মাইয়েতকে প্রস্তুত করণ,মাইয়্যেত গোসল করানোর পদ্ধতি,মাইয়েতের গোসল ও কাফনের পরে করনীয়, জানাজা ও কাফন-দাফনে যা জানা জরুরি

মাইয়েতকে প্রস্তুত করণ,মাইয়্যেত গোসল করানোর পদ্ধতি,মাইয়েতের গোসল ও কাফনের পরে করনীয়, জানাজা ও কাফন-দাফনে যা জানা জরুরি মাইয়েতকে প্রস্তুত করণ,মাইয়্য
Please wait 0 seconds...
Scroll Down and click on Go to Link for destination
Congrats! Link is Generated

আজকের বিষয়: মৃত্যুর পর আমাদের কী হবে?,মাইয়েতকে প্রস্তুত করণ,মাইয়্যেত গোসল করানোর পদ্ধতি,মাইয়েতের গোসল ও কাফনের পরে করনীয়, জানাজা ও কাফন-দাফনে যা জানা জরুরি

মৃত ব্যক্তিকে গোসল দেওয়া ফরজে কিফায়া। শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরপর ইন্তিকাল করলেও গোসল দেওয়া ফরজ। মৃতাবস্থায় ভূমিষ্ঠ হলে গোসল দেওয়া ভালো, ফরজ নয়। কেউ লা ওয়ারিস হলে তার গোসলের দায়িত্ব সব মুসলমানের।গোসল ছাড়া দাফন করা হলে জ্ঞাত সব মুসলমানই গুনাহগার হবে।

গোসল কে করাবে?

পুরুষ নারীর এবং নারী পুরুষের গোসল করাতে পারবে না। তবে প্রয়োজনে স্ত্রী স্বামীর গোসল করাতে পারবে; কিন্তু স্বামী স্ত্রীর গোসল করাতে পারবে না। অপ্রাপ্তবয়স্ক বালক-বালিকাকে নারী-পুরুষ উভয়ই গোসল করাতে পারবে। মৃতের প্রিয়জনদেরই গোসল করানো উত্তম। প্রয়োজনে অন্যরাও করাতে পারবে।

গোসলের সুন্নাত তরিকা

প্রথমে মৃতকে চৌকি বা গোসলের খাটিয়ার ওপর শোয়াতে হয়। তারপর পরনের কাপড় সরিয়ে নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত অংশে একটা কাপড় রাখতে হয়। হাতে কাপড় পেঁচিয়ে পেশাব-পায়খানার জায়গা পরিষ্কার করতে হয়। অজু করাতে হয়। নাকে ও মুখে পানি দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তুলা ভিজিয়ে দাঁতের মাড়ি ও নাকের ভেতর মুছে দেওয়া জায়েজ।

গোসল ফরজ বা হায়েজ-নেফাস অবস্থায় মারা গেলে মুখে ও নাকে পানি পৌঁছানো জরুরি। পানি যেন ভেতরে না যায় সে জন্য নাক, মুখ ও কানে তুলা দিতে হয়, এরপর ধুতে হয়।

মৃতকে বাঁ দিকে কাত করে শুইয়ে মাথা থেকে পা পর্যন্ত এমনভাবে তিনবার পানি ঢালতে হয়, যেন বাঁ কাত পর্যন্ত পৌঁছে যায়। অনুরূপভাবে ডান কাত করে শুইয়ে তিনবার পানি ঢালতে হয়। এরপর মৃতকে কোনো কিছুর ওপর ঠেস দিয়ে বসিয়ে আস্তে আস্তে পেটে চাপ দিতে হয়। কোনো মল বেরোলে পরিষ্কার করে ধুয়ে দিতে হয়। এর জন্য পুনরায় অজু ও গোসল করানোর প্রয়োজন নেই। অতঃপর বাঁ কাত করে শুইয়ে কর্পূর মেশানো পানি ঢালতে হয় তিনবার। সব শেষে একটি কাপড় দিয়ে সারা শরীর মুছে দিতে হয়। (ফাতাওয়া আলমগিরি : ১/২১৮)

বিজ্ঞ ডাক্তাররা বলে থাকেন—কারো শরীরে করোনাসহ কোনো ধরনের সংক্রামক ব্যাধি থাকলে মৃত্যুর চার-পাঁচ ঘণ্টা পর তার শরীর থেকে তা আর সংক্রমিত হয় না।

কাফনের হুকুম

মৃতকে কাফন পরানো ফরজে কিফায়া। গোসলের পর কাফন পরাতে হয়। যে ধরনের কাপড় পরা জীবদ্দশায় জায়েজ ছিল, সে ধরনের কাপড় দিয়ে কাফন পরানো জায়েজ। নতুন বা পুরনো সাদা কাপড় দিয়ে কাফন পরানো উত্তম। জীবদ্দশায় নিজের জন্য কাফনের কাপড়ের ব্যবস্থা করা জায়েজ। (ইমদাদুল ফাতাওয়া : ১/৫৬৩)

পুরুষের কাফনের কাপড়ের পরিমাণ

পুরুষের কাফনের কাপড় তিনটি হওয়া সুন্নত। তা হলো, সেলাইবিহীন জামা, ইজার ও  চাদর। জামা হবে গলা থেকে পা পর্যন্ত, তাতে হাতা থাকবে না। ইজার হবে মাথা থেকে পা পর্যন্ত। চাদর হবে ইজারের চেয়ে এক হাত লম্বা। (ফাতহুল কাদির : ২/১১৭)

নারীর কাফনের কাপড়ের পরিমাণ

নারীর কাফনের কাপড় পাঁচটি হওয়া সুন্নাত। তা হলো, উপরোল্লিখিত তিনটি এবং উড়না ও সিনাবন্দ। উড়না হবে তিন হাত লম্বা। সিনাবন্দ হবে বগল থেকে হাঁটু পর্যন্ত। (দুররুল মুখতার : ৩/৯৫)

জানাজার নামাজের বিধান

জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। এতে মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করা হয়। একাধিক মাইয়েতের জানাজা একসঙ্গে পড়া যায়। তা পড়ানোর বেশি হকদার মহল্লার ইমাম, এরপর ওলি। তবে ওলি মহল্লার ইমামের চেয়ে বেশি দ্বিনদার হলে তিনিই বেশি হকদার। কাউকে জানাজা পড়ানোর অসিয়ত করে গেলে তা কার্যকর করা জরুরি নয়। একান্ত প্রয়োজনে পুরুষের অনুপস্থিতিতে মহিলারাও জানাজা পড়াতে পারবেন। (খুলাসাতুল ফাতাওয়া : ১/২২২, আহসানুল ফাতাওয়া : ৪/২৩৮)

মাথাহীন লাশের বেশির ভাগ পাওয়া গেলে বা মাথাসহ অর্ধেক শরীর পাওয়া গেলে তার গোসল, কাফন ও জানাজা—সবই করতে হয়। আর মাথাহীন অর্ধেক বা তার চেয়ে কম অংশ পাওয়া গেলে কিছুই করতে হয় না। বরং কোনো কাপড়ে পেঁচিয়ে মাটির নিচে পুঁতে রাখতে হয়। আর মৃত নাস্তিক-মুরতাদদের গোসল-জানাজা ছাড়াই গর্ত করে মাটিচাপা দিতে হয়। (ফাতাওয়া শামি : ৩/৯২)

সতীত্ব রক্ষার্থে আত্মহত্যাকারিণী শহীদ নয়। তবে দুশ্চরিত্রের হাতে নিহত নারী শহীদের মর্যাদা লাভ করবে। আত্মহত্যাকারীকেও সাধারণ মুসলমানের নিয়মে গোসল, কাফন, জানাজা ও দাফন করতে হয়। (আবু দাউদ, হাদিস ৪৭৭২)

জানাজার নামাজের ফরজ ও সুন্নাত

জানাজার নামাজের ফরজ দুটি। (ক) চারবার ‘আল্লাহু আকবার’ বলা। (খ) দাঁড়ানো।

জানাজা সহিহ হওয়ার জন্য লাশ উপস্থিত থাকা শর্ত। জানাজার সুন্নত তিনটি। (ক) আল্লাহর হামদ ও সানা পড়া। (খ) নবীজি (সা.)-এর ওপর দরুদ পড়া। (গ) মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করা। (ইলাউস সুনান : ৮/১৭৪)

জানাজার নামাজ পড়ার পদ্ধতি

মৃতকে কিবলার দিকে জমিনে রাখতে হবে। ইমাম তার বক্ষ বরাবর দাঁড়াবেন। এরপর নিয়ত করতে হবে। নিয়ত মনে মনে করলেই যথেষ্ট। মুখে উচ্চারণ করা ভালো। নিয়ত এভাবে করা যায়—আমি জানাজার ফরজে কিফায়া নামাজ চার তাকবিরের সঙ্গে কিবলামুখী হয়ে এ ইমামের পেছনে দাঁড়িয়ে আদায় করছি, আল্লাহু আকবার।

তাকবির বলে উভয় হাত কান পর্যন্ত ওঠাতে হয় এবং নাভির নিচে হাত বেঁধে সানা পড়তে হয়। সানার মধ্যে ‘ওয়া তাআলা জাদ্দুকা’-এর পর ‘ওয়া জাল্লা সানাউকা’ও পড়তে হয়। এরপর তাকবির বলে দরুদে ইবরাহিম পড়তে হয়। এরপর তাকবির বলে নির্দিষ্ট দোয়া পড়তে হয়। চতুর্থ তাকবির বলে ডানে-বাঁয়ে সালাম ফেরাতে হয়।

ইমাম চতুর্থ তাকবির বলার পর সালাম ফেরানোর আগ মুহূর্তেও যদি কেউ তাকবির বলতে পারে, তাহলে সে জানাজা পেয়েছে। লাশ উঠিয়ে নেওয়ার আগে সানা, দরুদ ও দোয়াসহ তাকবির বলে সালাম ফেরাতে পারলে তা-ই করতে হবে। আর লাশ উঠিয়ে নেওয়ার আশঙ্কা হলে শুধু তিন তাকবির বলে সালাম ফেরাতে হবে। (রদ্দুল মুহতার : ৩/১১৬)

মৃতকে দাফন করার হুকুম

মৃতকে দাফন করা ফরজে কিফায়া। একটি কবরে একজনকেই দাফন করা উচিত। প্রয়োজনে একাধিকও করা যায়। এ ক্ষেত্রে লাশগুলো পাশাপাশি রাখতে হয়, একটির ওপর আরেকটি রাখা যায় না। এক কবরে একাধিক পুরুষ লাশ দাফন করলে কিবলার দিকে প্রথমে উত্তম ব্যক্তিকে রাখতে হয়। পুরুষ, মহিলা ও বাচ্চা হলে কিবলার দিকে প্রথমে পুরুষ, তারপর বাচ্চা, এরপর মহিলাদের রাখতে হয়। প্রত্যেক দুই মুর্দার মাঝে মাটি দিয়ে আড়াল করতে হয়। কফিনে দাফন করা খেলাফে সুন্নত হওয়া সত্ত্বেও একান্ত প্রয়োজনে দাফন করলে তার ভেতরে চারদিকে মাটি ছিটিয়ে দিতে হয়। (ফাতাওয়া হিন্দিয়া : ১/১৬৬, ২২৭)

কবরে রাখার নিয়ম

কবরের দৈর্ঘ্য হবে মৃতের উচ্চতার সমান, গভীরতা তার অর্ধেক, প্রস্থ হবে দুই হাত। মৃতকে কবরে নামানোর আগে তাকে কবরের কিবলার দিকে রাখতে হয়। মৃতের মাথা উত্তর দিকে এবং পা দক্ষিণ দিকে থাকবে। কবরে নামানোর সময় ‘বিসমিল্লাহি আলা মিল্লাতি রাসুলিল্লাহ’ বলা মুস্তাহাব। মৃতকে কবরে ডান কাতে কিবলামুখী করে রাখা সুন্নাত, শুধু চেহারা কিবলামুখী করে দেওয়া জায়েজ হলেও খেলাফে সুন্নাত। (ফাতাওয়া হাক্কানিয়া : ৩/৪৪৬, মারাকিল ফালাহ : ২২০)

মাটি দেওয়ার পদ্ধতি

কবরে মাথার দিক থেকে মাটি দেওয়া মুস্তাহাব। দুই হাতে কবরে মাটি রাখা উত্তম। প্রথমবার মাটি দেওয়ার সময় বলতে হয়—‘মিনহা খালাকনাকুম’, দ্বিতীয়বার—‘ওয়া ফিহা নুঈদুকুম’ এবং তৃতীয়বার— ‘ওয়া মিনহা নুখরিজুকুম তারাতান উখরা’। কবরের মাটি পায়ের চাপে বসিয়ে দেওয়া মাকরুহ। দাফনের পর কিছুক্ষণ কবরের পাশে থেকে মৃতের জন্য দোয়া করা মুস্তাহাব। মাটি দেওয়ার পর কবরে পানি ছিটানো মুস্তাহাব। (রদ্দুল মুহতার : ৩/১৪৩, ১৫৪)

শোক পালনের সুন্নাত তরিকা

শোক পালনের সুন্নাত তরিকা হলো, দাফনের পরে বা আগে মৃত ব্যক্তির পরিবারের লোকদের কাছে গিয়ে তাদের সান্ত্বনা দেওয়া, ধৈর্য ধারণের প্রতি উৎসাহিত করা এবং তার ও তাদের জন্য দোয়া করা। আর আয়োজন করে নীরবতা পালন করা বা কবরে ফুল দেওয়া ইহুদি, নাসারা ও হিন্দুদের সংস্কৃতি। (তিরমিজি : ১/২০৫, ফাতাওয়া রাহিমিয়া : ৭/৮৩)


আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ  


মৃত্যুর আলামত প্রকাশ পেয়েছে এমন ব্যক্তির কাছে হাজির হওয়া এবং তাকে কালিমা لا إِله إِلا الله স্মরণ করিয়ে দেয়া সুন্নত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, «তোমরা তোমাদের মৃত্যুগামী ব্যক্তিদেরকে لا إِله إِلا الله তালকীন করো।» [বর্ণনায় মুসলিম]

আর যখনে সে মারা যাবে তখন চোখ বন্ধ করে দেয়া হবে, এবং কাপড় দিয়ে ঢেকে দেয়া হবে। গোসল, কাফন, জানাযা ও দাফন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেরে ফেলা হবে।

মাইয়েতকে গোসল দেয়া, তৈরি করা ও দাফন করার হুকুম
মাইয়েতকে গোসল দেয়া, কাফন পরানো, বহন করে নেয়া, মাইয়েতের ওপর জানাজার নামাজ পড়া ও মাইয়েতকে দাফন করা ফরজে কিফায়া যদি যথেষ্ট সংখ্যক মানুষ এ সব কাজ করে নেয়, তবে বাকিরাও দায়িমুক্ত হয়ে যাবে।

মাইয়েতকে গোসল দেয়ার হুকুম
১. মাইয়েতকে গোসল দেয়ার জন্য এমন ব্যক্তিকে বেছে নিতে হবে যে নির্ভরশীল, ইনসাফপূর্ণ, আমানতদার ও গোসল দেয়ার মাসআলা মাসায়েল সম্পর্কে অভিজ্ঞ।

২. মাইয়েত যদি গোসল দেয়ার ব্যাপারে কারও ব্যাপারে উপদেশ দিয়ে গিয়ে থাকে, তাহলে তাকেই প্রাধান্য দিতে হবে। এরপর আত্মীয়দের মধ্যে নৈকট্যের বিবেচনায় যে এগিয়ে তাকে প্রাধান্য দিতে হবে। অবশ্য মাইতের গোসল বিষয়ক মাসআলা মাসায়েল সম্পর্কে যদি এদের যথেষ্ট জ্ঞান থাকে তবেই কেবল এদেরকে এগিয়ে দেয়া হবে। আর যদি না থাকে তবে যার আছে তাকে এগিয়ে দিতে হবে।

৩. পুরুষ মাইয়েতকে পুরুষরা গোসল দেবে। আর নারী মাইয়েতকে নারীরা। স্বামী ও স্ত্রী উভয়ে একে অন্যকে গোসল দেয়াতে পারবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আয়েশা রাযি. কে বলেন: «তুমি কি খুশী হবে না, যদি তুমি আগে মারা যাও আর আমি তোমাকে গোসল দিই, কাফন পরাই, তোমার জানাজার নামাজ পড়ি, এরপর তোমাকে দাফন করি।» (বর্ণনায় ইবনে মাজাহ] আর পুরুষ ও নারী উভয়েই সাত বছরের নিচের বাচ্চাদেরকে গোসল দেয়াতে পারবে। কিন্তু কোনো কাফিরকে- মুসলিম নারী অথবা পুরুষ- গোসল দেয়াতে পারবে না। তার জানাজা বহন করতে পারবে না। তাকে কাফন দিতে পারবে না। তার জানাজার নামাজ পড়তে পারবে না। যদি সে পিতা হয় তবুও।

৪. যুদ্ধক্ষেত্রে যারা শহীদ হন তাদেরকে গোসল দেয়া, কাফন পরানো হবে না, এমনকি তাদের উপর জানাজার নামাজও পড়া হবে না। বরং তারা যে কাপড়ে মৃত্যুবরণ করেছেন সে কাপড়েই দাফন করা হবে।

৫. যদি গর্ভপাত হওয়া সন্তান চার মাস বয়সের হয়, তাহলে তাকে গোসল, কাফন ও জানাজা দেয়া হবে; কেননা চার মাস পর সে মানুষে পরিণত হয়েছে বলে ধরা হবে।

৬. মাইয়েতকে যে পানি দিয়ে গোসল দেয়া হবে তা পবিত্র ও বৈধ হতে হবে। আর গোসল দিতে হবে পর্দা দেয়া কোনো জায়গায়। গোসল দেয়ার সাথে যারা জড়িত নয় তাদের সেখানে উপস্থিত থাকা উচিত নয়

মাইয়েতকে গোসল দেয়ার পদ্ধতি
১. গোসল দেয়ার চকিতে মাইয়েতকে রাখা হবে। এরপর তার গুপ্তস্থান ঢেকে দেয়া হবে। তাকে কাপড়-চোপড়মুক্ত করা হবে। তাকে কোনো কক্ষে বা পর্দা দেয়া জায়গায় দৃষ্টির আড়ালে রাখা হবে।

২. গোসল দেয়ার সময় একটি কাপড়খণ্ড হাতে পেঁচিয়ে নেয়া গোসল দাতার জন্য মুস্তাহাব।

৩. গোসল দাতা মাইয়েতের মাথা উঠিয়ে বসার কাছাকাছি অবস্থায় রাখবে, এরপর তার পেটে হাত বুলাবে ও চাপ দেবে। এরপর সামনের ও পিছনের লজ্জাস্থান পরিষ্কার করবে এবং কোনো নাপাকি থেকে থাকলে তা পরিষ্কার করবে।

৪. গোসল দেয়ার নিয়ত করবে ও বিসমিল্লাহ বলবে।

৫. গোসলদাতা নামাজের অজুর ন্যায় মাইয়েতকে অজু করাবে। তবে কুলি করানো ও নাকে পানি দেয়ার সময় মুখ ও নাক মাসেহ করলেই চলবে।

১. মাইয়েতের মাথা ও দাঁড়ি বড়ইয়ের পাতাবিশিষ্ট পানি অথবা সাবান দিযে ধৌত করবে।

২. ডান দিক আগে ধৌত করবে, পরে বাম দিক ধৌত করবে। এরপর শরীরের বাকি অংশ ধৌত করবে।

৩. সর্বশেষ বার মাইয়েতের শরীর ধৌত করার সময় কর্পূর ব্যবহার করবে।

৪. মাইয়েতের শরীরের পানি মুছে ফেলা হবে।

৫. মাইয়েতের নখ, বগল ও নাভির নিচের চুল পরিষ্কার করা হবে

সতর্কতা
মাইয়েতের শরীর একবার ধৌত করা ওয়াজিব, যদি একবারেই পরিষ্কার হয়ে যায়। তবে মুস্তাহাব হলো তিনবার ধোয়া যদিও তিনবারের পূর্বেই পরিষ্কার হয়ে যায়।

যদি পানির অভাবে মাইয়েতকে গোসল দেয়া সম্ভব না হয়, অথবা পুড়ে যাওয়া অথবা অন্যকোনো কারণে গোসল দেয়ার অবস্থা না থাকে, তাহলে মাটি দিয়ে তাইয়াম্মুম করিয়ে দেবে।

গোসল দাতার জন্য মুস্তাহাব হলো গোসল দেয়ার পর নিজে গোসল করে নেয়া।


আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ  


মাইয়েতকে কাফন পরানো
১. পুরুষের ক্ষেত্রে সুন্নত হলো তিনটি সাদা লিফাফা বা কাপড়খণ্ড দিয়ে মাইয়েতকে কাফন দেয়া। কাফন কটনের তৈরি এমন কাপড় দিয়ে দিতে হবে যার ভেতর দিয়ে মাইয়েতের শরীর দেখা যায় না। যা মাইয়েতের সমস্ত শরীর ঢেকে রাখে। তবে এ ক্ষেত্রে অতিরঞ্জন করা হবে না।

নারীর ক্ষেত্রে সুন্নত হলো কটন দিয়ে তৈরি পাঁচটি কাপড় খণ্ডে কাফন দেয়া। আর তা হলো একটি ইযার তথা কোমড় থেকে পা পর্যন্তের জন্য বস্ত্রখণ্ড। মুখ ঢাকার একটি বস্ত্রখণ্ড। একটি জামা ও দুটি লিফাফা অর্থাৎ সমস্ত শরীর পেঁচানোর জন্য বস্ত্রখণ্ড।

শিশুকে এক কাপড়ে কাফন দেয়া হবে, তবে তিন কাপড়ে দেয়াও বৈধ। আর ছোট মেয়েকে একটি জামা ও দুটি লিফাফায় কাফন দেয়া হবে।

২. কাফনের তিন লিফাফা এনে তাতে ধুপের ধোঁয়া দেয়া। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, «তোমরা যদি মাইয়েতকে সুগন্ধিযুক্ত ধোঁয়া দাও তবে তিনবার দাও। [বর্ণনায় ইবনে হিব্বান]

৩. লিফাফাগুলো একটার ওপর অন্যটা পেঁচানো হবে। একটি পেঁচানোর পর তার ওপর আম্বর, কর্পূর ও মিসক ইত্যাদির সুগন্ধি দেয়া হবে। তবে যদি মাইয়েত হজ্ব অথবা উমরার ইহরামে থাকে তাহলে তার কাপড়ে ধুপের ধোঁয়া দেয়া হবে না। কিন্তু মাইয়েতের শরীরে কোনো সুগন্ধি লাগানো হবে না। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, «তোমরা তাকে সুগন্ধি স্পর্শ করিও না»। [বর্ণনায় বুখারী](বর্ণনায় বুখারী)

৪. মাইয়েতকে লিফাফাসমূহের উপরে শোয়ানো হবে। এরপর বাম দিক থেকে প্রথম লিফাফার উপরের দিক ডান দিকে এনে ফেলতে হবে। এরপর ডান দিক থেকে একই রূপে প্রথম লিফাফার অংশ বাম দিকে এনে ফেলবে। একইরূপে দ্বিতীয় ও তৃতীয় লিফাফাটি পেঁচাবে। এরপর মাথার কাছে অতিরিক্ত অংশ রাখবে এবং তা বেঁধে দেবে, যাতে বিক্ষিপ্ত না হয়ে যায়। অবশ্য দাফনের সময় তা আবার খুলে দিতে হবে।

ওয়াজিব হলো সমস্ত শরীর ঢেকে দেয়া। কিন্তু যদি সমস্ত শরীর ঢাকার মতো কাপড় না থাকে, তাহলে প্রথমে মাথা ঢাকবে, এরপর শরীরে যতদূর দেয়া যায় দেবে। আর পায়ের উপর ইযখির দিয়ে দেবে। ইযখির হলো সুগন্ধিযুক্ত একপ্রকার উদ্ভিদ। [বর্ণনায় বুখারী]

যে ব্যক্তি মুহরিম অবস্থায় মারা গেল, ইহরামের যে কাপড়ে সে মারা গিয়েছে, সে কাপড়েই তাকে দাফন করা হবে। পুরুষ মুহরিমের মাথা ঢাকা হবে না; কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, «তোমরা তাকে পানি ও বড়ই পাতা দিয়ে গোসল করাও। তাকে দুই কাপড়ে কাফন দাও। আর তাকে সুগন্ধিযুক্ত করো না। মাথায় কাপড় আবৃত করো না; কেননা কেয়ামতের ময়দানে সে তালবিয়ারত অবস্থায় উঠবে।» (বর্ণনায় বুখারী)মাইয়তেকে লফিাফাসমূহরে উপরে শোয়ানো হব।ে এরপর বাম দকি থকেে প্রথম লফিাফার উপররে দকি ডান দকিে এনে ফলেতে হব।ে এরপর ডান দকি থকেে একই রূপে প্রথম লফিাফার অংশ বাম দকিে এনে ফলেব।ে একইরূপে দ্বতিীয় ও তৃতীয় লফিাফাটি পঁেচাব।ে এরপর মাথার কাছে অতরিক্তি অংশ রাখবে এবং তা বঁেধে দবে,ে যাতে বক্ষিপ্তি না হয়ে যায়। অবশ্য দাফনরে সময় তা আবার খুলে দতিে হব।ে

৫. ওয়াজবি হলো সমস্ত শরীর ঢকেে দয়ো। কন্তিু যদি সমস্ত শরীর ঢাকার মতো কাপড় না থাক,ে তাহলে প্রথমে মাথা ঢাকব,ে এরপর শরীরে যতদূর দয়ো যায় দবে।ে আর পায়রে উপর ইযখরি দয়িে দবে। ইযখরি হলো সুগন্ধযিুক্ত একপ্রকার উদ্ভদি।

৬. যে ব্যক্তি মুহরমি অবস্থায় মারা গলে, ইহরামরে যে কাপড়ে সে মারা গয়িছে,ে সে কাপড়ইে তাকে দাফন করা হব।ে পুরুষ মুহরমিরে মাথা ঢাকা হবে না; কনেনা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলছেনে,«তোমরা তাকে পানি ও বড়ই পাতা দয়িে গোসল করাও। তাকে দুই কাপড়ে কাফন দাও। আর তাকে সুগন্ধযিুক্ত করো না। মাথায় কাপড় আবৃত করো না; কনেনা কয়োমতরে ময়দানে সে তালবয়িারত অবস্থায় উঠব।েটার ওপর অন্যটা পঁেচানো হব।ে একটি পঁেচানোর পর তার ওপর আম্বর, র্কপূর ও মসিক ইত্যাদরি সুগন্ধি দয়ো হব।ে তবে যদি মাইয়তে হজ্ব অথবা উমরার ইহরামে থাকে তাহলে তার কাপড়ে ধুপরে ধোঁয়া দয়ো হবে না। কন্তিু মাইয়তেরে শরীরে কোনো সুগন্ধি লাগানো হবে না। হাদীসে এসছে,ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলছেনে,«তোমরা তাকে সুগন্ধি র্স্পশ করওি না»।

৪. মাইয়তেকে লফিাফাসমূহরে উপরে শোয়ানো হব।ে এরপর বাম দকি থকেে প্রথম লফিাফার উপররে দকি ডান দকিে এনে ফলেতে হব।ে এরপর ডান দকি থকেে একই রূপে প্রথম লফিাফার অংশ বাম দকিে এনে ফলেব।ে একইরূপে দ্বতিীয় ও তৃতীয় লফিাফাটি পঁেচাব।ে এরপর মাথার কাছে অতরিক্তি অংশ রাখবে এবং তা বঁেধে দবে,ে যাতে বক্ষিপ্তি না হয়ে»(বর্ণনায় বুখারী)



মাইয়্যেতের গোসলের নিয়ম-কানুন নিম্নরূপঃ

১. গোসল দেওয়ার স্থানটি পাঁচ দিকে ঘেরাও করবে। উপর দিকেও সামিয়ানা অথবা পর্দা থাকতে হবে।

২. গোসলদাতা সহায়তার জন্য ২/১ জন ভালো লোক সঙ্গে নিতে পারে। বাকি ঐ পর্দারসীমার ভিতরে যেন কেউ না থাকে ও গোসল না দেখে। অবশ্য গোনাহ করে এমন লোককেও সঙ্গে রাখা চলে। যাতে সে মুর্দার হাল দেখে উপদেশ গ্রহণ এবং তাওবা করতে পারে। আর উপদেশের জন্য মৃত্যু যথেষ্ট।

৩. গোসলদাতা নিজের মুখ বন্ধ করে নিতে পারে অথবা নাকে-মুখে কাপড় বেঁধে নিতে পারে; যদি দুর্গন্ধ পাওয়ার কোন রকম আশঙ্কা থাকে তবে। অতিরিক্ত এমন কোন কাপড় শরীরের সম্মুখ ভাগে বেঁধে নিতে পারে যাতে কোন নাপাকী তার শরীর বা পোশাকে লেগে না যায়। উভয় হাতে হ্যান্ড গ্লাভস পরা উত্তম। যাতে হাতে ময়লা না লাগে এবং লাশের লজ্জাস্থান সরাসরি স্পর্শ না হয়।

৪. একই উদ্দেশ্যে দুই পায়ে ‘গাম-বুট ব্যবহার করতে পারে।

৫. মাইয়্যেতের দেহ অনুযায়ী পরিমাণমতো পানি প্রস্তুত রাখবে। ১ বালতি সাদা সাধারণ পানি, ১ বালতি বড়ই পাতা মিশ্রিত পানি এবং অপর আর ১ বালতি কর্পূর মিশ্রিত পানি প্রস্তুত রাখবে। বড়ই পাতা পিষে পানিতে দিয়ে এমনভাবে ঘটবে যাতে পানিতে ফেনা দেখা যায়। প্রতি লিটার পানিতে দুই টুকরা কপুর দিতে হবে। এর সঙ্গে প্রয়োজনে সাবান ও শ্যাম্পু ব্যবহার করাও উত্তম।

৬. লাশ তুলে আস্তে করে একটি তক্তা বা কাঠের উপর রাখবে। এ তক্তার যেদিকে লাশের মাথা রাখা হবে সেদিকটা যেন একটু উঁচু হয় যাতে কোমরের দিকের পানি পায়ের দিকে গড়িয়ে নেমে পড়তে পারে। এই তক্তা কেবলামুখী হওয়া জরুরি নয়। উল্লেখ্য যে, লাশ তোলা-নামা করার সময় লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’র যিকির করা বিদআত। এরপর লাশের লজ্জাস্থানের উপর একটি মোটা কাপড় রেখে গায়ের সমস্ত কাপড় খুলে ফেলবে। নবী (সা.)-এর যুগে এরূপই আমল ছিল (হাকেম- ৩/৫৯-৬০)। উল্লেখ্য যে, নাভী থেকে হাঁটু পর্যন্ত সতর ও লজ্জাস্থান দেখা সকলের জন্যই হারাম। মহিলা গোসলদাত্রীও মহিলার ঐ স্থান দেখবে না।

৮. বরফে জমা লাশ হলে অথবা কোন কাপড় খুলতে অসুবিধা হলে কাপড় কেটে বের করে নেবে।

৯. নখ গোঁফ ইত্যাদি কেটে ফেলার ব্যাপারে হাদীসে কোন নির্দেশ আসেনি। কোন কোন আলেম এসব কাটা বিদআত বলেছেন। (আলবানীর আহকামুল জানায়িয)।

১০. নাক ও মুখের ভিতরে ময়লা থাকলে আঙ্গুল প্রবেশ করিয়ে পরিষ্কার করে নেবে। এগুলো দিয়ে ময়লা বের হতে থাকলে তুলা বা এ জাতীয় কিছু দিয়ে ছিদ্র পথ বন্ধ করে দেবে।

১১. মাইয়্যেতের দেহের কোন অংশে জমাট বাঁধা ময়লা থাকলে এবং কুলের পাতা দ্বারা দূর হলে তা সাবান অথবা অন্য কিছু দিয়ে পরিষ্কার করে নেবে।

১২. বাম হাতে (গ্লাভসের উপরেই) একটি ন্যাকড়া জড়িয়ে নেবে। অতঃপর সাথী-সঙ্গীদের সাহায্যে লাশের মাথার দিক একটু তুলে অর্ধ বসার মতো বসাবে এবং ধীরে ধীরে ২/৩ বার পেটের উপর চাপ দেবে যাতে পেটে কোন নাপাকী থেকে থাকলে তা বের হয়ে যায়। ময়লা ন্যাকড়া হাত থেকে খুলে ফেলবে। তারপর গোসলদাতা গ্লাভস বা ন্যাকড়া জড়ানো বাম হাত পর্দার নিচে থেকে লজ্জাস্থান মাজাঘষা করে এবং উপর থেকে একজন পানি ঢেলে পরিষ্কার করে দেবে। তারপর গ্লাভস অথবা ময়লা ন্যাকড়াটি হাত থেকে খুলে ফেলবে।

১৩. ধোয়ার পরও যদি নাপাকী বারবার বের হতে থাকে, তাহলে ২/৩ বার ধুয়ে ফেলার পর ছিদ্র পথ তুলা বা কাপড়ের টুকরা দ্বারা বন্ধ করে দেবে। প্রয়োজন হলে এর উপর প্লাস্টার পট্টি ব্যবহার করতে পারে। তবে ন্যাকড়া ব্যবহার করাই উত্তম।

১৪. অতঃপর গোসলদাতা গোসল দেবার নিয়ত করে মাইয়্যেতের উভয় হাত ‘বিসমিল্লাহ বলে কব্জি পর্যন্ত ধুয়ে দেবে। (ভিজে পরিষ্কার ন্যাকড়ার সাহায্যে) তিনবার মুখের ভিতর দাঁতসহ মাসেহ করবে। তিনবার নাকের ভিতর মাসেহ করে দেবে। অতঃপর সাধারণ ওযূর ন্যায় মুখমণ্ডল, হাত ইত্যাদি যথা নিয়মে ধুইয়ে মাথা ও কান মাসেহ করে পা ধুইয়ে মাইয়্যেতকে ওযু করিয়ে দেবে। তবে নাকে ও মুখে পানি দেবে না।

১৫. অতঃপর কুলের পাতা মিশ্রিত পানি দ্বারা মাইয়্যেতের মাথা ও মুখমণ্ডল (দাড়িসহ) উত্তমরূপে ধৌত করবে। মহিলার মাথায় খোপা বাঁধা থাকলে তা খুলে নিয়ে ভালোরূপে এবং প্রয়োজন হলে শ্যাম্পু দ্বারা ধৌত করবে।

১৬. অতঃপর মাইয়্যেতকে বামপার্শ্বে শয়ন করিয়ে ঐ পানি দ্বারা কাঁধ থেকে শুরু করে ডান পায়ের শেষাংশ পর্যন্ত ভালোভাবে মাজা-ঘষা করে দেবে। তারপর ডান কাতে শুইয়ে বাম পাশ অনুরূপ ধৌত করবে। পর্দার নিচে লজ্জাস্থানে কাপড় মোড়ানো হাত বুলিয়ে ধুয়ে দেবে। অনুরূপভাবে দ্বিতীয়বার ঐ একই পানি দ্বারা একই রূপে গোসল দেবে। অতঃপর কর্পূর মিশ্রিত পানি দ্বারা মাথা ও মুখমণ্ডল ধুয়ে দেওয়ার পর এভাবে আরেকবার গোসল দেবে। এরপরেও নাপাকী দেখা গেলে তিনের অধিক ৫ ও ৭ বার বা ততোধিকবার বিজোড় সংখ্যায় গোসল দেওয়া যায়। তবে শেষ বারে যেন কপূর মিশ্রিত পানি দ্বারা গোসল হয়। (বুখারী: ১১৭৫)

১৭. এরপর শুষ্ক কাপড় দ্বারা মাইয়্যেতের দেহ মাথা, বুক, মুখ, পেট, হাত, পা মুছে দেবে । লজ্জাস্থানের উপর ভিজা কাপড়টিকে সরিয়ে অন্য একটি শুকনা কাপড় দিয়ে দেবে। মাইয়্যেতের চুল আঁচড়ে দেবে। (বুখারী: ১১৭৬) মহিলার চুল আঁচড়ে বেণী গেঁথে কাফনের সময় লাশের পিছন দিকে ফেলে রাখবে। মাথার দুই পাশে দুটি এবং সামনের দিকে চুল নিয়ে একটি, মোট তিনটি বেণী করবে।(আহমাদ- ৫/৮৪-৮৫)। এ পর্যন্ত করলে লাশ কাফনের জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে ।

মাইয়্যেতের গোসল সংক্রান্ত বিবিধ মাসাইল

১. লাশের কোন অঙ্গ আগুনে পুড়ে গেলে বা কোন দুর্ঘটনায় ক্ষতবিক্ষত হয়ে থাকলে কাপড় দিয়ে গোসলের পর ঐ অঙ্গে মাসাহ করে দেবে।

২. চারমাসের কম সময়ের গর্ভপাতজনিত ভ্রণের গোসল, কাফন ও কোন নামায নেই। একটি ছোট্ট কবর খুঁড়ে তাকে দাফন করা হবে।

৩. চার মাসের ঊর্ধ্বের ভ্রণের কাফন-দাফন সাত বছরের নিম্নের বালক-বালিকার মতোই। (আহকামল জানাইয)

৪. সর্বদা মাইয়্যেতের সম্মানের জন্য খেয়াল রাখবে, গোসলদাতা যাতে গোসল দেওয়ার সময় বা অন্যান্য ক্ষেত্রে লাশের সাথে ধস্তাধস্তি না হয় ও গোসলে শীতের সময় শীতল এবং গ্রীষ্মের সময় খুব গরম পানি ব্যবহার না করা হয়।

৫. লাশের মুখে বাঁধানো সোনার দাঁত থাকলে যদি মুখ এঁটে বন্ধ থাকে, তাহলে বল প্রয়োগ করে খোলার চেষ্টা করবে না। খোলা থাকলে এবং দাঁত সহজে বের করা সম্ভব হলে বের করে নেবে, নচেৎ বল প্রয়োগ করে বের করবে না। (আল-বিজায়াহ পৃ. ৭৫)

৬. হজ্জ বা উমরা করতে গিয়ে ইহরাম অবস্থায় মৃত মুহরিমের গোসলে কোন প্রকার সুগন্ধি বা কপূর ব্যবহার করা বৈধ নয়। যেহেতু ইহরাম বাঁধা অবস্থায় মৃত হাজীর জন্য নবী (সা.) বলেছিলেন, ‘ওকে কুলপাতা-মিশ্রিত পানি দ্বারা গোসল দাও, ওর দুই কাপড়ে কাফন পরাও এবং সুগন্ধি লাগিয়ো না।...।”

৭. মাইয়্যেতের গোসল দেওয়ার সময় গোসলদাতা যদি মাইয়্যেতের দেহে কোন ত্রুটি বা অপ্রীতিকর কিছু দেখে থাকে- যেমন চেহারা কালো বা বিকৃত হয়ে যাওয়া, তার দেহ হতে দুর্গন্ধ বের হওয়া ইত্যাদি- তাহলে তা প্রচার করা বা কাউকে বলা বৈধ নয়। বরং ভালো কিছু দেখলে; যেমন হাসি মুখ, দেহে ঔজ্জ্বল্য প্রভৃতি দেখলে বা সুগন্ধ পেলে তা প্রচার করতে পারে। (আল-মুমতে- ৫/৩৭৬)।

৮. গোসল দেওয়ার সময় প্রত্যেক অঙ্গে পানি ঢালার সময় নির্দিষ্ট কোন দু'আ বা কালিমার যিকির করা, গোসল দেওয়ার স্থানে কয়েকদিন ধরে বাতি জ্বালানো বা ধূপ ইত্যাদি দিয়ে রাখা বিদ্আত।

৯. গোসল দেওয়ার সময় ব্যবহৃত ন্যাকড়া ফেলবার কোন নির্দিষ্ট জায়গা বাছাইয়ের  প্রয়োজন নেই। যেকোন জায়গায় তা পুঁতে ফেলা বা ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া যায়। এ কাপড় বা ময়লা এমন কিছু নয় যে, এতে ভূত (?) জড়িয়ে থাকে- যা অনেকেই ধারণা করে থাকে।

১০. অনেকে মনে করে মাইয়্যেত গোসলের পানি ডিঙ্গাতে নেই এবং ডিঙ্গালে কোন অমঙ্গল হয়। এগুলো ঠিক নয়।

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে ও

আল কোরআনের সূরা সমূহ বাংলা অনুবাদ, ফজিলত, আয়ত, রুকু আরবি ও বাংলা উচ্চারণ  

আমাদের নতুন ইসলামিক নিউজ ও জিজ্ঞাসা ভিত্তিক সাইড

Islamic Info Hub ( www.islamicinfohub.com ) আজই ভিজিড করুন !! 

Post a Comment

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.