ভূমন্ডলে এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবার পালনকর্তা। সুতরাং তাঁরই বন্দেগী করুন এবং তাতে দৃঢ় থাকুন আপনি কি তাঁর সমনাম কাউকে জানেন?


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তিনি আকাশমণ্ডলী, পৃথিবী ও তাদের অন্তর্বর্তী যা কিছু, তার প্রতিপালক। সুতরাং তাঁরই ‘ইবাদত কর এবং তাঁর ‘ইবাদতে ধৈর্যশীল থাক। তুমি কি তাঁর সমগুন সম্পন্ন কাউকেও জান ?


৬৬


وَيَقُولُ الْإِنسَانُ أَإِذَا مَا مِتُّ لَسَوْفَ أُخْرَجُ حَيًّا


ওয়া ইয়াকূলুল ইনছা-নুআইযা-মা-মিত্তুলাছাওফা উখরাজুহাইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আর মানুষ (অর্থাৎ কাফেরগণ) বলে, আমার যখন মৃত্যু হয়ে যাবে, তখন বাস্তবিকই কি আমাকে আবার জীবিতরূপে উঠানো হবে?


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

মানুষ বলেঃ আমার মৃত্যু হলে পর আমি কি জীবিত অবস্থায় পুনরুত্থিত হব?


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

মানুষ বলে, ‘আমার মৃত্যু হলে আমি কি জীবিত অবস্থায় উত্থিত হব ?’


৬৭


أَوَلَا يَذْكُرُ الْإِنسَانُ أَنَّا خَلَقْنَاهُ مِن قَبْلُ وَلَمْ يَكُ شَيْئًا


আওয়ালা-ইয়াযকুরুল ইনছা-নুআন্না-খালাকনা-হু মিন কাবলুওয়া লাম ইয়াকুশাইআ-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

মানুষের কি স্মরণ পড়ে না যে, আমি তাকে পূর্বে সৃষ্টি করেছি, যখন সে কিছুই ছিল না? ৩৪


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

মানুষ কি স্মরণ করে না যে, আমি তাকে ইতি পূর্বে সৃষ্টি করেছি এবং সে তখন কিছুই ছিল না।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

মানুষ কি স্মরণ করে না যে, আমি তাকে পূর্বে সৃষ্টি করেছি যখন সে কিছুই ছিল না ?


তাফসীরঃ

৩৪. অর্থাৎ, এই মানুষের তো এক সময় অস্তিত্বমাত্র ছিল না। আল্লাহ তাআলা নিজ কুদরতে তাকে সৃষ্টি করেছেন। অস্তিত্বপ্রাপ্তির পর সে যখন মারা যায়, তার দেহের কিছু না কিছু যেভাবেই হোক অবশিষ্ট থাকে। এ অবস্থায় তাকে পুনরায় জীবিত করে তোলা কি করে কঠিন হতে পারে, যখন আল্লাহ তাআলা ইতঃপূর্বে তাকে বিলকুল নাস্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন?


৬৮


فَوَرَبِّكَ لَنَحْشُرَنَّهُمْ وَالشَّيَاطِينَ ثُمَّ لَنُحْضِرَنَّهُمْ حَوْلَ جَهَنَّمَ جِثِيًّا


ফাওয়ারাব্বিকা লানাহশুরান্নাহুম ওয়াশশায়া-তীনা ছু ম্মা লানুহদিরান্নাহুম হাওলা জাহান্নামা জিছিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

সুতরাং শপথ তোমার প্রতিপালকের। আমি তাদেরকে তাদের শয়তানদেরসহ অবশ্যই সমবেত করব ৩৫ তারপর অবশ্যই তাদেরকে জাহান্নামের আশেপাশে নতজানু অবস্থায় উপস্থিত করব।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

সুতরাং আপনার পালনকর্তার কসম, আমি অবশ্যই তাদেরকে এবং শয়তানদেরকে একত্রে সমবেত করব, অতঃপর অবশ্যই তাদেরকে নতজানু অবস্থায় জাহান্নামের চারপাশে উপস্থিত করব।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

সুতরাং শপথ তোমার প্রতিপালকের। আমি তো এদেরকে এবং শয়তানদেরকেসহ একত্র সমবেত করবই ও পরে আমি এদেরকে নতজানু অবস্থায় জাহান্নামের চতুর্দিকে উপস্থিত করবই।


তাফসীরঃ

৩৫. অর্থাৎ, সেই সকল শয়তানকে, যারা তাদেরকে বিপথগামী করার তৎপরতায় লিপ্ত ছিল। কিয়ামতের দিন প্রত্যেক পথভ্রষ্ট ব্যক্তির সাথে সেই শয়তানকেও উপস্থিত করা হবে, যে তাকে গোমরাহ করেছিল (তাফসীরে উসমানী)।


৬৯


ثُمَّ لَنَنزِعَنَّ مِن كُلِّ شِيعَةٍ أَيُّهُمْ أَشَدُّ عَلَى الرَّحْمَـٰنِ عِتِيًّا


ছু ম্মা লানানঝি‘আন্না মিন কুল্লি শী‘আতিন আইয়ুহুম আশাদ্দু‘আলার রাহমা-নি ‘ইতিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তারপর তাদের প্রত্যেক দলের মধ্যে যারা দয়াময় আল্লাহর অবাধ্যতায় প্রচণ্ডতম, তাদেরকে টেনে বের করব।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

অতঃপর প্রত্যেক সম্প্রদায়ের মধ্যে যে দয়াময় আল্লাহর সর্বাধিক অবাধ্য আমি অবশ্যই তাকে পৃথক করে নেব।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরপর প্রত্যেক দলের মধ্যে যে দয়াময়ের প্রতি সর্বাধিক অবাধ্য আমি তাকে টেনে বের করবই।


৭০


ثُمَّ لَنَحْنُ أَعْلَمُ بِالَّذِينَ هُمْ أَوْلَىٰ بِهَا صِلِيًّا


ছু ম্মা লানাহনুআ‘লামুবিল্লাযীনা হুম আওলা-বিহা-সিলিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আর সেই সকল লোক সম্পর্কে আমিই ভালো জানি, যারা জাহান্নামে পৌঁছার বেশি উপযুক্ত।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

অতঃপর তাদের মধ্যে যারা জাহান্নামে প্রবেশের অধিক যোগ্য, আমি তাদের বিষয়ে ভালোভাবে জ্ঞাত আছি।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এবং আমি তো এদের মধ্যে যারা জাহান্নামে প্রবেশের অধিকতর যোগ্য তাদের বিষয় ভাল জানি।


৭১


وَإِن مِّنكُمْ إِلَّا وَارِدُهَا ۚ كَانَ عَلَىٰ رَبِّكَ حَتْمًا مَّقْضِيًّا


ওয়া ইম মিনকুম ইল্লা-ওয়া-রিদুহা- কা-না ‘আলা-রাব্বিকা হাতমাম মাকদিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তোমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই, যে তা (অর্থাৎ জাহান্নাম) অতিক্রম করবে না। ৩৬ এটা তোমার প্রতিপালকের পক্ষে এক চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তোমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই যে তথায় পৌছবে না। এটা আপনার পালনকর্তার অনিবার্য ফায়সালা।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এবং তোমাদের প্রত্যেকেই তা অতিক্রম করবে; এটা তোমার প্রতিপালকের অনিবার্য সিদ্ধান্ত।


তাফসীরঃ

৩৬. এর দ্বারা পুলসিরাত বোঝানো হয়েছে, যা জাহান্নামের উপর স্থাপিত। মুসলিম-কাফির ও পুণ্যবান-পাপিষ্ঠ নির্বিশেষে সকলকেই তা পার হতে হবে। হ্যাঁ, পার হতে গিয়ে কার অবস্থা কেমন হবে তা পরবর্তী আয়াতে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। মুমিন ও নেককার লোক তা এমনভাবে পার হবে যে, জাহান্নামে কোন কষ্ট তাদেরকে স্পর্শ করবে না। তারা নিরাপদে তা পার হয়ে জান্নাতে চলে যাবে। পক্ষান্তরে যারা কাফের ও পাপী, তারা তা পার হতে পারবে না। তারা জাহান্নামে পতিত হবে। অতঃপর যাদের অন্তরে ঈমান থাকবে, শাস্তি ভোগের পর তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে আনা হবে। কিন্তু যাদের অন্তরে বিন্দুমাত্র ঈমান থাকবে না তারা মুক্তি পাবে না। চিরকাল তাদেরকে জাহান্নামেই থাকতে হবে। আল্লাহ তাআলার কাছে আমরা তা থেকে পানাহ চাই। পুণ্যবানদেরকে জাহান্নাম পার হতে হবে কেন? এটা এজন্য যে, জাহান্নামের বিভীষিকাময় দৃশ্য দেখার পর যখন জান্নাতে যাবে, তখন জান্নাতের মর্যাদা তারা ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারবে।


৭২


ثُمَّ نُنَجِّي الَّذِينَ اتَّقَوا وَّنَذَرُ الظَّالِمِينَ فِيهَا جِثِيًّا


ছু ম্মা নুনাজজিল্লাযীনাততাকাওঁ ওয়া নাযারুজ্জা-লিমীনা ফীহা-জিছিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

অতঃপর যারা তাকওয়া অবলম্বন করেছে তাদেরকে আমি নিষ্কৃতি দেব আর জালিমদেরকে তাতে (জাহান্নামে) মুখ থুবড়ানো অবস্থায় ফেলে রাখব।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

অতঃপর আমি পরহেযগারদেরকে উদ্ধার করব এবং জালেমদেরকে সেখানে নতজানু অবস্থায় ছেড়ে দেব।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

পরে আমি মুত্তাকীদেরকে উদ্ধার করব এবং জালিমদেরকে সেখানে নতজানু অবস্থায় রেখে দিব।


৭৩


وَإِذَا تُتْلَىٰ عَلَيْهِمْ آيَاتُنَا بَيِّنَاتٍ قَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا لِلَّذِينَ آمَنُوا أَيُّ الْفَرِيقَيْنِ خَيْرٌ مَّقَامًا وَأَحْسَنُ نَدِيًّا


ওয়া ইযা-তুতলা-আলাইহিম আ-য়া-তুনা-বাইয়িনা-তিন কা-লাল্লাযীনা কাফারূলিল্লাযীনা আ-মানূ আইয়ুল ফারীকাইনি খাইরুম মাকা-মাওঁ ওয়া আহছানুনাদিইইয়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তাদের সামনে যখন আমার সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করা হয়, তখন কাফেরগণ মুমিনদেরকে বলে, বল, আমাদের এ দুই দলের মধ্যে কোন দল মর্যাদায় শ্রেষ্ঠতর এবং মজলিস হিসেবে উৎকৃষ্ট? ৩৭


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যখন তাদের কাছে আমার সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করা হয়, তখন কাফেররা মুমিনদেরকে বলেঃ দুই দলের মধ্যে কোনটি মর্তবায় শ্রেষ্ঠ এবং কার মজলিস উত্তম?


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এদের নিকট আমার স্পষ্ট আয়াতসমূহ আবৃত্ত হলে কাফিররা মু’মিনদেরকে বলে, ‘দুই দলের মধ্যে কোন্টি মর্যাদায় শ্রেষ্ঠতর ও মজলিস হিসেবে উত্তম ?’


তাফসীরঃ

৩৭. অর্থাৎ যখন কুরআনের সুস্পষ্ট ও বলিষ্ঠ আয়াত শুনে লা-জবাব হয়ে যেত তখন তারা দুনিয়ার বিত্ত-বৈভব ও ঠাট-বাট দ্বারা গৌরব দেখাত এবং ধনজনের প্রাচুর্যকে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ হিসেবে পেশ করত। পরের আয়াতে আল্লাহ তাআলা এরই জবাব দিয়েছেন। -অনুবাদক


৭৪


وَكَمْ أَهْلَكْنَا قَبْلَهُم مِّن قَرْنٍ هُمْ أَحْسَنُ أَثَاثًا وَرِئْيًا


ওয়াকাম আহলাকনা-কাবলাহুম মিন কারনিনহুম আহছানুআছা-ছাওঁ ওয়ারি’য়া-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

(তারা কি দেখে না) তাদের আগে আমি কত মানবগোষ্ঠীকে ধ্বংস করেছি, যারা নিজেদের আসবাব-উপকরণ ও বাহ্য আড়ম্বরে তাদের অপেক্ষা উন্নত ছিল।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তাদের পূর্বে কত মানব গোষ্ঠীকে আমি বিনাশ করেছি, তারা তাদের চাইতে সম্পদে ও জাঁক-জমকে শ্রেষ্ঠ ছিল।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এদের পূর্বে আমি কত মানবগোষ্ঠীকে বিনাশ করেছি-যারা এদের অপেক্ষা সম্পদ ও বাহ্যদৃষ্টিতে শ্রেষ্ঠ ছিল।


৭৫


قُلْ مَن كَانَ فِي الضَّلَالَةِ فَلْيَمْدُدْ لَهُ الرَّحْمَـٰنُ مَدًّا ۚ حَتَّىٰ إِذَا رَأَوْا مَا يُوعَدُونَ إِمَّا الْعَذَابَ وَإِمَّا السَّاعَةَ فَسَيَعْلَمُونَ مَنْ هُوَ شَرٌّ مَّكَانًا وَأَضْعَفُ جُندًا


কুল মান কা-না ফিদ্দালা-লাতি ফালইয়ামদুদ লাহুর রাহমা-নুমাদ্দান হাত্তাইযারাআও মা-ইউ‘আদূ না ইম্মাল ‘আযা-বা ওয়া ইম্মাছছা-‘আতা ফাছাইয়া‘লামূনা মান হুওয়া শাররুম মাকা-নাওঁ ওয়া আদ‘আফুজুনদা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

বলে দাও, যারা বিভ্রান্তিতে পতিত, তাদের জন্য এটাই সমীচীন যে, দয়াময় আল্লাহ তাদেরকে প্রচুর ঢিল দিতে থাকবেন। পরিশেষে তাদেরকে যে বিষয়ে সতর্ক করা হচ্ছে তা যখন নিজেরা দেখে নেবে, তা শাস্তি হোক বা কিয়ামত, তখন তারা জানতে পারবে কে মর্যাদায় নিকৃষ্ট এবং কে বাহিনীর দিক দিয়ে বেশি দুর্বল।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

বলুন, যারা পথভ্রষ্টতায় আছে, দয়াময় আল্লাহ তাদেরকে যথেষ্ট অবকাশ দেবেন; এমনকি অবশেষে তারা প্রত্যক্ষ করবে যে বিষয়ে তাদেরকে ওয়াদা দেয়া হচ্ছে, তা আযাব হোক অথবা কেয়ামতই হোক। সুতরাং তখন তারা জানতে পারবে কে মর্তবায় নিকৃষ্ট ও দলবলে দূর্বল।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

বল, ‘যারা বিভ্রান্তিতে আছে, দয়াময় তাদেরকে প্রচুর ঢিল দিবেন যতক্ষণ না তারা, যে বিষয়ে তাদেরকে সতর্ক করা হচ্ছে তা প্রত্যক্ষ করবে, তা শাস্তি হোক বা কিয়ামতই হোক। এরপর তারা জানতে পারবে, কে মর্যাদায় নিকৃষ্ট ও কে দলবলে দুর্বল।


৭৬


وَيَزِيدُ اللَّهُ الَّذِينَ اهْتَدَوْا هُدًى ۗ وَالْبَاقِيَاتُ الصَّالِحَاتُ خَيْرٌ عِندَ رَبِّكَ ثَوَابًا وَخَيْرٌ مَّرَدًّا


ওয়া ইয়াঝীদুল্লা-হু ল্লাযী নাহতাদাও হুদাওঁ ওয়াল বা-কিয়া-তুসসা-লিহা-তুখাইরুন ‘ইনদা রাব্বিকা ছাওয়া-বাও ওয়াখাইরুম মারাদ্দা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আর যারা সরল পথ অবলম্বন করেছে, আল্লাহ তাদেরকে হিদায়াতের ক্ষেত্রে অধিকতর উৎকর্ষ দান করেন এবং যে সৎকর্ম স্থায়ী, তোমার প্রতিপালকের কাছে তা প্রতিদানে উৎকৃষ্ট এবং পরিণামেও শ্রেষ্ঠতর।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যারা সৎপথে চলে আল্লাহ তাদের পথপ্রাপ্তি বৃদ্ধি করেন এবং স্থায়ী সৎকর্মসমূহ তোমার পালনকর্তার কাছে সওয়াবের দিক দিয়ে শ্রেষ্ঠ এবং প্রতিদান হিসেবেও শ্রেষ্ট।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এবং যারা সৎপথে চলে আল্লাহ্ তাদেরকে অধিক হিদায়াত দান করেন; এবং স্থায়ী সৎকর্ম তোমার প্রতিপালকের পুরস্কার প্রাপ্তির জন্যে শ্রেষ্ঠ এবং প্রতিদান হিসেবেও শ্রেষ্ঠ।


৭৭


أَفَرَأَيْتَ الَّذِي كَفَرَ بِآيَاتِنَا وَقَالَ لَأُوتَيَنَّ مَالًا وَوَلَدًا


আফারাআইতাল্লাযী কাফারা বিআ-য়া-তিনা-ওয়াকা-লা লাঊতাইয়ান্না মা-লাওঁ ওয়া ওয়ালাদা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তুমি কি সেই ব্যক্তিকে দেখেছ, যে আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করে এবং বলে (আখেরাতেও) আমাকে অবশ্যই সম্পদ ও সন্তান দেওয়া হবে। ৩৮


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আপনি কি তাকে লক্ষ্য করেছেন যে, আমার নিদর্শনাবলীতে বিশ্বাস করে না এবং বলেঃ আমাকে অর্থ-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি অবশ্যই দেয়া হবে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তুমি কি লক্ষ্য করেছ সেই ব্যক্তিকে, যে আমার আয়াতসমূহ প্রত্যাখ্যান করেছে এবং সে বলে, ‘আমাকে ধনসম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দেওয়া হবেই ?’


তাফসীরঃ

৩৮. সহীহ বুখারীতে হযরত খাব্বাব ইবনুল আরাত্ত্ (রাযি.) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি মক্কা মুকাররমায় লৌহ কর্মের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করতাম। সেই সুবাদে মুশরিকদের এক সর্দারের কাছে আমার কিছু পাওনা সাব্যস্ত হয়েছিল। তার নাম ছিল ‘আস ইবন ওয়াইল। আমি তা চাইতে গেলে সে বলল, তুমি যতক্ষণ পর্যন্ত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে) অস্বীকার না করবে ততক্ষণ তোমার টাকা দেব না। আমি বললাম, তুমি যদি মর, তারপর আবার জীবিত হও তবুও আমি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অস্বীকার করতে পারব না। ‘আস ইবন ওয়াইল এ কথার উত্তরে বলল, মৃত্যুর পর আমি পুনরুজ্জীবিত হব? তিনি বললেন, অবশ্যই। ‘আস বলল, ঠিক আছে মৃত্যুর পর যদি আমি জীবিত হই সেখানেও আমার প্রচুর অর্থ-সম্পদ ও সন্তানাদি থাকবে। কাজেই তখনই আমি তোমার পাওনা পরিশোধ করব। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এ আয়াত নাযিল হয়েছে।


৭৮

আরো পড়ুন :-

স্মরণ শক্তি বৃদ্ধির দোয়া,মেধা বৃদ্ধির দোয়া,স্মৃতি শক্তি বাড়ানোর দোয়া!নামাজের পর ২১ বাড় পড়ুন

গর্ভের সন্তান কখন নষ্ট করা যাবে?,কতদিনের বাচ্চা নষ্ট করলে গুনাহ হবে না?, বাচ্চা নষ্ট করা জায়েজ আছে?, 

দোয়াটি পড়লে সাথে সাথে রাগ কমে যায়, রাগ কমানোর দোয়া,শিশুদের রাগ কমানোর আমল

(ads2)

(getButton) #text=(আল কোরআন বাংলা অনুবাদ সহ এক সাথে ) #icon=(demo) #size=(2)

أَطَّلَعَ الْغَيْبَ أَمِ اتَّخَذَ عِندَ الرَّحْمَـٰنِ عَهْدًا


আততালা‘আল গাইবা আমিত্তাখাযা ‘ইনদার রাহমা-নি ‘আহদা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তবে কি সে অদৃশ্য জগতে উঁকি মেরে দেখেছে, না কি সে দয়াময় আল্লাহর থেকে কোন প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করেছে?


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

সে কি অদৃশ্য বিষয় জেনে ফেলেছে, অথবা দয়াময় আল্লাহর নিকট থেকে কোন প্রতিশ্রুতি প্রাপ্ত হয়েছে?


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

সে কি অদৃশ্য সম্বন্ধে অবহিত হয়েছে বা দয়াময়ের নিকট হতে প্রতিশ্রুতি লাভ করেছে ?


৭৯


كَلَّا ۚ سَنَكْتُبُ مَا يَقُولُ وَنَمُدُّ لَهُ مِنَ الْعَذَابِ مَدًّا


কাল্লা- ছানাকতুবুমা-ইয়াকূলুওয়ানামুদ্দুলাহূমিনাল ‘আযা-বি মাদ্দা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

কখনও নয়। সে যা কিছু বলছে আমি তাও লিখে রাখব এবং তার শাস্তি আরও বৃদ্ধি করে দেব।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

না, এটা ঠিক নয়। সে যা বলে আমি তা লিখে রাখব এবং তার শাস্তি দীর্ঘায়িত করতে থাকব।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

কখনই নয়, তারা যা বলে আমি তা লিখে রাখিব এবং তাদের শাস্তি বৃদ্ধি করতে থাকব।


৮০


وَنَرِثُهُ مَا يَقُولُ وَيَأْتِينَا فَرْدًا


ওয়া নারিছুহূমা-ইয়াকূ লুওয়া ইয়া’তীনা-ফারদা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এবং সে যার কথা বলছে, তার (অর্থাৎ সেই ধন ও জনের) ওয়ারিশ আমিই হব। আর সে একাকীই আমার কাছে আসবে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

সে যা বলে, মৃত্যুর পর আমি তা নিয়ে নেব এবং সে আমার কাছে আসবে একাকী।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

সে যে বিষয়ের কথা বলে তা থাকবে আমার অধিকারে এবং সে আমার নিকট আসবে একা।


৮১


وَاتَّخَذُوا مِن دُونِ اللَّهِ آلِهَةً لِّيَكُونُوا لَهُمْ عِزًّا


ওয়াত্তাখাযূমিন দূনিল্লা-হি আ-লিহাতাল লিইয়াকূনূলাহুম ‘ইঝঝা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তারা আল্লাহ ছাড়া অন্যান্য মাবুদ গ্রহণ করেছে এজন্য, যাতে তারা তাদের সহায়ক হতে পারে। ৩৯


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তারা আল্লাহ ব্যতীত অন্যান্য ইলাহ গ্রহণ করেছে, যাতে তারা তাদের জন্যে সাহায্যকারী হয়।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তারা আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য ইলাহ্ গ্রহণ করে এইজন্যে, যাতে এরা তাদের সহায় হয় ;


তাফসীরঃ

৩৯. মুশরিকরা বলত, আমরা লাত, উযযা প্রভৃতি প্রতিমা ও অন্যান্য উপাস্যদের ইবাদত তো এজন্য করি যে, তারা আল্লাহ তাআলার কাছে আমাদের জন্য সুপারিশ করবে (সূরা ইউনুস ১৮ : ১০)। এ আয়াতে তাদের সেই বিশ্বাসের প্রতিই ইঙ্গিত করা হয়েছে। উত্তরে বলা হচ্ছে, তারা যে সব-দেবীর উপর ভরসা করে বসে আছে, কিয়ামতের দিন তারা এ কথা স্বীকারই করবে না যে, তাদের ইবাদত করা হত। তারা সুপারিশ করবে তো দূরের কথা, বরং সে দিন তারা এ পূজারীদের বিরোধী হয়ে যাবে। সূরা নাহলেও (১৬ : ৮৬) এ বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। সেখানে আরয করা হয়েছিল, খুব সম্ভব আল্লাহ তাআলা তাদের উপাস্যদেরকে বাকশক্তি দান করবেন। ফলে তারা দ্ব্যর্থহীন ঘোষণা দেবে যে, তারা মিথ্যাবাদী। কেননা দুনিয়ায় নিষ্প্রাণ হওয়ার কারণে তাদের খবরই ছিল না যে, তাদের ইবাদত করা হচ্ছে। এমনও হতে পারে যে, তারা তাদের ভাব-ভঙ্গি দ্বারা একথা বোঝাবে। আর শয়তান তো বাস্তবিক অর্থেই এরূপ কথা বলে তাদের সঙ্গে সম্পর্কহীনতা প্রকাশ করবে।


৮২


كَلَّا ۚ سَيَكْفُرُونَ بِعِبَادَتِهِمْ وَيَكُونُونَ عَلَيْهِمْ ضِدًّا


কাল্লা- ছাইয়াকফুরূনা বি‘ইবা-দাতিহিম ওয়া ইয়াকূনূনা ‘আলাইহিম দিদ্দা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এসব তাদের ভ্রান্ত ধারণা। তারা তো তাদের ইবাদতকেই অস্বীকার করবে এবং উল্টো তাদের বিরোধী হয়ে যাবে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

কখনই নয়, তারা তাদের এবাদত অস্বীকার করবে এবং তাদের বিপক্ষে চলে যাবে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

কখনই নয়; এরা তো তাদের ‘ইবাদত অস্বীকার করবে এবং তাদের বিরোধী হয়ে যাবে।


৮৩


أَلَمْ تَرَ أَنَّا أَرْسَلْنَا الشَّيَاطِينَ عَلَى الْكَافِرِينَ تَؤُزُّهُمْ أَزًّا


আলাম তারা আন্নাআরছালনাশশাইয়া-তীনা ‘আলাল কা-ফিরীনা তাউঝঝুহুম আঝঝা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

(হে নবী!) তুমি কি জ্ঞাত নও আমি কাফেরদের প্রতি শয়তানদেরকে ছেড়ে দিয়েছি, যারা তাদেরকে অবিরত প্ররোচনা দেয়?


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আপনি কি লক্ষ্য করেননি যে, আমি কাফেরদের উপর শয়তানদেরকে ছেড়ে দিয়েছি। তারা তাদেরকে বিশেষভাবে (মন্দকর্মে) উৎসাহিত করে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তুমি কি লক্ষ্য কর নাই যে, আমি কাফিরদের জন্যে শয়তানদেরকে ছেড়ে রেখেছি এদেরকে মন্দ কর্মে বিশেষভাবে প্রলুব্ধ করার জন্যে ?


৮৪


فَلَا تَعْجَلْ عَلَيْهِمْ ۖ إِنَّمَا نَعُدُّ لَهُمْ عَدًّا


ফালা-তা‘জাল ‘আলাইহিম ইন্নামা-না‘উদ্দুলাহুম ‘আদ্দা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

সুতরাং তুমি তাদের ব্যাপারে তাড়াহুড়া করো না। আমি তো তাদের জন্য দিনক্ষণ গুণছি।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

সুতরাং তাদের ব্যাপারে আপনি তাড়াহুড়া করবেন না। আমি তো তাদের গণনা পূর্ণ করছি মাত্র।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

সুতরাং তাদের বিষয়ে তুমি তাড়াতাড়ি কর না। আমি তো গণনা করছি এদের নির্ধারিত কাল,


৮৫


يَوْمَ نَحْشُرُ الْمُتَّقِينَ إِلَى الرَّحْمَـٰنِ وَفْدًا


ইয়াওমা নাহশুরুল মুত্তাকীনা ইলাররাহমা-নি ওয়াফদা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

(সেই দিনকে ভুলো না) যে দিন আমি মুত্তাকীগণকে অতিথিরূপে দয়াময় (আল্লাহ)-এর কাছে একত্র করব।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

সেদিন দয়াময়ের কাছে পরহেযগারদেরকে অতিথিরূপে সমবেত করব,


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যেদিন দয়াময়ের নিকট মুত্তাকীদেরকে সম্মানিত মেহমানরূপে সমবেত করব,


৮৬


وَنَسُوقُ الْمُجْرِمِينَ إِلَىٰ جَهَنَّمَ وِرْدًا


ওয়া নাছূকুল মুজরিমীনা ইলা-জাহান্নামা বিরদা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আর অপরাধীদেরকে পিপাসার্ত অবস্থায় হাঁকিয়ে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাব। ৪০


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এবং অপরাধীদেরকে পিপাসার্ত অবস্থায় জাহান্নামের দিকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাব।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এবং অপরাধীদেরকে তৃষ্ণাতুর অবস্থায় জাহান্নামের দিকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাব।


তাফসীরঃ

৪০. অর্থাৎ যেভাবে উট বা অন্য কোন তৃষ্ণার্ত পশুকে পানির দিকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়, ঠিক সে রকমই তৃষ্ণার্ত অবস্থায় লাঞ্ছনার সাথে তাদেরকে জাহান্নামে হাঁকিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। -অনুবাদক


৮৭


لَّا يَمْلِكُونَ الشَّفَاعَةَ إِلَّا مَنِ اتَّخَذَ عِندَ الرَّحْمَـٰنِ عَهْدًا


লা-ইয়ামলিকূনাশশাফা-‘আতা ইল্লা-মানিত তাখাযা ‘ইনদাররাহমা-নি ‘আহদা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

মানুষ কারও জন্য সুপারিশ করার ক্ষমতা রাখবে না, তারা ছাড়া, যারা দয়াময় (আল্লাহ)-এর নিকট থেকে অনুমতি লাভ করেছে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যে দয়াময় আল্লাহর কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করেছে, সে ব্যতীত আর কেউ সুপারিশ করার অধিকারী হবে না।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যে দয়াময়ের নিকট প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করেছে, সে ব্যতীত অন্য কারও সুপারিশ করার ক্ষমতা থাকবে না।


৮৮


وَقَالُوا اتَّخَذَ الرَّحْمَـٰنُ وَلَدًا


ওয়া কা-লুত তাখাযার রাহমা-নুওয়ালাদা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তারা বলে, দয়াময়ের পুত্র আছে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তারা বলেঃ দয়াময় আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করেছেন।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তারা বলে, ‘দয়াময় সন্তান গ্রহণ করেছেন।’


৮৯


لَّقَدْ جِئْتُمْ شَيْئًا إِدًّا


লাকাদ জি’তুম শাইআন ইদ্দা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তোমরা (যারা এরূপ কথা বলছ, তারা) প্রকৃতপক্ষে অতি গুরুতর কথার অবতারণা করেছ।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

নিশ্চয় তোমরা তো এক অদ্ভুত কান্ড করেছ।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তোমরা তো এমন এক জঘন্য বিষয়ের অবতারণা করেছ;


৯০


تَكَادُ السَّمَاوَاتُ يَتَفَطَّرْنَ مِنْهُ وَتَنشَقُّ الْأَرْضُ وَتَخِرُّ الْجِبَالُ هَدًّا


তাকা-দুছছামা-ওয়া-তুইয়াতাফাততারনা মিনহু ওয়া তানশাক্কুলআরদুওয়া তাখিররুল জিবা-লুহাদ্দা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

অসম্ভব নয় এর কারণে আকাশ ফেটে যাবে, ভূমি বিদীর্ণ হবে এবং পাহাড় ভেঙ্গে-চুরে পড়বে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

হয় তো এর কারণেই এখনই নভোমন্ডল ফেটে পড়বে, পৃথিবী খন্ড-বিখন্ড হবে এবং পর্বতমালা চূর্ণ-বিচুর্ণ হবে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যাতে আকাশমণ্ডলী বিদীর্ণ হয়ে যাবে, পৃথিবী খণ্ড-বিখণ্ড হবে ও পর্বতমণ্ডলী চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে আপতিত হবে,


৯১


أَن دَعَوْا لِلرَّحْمَـٰنِ وَلَدًا


আন দা‘আও লিররাহমা-নি ওয়ালাদা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

যেহেতু তারা দয়াময়ের সন্তান আছে বলে দাবী করে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এ কারণে যে, তারা দয়াময় আল্লাহর জন্যে সন্তান আহবান করে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যেহেতু তারা দয়াময়ের প্রতি সন্তান আরোপ করে।


৯২


وَمَا يَنبَغِي لِلرَّحْمَـٰنِ أَن يَتَّخِذَ وَلَدًا


ওয়ামা-ইয়ামবাগী লির রাহমা-নি আইঁ ইয়াত্তাখিযা ওয়ালাদা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

অথচ এটা দয়াময়ের শান নয় যে, তার সন্তান থাকবে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

অথচ সন্তান গ্রহণ করা দয়াময়ের জন্য শোভনীয় নয়।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

অথচ সন্তান গ্রহণ করা দয়াময়ের জন্যে শোভন নয়।


৯৩


إِن كُلُّ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ إِلَّا آتِي الرَّحْمَـٰنِ عَبْدًا


ইন কুল্লুমান ফিছছামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদিইল্লাআ-তির রাহমা-নি ‘আবদা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে এমন কেউ নেই, যে দয়াময়ের দরবারে বান্দারূপে উপস্থিত হবে না। ৪১


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলে কেউ নেই যে, দয়াময় আল্লাহর কাছে দাস হয়ে উপস্থিত হবে না।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে এমন কেউ নেই, যে দয়াময়ের নিকট বান্দারূপে উপস্থিত হবে না।


তাফসীরঃ

৪১. অর্থাৎ জগতের সকলেই আল্লাহর সৃষ্টি ও তাঁর দাস। সকলেই তাঁর মুখাপেক্ষী ও শাসনাধীন। কিয়ামতের দিন দাসরূপেই সকলে তাঁর সামনে উপস্থিত হবে। তা কোন দাস তার মনিবের পুত্র হয় কি করে? আবার সকলেরই যিনি শাসক ও প্রতিপালক, তার পুত্রেরই বা কি প্রয়োজন থাকতে পারে? -অনুবাদক


৯৪


لَّقَدْ أَحْصَاهُمْ وَعَدَّهُمْ عَدًّا


লাকাদ আহসা-হুম ওয়া ‘আদ্দাহুম ‘আদ্দা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

নিশ্চয়ই তিনি সকলকে বেষ্টন করে রেখেছেন এবং তাদেরকে ভালোভাবে গুণে রেখেছেন।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তাঁর কাছে তাদের পরিসংখ্যান রয়েছে এবং তিনি তাদেরকে গণনা করে রেখেছেন।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তিনি তাদেরকে পরিবেষ্টন করে রেখেছেন এবং তিনি তাদেরকে বিশেষভাবে গণনা করেছেন,


৯৫


وَكُلُّهُمْ آتِيهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَرْدًا


ওয়া কুল্লুহুম আ-তীহি ইয়াওমাল কিয়া-মাতি ফারদা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

কিয়ামতের দিন তাদের প্রত্যেকে তার কাছে একাকী উপস্থিত হবে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

কেয়ামতের দিন তাদের সবাই তাঁর কাছে একাকী অবস্থায় আসবে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এবং কিয়ামত দিবসে এদের সকলেই তাঁর নিকট আসবে একাকী অবস্থায়।


৯৬


إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ سَيَجْعَلُ لَهُمُ الرَّحْمَـٰنُ وُدًّا


ইন্নাল্লাযীনা আ-মানূওয়া ‘আমিলুসসা-লিহা-তি ছাইয়াজ‘আলুলাহুমুর রাহমা-নুউদ্দা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

(তবে) যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে নিশ্চয়ই দয়াময় (আল্লাহ) তাদের জন্য সৃষ্টি করবেন ভালোবাসা। ৪২


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম সম্পাদন করে, তাদেরকে দয়াময় আল্লাহ ভালবাসা দেবেন।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে দয়াময় অবশ্যই তাদের জন্যে সৃষ্টি করবেন ভালবাসা।

আরো পড়ুন :-

স্মরণ শক্তি বৃদ্ধির দোয়া,মেধা বৃদ্ধির দোয়া,স্মৃতি শক্তি বাড়ানোর দোয়া!নামাজের পর ২১ বাড় পড়ুন

গর্ভের সন্তান কখন নষ্ট করা যাবে?,কতদিনের বাচ্চা নষ্ট করলে গুনাহ হবে না?, বাচ্চা নষ্ট করা জায়েজ আছে?, 

দোয়াটি পড়লে সাথে সাথে রাগ কমে যায়, রাগ কমানোর দোয়া,শিশুদের রাগ কমানোর আমল

(ads1)

(getButton) #text=(আল কোরআন বাংলা অনুবাদ সহ এক সাথে ) #icon=(demo) #size=(2)

তাফসীরঃ

৪২. এখন তো মুসলিমগণ কঠিন সময় অতিক্রম করছে, কাফেরগণ সর্বক্ষণ তাদের শত্রুতা করে যাচ্ছে। কিন্তু সে দিন দূরে নয় যে দিন মানব সাধারণের অন্তরে তাদের প্রতি গভীর মহব্বত ও ভালোবাসা সৃষ্টি হয়ে যাবে।


৯৭


فَإِنَّمَا يَسَّرْنَاهُ بِلِسَانِكَ لِتُبَشِّرَ بِهِ الْمُتَّقِينَ وَتُنذِرَ بِهِ قَوْمًا لُّدًّا


ফাইন্নামা-ইয়াছছারনা-হুবিলিছা-নিকা লিতুবাশশিরা বিহিল মুত্তাকীনা ওয়া তুনযিরা বিহী কাওমাল লুদ্দা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

সুতরাং (হে নবী!) আমি এ কুরআনকে তোমার ভাষায় সহজ করে দিয়েছি, যাতে তুমি এর মাধ্যমে মুত্তাকীদেরকে সুসংবাদ দাও এবং এর মাধ্যমেই বিতণ্ডাপ্রবণ লোকদেরকে সতর্ক কর।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি কোরআনকে আপনার ভাষায় সহজ করে দিয়েছি, যাতে আপনি এর দ্বারা পরহেযগারদেরকে সুসংবাদ দেন এবং কলহকারী সম্প্রদায়কে সতর্ক করেন।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আমি তো তোমার ভাষায় কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি যাতে তুমি তা দিয়ে মুত্তাকীদেরকে সুসংবাদ দিতে পার এবং বিতণ্ডাপ্রবণ সম্প্রদায়কে তা দিয়ে সতর্ক করতে পার।


৯৮


وَكَمْ أَهْلَكْنَا قَبْلَهُم مِّن قَرْنٍ هَلْ تُحِسُّ مِنْهُم مِّنْ أَحَدٍ أَوْ تَسْمَعُ لَهُمْ رِكْزًا


ওয়া কাম আহলাকনা-কাবলাহুম মিন কারনিন হাল তুহিছছুমিনহুম মিন আহাদিন আও তাছমা‘ঊ লাহুম রিকঝা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তাদের আগে আমি কত মানব-গোষ্ঠীকেই ধ্বংস করেছি। তুমি কি হাতড়িয়েও তাদের কারও সন্ধান পাও কিংবা তুমি কি তাদের কোন সাড়া-শব্দ শুনতে পাও? ৪৩


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তাদের পূর্বে আমি কত মানবগোষ্ঠীকে ধ্বংস করেছি। আপনি কি তাদের কাহারও সাড়া পান, অথবা তাদের ক্ষীনতম আওয়ায ও শুনতে পান?


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তাদের পূর্বে আমি কত মানবগোষ্ঠীকে বিনাশ করেছি! তুমি কি তাদের কাউকেও দেখতে পাও বা ক্ষীণতম শব্দও শুনতে পাও ?


তাফসীরঃ

৪৩. সুতরাং এই হঠকারী অবিশ্বাসীরা সতর্ক হয়ে যাক। তারা তাদের অন্যায়-অনাচার ত্যাগ করে সুপথে ফিরে না আসলে তাদেরকে আগের সেই ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতিসমূহের মত যে কোনও সময় ধ্বংস করে দিতে পারি, ফলে ভূ-পৃষ্ঠে তাদের নাম-নিশানা পর্যন্ত বাকি থাকবে না। -অনুবাদক

আরো পড়ুন :-

স্মরণ শক্তি বৃদ্ধির দোয়া,মেধা বৃদ্ধির দোয়া,স্মৃতি শক্তি বাড়ানোর দোয়া!নামাজের পর ২১ বাড় পড়ুন

গর্ভের সন্তান কখন নষ্ট করা যাবে?,কতদিনের বাচ্চা নষ্ট করলে গুনাহ হবে না?, বাচ্চা নষ্ট করা জায়েজ আছে?, 

দোয়াটি পড়লে সাথে সাথে রাগ কমে যায়, রাগ কমানোর দোয়া,শিশুদের রাগ কমানোর আমল

(ads1)

(getButton) #text=(আল কোরআন বাংলা অনুবাদ সহ এক সাথে ) #icon=(demo) #size=(2)

Post a Comment

0 Comments