কোরআন সূরা আল আনকাবুত,বৈশিষ্ট্য গুলো সূরা আল আনকাবুত,সূরা আনকাবুত আরবি লেখা,সূরা আনকাবুত ব্যাখ্যা,সুরা আনকাবুত প্রত্যেক রোগের ওষুধ বিশেষ, সূরা আনকাবুত বাংলা তাফসীর,

 

সূরা আনকাবুত কতো বার পাঠ করলে কোন আলম ও ফজিলত,সকল রোগের ঔষধ সূরা আনকাবুত,সূরা আল-আনকাবুত বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ এবং বৈশিষ্ট্য ও ফজিলত অডিও সূরা আল আনকাবুত

আল আনকাবুত - ( العنكبوت ) | মাকড়শা

মাক্কী, মোট আয়াতঃ ৬৯


بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ


الٓـمّٓ ۚ


আলিফ লাম মীম।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আলিফ-লাম-মীম।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আলিফ-লাম-মীম।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আলিফ-লাম-মীম;



اَحَسِبَ النَّاسُ اَنۡ یُّتۡرَکُوۡۤا اَنۡ یَّقُوۡلُوۡۤا اٰمَنَّا وَہُمۡ لَا یُفۡتَنُوۡنَ


আহাছিবান্না-ছুআইঁ ইউতরাকূআইঁ ইয়াকূলূ আ-মান্না-ওয়া হুম লা-ইউফতানূন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

মানুষ কি মনে করে ‘আমরা ঈমান এনেছি’ এ কথা বললেই তাদেরকে পরীক্ষা না করে ছেড়ে দেওয়া হবে?


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

মানুষ কি মনে করে যে, তারা একথা বলেই অব্যাহতি পেয়ে যাবে যে, আমরা বিশ্বাস করি এবং তাদেরকে পরীক্ষা করা হবে না?


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

মানুষ কি মনে করে যে, ‘আমরা ঈমান এনেছি’ এই কথা বললেন এদেরকে পরীক্ষা না করে অব্যাহতি দেওয়া হবে ?



وَلَقَدۡ فَتَنَّا الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِہِمۡ فَلَیَعۡلَمَنَّ اللّٰہُ الَّذِیۡنَ صَدَقُوۡا وَلَیَعۡلَمَنَّ الۡکٰذِبِیۡنَ


ওয়ালাকাদ ফাতান্নাল্লাযীনা মিন কাবলিহিম ফালাইয়া‘লামান্নাল্লা-হুল্লাযীনা সাদাকূ ওয়ালাইয়া‘লামান্নাল কা-যিবীন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

অথচ তাদের পূর্বে যারা গত হয়েছে তাদেরকেও আমি পরীক্ষা করেছি। সুতরাং আল্লাহ অবশ্যই জেনে নেবেন কারা সত্যনিষ্ঠার পরিচয় দিয়েছে এবং তিনি অবশ্যই জেনে নেবেন কারা মিথ্যাবাদী। ১


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি তাদেরকেও পরীক্ষা করেছি, যারা তাদের পূর্বে ছিল। আল্লাহ অবশ্যই জেনে নেবেন যারা সত্যবাদী এবং নিশ্চয়ই জেনে নেবেন মিথ্যুকদেরকে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আমি তো এদের পূর্ববর্তীদেরকেও পরীক্ষা করেছিলাম ; আল্লাহ্ অবশ্যই প্রকাশ করে দিবেন কারা সত্যবাদী এবং তিনি অবশ্যই প্রকাশ করে দিবেন কাহারা মিথ্যাবাদী।


তাফসীরঃ

১. কে অনুগত হবে আর কে অবাধ্য তা তো আল্লাহ তাআলা আগে থেকেই জানেন, কিন্তু শাস্তি ও পুরস্কার দানের বিষয়টাকে তিনি তাঁর সেই অনাদি জ্ঞানের ভিত্তিতে সম্পন্ন করেন না; বরং তিনি প্রমাণ চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে মানুষকে অবকাশ দান করেন, যাতে তারা স্বেচ্ছায় সজ্ঞানে হেদায়াত বা গোমরাহীর পথ বেছে নেয়। তো কে কোন পথ গ্রহণ করে নেয়, প্রকৃতপক্ষে সেটাই দেখা উদ্দেশ্য।



اَمۡ حَسِبَ الَّذِیۡنَ یَعۡمَلُوۡنَ السَّیِّاٰتِ اَنۡ یَّسۡبِقُوۡنَا ؕ سَآءَ مَا یَحۡکُمُوۡنَ


আম হাছিবাল্লাযীনা ইয়া‘মালূনাছছাইয়িআ-তি আইঁ ইয়াছবিকূনা- ছাআ মাইয়াহকুমূন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

যারা মন্দ কার্যাবলীতে লিপ্ত তারা কি মনে করে তারা আমার উপর জিতে যাবে? তারা যা অনুমান করছে তা কতই না মন্দ!


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যারা মন্দ কাজ করে, তারা কি মনে করে যে, তারা আমার হাত থেকে বেঁচে যাবে? তাদের ফয়সালা খুবই মন্দ।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তবে কি যারা মন্দ কর্ম করে তারা মনে করে যে, তারা আমার আয়ত্তের বাইরে চলে যাবে ? তাদের সিদ্ধান্ত কত মন্দ!



مَنۡ کَانَ یَرۡجُوۡا لِقَآءَ اللّٰہِ فَاِنَّ اَجَلَ اللّٰہِ لَاٰتٍ ؕ وَہُوَ السَّمِیۡعُ الۡعَلِیۡمُ


মান কা-না ইয়ারজুলিকাআল্লা-হি ফাইন্না আজালাল্লা-হি লাআ-তিওঁ ওয়া হুওয়াছ ছামী‘উল ‘আলীম।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

যারা আল্লাহর সঙ্গে মিলিত হওয়ার আশা রাখে, তাদের নিশ্চিত থাকা উচিত আল্লাহর নির্ধারিত কাল অবশ্যই আসবে ২ এবং তিনিই সব কথা শোনেন, সবকিছু জানেন।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যে আল্লাহর সাক্ষাত কামনা করে, আল্লাহর সেই নির্ধারিত কাল অবশ্যই আসবে। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যে আল্লাহ্ র সাক্ষাৎ কামনা করে সে জেনে রাখুক, আল্লাহ্ র নির্ধারিত কাল আসবেই। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।


তাফসীরঃ

২. অর্থাৎ যে ব্যক্তি আখিরাতে বিশ্বাস রাখে ও তার সওয়াবের আশা রাখে তার কর্তব্য দুনিয়ায় সর্বাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত-আনুগত্যে অবিচলিত থাকা এবং যে কোনও পরিস্থিতিতে চরম ধৈর্যের পরিচয় দেওয়া যাবৎ না আল্লাহ তা‘আলার সাথে মিলিত হয়। মিলনের সে সময় অবশ্যই আসবে এবং তখন তার প্রত্যাশিত, বরং আশাতীত পুরস্কার সে আল্লাহর তা‘আলার কাছে লাভ করবে। -অনুবাদক



وَمَنۡ جَاہَدَ فَاِنَّمَا یُجَاہِدُ لِنَفۡسِہٖ ؕ اِنَّ اللّٰہَ لَغَنِیٌّ عَنِ الۡعٰلَمِیۡنَ


ওয়া মান জা-হাদা ফাইন্নামা-ইউজা-হিদুলিনাফছিহী ইন্নাল্লা-হা লাগানিইইউন ‘আনিল ‘আ-লামীন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আর আমার পথে যে ব্যক্তিই শ্রম-সাধনা করে, সে তো শ্রম-সাধনা করে নিজেরই কল্যাণার্থে। ৩ নিশ্চয়ই আল্লাহ বিশ্ব-জগতের সকল থেকে অনপেক্ষ।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যে কষ্ট স্বীকার করে, সে তো নিজের জন্যেই কষ্ট স্বীকার করে। আল্লাহ বিশ্ববাসী থেকে বে-পরওয়া।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যে কেউ সাধনা করে, সে তো নিজের জন্যেই সাধনা করে ; আল্লাহ্ তো বিশ্বজগৎ হতে অমুখাপেক্ষী।


তাফসীরঃ

৩. দীনের পথে করা হয় এমন যে-কোনও মেহনতই এর অন্তর্ভুক্ত। যেমন নফসকে দমন করার সাধনা, শয়তানকে মোকাবেলা করার প্রচেষ্টা, দাওয়াত ও তাবলীগের মেহনত, আল্লাহ তাআলার পথে যুদ্ধ ইত্যাদি।



وَالَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ لَنُکَفِّرَنَّ عَنۡہُمۡ سَیِّاٰتِہِمۡ وَلَنَجۡزِیَنَّہُمۡ اَحۡسَنَ الَّذِیۡ کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ


ওয়াল্লাযীনা আ-মানূওয়া ‘আমিলুসসা-লিহা-তি লানুকাফফিরান্না ‘আনহুম ছাইয়িআ-তিহিম ওয়ালানাজঝিয়ান্নাহুম আহছানাল্লাযী কা-নূইয়া‘মালূন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে, আমি অবশ্যই তাদের মন্দসমূহ তাদের থেকে মিটিয়ে দেব এবং তারা যা করছে তার উৎকৃষ্টতম প্রতিদান তাদেরকে অবশ্যই দেব।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আর যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, আমি অবশ্যই তাদের মন্দ কাজ গুলো মিটিয়ে দেব এবং তাদেরকে কর্মের উৎকৃষ্টতর প্রতিদান দেব।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এবং যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আমি নিশ্চয়ই তাদের হতে তাদের মন্দ কর্মগুলি মিটাইয়া দিব এবং আমি অবশ্যই তাদেরকে প্রতিদান দিব, তারা যে উত্তম কর্ম করত তার।



وَوَصَّیۡنَا الۡاِنۡسَانَ بِوَالِدَیۡہِ حُسۡنًا ؕ وَاِنۡ جَاہَدٰکَ لِتُشۡرِکَ بِیۡ مَا لَیۡسَ لَکَ بِہٖ عِلۡمٌ فَلَا تُطِعۡہُمَا ؕ اِلَیَّ مَرۡجِعُکُمۡ فَاُنَبِّئُکُمۡ بِمَا کُنۡتُمۡ تَعۡمَلُوۡنَ


ওয়া ওয়াসসাইনাল ইনছা-না বিওয়া-লিদাইহি হুূছনাওঁ ওয়া ইন জা-হাদা-কা লিতুশরিকা বী মা-লাইছা লাকা বিহী ‘ইলমুন ফালা-তুতি‘হুমা- ইলাইইয়া মারজি‘উকুম ফাউনাব্বিউকুম বিমা-কুনতুম তা‘মালূন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আমি মানুষকে আদেশ করেছি তারা যেন পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করে। তারা যদি আমার সাথে এমন কিছুকে শরীক করার জন্য তোমার উপর বলপ্রয়োগ করে, যার সম্পর্কে তোমার কাছে কোন প্রমাণ নেই, তবে সে ব্যাপারে তাদের কথা মানবে না। ৪ আমারই কাছে তোমাদেরকে ফিরে আসতে হবে। তখন আমি তোমাদেরকে অবহিত করব তোমরা কী করতে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি মানুষকে পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করার জোর নির্দেশ দিয়েছি। যদি তারা তোমাকে আমার সাথে এমন কিছু শরীক করার জোর প্রচেষ্টা চালায়, যার সম্পর্কে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তবে তাদের আনুগত্য করো না। আমারই দিকে তোমাদের প্রত্যাবর্তন। অতঃপর আমি তোমাদেরকে বলে দেব যা কিছু তোমরা করতে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আমি মানুষকে নির্দেশ দিয়েছি তার পিতামাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করতে। তবে এরা যদি তোমার ওপর বল প্রয়োগ করে আমার সঙ্গে এমন কিছু শরীক করতে যার সম্পর্কে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তুমি তাদেরকে মানিও না। আমারই নিকট তোমাদের প্রত্যাবর্তন। এরপর আমি তোমাদেরকে জানিয়ে দিব তোমরা কী করছিলে।


তাফসীরঃ

৪. এ আয়াতে মূলনীতি বলে দেওয়া হয়েছে যে, পিতা-মাতা অমুসলিম হলেও সন্তানের কর্তব্য তাদের সাথে ভালো ব্যবহার করা। তাদেরকে অসম্মান করা বা তাদের মনে কষ্ট দেওয়া কোন মুসলিমের কাজ হতে পারে না। তবে তারা যদি কুফর ও শিরকে লিপ্ত হতে বাধ্য করতে চায়, তা কিছুতেই মানা যাবে না।



وَالَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ لَنُدۡخِلَنَّہُمۡ فِی الصّٰلِحِیۡنَ


ওয়াল্লাযীনা আ-মানূওয়া ‘আমিলুসসা-লিহা-তি লানুদখিলান্নাহুম ফিসসা-লিহীন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে, আমি অবশ্যই তাদেরকে নেক লোকদের অন্তর্ভুক্ত করব। ৫


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকাজ করে, আমি অবশ্যই তাদেরকে সৎকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করব।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আমি অবশ্যই তাদেরকে সৎকর্মপরায়ণদের অন্তর্ভুক্ত করব।


তাফসীরঃ

৫. এর দুই অর্থ হতে পারে। (ক) তাদেরকে পুণ্যবানদের দলভুক্ত করব, তাদের একজন হিসেবে তাকে গণ্য করব। (খ) তাদেরকে পুণ্যবানদের স্থানে অর্থাৎ জান্নাতে দাখিল করব। -অনুবাদক


১০


وَمِنَ النَّاسِ مَنۡ یَّقُوۡلُ اٰمَنَّا بِاللّٰہِ فَاِذَاۤ اُوۡذِیَ فِی اللّٰہِ جَعَلَ فِتۡنَۃَ النَّاسِ کَعَذَابِ اللّٰہِ ؕ وَلَئِنۡ جَآءَ نَصۡرٌ مِّنۡ رَّبِّکَ لَیَقُوۡلُنَّ اِنَّا کُنَّا مَعَکُمۡ ؕ اَوَلَیۡسَ اللّٰہُ بِاَعۡلَمَ بِمَا فِیۡ صُدُوۡرِ الۡعٰلَمِیۡنَ


ওয়া মিনান্না-ছি মাইঁ ইয়াকূলুআ-মান্না-বিল্লা-হি ফাইযা-ঊযিইয়া ফিল্লা-হি জা‘আলা ফিতনাতান্না-ছি কা‘আযা-বিল্লা-হি ওয়ালাইন জাআ নাসরুম মির রাব্বিকা লাইয়াকূলুন্না ইন্না-কুন্না-মা‘আকুম আওয়া লাইছাল্লা-হু বিআ‘লামা বিমা-ফী সুদূ রিল ‘আলামীন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

মানুষের মধ্যে কতক লোক এমন আছে, যারা বলে, আমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছি। অতঃপর যখন আল্লাহর পথে তাদের কোন কষ্ট-ক্লেশ দেখা দেয়, তখন তারা মানুষের দেওয়া কষ্টকে আল্লাহর আযাব তুল্য গণ্য করে। ৬ আবার যদি কখনও তোমার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে (মুসলিমদের জন্য) কোন সাহায্য আসে, তখন তারা বলবেই, আমরা তো তোমাদেরই সাথে ছিলাম। ৭ বিশ্ব-জগতের সমস্ত মানুষের অন্তরে যা আছে, আল্লাহ কি তা ভালোভাবে জানেন না?


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

কতক লোক বলে, আমরা আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্থাপন করেছি; কিন্তু আল্লাহর পথে যখন তারা নির্যাতিত হয়, তখন তারা মানুষের নির্যাতনকে আল্লাহর আযাবের মত মনে করে। যখন আপনার পালনকর্তার কাছ থেকে কোন সাহায্য আসে তখন তারা বলতে থাকে, আমরা তো তোমাদের সাথেই ছিলাম। বিশ্ববাসীর অন্তরে যা আছে, আল্লাহ কি তা সম্যক অবগত নন?


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

মানুষের মধ্যে কতক বলে, ‘আমরা আল্লাহে বিশ্বাস করি, কিন্তু আল্লাহ্ র পথে যখন এরা নিগৃহীত হয়, তখন এরা মানুষের পীড়নকে আল্লাহ্ র শাস্তির মত গণ্য করে এবং তোমার প্রতিপালকের নিকট হতে কোন সাহায্য আসলে এরা বলিতে থাকে, ‘আমরা তো তোমাদের সঙ্গেই ছিলাম।’ বিশ্ববাসীর অন্তঃকরণে যা আছে, আল্লাহ্ কি তা সম্যক অবগত নহেন ?’


তাফসীরঃ

৬. অর্থাৎ, আল্লাহ তাআলার আযাব যেমন কঠিন, তারা মানুষ-প্রদত্ত কষ্ট-ক্লেশকেও তেমনি কঠিন মনে করে। আর এ কারণেই কাফেরদের কথা শুনে পুনরায় কুফরের পথে ফিরে যায়, কিন্তু সে কথা মুসলিমদের কাছে প্রকাশ করে না। এভাবে তারা দীন ও ঈমানের ব্যাপারে মুনাফেক হয়ে যায়।


৭. অর্থাৎ, যখন মুসলিমগণ বিজয় লাভ করবে এবং সেই সঙ্গে ইসলাম গ্রহণের বিভিন্ন সুফল তারা পেতে শুরু করবে, তখন মুনাফেকরা তাদেরকে বলবে, আমরা আন্তরিকভাবে তো তোমাদেরই সাথে ছিলাম। কাজেই আমাদের প্রতি কাফেরদের মত আচরণ না করে বিজয়ের সুফলে তোমরা আমাদেরকেও শরীক রাখ।


১১


وَلَیَعۡلَمَنَّ اللّٰہُ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَلَیَعۡلَمَنَّ الۡمُنٰفِقِیۡنَ


ওয়া লাইয়া‘লামান্নাল্লা-হুল্লাযীনা আ-মানূওয়া লাইয়া‘লামান্নাল মুনা-ফিকীন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আল্লাহ অবশ্যই জেনে নেবেন কারা ঈমান এনেছে এবং তিনি অবশ্যই জেনে নেবেন কারা মুনাফেক। ৮


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আল্লাহ অবশ্যই জেনে নেবেন যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং নিশ্চয় জেনে নেবেন যারা মুনাফেক।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আল্লাহ্ অবশ্যই প্রকাশ করে দিবেন কাহারা ঈমান এনেছে এবং অবশ্যই প্রকাশ করে দিবেন কাহারা মুনাফিক।


তাফসীরঃ

৮. পূর্বের ১নং টীকা দেখুন।


১২


وَقَالَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا لِلَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اتَّبِعُوۡا سَبِیۡلَنَا وَلۡنَحۡمِلۡ خَطٰیٰکُمۡ ؕ وَمَا ہُمۡ بِحٰمِلِیۡنَ مِنۡ خَطٰیٰہُمۡ مِّنۡ شَیۡءٍ ؕ اِنَّہُمۡ لَکٰذِبُوۡنَ


ওয়া কা-লাল্লাযীনা কাফারূ লিল্লাযীনা আ-মানততাবি‘ঊ ছাবীলানা-ওয়ালনাহমিল খাতায়া-কুম ওয়ামা-হুম বিহা-মিলীনা মিন খাতা-য়া হুম মিন শাইয়িন ইন্নাহুম লাকাযিবূন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

যারা কুফর অবলম্বন করেছে, তারা মুমিনদেরকে বলে, তোমরা আমাদের পথ অনুসরণ কর, তাহলে আমরা তোমাদের গুনাহের বোঝা বহন করব, অথচ তারা তাদের গুনাহের বোঝা আদৌ বহন করতে পারবে না। নিশ্চয়ই তারা মিথ্যাবাদী।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

কাফেররা মুমিনদেরকে বলে, আমাদের পথ অনুসরণ কর। আমরা তোমাদের পাপভার বহন করব। অথচ তারা পাপভার কিছুতেই বহন করবে না। নিশ্চয় তারা মিথ্যাবাদী।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

কাফিররা মু’মিনদেরকে বলে, ‘আমাদের পথ অনুসরণ কর তা হলে আমরা তোমাদের পাপভার বহন করব।’ কিন্তু এরা তো তাদের পাপভারের কিছুই বহন করবে না। এরা অবশ্যই মিথ্যাবাদী।


১৩


وَلَیَحۡمِلُنَّ اَثۡقَالَہُمۡ وَاَثۡقَالًا مَّعَ اَثۡقَالِہِمۡ ۫  وَلَیُسۡـَٔلُنَّ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ عَمَّا کَانُوۡا یَفۡتَرُوۡنَ ٪


ওয়া লাইয়াহমিলুন্না আছকা-লাহুম ওয়াআছকা-লাম মা‘আ আছকা-লিহিম ওয়ালাইউছআলুন্না ইয়াওমাল কিয়া-মাতি ‘আম্মা-কা-নূইয়াফতারূন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তারা অবশ্যই তাদের নিজেদের গুনাহের বোঝা বহন করবে এবং নিজেদের বোঝার সাথে আরও কিছু বোঝা। ৯ তারা যা-কিছু মিথ্যা উদ্ভাবন করে, কিয়ামতের দিন তাদেরকে সে সম্পর্কে অবশ্যই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তারা নিজেদের পাপভার এবং তার সাথে আরও কিছু পাপভার বহন করবে। অবশ্য তারা যে সব মিথ্যা কথা উদ্ভাবন করে, সে সম্পর্কে কেয়ামতের দিন জিজ্ঞাসিত হবে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরা নিজেদের ভার বহন করবে এবং নিজেদের বোঝার সঙ্গে আরও কিছু বোঝা ; আর এরা যে মিথ্যা উদ্ভাবন করে সে সম্পর্কে কিয়ামত দিবসে অবশ্যই এদেরকে প্রশ্ন করা হবে।


তাফসীরঃ

৯. অর্থাৎ, তারা যাদেরকে বিপথগামী করেছে তাদের পাপের বোঝাও তাদেরকে বইতে হবে। এর মানে এ নয় যে, সেই বিপথগামীরা গুনাহের শাস্তি থেকে বেঁচে যাবে। বরং এর অর্থ, তাদের গুনাহ তো তাদের থাকবেই, সেই সঙ্গে তাদের সমপরিমাণ গুনাহ, যারা তাদেরকে বিপথগামী করেছিল তাদের উপরও বর্তাবে।


১৪


وَلَقَدۡ اَرۡسَلۡنَا نُوۡحًا اِلٰی قَوۡمِہٖ فَلَبِثَ فِیۡہِمۡ اَلۡفَ سَنَۃٍ اِلَّا خَمۡسِیۡنَ عَامًا ؕ فَاَخَذَہُمُ الطُّوۡفَانُ وَہُمۡ ظٰلِمُوۡنَ


ওয়া লাকাদ আরছালনা-নূহান ইলা-কাওমিহী ফালাবিছা ফীহিম আলফা ছানাতিন ইল্লাখামছীনা ‘আ-মান ফাআখাযা হুমুততূফা-নুওয়াহুম জা-লিমূন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আমি নূহকে তার সম্প্রদায়ের কাছে পাঠিয়েছিলাম। সে তাদের মধ্যে অবস্থান করেছিল পঞ্চাশ কম হাজার বছর। অতঃপর প্লাবন তাদেরকে গ্রাস করল, যেহেতু তারা ছিল জালেম।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি নূহ (আঃ) কে তাঁর সম্প্রদায়ের কাছে প্রেরণ করেছিলাম। তিনি তাদের মধ্যে পঞ্চাশ কম এক হাজার বছর অবস্থান করেছিলেন। অতঃপর তাদেরকে মহাপ্লাবণ গ্রাস করেছিল। তারা ছিল পাপী।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আমি তো নূহ্কে তার সম্প্রদায়ের নিকট প্রেরণ করেছিলাম। সে এদের মধ্যে অবস্থান করেছিল পঞ্চাশ কম হাজার বৎসর। এরপর প্লাবন এদেরকে গ্রাস করে ; কারণ এরা ছিল সীমালংঘনকারী।


১৫


فَاَنۡجَیۡنٰہُ وَاَصۡحٰبَ السَّفِیۡنَۃِ وَجَعَلۡنٰہَاۤ اٰیَۃً لِّلۡعٰلَمِیۡنَ


ফাআনজাইনা-হু ওয়া আসহা-বাছছাফীনাতি ওয়া জা‘আলনা-হা-আ-য়াতাল লিল‘আ-লামীন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

অতঃপর আমি নূহকে ও নৌকারোহীদেরকে রক্ষা করলাম এবং এটাকে জগদ্বাসীদের জন্য একটি নিদর্শন বানিয়ে দিলাম। ১০


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

অতঃপর আমি তাঁকে ও নৌকারোহীগণকে রক্ষা করলাম এবং নৌকাকে নিদর্শন করলাম বিশ্ববাসীর জন্যে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরপর আমি তাকে এবং যারা তরণীতে আরোহণ করেছিল তাদেরকে রক্ষা করলাম এবং বিশ্বজগতের জন্যে এটাকে করলাম একটি নিদর্শন।


তাফসীরঃ

১০. হযরত নূহ আলাইহিস সালামের ঘটনা পূর্বে সূরা হুদ (১১ : ২৫)-এ বিস্তারিত গত হয়েছে। সেখানে দ্রষ্টব্য।


১৬


وَاِبۡرٰہِیۡمَ اِذۡ قَالَ لِقَوۡمِہِ اعۡبُدُوا اللّٰہَ وَاتَّقُوۡہُ ؕ ذٰلِکُمۡ خَیۡرٌ لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ


ওয়া ইবরা-হীমা ইযকা-লা লিকাওমিহি‘বুদুল্লা-হা ওয়াত্তাকূহু যা-লিকুম খাইরুল্লাকুম ইন কুনতুম তা‘লামূন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এবং আমি ইবরাহীমকে পাঠালাম, যখন সে তার সম্প্রদায়কে বলেছিল, আল্লাহর ইবাদত কর ও তাঁকে ভয় কর। এটাই তোমাদের পক্ষে শ্রেয়, যদি তোমরা জ্ঞান রাখ।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

স্মরণ কর ইব্রাহীমকে। যখন তিনি তাঁর সম্প্রদায়কে বললেন; তোমরা আল্লাহর এবাদত কর এবং তাঁকে ভয় কর। এটাই তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বোঝ।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

স্মরণ কর ইব্রাহীমের কথা, সে তার সম্প্রদায়কে বলেছিল, তোমরা আল্লাহ্ র ‘ইবাদত কর এবং তাঁকে ভয় কর ; তোমাদের জন্যে এটাই শ্রেয় যদি তোমরা জানতে !


১৭


اِنَّمَا تَعۡبُدُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ اَوۡثَانًا وَّتَخۡلُقُوۡنَ اِفۡکًا ؕ اِنَّ الَّذِیۡنَ تَعۡبُدُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ لَا یَمۡلِکُوۡنَ لَکُمۡ رِزۡقًا فَابۡتَغُوۡا عِنۡدَ اللّٰہِ الرِّزۡقَ وَاعۡبُدُوۡہُ وَاشۡکُرُوۡا لَہٗ ؕ اِلَیۡہِ تُرۡجَعُوۡنَ


ইন্নামা-তা‘বূদূ না মিন দূ নিল্লা-হি আওছা-নাওঁ ওয়া তাখলুকূনা ইফকান ইন্নাল্লাযীনা তা‘বুদূ না মিন দূ নিল্লা-হি লা-ইয়ামলিকূনা লাকুম রিঝকান ফাবতাগূ‘ইনদাল্লা-হির রিঝকা ওয়া‘বুদূ হু ওয়াশকুরূলাহূ ইলাইহি তুরজা‘ঊন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তোমরা তো আল্লাহর পরিবর্তে কেবল প্রতিমাদেরই পূজা করছ এবং রচনা করছ মিথ্যা ১১। তোমরা আল্লাহ ছাড়া যাদের ইবাদত কর, তারা তোমাদেরকে রিযক দেওয়ার ক্ষমতা রাখে না। সুতরাং আল্লাহর কাছে রিযক সন্ধান কর, তাঁর ইবাদত কর এবং তাঁর কৃতজ্ঞতা আদায় কর। তাঁরই কাছে তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তোমরা তো আল্লাহর পরিবর্তে কেবল প্রতিমারই পূজা করছ এবং মিথ্যা উদ্ভাবন করছ। তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের এবাদত করছ, তারা তোমাদের রিযিকের মালিক নয়। কাজেই আল্লাহর কাছে রিযিক তালাশ কর, তাঁর এবাদত কর এবং তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। তাঁরই কাছে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘তোমরা তো আল্লাহ্ ব্যতীত কেবল মূর্তিপূজা করছো এবং মিথ্যা উদ্ভাবন করছো। তোমরা আল্লাহ্ ব্যতীত যাদের পূজা কর তারা তোমাদের জীবনোপকরণের মালিক নয়। সুতরাং তোমরা জীবনোপকরণ কামনা কর আল্লাহ্ র নিকট এবং তাঁর ‘ইবাদত কর ও তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। তোমরা তাঁরই নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে।

(ads1)

(getButton) #text=(আল কোরআন বাংলা অনুবাদ সহ এক সাথে ) #icon=(link) #color=(#b50404)

তাফসীরঃ

১১. অর্থাৎ বিভিন্ন মিথ্যা আকীদা-বিশ্বাস তৈরি করছ ও সেই অনুযায়ী কাজ করছ। যেমন দেব-দেবীদের প্রতি ঐশ্বরিক গুণ আরোপ করে তাদের পূজা-অর্চনায় লিপ্ত হচ্ছ। বর্তমানকালের কবর-পূজার ক্ষেত্রেও একথা প্রযোজ্য। -অনুবাদক


১৮


وَاِنۡ تُکَذِّبُوۡا فَقَدۡ کَذَّبَ اُمَمٌ مِّنۡ قَبۡلِکُمۡ ؕ وَمَا عَلَی الرَّسُوۡلِ اِلَّا الۡبَلٰغُ الۡمُبِیۡنُ


ওয়া ইন তূকাযযিবূফাকাদ কাযযাবা উমামুম মিন কাবলিকুম ওয়ামা-‘আলাররাছূলি ইল্লাল বালা-গুল মুবীন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তোমরা যদি আমাকে মিথ্যাবাদী বল, তবে তোমাদের পূর্বেও বহু জাতি নবীদেরকে মিথ্যাবাদী বলেছিল। সুস্পষ্টভাবে বার্তা পৌঁছানো ছাড়া রাসূলের আর কোন দায়িত্ব থাকে না।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তোমরা যদি মিথ্যাবাদী বল, তবে তোমাদের পূর্ববর্তীরাও তো মিথ্যাবাদী বলেছে। স্পষ্টভাবে পয়গাম পৌছে দেয়াই তো রসূলের দায়িত্ব।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘তোমরা যদি অস্বীকার কর তবে তো তোমাদের পূর্ববর্তীরাও মিথ্যাবাদী বলেছিল। সুস্পষ্টভাবে প্রচার করে দেওয়া ব্যতীত রাসূলের আর কোন দায়িত্ব নেই।


১৯


اَوَلَمۡ یَرَوۡا کَیۡفَ یُبۡدِئُ اللّٰہُ الۡخَلۡقَ ثُمَّ یُعِیۡدُہٗ ؕ اِنَّ ذٰلِکَ عَلَی اللّٰہِ یَسِیۡرٌ


আওয়ালাম ইয়ারাও কাইফা ইউবদিউল্লা-হুল খালকা ছুম্মা ইউ‘ঈদুহূ ইন্না যা-লিকা ‘আলাল্লা-হি ইয়াছীর।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তবে কি তারা লক্ষ্য করেনি, আল্লাহ কিভাবে মাখলুককে প্রথমবার সৃষ্টি করেন? অতঃপর তিনিই তাদেরকে পুনরায় সৃষ্টি করবেন। আল্লাহর পক্ষে এ কাজ অতি সহজ।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তারা কি দেখে না যে, আল্লাহ কিভাবে সৃষ্টিকর্ম শুরু করেন অতঃপর তাকে পুনরায় সৃষ্টি করবেন? এটা আল্লাহর জন্যে সহজ।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরা কি লক্ষ্য করে না, কিভাবে আল্লাহ্ সৃষ্টিকে অস্তিত্ব দান করেন, এরপর তা পুনরায় সৃষ্টি করেন ? এটা তো আল্লাহ্ র জন্যে সহজ।


২০


قُلۡ سِیۡرُوۡا فِی الۡاَرۡضِ فَانۡظُرُوۡا کَیۡفَ بَدَاَ الۡخَلۡقَ ثُمَّ اللّٰہُ یُنۡشِیٴُ النَّشۡاَۃَ الۡاٰخِرَۃَ ؕ  اِنَّ اللّٰہَ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ ۚ


কুল ছীরূ ফিল আরদিফানজুরূ কাইফা বাদাআল খালকা ছুম্মাল্লা-হু ইউনশিউন নাশআতাল আ-খিরাতা ইন্নাল্লা-হা ‘আলা-কুল্লিা শাইয়িন কাদীর।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

বল, পৃথিবীতে একটু ভ্রমণ করে দেখ, আল্লাহ কিভাবে মাখলুককে প্রথমবার সৃষ্টি করেছেন। তারপর আল্লাহই (তাদেরকে) আখেরাতকালীন উত্থানে উত্থিত করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ববিষয়ে শক্তিমান।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

বলুন, তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ কর এবং দেখ, কিভাবে তিনি সৃষ্টিকর্ম শুরু করেছেন। অতঃপর আল্লাহ পুর্নবার সৃষ্টি করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ সবকিছু করতে সক্ষম।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

বল, ‘তোমরা পৃথিবীতে পরিভ্রমণ কর এবং অনুধাবন কর, কিভাবে তিনি সৃষ্টি আরম্ভ করেছেন! এরপর আল্লাহ্ সৃষ্টি করবেন পরবর্তী সৃষ্টি। আল্লাহ্ তো সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।


২১


یُعَذِّبُ مَنۡ یَّشَآءُ وَیَرۡحَمُ مَنۡ یَّشَآءُ ۚ وَاِلَیۡہِ تُقۡلَبُوۡنَ


ইউ‘আযযিবূমাইঁ ইয়াশাউ ওয়া ইয়ারহামুমাইঁ ইয়াশাউ ওয়া ইলাইহি তুকলাবূন ।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তিনি যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেবেন, যার প্রতি ইচ্ছা দয়া করবেন এবং তাঁরই কাছে তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তিনি যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেন এবং যার প্রতি ইচ্ছা রহমত করেন। তাঁরই দিকে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তিনি যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেন এবং যার প্রতি ইচ্ছা অনুগ্রহ করেন। তোমরা তাঁরই নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে।


২২


وَمَاۤ اَنۡتُمۡ بِمُعۡجِزِیۡنَ فِی الۡاَرۡضِ وَلَا فِی السَّمَآءِ ۫  وَمَا لَکُمۡ مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ مِنۡ وَّلِیٍّ وَّلَا نَصِیۡرٍ ٪


ওয়ামা-আনতুম বিমু‘জিঝীনা ফিল আরদি ওয়ালা -ফিছছামাই ওয়ামা-লাকুম মিন দূ নিল্লাহি মিওঁ ওয়ালিইয়িওঁ ওয়ালা-নাসীর।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তোমরা ভূমিতেও তাঁকে (আল্লাহকে) অক্ষম করতে পারবে না এবং আকাশেও না। আল্লাহ ছাড়া তোমাদের কোন অভিভাবক নেই এবং সাহায্যকারীও নেই।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তোমরা স্থলে ও অন্তরীক্ষে আল্লাহকে অপারগ করতে পারবে না এবং আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের কোন হিতাকাঙ্খী নেই, সাহায্যকারীও নেই।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তোমরা আল্লাহ্কে ব্যর্থ করতে পারবে না পৃথিবীতে, আর না আকাশে এবং আল্লাহ্ ব্যতীত তোমাদের কোন অভিভাবক নেই, সাহায্যকারীও নেই।


২৩


وَالَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا بِاٰیٰتِ اللّٰہِ وَلِقَآئِہٖۤ اُولٰٓئِکَ یَئِسُوۡا مِنۡ رَّحۡمَتِیۡ وَاُولٰٓئِکَ لَہُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ


ওয়াল্লাযীনা কাফারূ বিআ-য়া-তিল্লা-হি ওয়া লিকা-ইহীউলাইকা ইয়াইছূমিররাহমাতী ওয়া উলাইকা লাহুম ‘আযা-বুন আলীম।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

যারা আল্লাহর আয়াতসমূহ ও তাঁর সাক্ষাতকে অস্বীকার করেছে, তারাই আমার রহমত থেকে নিরাশ হয়ে গেছে। ১২ তাদের জন্য আছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যারা আল্লাহর আয়াত সমূহ ও তাঁর সাক্ষাত অস্বীকার করে, তারাই আমার রহমত থেকে নিরাশ হবে এবং তাদের জন্যেই যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যারা আল্লাহ্ র নিদর্শন ও তাঁর সাক্ষাৎ অস্বীকার করে, তারাই আমার অনুগ্রহ হতে নিরাশ হয়। আর তাদের জন্যে আছে মর্মন্তুদ শাস্তি।


তাফসীরঃ

১২. অর্থাৎ আখিরাতে তারা যখন আযাব দেখতে পাবে তখন আল্লাহর রহমত লাভ থেকে সম্পূর্ণ নিরাশ হয়ে যাবে এবং বুঝতে পারবে তাদের মুক্তিলাভের কোন উপায় নেই। আর এটা যেহেতু নিশ্চিত, সব রকম সংশয় সন্দেহের ঊর্ধ্বে তাই অতীত ক্রিয়ায় ব্যক্ত করা হয়েছে। -অনুবাদক


২৪


فَمَا کَانَ جَوَابَ قَوۡمِہٖۤ اِلَّاۤ اَنۡ قَالُوا اقۡتُلُوۡہُ اَوۡ حَرِّقُوۡہُ فَاَنۡجٰىہُ اللّٰہُ مِنَ النَّارِ ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیٰتٍ لِّقَوۡمٍ یُّؤۡمِنُوۡنَ


ফামা-কা-না জাওয়া-বা কাওমিহী-ইল্লা-আন কানলুকতুলূহু আও হাররিকুহু ফাআনজা-হুল্লাহু মিনান্না-রি ইন্না ফী যা-লিকা লাআ-য়া-তিল লিকাওমিইঁ ইউ’মিনূন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

কিন্তু ইবরাহীমের সম্প্রদায়ের উত্তর এ ছাড়া কিছুই ছিল না যে, তারা বলেছিল, তোমরা তাকে হত্যা করে ফেল অথবা তাকে জ্বালিয়ে দাও। অনন্তর আল্লাহ তাকে আগুন থেকে রক্ষা করলেন। নিশ্চয়ই যারা ঈমান আনে, তাদের জন্য এ ঘটনার ভেতর বহু শিক্ষা আছে। ১৩


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তখন ইব্রাহীমের সম্প্রদায়ের এছাড়া কোন জওয়াব ছিল না যে তারা বলল, তাকে হত্যা কর অথবা অগ্নিদগ্ধ কর। অতঃপর আল্লাহ তাকে অগ্নি থেকে রক্ষা করলেন। নিশ্চয় এতে বিশ্বাসী লোকদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

উত্তরে ইব্রাহীমের সম্প্রদায় শুধু এই বলল, ‘এটাকে হত্যা কর বা অগ্নিদগ্ধ কর।’ কিন্তু আল্লাহ্ তাকে অগ্নি হতে রক্ষা করলেন। এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে মু’মিন সম্প্রদায়ের জন্যে।


তাফসীরঃ

১৩. হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামের ঘটনা জানার জন্য দেখুন সূরা আম্বিয়া (২১ : ৫১)।


২৫


وَقَالَ اِنَّمَا اتَّخَذۡتُمۡ مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ اَوۡثَانًا ۙ  مَّوَدَّۃَ بَیۡنِکُمۡ فِی الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا ۚ  ثُمَّ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ یَکۡفُرُ بَعۡضُکُمۡ بِبَعۡضٍ وَّیَلۡعَنُ بَعۡضُکُمۡ بَعۡضًا ۫  وَّمَاۡوٰىکُمُ النَّارُ وَمَا لَکُمۡ مِّنۡ نّٰصِرِیۡنَ ٭ۙ


ওয়া কা-লা ইন্নামাততাখাযতুম মিন দূ নিল্লা-হি আওছা-নাম মাওয়াদ্দাতা বাইনিকুম ফিল হায়া-তিদ দুনইয়া- ছু ম্মা ইয়াওমাল কিয়া-মাতি ইয়াকফুরু বা‘দুকুম ব্বিা‘দিওঁ ওয়া ইয়াল‘আনুবা‘দুকুম বা‘দাওঁ ওয়ামা‘ ওয়া-কুমুন্না-রু ওয়ামা-লাকুম মিন্না-সিরীন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

ইবরাহীম আরও বলেছিল, তোমরা তো আল্লাহকে ছেড়ে মূর্তিগুলোকেই (প্রভু) মেনেছ, পার্থিব জীবনে তোমাদের পারস্পরিক বন্ধুত্ব রক্ষার লক্ষে। ১৪ পরিশেষে কিয়ামতের দিন তোমরা একে অন্যকে অস্বীকার করবে এবং একে অন্যকে লানত করবে। ১৫ তোমাদের ঠিকানা হবে জাহান্নাম এবং তোমাদের কোন রকম সাহায্যকারী লাভ হবে না।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

ইব্রাহীম বললেন, পার্থিব জীবনে তোমাদের পারস্পরিক ভালবাসা রক্ষার জন্যে তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে প্রতিমাগুলোকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছ। এরপর কেয়ামতের দিন তোমরা একে অপরকে অস্বীকার করবে এবং একে অপরকে লানত করবে। তোমাদের ঠিকানা জাহান্নাম এবং তোমাদের কোন সাহায্যকারী নেই।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

ইব্রাহীম বলল, ‘তোমরা তো আল্লাহ্ র পরিবর্তে মূর্তিগুলিকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছ, পার্থিব জীবনে তোমাদের পারস্পরিক বন্ধুত্বের খাতিরে। পরে কিয়ামতের দিন তোমরা একে অপরকে অস্বীকার করবে এবং পরস্পর পরস্পরকে অভিসম্পাত দিবে। তোমাদের আবাস হবে জাহান্নাম এবং তোমাদের কোন সাহায্যকারী থাকবে না।’


তাফসীরঃ

১৪. এর দুটো ব্যাখ্যা হতে পারে (এক) যারা মূর্তিপূজা করে, তারা সে মূর্তিপূজার ভিত্তিতেই নিজেদের মধ্যে বন্ধুত্ব প্রতিষ্ঠা ও তা রক্ষা করছে। (দুই) দ্বিতীয় এই ব্যাখ্যা হতে পারে যে, তোমরা যে মূর্তিপূজা অবলম্বন করেছ, তা আসলে বুঝেশুনে করনি; বরং অন্যের দেখাদেখি করেছ। নিজ ভাই বা বন্ধুদের দেখেছ মূর্তিপূজা করছে, ব্যস তোমরা তা গ্রহণ করে নিয়েছ। এর উদ্দেশ্য কেবল তাদের সাথে সম্পর্ক ও বন্ধুত্ব প্রতিষ্ঠিত রাখা। এর দ্বারা শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে, যেখানে হক ও বাতিলের প্রশ্ন, সেখানে কেবল আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের খাতিরে কোন পথ অবলম্বন করা উচিত নয়; বরং এসব পিছুটান থেকে মুক্ত হয়ে পরিপূর্ণ চিন্তা-ভাবনা করে, বুঝে-শুনে সত্য-সঠিক পথকেই বেছে নেওয়া উচিত।


১৫. অর্থাৎ আখিরাতে অবস্থা সম্পূর্ণ বদলে যাবে। তখন এই পার্থিব বন্ধুত্বের স্থলে পরস্পরের মধ্যে চরম বিদ্বেষ ও ঘৃণা সৃষ্টি হয়ে যাবে। তখন একে অন্যের সাথে কোনরূপ সম্পর্ক না থাকার ঘোষণা দেবে এবং একে অন্যের দেখাদেখি বা অন্যের প্ররোচনায় বিপথগামী হওয়ার কারণে একে অন্যকে লা’নত করবে। -অনুবাদক


২৬


فَاٰمَنَ لَہٗ لُوۡطٌ ۘ وَقَالَ اِنِّیۡ مُہَاجِرٌ اِلٰی رَبِّیۡ ؕ اِنَّہٗ ہُوَ الۡعَزِیۡزُ الۡحَکِیۡمُ


ফাআ-মানা লাহূলূত । ওয়া কা-লা ইন্নী মুহা-জিরুন ইলা-রাববী ইন্নাহূহুওয়াল ‘আঝীঝুল হাকীম।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

অতঃপর লূত তার প্রতি ঈমান আনল। ১৬ ইবরাহীম বলল, আমি আমার প্রতিপালকের দিকে হিজরত করছি। ১৭ নিশ্চয়ই তিনিই পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

অতঃপর তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করলেন লূত। ইব্রাহীম বললেন, আমি আমার পালনকর্তার উদ্দেশে দেশত্যাগ করছি। নিশ্চয় তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

লূত তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করল। ইব্রাহীম বলল, ‘আমি আমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগ করছি। তিনি তো পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’


তাফসীরঃ

১৬. হযরত লূত আলাইহিস সালাম ছিলেন হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামের ভাতিজা। হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামের প্রতি তাঁর মাতৃভূমি ইরাকে এক লূত আলাইহিস সালাম ছাড়া আর কেউ ঈমান আনেনি। শেষ পর্যন্ত হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামের সাথে তিনিও দেশ থেকে হিজরত করেন। অবশ্য পরবর্তীতে আল্লাহ তাআলা তাঁকেও নবী বানান এবং সাদুমবাসীদের হেদায়াতের জন্য তাঁকে প্রেরণ করেন।


১৭. অর্থাৎ, আমার প্রতিপালকের সন্তুষ্টি হাসিলের উদ্দেশ্যে দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছি।


২৭


وَوَہَبۡنَا لَہٗۤ اِسۡحٰقَ وَیَعۡقُوۡبَ وَجَعَلۡنَا فِیۡ ذُرِّیَّتِہِ النُّبُوَّۃَ وَالۡکِتٰبَ وَاٰتَیۡنٰہُ اَجۡرَہٗ فِی الدُّنۡیَا ۚ وَاِنَّہٗ فِی الۡاٰخِرَۃِ لَمِنَ الصّٰلِحِیۡنَ


ওয়া ওয়াহাবনা-লাহূইছহা-কা ওয়াইয়া‘কূবা ওয়া জা‘আলনা-ফী যুররিইইয়াতিহিন নুবুওওয়াতা ওয়ালকিতা-বা ওয়া আ-তাইনা-হু আজরাহূফিদদুনইয়া- ওয়া ইন্নাহূফিল আখিরাতি লামিনাসসা-লিহীন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আমি তাকে ইসহাক ও ইয়াকুব (-এর মত সন্তান) দান করলাম এবং তার বংশধরদের মধ্যে নবুওয়াত ও কিতাবের ধারা চালু রাখলাম এবং দুনিয়ায় তাকে তার পুরস্কার দান করলাম ১৮ আর নিশ্চয়ই আখেরাতে সে সালেহীনের মধ্যে গণ্য হবে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি তাকে দান করলাম ইসহাক ও ইয়াকুব, তাঁর বংশধরদের মধ্যে নবুওয়ত ও কিতাব রাখলাম এবং দুনিয়াতে তাঁকে পুরস্কৃত করলাম। নিশ্চয় পরকালে ও সে সৎলোকদর অন্তর্ভূক্ত হবে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আমি ইব্রাহীমকে দান করলাম ইসহাক ও ইয়া‘ক‚ব এবং তার বংশধরদের জন্যে স্থির করলাম নবুওয়াত ও কিতাব এবং আমি তাকে দুনিয়ায় পুরস্কৃত করেছিলাম ; আখিরাতেও সে নিশ্চয়ই সৎকর্মপরায়ণদের অন্যতম হবে।


তাফসীরঃ

১৮. অর্থাৎ সুনাম-সুখ্যাতি দান করলাম। সকল আসমানী দীনের অনুসারীগণ তার প্রতি ভক্তি-ভালোবাসা প্রকাশ করে থাকে। -অনুবাদক


২৮


وَلُوۡطًا اِذۡ قَالَ لِقَوۡمِہٖۤ اِنَّکُمۡ لَتَاۡتُوۡنَ الۡفَاحِشَۃَ ۫ مَا سَبَقَکُمۡ بِہَا مِنۡ اَحَدٍ مِّنَ الۡعٰلَمِیۡنَ


ওয়া লূতান ইযকা-লা লিকাওমিহী-ইন্নাকুম লাতা’তূনাল ফা-হিশাতা মা-ছাবাকাকুম বিহা-মিন আহাদিম মিনাল ‘আ-লামীন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এবং আমি লূতকে পাঠালাম, যখন সে নিজ সম্প্রদায়কে বলল, বস্তুত তোমরা এমনই অশ্লীল কাজ করছ, যা তোমাদের পূর্বে বিশ্বজগতের আর কেউ করেনি।

(ads2)

(getButton) #text=(আল কোরআন বাংলা অনুবাদ সহ এক সাথে ) #icon=(link) #color=(#b50404)

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আর প্রেরণ করেছি লূতকে। যখন সে তার সম্প্রদায়কে বলল, তোমরা এমন অশ্লীল কাজ করছ, যা তোমাদের পূর্বে পৃথিবীর কেউ করেনি।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

স্মরণ কর লূতের কথা, সে তার সম্প্রদায়কে বলেছিল, ‘তোমরা তো এমন অশ্লীল কর্ম করছো, যা তোমাদের পূর্বে বিশ্বে কেউ করে নাই।


২৯


اَئِنَّکُمۡ لَتَاۡتُوۡنَ الرِّجَالَ وَتَقۡطَعُوۡنَ السَّبِیۡلَ ۬ۙ وَتَاۡتُوۡنَ فِیۡ نَادِیۡکُمُ الۡمُنۡکَرَ ؕ فَمَا کَانَ جَوَابَ قَوۡمِہٖۤ اِلَّاۤ اَنۡ قَالُوا ائۡتِنَا بِعَذَابِ اللّٰہِ اِنۡ کُنۡتَ مِنَ الصّٰدِقِیۡنَ


আইন্নাকুম লাতা’তূনার রিজা-লা ওয়া তাকতা‘ঊনাছ ছাবীলা ওয়া তা’তূনা ফী না-দীকুমুল মুনকারা ফামা-কা-না জাওয়া-বা কাওমিহীইল্লাআন কা-লূ’ তিনা-বি‘আযাবিল্লা-হি ইন কুনতা মিনাসসা-দিকীন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তোমরা কি পুরুষদের কাছে উপগমন কর ১৯ এবং পথে-ঘাটে ডাকাতি কর আর তোমাদের ভরা মজলিসে অন্যায় কাজে লিপ্ত হও? অতঃপর তার সম্প্রদায়ের লোকদের উত্তর এছাড়া আর কিছুই ছিল না যে, তারা বলল, তুমি যদি সত্যবাদী হও, তবে আমাদের উপর আল্লাহর আযাব নিয়ে এসো।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তোমরা কি পুংমৈথুনে লিপ্ত আছ, রাহাজানি করছ এবং নিজেদের মজলিসে গর্হিত কর্ম করছ? জওয়াবে তাঁর সম্প্রদায় কেবল একথা বলল, আমাদের উপর আল্লাহর আযাব আন যদি তুমি সত্যবাদী হও।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘তোমরাই তো পুরুষে উপগত হচ্ছো, তোমরাই তো রাহাজানি করে থাক এবং তোমরাই তো নিজেদের মজলিসে প্রকাশ্যে ঘৃণ্য কর্ম করে থাক।’ উত্তরে তার সম্প্রদায় শুধু এই বলল, ‘আমাদের ওপর আল্লাহ্ র শাস্তি আনয়ন কর-যদি তুমি সত্যবাদী হও।’


তাফসীরঃ

১৯. অর্থাৎ, তোমরা কি নারীদের পরিবর্তে পুরুষদের মাধ্যমে যৌন চাহিদা পূরণ কর?


৩০


قَالَ رَبِّ انۡصُرۡنِیۡ عَلَی الۡقَوۡمِ الۡمُفۡسِدِیۡنَ ٪


কা-লা রাব্বিনসুরনী ‘আলাল কাওমিল মুফছিদীন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

লূত বলল, হে আমার প্রতিপালক! ফাসাদ সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য করুন।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

সে বলল, হে আমার পালনকর্তা, দুস্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য কর।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

সে বলল, ‘হে আমার প্রতিপালক ! বিপর্যয় সৃষ্টিকারী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য কর।’


৩১


وَلَمَّا جَآءَتۡ رُسُلُنَاۤ اِبۡرٰہِیۡمَ بِالۡبُشۡرٰی ۙ  قَالُوۡۤا اِنَّا مُہۡلِکُوۡۤا اَہۡلِ ہٰذِہِ الۡقَرۡیَۃِ ۚ  اِنَّ اَہۡلَہَا کَانُوۡا ظٰلِمِیۡنَ ۚۖ


ওয়া লাম্মা-জাআত রুছুলুনাইবরা-হীমা বিলবুশরা- কা-লূইন্না-মুহলিকূআহলি হাযিহিল কারইয়াতি ইন্না আহলাহা-কা-নূজা-লিমীন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

যখন আমার প্রেরিত ফিরিশতাগণ ইবরাহীমের কাছে (তার পুত্র জন্ম নেওয়ার) সুসংবাদ নিয়ে পৌঁছল, ২০ তখন তারা বলেছিল, আমরা এই জনপদবাসীদেরকে ধ্বংস করব। কেননা এর অধিবাসীগণ বড় জালেম।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যখন আমার প্রেরিত ফেরেশতাগণ সুসংবাদ নিয়ে ইব্রাহীমের কাছে আগমন করল, তখন তারা বলল, আমরা এই জনপদের অধিবাসীদেরকে ধ্বংস করব। নিশ্চয় এর অধিবাসীরা জালেম।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যখন আমার প্রেরিত ফেরেশতাগণ সুসংবাদসহ ইব্রাহীমের নিকট এলো, তারা বলেছিল, ‘আমরা এই জনপদবাসীদেরকে ধ্বংস করব, এটার অধিবাসীরা তো জালিম।’


তাফসীরঃ

২০. ‘হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামের পুত্র সন্তান জন্ম নেবে’ এ সুসংবাদ নিয়ে যে ফিরিশতাগণ তাঁর কাছে এসেছিল তাদেরকেই হযরত লূত আলাইহিস সালামের সম্প্রদায়কে শাস্তি দানের দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হয়েছিল। বিস্তারিত জ্ঞাতার্থে দ্রষ্টব্য সূরা হুদ (১১ : ৬৯) ও সূরা হিজর (১৫ : ৫১)।


৩২


قَالَ اِنَّ فِیۡہَا لُوۡطًا ؕ قَالُوۡا نَحۡنُ اَعۡلَمُ بِمَنۡ فِیۡہَا ٝ۫ لَنُنَجِّیَنَّہٗ وَاَہۡلَہٗۤ اِلَّا امۡرَاَتَہٗ ٭۫ کَانَتۡ مِنَ الۡغٰبِرِیۡنَ


কা-লা ইন্না ফীহা-লূতা- কা-লূনাহনুআ‘লামুবিমান ফীহা- লানুনাজজিয়ান্নাহূ ওয়া আহ লাহূইল্লাম রাআতাহূ কা-নাত মিনাল গা-বিরীন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

ইবরাহীম বলল, সে জনপদে তো লূত রয়েছে। ফিরিশতাগণ বলল, আমাদের ভালোভাবেই জানা আছে, সেখানে কারা আছে। আমরা তাকে ও তার পরিবারবর্গকে অবশ্যই রক্ষা করব, তবে তার স্ত্রীকে ছাড়া। সে যারা পেছনে থেকে যাবে তাদের মধ্যে থাকবে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

সে বলল, এই জনপদে তো লূতও রয়েছে। তারা বলল, সেখানে কে আছে, তা আমরা ভাল জানি। আমরা অবশ্যই তাকে ও তাঁর পরিবারবর্গকে রক্ষা করব তাঁর স্ত্রী ব্যতীত; সে ধ্বংসপ্রাপ্তদের অন্তর্ভূক্ত থাকবে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

ইব্রাহীম বলল, ‘এই জনপদে তো লূত রয়েছে।’ এরা বলল, ‘সেখানে কাহারা আছে, তা আমরা ভাল জানি, আমরা তো লূতকে ও তার পরিজনবর্গকে রক্ষা করবই, তার স্ত্রীকে ব্যতীত ; সে তো পশ্চাতে অবস্থানকারীদের অন্তর্ভুক্ত।’


৩৩


وَلَمَّاۤ اَنۡ جَآءَتۡ رُسُلُنَا لُوۡطًا سِیۡٓءَ بِہِمۡ وَضَاقَ بِہِمۡ ذَرۡعًا وَّقَالُوۡا لَا تَخَفۡ وَلَا تَحۡزَنۡ ۟ اِنَّا مُنَجُّوۡکَ وَاَہۡلَکَ اِلَّا امۡرَاَتَکَ کَانَتۡ مِنَ الۡغٰبِرِیۡنَ


ওয়া লাম্মাআন জাআত রুছুলুনা-লূতান ছীআ বিহিম ওয়া দা-কা বিহিম যার‘আওঁ ওয়া কা-লূলা-তাখাফ ওয়ালা-তাহঝান ইন্না-মুনাজজূকা ওয়া আহলাকা ইল্লাম রাআতাকা কা-নাত মিনাল গা-বিরীন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

যখন আমার প্রেরিত ফিরিশতাগণ লূতের কাছে আসল, তখন তাদের জন্য সে বিষণ্ণ হয়ে পড়ল এবং তাদের ব্যাপারে তার অন্তর কুণ্ঠিত হল। ফিরিশতাগণ বলল, আপনি ভয় করবেন না এবং দুশ্চিন্তা করবেন না। আমরা আপনাকে ও আপনার সাথে সম্পৃক্তদেরকে রক্ষা করব, তবে আপনার স্ত্রীকে ছাড়া, যে থেকে যাবে যারা পেছনে থাকবে তাদের মধ্যে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যখন আমার প্রেরিত ফেরেশতাগণ লূতের কাছে আগমন করল, তখন তাদের কারণে সে বিষন্ন হয়ে পড়ল এবং তার মন সংকীর্ণ হয়ে গেল। তারা বলল, ভয় করবেন না এবং দুঃখ করবেন না। আমরা আপনাকে ও আপনার পরিবারবর্গকে রক্ষা করবই আপনার স্ত্রী ব্যতীত, সে ধ্বংস প্রাপ্তদের অন্তর্ভূক্ত থাকবে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এবং যখন আমার প্রেরিত ফিরিশতাগণ লূতের নিকট এলো, তখন তাদের জন্যে সে বিষণ্ণ হয়ে পড়ল এবং নিজেকে তাদের রক্ষায় অসমর্থ মনে করল। এরা বলল, ‘ভয় কর না, দুঃখ কর না ; আমরা তোমাকে ও তোমার পরিজনবর্গকে রক্ষা করব, তোমার স্ত্রী ব্যতীত ; সে তো পশ্চাতে অবস্থানকারীদের অন্তর্ভুক্ত ;


৩৪


اِنَّا مُنۡزِلُوۡنَ عَلٰۤی اَہۡلِ ہٰذِہِ الۡقَرۡیَۃِ رِجۡزًا مِّنَ السَّمَآءِ بِمَا کَانُوۡا یَفۡسُقُوۡنَ


ইন্না মুনঝিলূনা ‘আলাআহলি হা-যিহিল কারইয়াতি রিজঝাম মিনাছছামাইবিমা-কা-নূ ইয়াফছুকূ ন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এ জনপদের বাসিন্দাগণ যে কুকর্ম করে যাচ্ছে, তার পরিণামে আমরা তাদের উপর আসমান থেকে আযাব নাযিল করব।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমরা এই জনপদের অধিবাসীদের উপর আকাশ থেকে আযাব নাজিল করব তাদের পাপাচারের কারণে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘আমরা এই জনপদবাসীদের ওপর আকাশ হতে শাস্তি নাযিল করব, কারণ এরা পাপাচার করছিল।’


৩৫


وَلَقَدۡ تَّرَکۡنَا مِنۡہَاۤ اٰیَۃًۢ بَیِّنَۃً لِّقَوۡمٍ یَّعۡقِلُوۡنَ


ওয়া লাকাত তারাকনা-মিনহাআ-য়াতাম বাইয়িনাতাল লিকাওমিই ইয়া‘কিলূন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আমি বোধসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য রেখে দিয়েছি এ জনপদের কিছু স্পষ্ট নিদর্শন। ২১


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি বুদ্ধিমান লোকদের জন্যে এতে একটি স্পষ্ট নিদর্শন রেখে দিয়েছি।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আমি তো বোধশক্তিসম্পন্ন সম্প্রদায়ের জন্যে এতে একটি স্পষ্ট নিদর্শন রেখেছি।


তাফসীরঃ

২১. অর্থাৎ, সে জনপদটির ধ্বংসাবশেষ আজও বিদ্যমান আছে, যা দেখে মানুষ শিক্ষা নিতে পারে আল্লাহ তাআলার অবাধ্যতা করলে তার পরিণাম কী হয়।


৩৬


وَاِلٰی مَدۡیَنَ اَخَاہُمۡ شُعَیۡبًا ۙ فَقَالَ یٰقَوۡمِ اعۡبُدُوا اللّٰہَ وَارۡجُوا الۡیَوۡمَ الۡاٰخِرَ وَلَا تَعۡثَوۡا فِی الۡاَرۡضِ مُفۡسِدِیۡنَ


ওয়া ইলা-মাদইয়না আখা-হুম শু‘আইবান ফাকা-লা ইয়া-কাওমি‘বুদুল্লা-হা ওয়ারজুল ইয়াওমাল আ-খিরা ওয়ালা-তা‘ছাও ফিল আরদিমুফছিদীন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

মাদইয়ানে পাঠালাম তাদের ভাই শুআইবকে। সে বলেছিল, হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর এবং শেষ দিবসকে ভয় কর আর ভূমিতে অরাজকতা বিস্তার করে বেড়িও না।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি মাদইয়ানবাসীদের প্রতি তাদের ভাই শোআয়বকে প্রেরণ করেছি। সে বলল, হে আমার সম্প্রদায় তোমরা আল্লাহর এবাদত কর, শেষ দিবসের আশা রাখ এবং পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করো না।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আমি মাদ্ইয়ানবাসীদের প্রতি তাদের ভাই শু‘আয়বকে পাঠিয়েছিলাম। সে বলেছিল, ‘হে আমার সম্প্রদায় ! তোমরা আল্লাহ্ র ‘ইবাদত কর, শেষ দিবসকে ভয় কর এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় ঘটাইও না।’


৩৭


فَکَذَّبُوۡہُ فَاَخَذَتۡہُمُ الرَّجۡفَۃُ فَاَصۡبَحُوۡا فِیۡ دَارِہِمۡ جٰثِمِیۡنَ ۫


ফাকাযযাবূহু ফাআখাযাতহুমুর রাজফাতুফাআসবাহূফী দা-রিহিম জা-ছিমীন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

অতঃপর এই ঘটল যে, তারা শুআইবকে মিথ্যাবাদী ঠাওরাল, পরিণামে ভূমিকম্প তাদেরকে আঘাত হানল এবং তারা নিজ-নিজ গৃহে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকল। ২২


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

কিন্তু তারা তাঁকে মিথ্যাবাদী বলল; অতঃপর তারা ভূমিকম্প দ্বারা আক্রান্ত হল এবং নিজেদের গৃহে উপুড় হয়ে পড়ে রইল।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

কিন্তু এরা তার প্রতি মিথ্যা আরোপ করল ; এরপর এরা ভূমিকম্প দিয়ে আক্রান্ত হল ; ফলে এরা নিজ গৃহে নতজানু অবস্থায় শেষ হয়ে গেল।


তাফসীরঃ

২২. দেখুন সূরা আরাফ (৭ : ৮৪) ও সূরা হুদ (১১ : ৮৩)।


৩৮


وَعَادًا وَّثَمُوۡدَا۠ وَقَدۡ تَّبَیَّنَ لَکُمۡ مِّنۡ مَّسٰکِنِہِمۡ ۟  وَزَیَّنَ لَہُمُ الشَّیۡطٰنُ اَعۡمَالَہُمۡ فَصَدَّہُمۡ عَنِ السَّبِیۡلِ وَکَانُوۡا مُسۡتَبۡصِرِیۡنَ ۙ


ওয়া ‘আদাওঁ ওয়া ছামূদা ওয়া কাততাবাইইয়ানা লাকুম মিম মাছা-কিনিহিম ওয়া ঝাইইয়ানা লাহুমুশশাইতা-নুআ‘মা-লাহুম ফাসাদ্দাহুম ‘আনিছছাবীলি ওয়া কা-নূ মুছতাবসিরীন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আমি আদ ও ছামূদকেও ধ্বংস করলাম। তাদের ঘরবাড়ি দ্বারাই তাদের ধ্বংসপ্রাপ্তি তোমাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে আছে। ২৩ শয়তান তাদের কার্যাবলীকে তাদের দৃষ্টিতে মনোরম বানিয়ে দিয়ে তাদেরকে সরল পথ থেকে নিবৃত্ত রেখেছিল, অথচ তারা ছিল বিচক্ষণ। ২৪


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি আ’দ ও সামুদকে ধ্বংস করে দিয়েছি। তাদের বাড়ী-ঘর থেকেই তাদের অবস্থা তোমাদের জানা হয়ে গেছে। শয়তান তাদের কর্মকে তাদের দৃষ্টিতে সুশোভিত করেছিল, অতঃপর তাদেরকে সৎপথ অবলম্বনে বাধা দিয়েছিল এবং তারা ছিল হুশিয়ার।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এবং আমি ‘আদ ও সামূদকে ধ্বংস করেছিলাম ; এদের বাড়িঘরই তোমাদের জন্যে এটার সুস্পষ্ট প্রমাণ। শয়তান এদের কাজকে এদের দৃষ্টিতে শোভন করেছিল এবং এদেরকে সৎপথ অবলম্বনে বাধা দিয়েছিল, যদিও এরা ছিল বিচক্ষণ।


তাফসীরঃ

২৩. দেখুন সূরা আরাফ (৭ : ৬৪, ৭২) ও সূরা হুদ (১১ : ৪৯, ৬০)।


২৪. অর্থাৎ, পার্থিব বিষয়ে বড় সমঝদার ও বিচক্ষণ ছিল, কিন্তু আখেরাত সম্পর্কে ছিল সম্পূর্ণ অজ্ঞ ও গাফেল।


৩৯


وَقَارُوۡنَ وَفِرۡعَوۡنَ وَہَامٰنَ ۟  وَلَقَدۡ جَآءَہُمۡ مُّوۡسٰی بِالۡبَیِّنٰتِ فَاسۡتَکۡبَرُوۡا فِی الۡاَرۡضِ وَمَا کَانُوۡا سٰبِقِیۡنَ ۚۖ


ওয়া কা-রূনা ওয়া ফির‘আওনা ওয়া হা-মা-না ওয়া লাকাদ জাআহুম মূছাবিলবাইয়িনা-তি ফাছতাকবারূ ফিল আরদিওয়ামা-কা-নূছা-বিক ীন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আমি কারূন, ফির‘আওন ও হামানকে ধ্বংস করেছিলাম। ২৫ মূসা তাদের কাছে উজ্জ্বল নিদর্শন নিয়ে এসেছিল, কিন্তু তারা দেশে বড়ত্ব প্রদর্শন করেছিল, কিন্তু তারা তো (আমার উপর) জিততে পারেনি।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি কারুন, ফেরাউন ও হামানকে ধ্বংস করেছি। মূসা তাদের কাছে সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী নিয়ে আগমন করেছিল অতঃপর তারা দেশে দম্ভ করেছিল। কিন্তু তারা জিতে যায়নি।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এবং আমি সংহার করেছিলাম কারূন, ফির‘আওন ও হামানকে। মূসা এদের নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শনসহ এসেছিল ; তখন তারা দেশে দম্ভ করত; কিন্তু এরা আমার শাস্তি এড়াইতে পারে নাই।


তাফসীরঃ

২৫. দেখুন সূরা কাসাস (২৮ : ৩৭, ৭৫)।


৪০


فَکُلًّا اَخَذۡنَا بِذَنۡۢبِہٖ ۚ فَمِنۡہُمۡ مَّنۡ اَرۡسَلۡنَا عَلَیۡہِ حَاصِبًا ۚ وَمِنۡہُمۡ مَّنۡ اَخَذَتۡہُ الصَّیۡحَۃُ ۚ وَمِنۡہُمۡ مَّنۡ خَسَفۡنَا بِہِ الۡاَرۡضَ ۚ وَمِنۡہُمۡ مَّنۡ اَغۡرَقۡنَا ۚ وَمَا کَانَ اللّٰہُ لِیَظۡلِمَہُمۡ وَلٰکِنۡ کَانُوۡۤا اَنۡفُسَہُمۡ یَظۡلِمُوۡنَ


ফাকুল লান আখযনা-বিযামবিহী ফামিনহুম মান আরছালনা-‘আলাইহি হা-সিবাওঁ ওয়া মিনহুম মান আখাযাতহুস সাইহাতু ওয়া মিনহুম মান খাছাফনা-বিহিল আরদা ওয়া মিনহুম মান আগরাকনা- ওয়ামা-কা-নাল্লা-হু লিইয়াজলিমাহুম ওয়ালা-কিন কানূআনফুছাহুম ইয়াজলিমূন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আমি তাদের প্রত্যেককে তার অপরাধের কারণে ধৃত করি। তাদের কেউ তো এমন, যার বিরুদ্ধে পাঠাই পাথর বর্ষণকারী ঝড়ো-ঝঞ্ঝা, ২৬ কেউ ছিল এমন যাকে আক্রান্ত করে মহানাদ, ২৭ কেউ ছিল এমন, যাকে ভূগর্ভে ধসিয়ে দেই ২৮ এবং কেউ ছিল এমন, যাকে করি নিমজ্জিত। ২৯ বস্তুত আল্লাহ এমন নন যে, তাদের প্রতি জুলুম করবেন; বরং তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি জুলুম করছিল।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি প্রত্যেককেই তার অপরাধের কারণে পাকড়াও করেছি। তাদের কারও প্রতি প্রেরণ করেছি প্রস্তরসহ প্রচন্ড বাতাস, কাউকে পেয়েছে বজ্রপাত, কাউকে আমি বিলীন করেছি ভূগর্ভে এবং কাউকে করেছি নিমজ্জত। আল্লাহ তাদের প্রতি যুলুম করার ছিলেন না; কিন্তু তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি যুলুম করেছে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এদের প্রত্যেককেই আমি তার অপরাধের জন্যে শাস্তি দিয়েছিলাম : এদের কারও প্রতি প্রেরণ করেছি প্রস্তরসহ প্রচণ্ড ঝটিকা, এদের কাউকেও আঘাত করেছিল মহানাদ, কাউকেও আমি প্রোথিত করেছিলাম ভূগর্ভে এবং কাউকেও করেছিলাম নিমজ্জিত। আল্লাহ্ তাদের প্রতি কোন জুলুম করেন নাই ; তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি জুলুম করেছিল।


তাফসীরঃ

২৬. এভাবে ধ্বংস করা হয়েছিল আদ জাতিকে। দেখুন সূরা আরাফ (৭ : ৬৪)।


২৭. ছামূদ জাতি এভাবে ধ্বংস হয়েছিল। দেখুন সূরা আরাফ (৭ : ৭২)।


২৮. ইশারা কারূনের প্রতি, যাকে ভূগর্ভে ধ্বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল। দেখুন সূরা কাসাস (২৮ : ৭৫)।


২৯. হযরত নূহ আলাইহিস সালামের কওম মহাপ্লাবনে পানিতে ডুবে ধ্বংস হয়েছিল। ফির‘আওন ও তার সম্প্রদায়কেও সাগরে ডুবিয়ে নিপাত করা হয়েছিল।


৪১


مَثَلُ الَّذِیۡنَ اتَّخَذُوۡا مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ اَوۡلِیَآءَ کَمَثَلِ الۡعَنۡکَبُوۡتِ ۖۚ اِتَّخَذَتۡ بَیۡتًا ؕ وَاِنَّ اَوۡہَنَ الۡبُیُوۡتِ لَبَیۡتُ الۡعَنۡکَبُوۡتِ ۘ لَوۡ کَانُوۡا یَعۡلَمُوۡنَ


মাছালুল্লাযীনাততাখাযূমিন দূ নিল্লা-হি আওলিয়াআ কামাছালিল ‘আনকাবূতি ইত্তাখাযাত বাইতাওঁ ওয়া ইন্না আওহানাল বুয়ূতি লা বাইতুল ‘আনকাবূত। লাও কা-নূ ইয়া‘লামূন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

যারা আল্লাহকে ছেড়ে অন্য অভিভাবক গ্রহণ করেছে, তাদের দৃষ্টান্ত হল মাকড়সা, যে নিজের জন্য ঘর বানায় আর নিশ্চয়ই ঘরের মধ্যে সর্বাপেক্ষা দুর্বল মাকড়সার ঘরই হয়ে থাকে। আহা! তারা যদি জানত। ৩০


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যারা আল্লাহর পরিবর্তে অপরকে সাহায্যকারীরূপে গ্রহণ করে তাদের উদাহরণ মাকড়সা। সে ঘর বানায়। আর সব ঘরের মধ্যে মাকড়সার ঘরই তো অধিক দুর্বল, যদি তারা জানত।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যারা আল্লাহ্ র পরিবর্তে অপরকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করে তাদের দৃষ্টান্ত মাকড়সার ন্যায়, যে নিজের জন্যে ঘর বানায় এবং ঘরের মধ্যে মাকড়সার ঘরই তো দুর্বলতম, যদি এরা জানত।


তাফসীরঃ

৩০. অর্থাৎ, তারা যদি জানত তারা যে উপাস্যদের উপর ভরসা করে তা কত দুর্বল! তারা তো মাকড়সার জালের চেয়েও বেশি দুর্বল। তারা তাদের কোন রকম উপকার করার ক্ষমতাই রাখে না।


৪২


اِنَّ اللّٰہَ یَعۡلَمُ مَا یَدۡعُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِہٖ مِنۡ شَیۡءٍ ؕ وَہُوَ الۡعَزِیۡزُ الۡحَکِیۡمُ


ইন্নাল্লা-হা ইয়া‘লামুমা-ইয়াদ‘ঊনা মিন দূ নিহী মিন শাইয়িওঁ ওয়া হুওয়াল ‘আঝীঝুল হাকীম।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আল্লাহ ভালো করেই জানেন তারা আল্লাহকে ছেড়ে কাকে কাকে ডাকে। তিনি ক্ষমতার মালিক, হেকমতেরও মালিক।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তারা আল্লাহর পরিবর্তে যা কিছুকে ডাকে, আল্লাহ তা জানেন। তিনি শক্তিশালী, প্রজ্ঞাময়।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরা আল্লাহ্ র পরিবর্তে যা কিছুকে আহ্বান করে, আল্লাহ্ তো তা জানেন এবং তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।


৪৩


وَتِلۡکَ الۡاَمۡثَالُ نَضۡرِبُہَا لِلنَّاسِ ۚ وَمَا یَعۡقِلُہَاۤ اِلَّا الۡعٰلِمُوۡنَ


ওয়া তিলকাল আমছা-লুনাদরিবুহা-লিন্না-ছি ওয়ামা-ইয়া‘কিলুহা ইল্লাল ‘আ-লিমূন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আমি মানুষের কল্যাণার্থে এসব দৃষ্টান্ত দিয়ে থাকি, কিন্তু তা বোঝে কেবল তারাই, যারা জ্ঞানবান।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এ সকল উদাহরণ আমি মানুষের জন্যে দেই; কিন্তু জ্ঞানীরাই তা বোঝে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এই সকল দৃষ্টান্ত আমি মানুষের জন্যে দেই, কিন্তু কেবল জ্ঞানী ব্যক্তিরাই এটা বুঝে।


৪৪


خَلَقَ اللّٰہُ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضَ بِالۡحَقِّ ؕ  اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیَۃً لِّلۡمُؤۡمِنِیۡنَ ٪


খালাকাল্লা-হুছছামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদা বিলহাক্কি ইন্না ফী যা-লিকা লাআ-য়াতাল লিলমু’মিনীন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আল্লাহ আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীকে যথার্থ (উদ্দেশ্যে) সৃষ্টি করেছেন। ৩১ বস্তুত ঈমানদারদের জন্য এর মধ্যে অবশ্যই নিদর্শন আছে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আল্লাহ যথার্থরূপে নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টি করেছেন। এতে নিদর্শন রয়েছে ঈমানদার সম্প্রদায়ের জন্যে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আল্লাহ্ যথাযথভাবে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন ; এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে মু’মিনদের জন্যে।


তাফসীরঃ

৩১. অর্থাৎ, এ দুনিয়া সৃষ্টির উদ্দেশ্য হল মানুষকে এর দ্বারা পরীক্ষা করা অতঃপর তার কর্ম অনুসারে তাকে পুরস্কৃত করা বা শাস্তি দেওয়া। যদি আখেরাত না থাকে এবং মানুষকে সে জীবনের সম্মুখীন হতে না হয়, তবে তো জগত সৃজনের উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হয়ে যাবে। বলাবাহুল্য, আল্লাহ তাআলার উদ্দেশ্য ব্যর্থ যেতে পারে না। আর তা যখন ব্যর্থ যেতে পারে না, তখন না মেনে উপায় নেই যে, আখেরাত অবশ্যম্ভাবী।


৪৫


اُتۡلُ مَاۤ اُوۡحِیَ اِلَیۡکَ مِنَ الۡکِتٰبِ وَاَقِمِ الصَّلٰوۃَ ؕ اِنَّ الصَّلٰوۃَ تَنۡہٰی عَنِ الۡفَحۡشَآءِ وَالۡمُنۡکَرِ ؕ وَلَذِکۡرُ اللّٰہِ اَکۡبَرُ ؕ وَاللّٰہُ یَعۡلَمُ مَا تَصۡنَعُوۡنَ


উতলুমাঊহিয়া ইলাইকা মিনাল কিতা-বি ওয়া আকিমিসসালা-তা ইন্নাসসালা-তা তানহা-‘আনিল ফাহশাই ওয়াল মুনকারি ওয়ালাযিকরুল্লা-হি আকবারু ওয়াল্লা-হু ইয়া‘লামুমা-তাসনা‘ঊন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

(হে নবী!) ওহীর মাধ্যমে তোমার প্রতি যে কিতাব নাযিল করা হয়েছে, তা তিলাওয়াত কর ও নামায কায়েম কর। নিশ্চয়ই নামায অশ্লীল ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে। ৩২ আর আল্লাহর যিকিরই তো সর্বাপেক্ষা বড় জিনিস ৩৩। তোমরা যা-কিছু কর, আল্লাহ তা জানেন।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আপনি আপনার প্রতি প্রত্যাদিষ্ট কিতাব পাঠ করুন এবং নামায কায়েম করুন। নিশ্চয় নামায অশ্লীল ও গর্হিত কার্য থেকে বিরত রাখে। আল্লাহর স্মরণ সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন তোমরা যা কর।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তুমি আবৃত্তি কর কিতাব হতে যা তোমার প্রতি প্রত্যাদেশ করা হয়। এবং সালাত কায়েম কর। সালাত অবশ্যই বিরত রাখে অশ্লীল ও মন্দ কার্য হতে। আর আল্লাহ্ র স্মরণই তো সর্বশ্রেষ্ঠ। তোমরা যা কর আল্লাহ্ তা জানেন।


তাফসীরঃ

৩২. অর্থাৎ, মানুষ যদি যথাযথভাবে নামায আদায় করে এবং তার উদ্দেশ্যের প্রতি মনোযোগী থাকে, তবে তা অবশ্যই তাকে অন্যায় ও অশ্লীল কাজ থেকে ফিরিয়ে রাখবে। কেননা মানুষ নামাযে সর্বপ্রথম তাকবীর বলে আল্লাহ তাআলার মহত্ব ও বড়ত্ব ঘোষণা করে। তার মানে সে আল্লাহ তাআলার হুকুমকে সবকিছুর উপরে বলে বিশ্বাস করে। এর বিপরীতে কারও কোন কথাকে সে ভ্রুক্ষেপযোগ্য মনে করে না। তারপর সে প্রতি রাকাতে আল্লাহ তাআলার সামনে স্বীকার করে যে, হে আল্লাহ! আমি আপনারই বন্দেগী করি এবং আপনারই কাছে সাহায্য চাই, এভাবে সে জীবনের সব ক্ষেত্রে আল্লাহ তাআলার অনুগত হয়ে চলার জন্য ওয়াদাবদ্ধ হয়। কাজেই যে ব্যক্তি পূর্ণ ধ্যানের সাথে নামায পড়ে তার অন্তরে কোন গুনাহের প্রতি ঝোঁক দেখা দিলে তখন অবশ্যই তার সেই ওয়াদার কথা মনে পড়বে, ফলে সে সচকিত হয়ে যাবে এবং সে আর গুনাহের দিকে অগ্রসর হবে না। তাছাড়া রুকু, সিজদা, ওঠা-বসা ও নামাযের অন্যান্য কার্যাবলী দ্বারা ইবাদত করে নামাযী ব্যক্তি নিজেকে আল্লাহ তাআলার সামনে একজন বাধ্য ও অনুগত বান্দারূপে পেশ করে। সুতরাং যে ব্যক্তি অনুধ্যানের সাথে নামায পড়বে এবং নামাযের হাকীকতের প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখে যথাযথভাবে তা আদায় করবে তার নামায তাকে অবশ্যই অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখবে।


৩৩. ‘আল্লাহর যিকির ও স্মরণই সর্বাপেক্ষা বড়’। অর্থাৎ এটাই সকল ইবাদত-বন্দেগীর প্রাণবস্তু। বরং সমস্ত ইবাদত-বন্দেগী করাই হয় আল্লাহর স্মরণার্থে। যেমন ইরশাদ হয়েছে ‘সালাত কায়েম কর আমার স্মরণার্থে’। বরং নিয়মিত ‘ইবাদসমূহের বাইরেও সর্বাবস্থায় সকল কাজে যিকরের নির্দেশ রয়েছে’ (দ্র. নিসা ৪ : ১৪)। সে যিকরের পদ্ধতি হল কাজের শুরুতে ও শেষে দু‘আ পড়া এবং মাঝখানে অন্তরে আল্লাহর ধ্যান জাগ্রত রাখা সর্বাবস্থায় সকল কাজে আল্লাহ তা‘আলার হুকুম মেনে চলা। এভাবে ইবাদতে ও ইবাদতের বাইরে যিকিরে রত থাকার দ্বারা একদিকে ইবাদত হয় যথার্থ ও প্রাণবন্ত অন্যদিকে অন্যান্য কাজও পায় ইবাদতের মহিমা। এ অবস্থায় গুনাহের অবকাশ কোথায়? সুতরাং যিকিরই সর্বশ্রেষ্ঠ জিনিস। এর দ্বারা মানুষের পূর্ণ জিন্দেগীই বন্দেগী হয়ে ওঠে। -অনুবাদক


৪৬


وَلَا تُجَادِلُوۡۤا اَہۡلَ الۡکِتٰبِ اِلَّا بِالَّتِیۡ ہِیَ اَحۡسَنُ ٭ۖ اِلَّا الَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡا مِنۡہُمۡ وَقُوۡلُوۡۤا اٰمَنَّا بِالَّذِیۡۤ اُنۡزِلَ اِلَیۡنَا وَاُنۡزِلَ اِلَیۡکُمۡ وَاِلٰـہُنَا وَاِلٰـہُکُمۡ وَاحِدٌ وَّنَحۡنُ لَہٗ مُسۡلِمُوۡنَ


ওয়ালা-তুজা-দিলূআহলাল কিতা-বি ইল্লা-বিল্লাতী হিয়া আহছানু ইল্লাল্লাযীনা জালামূমিনহুম ওয়া কূলূআ-মান্না-বিল্লাযী উনঝিলা ইলাইনা-ওয়া উনঝিলা ইলাইকুম ওয়া ইলা-হুনা-ওয়া ইলা-হুকুম ওয়া-হিদুওঁ ওয়া নাহনুলাহূমুছলিমূন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

(হে মুসলিমগণ!) কিতাবীদের সাথে বিতর্ক করবে না উত্তম পন্থা ছাড়া। তবে তাদের মধ্যে যারা সীমালঙ্ঘন করে, তাদের কথা স্বতন্ত্র ৩৪ এবং (তাদেরকে) বল, আমরা ঈমান এনেছি সেই কিতাবের প্রতি যা আমাদের উপর নাযিল করা হয়েছে এবং যে কিতাব তোমাদের উপর নাযিল করা হয়েছে তার প্রতিও। আমাদের মাবুদ ও তোমাদের মাবুদ একই। আমরা তাঁরই আনুগত্যকারী।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তোমরা কিতাবধারীদের সাথে তর্ক-বিতর্ক করবে না, কিন্তু উত্তম পন্থায়; তবে তাদের সাথে নয়, যারা তাদের মধ্যে বে-ইনসাফ। এবং বল, আমাদের প্রতি ও তোমাদের প্রতি যা নাযিল করা হয়েছে, তাতে আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি। আমাদের উপাস্য ও তোমাদের উপাস্য একই এবং আমরা তাঁরই আজ্ঞাবহ।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তোমরা উত্তম পন্থা ব্যতীত কিতাবীদের সঙ্গে বিতর্ক করবে না, তবে তাদের সঙ্গে করতে পার, যারা এদের মধ্যে সীমালংঘনকারী। এবং বল, ‘আমাদের প্রতি ও তোমাদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে, তাতে আমরা বিশ্বাস করি এবং আমাদের ইলাহ্ ও তোমাদের ইলাহ্ তো একই এবং আমরা তাঁরই প্রতি আত্মসমর্পণকারী।’


তাফসীরঃ

৩৪. এমনিতে তো ইসলামী দাওয়াতের ব্যাপারে শিক্ষা দেওয়া হয়েছে যে, সর্বত্রই তা মার্জিত ও ভদ্রোচিতভাবে পেশ করা চাই। কিন্তু এ আয়াতে বিশেষভাবে আহলে কিতাব তথা ইয়াহুদী ও খ্রিস্টানদেরকে দাওয়াত দেওয়ার সময় এদিকে লক্ষ্য রাখার জন্য তাকীদ করা হয়েছে। কেননা তারা যেহেতু আসমানী কিতাবে বিশ্বাস রাখে, তাই পৌত্তলিকদের তুলনায় তারা মুসলিমদের বেশি নিকটবর্তী। অবশ্য তাদের পক্ষ থেকে বাড়াবাড়ি করা হলে তখন তুরুক জবাব দেওয়ারও অনুমতি রয়েছে।


৪৭


وَکَذٰلِکَ اَنۡزَلۡنَاۤ اِلَیۡکَ الۡکِتٰبَ ؕ فَالَّذِیۡنَ اٰتَیۡنٰہُمُ الۡکِتٰبَ یُؤۡمِنُوۡنَ بِہٖ ۚ وَمِنۡ ہٰۤؤُلَآءِ مَنۡ یُّؤۡمِنُ بِہٖ ؕ وَمَا یَجۡحَدُ بِاٰیٰتِنَاۤ اِلَّا الۡکٰفِرُوۡنَ


ওয়া কাযা-লিকা আনঝালনাইলাইকাল কিতা-বা ফাল্লাযীনা আ-তাইনা-হুমুল কিতাবা ইউ’মিনূনা বিহী ওয়া মিন হাউলাই মাইঁ ইউ’মিনুবিহী ওয়ামা-ইয়াজহাদু বিআ-য়া-তিনাইল্লাল কা-ফিরূন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

(হে রাসূল!) এভাবেই আমি তোমার প্রতি কিতাব নাযিল করেছি। সুতরাং যাদেরকে আমি কিতাব দিয়েছি তারা এতে ঈমান আনে এবং তাদের (অর্থাৎ মূর্তিপূজকদের) মধ্যেও কেউ কেউ এতে ঈমান আনছে। বস্তুত আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করে কেবল কাফেররাই।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এভাবেই আমি আপনার প্রতি কিতাব অবর্তীণ করেছি। অতঃপর যাদের কে আমি কিতাব দিয়েছিলাম, তারা একে মেনে চলে এবং এদেরও (মক্কাবাসীদেরও) কেউ কেউ এতে বিশ্বাস রাখে। কেবল কাফেররাই আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এইভাবেই আমি তোমার প্রতি কুরআন অবতীর্ণ করেছি এবং যাদেরকে আমি কিতাব দিয়েছিলাম তারা এতে বিশ্বাস করে। আর এদেরও কেউ কেউ এতে বিশ্বাস করে। কেউ অস্বীকার করে না আমার নিদর্শনাবলী কাফির ব্যতীত।


৪৮


وَمَا کُنۡتَ تَتۡلُوۡا مِنۡ قَبۡلِہٖ مِنۡ کِتٰبٍ وَّلَا تَخُطُّہٗ بِیَمِیۡنِکَ اِذًا لَّارۡتَابَ الۡمُبۡطِلُوۡنَ


ওয়ামা-কুনতা তাতলূমিন কাবলিহী মিন কিতা-বিওঁ ওয়ালা-তাখুত্তুহূবিয়ামীনিকা ইযাল লারতা-বাল মুবতিলূন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তুমি তো এর আগে কোন কিতাব পড়নি এবং নিজ হাতে কোন কিতাব লেখওনি। সে রকম কিছু হলে ভ্রান্তপথ অবলম্বনকারীরা সন্দেহ করতে পারত। ৩৫


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আপনি তো এর পূর্বে কোন কিতাব পাঠ করেননি এবং স্বীয় দক্ষিণ হস্ত দ্বারা কোন কিতাব লিখেননি। এরূপ হলে মিথ্যাবাদীরা অবশ্যই সন্দেহ পোষণ করত।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তুমি তো এটার পূর্বে কোন কিতাব পাঠ কর নাই এবং স্বহস্তে কোন কিতাব লিখ নাই যে, মিথ্যাচারীরা সন্দেহ পোষণ করবে।


তাফসীরঃ

৩৫. আল্লাহ তাআলা মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে উম্মী বানিয়েছেন। তিনি লেখাপড়া জানতেন না। এ আয়াতে তার রহস্য বলে দেওয়া হয়েছে যে, উম্মী হওয়া সত্ত্বেও তাঁর মুখে কুরআন শরীফের মত কিতাব উচ্চারিত হওয়াটা এক বিরাট মুজিযা। যে ব্যক্তি লেখাপড়া বলতে কিছু জানে না তিনি মানুষের সামনে পেশ করছেন এমন এক সাহিত্যালঙ্কারপূর্ণ কিতাব, সমগ্র আরব জাতি যার তুলনা উপস্থিত করতে অক্ষম, এটা কি প্রমাণ করে না, এ কিতাব কোন মানুষের রচনা নয় এবং এর বাহক আল্লাহ তাআলার একজন সত্য রাসূল? কুরআন মাজীদ বলছে, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যদি লেখাপড়া জানা থাকত, তবে বিরুদ্ধবাদীগণ কিছু না কিছু বলার সুযোগ পেয়ে যেত। তারা বলে বসত, তিনি কোথাও থেকে পড়াশুনা করে এ কিতাব সংকলন করে নিয়েছেন। যদিও তখনও এটা ফজুল কথাই হত, কিন্তু এখন তো তাও বলার সুযোগ থাকল না।


৪৯


بَلۡ ہُوَ اٰیٰتٌۢ بَیِّنٰتٌ فِیۡ صُدُوۡرِ الَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡعِلۡمَ ؕ وَمَا یَجۡحَدُ بِاٰیٰتِنَاۤ اِلَّا الظّٰلِمُوۡنَ


বাল হুওয়া আ-য়া-তুম বাইয়িনা-তুন ফী সদূ রিল্লাযীনা ঊতুল ‘ইলমা ওয়ামা-ইয়াজহাদু বিআ-য়া-তিনাইল্লাজ্জা-লিমূন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

প্রকৃতপক্ষে এ কুরআন এমন নিদর্শনাবলীর সমষ্টি, যা জ্ঞানপ্রাপ্তদের অন্তরে সম্পূর্ণ সুস্পষ্ট। আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করে কেবল জালেমগণই।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

বরং যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে, তাদের অন্তরে ইহা (কোরআন) তো স্পষ্ট আয়াত। কেবল বে-ইনসাফরাই আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

বরং যাদেরকে জ্ঞান দেওয়া হয়েছে বস্তুত তাদের অন্তরে এটা স্পষ্ট নিদর্শন। কেবল জালিমরাই আমার নিদর্শন অস্বীকার করে।


৫০


وَقَالُوۡا لَوۡلَاۤ اُنۡزِلَ عَلَیۡہِ اٰیٰتٌ مِّنۡ رَّبِّہٖ ؕ قُلۡ اِنَّمَا الۡاٰیٰتُ عِنۡدَ اللّٰہِ ؕ وَاِنَّمَاۤ اَنَا نَذِیۡرٌ مُّبِیۡنٌ


ওয়া কা-লূলাওলাউনঝিলা ‘আলাইহি আ-য়া-তুম মির রাব্বিহী কুল ইন্নামাল আ-য়াতু‘ইনদাল্লা-হি ওয়া ইন্নামাআনা নাযীরুম মুবীন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তারা বলে, তার প্রতি (অর্থাৎ মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি) তার প্রতিপালকের পক্ষ হতে কেন নিদর্শনাবলী অবতীর্ণ করা হল না? ৩৬ (হে রাসূল! তাদেরকে) বল, নিদর্শনাবলী তো আল্লাহরই কাছে। আমি একজন স্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তারা বলে, তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে তার প্রতি কিছু নিদর্শন অবতীর্ণ হল না কেন? বলুন, নিদর্শন তো আল্লাহর ইচ্ছাধীন। আমি তো একজন সুস্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরা বলে, ‘তার প্রতিপালকের নিকট হতে তার নিকট নিদর্শন প্রেরিত হয় না কেন ?’ বল, ‘নিদর্শন আল্লাহ্ র ই ইখ্তিয়ারে। আমি তো একজন প্রকাশ্য সতর্ককারী মাত্র।’


তাফসীরঃ

৩৬. অর্থাৎ, আমরা যেসব মুজিযা দাবি করছি তাকে তা কেন দেওয়া হল না? মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বহু মুজিযা দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তা সত্ত্বেও মক্কার কাফেরগণ নিত্য-নতুন মুজিযা দাবি করে যাচ্ছিল। সূরা বনী ইসরাঈলে (১৭ : ৯৩) এটা বিস্তারিত বর্ণিত হয়েছে। জবাব দেওয়া হয়েছে যে, মুজিযা দেখানোর বিষয়টা সম্পূর্ণরূপে আল্লাহ তাআলার এখতিয়ারে। আমি তোমাদেরকে কেবল সতর্ক করার জন্যই এসেছি। পরবর্তী আয়াতে বলা হয়েছে, কুরআন মাজীদ নিজেই একটি বড় মুজিযা। একজন সত্য সন্ধানীর জন্য এর পর অন্য কোন মুজিযার প্রয়োজন থাকে না।


৫১


اَوَلَمۡ یَکۡفِہِمۡ اَنَّاۤ اَنۡزَلۡنَا عَلَیۡکَ الۡکِتٰبَ یُتۡلٰی عَلَیۡہِمۡ ؕ  اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَرَحۡمَۃً وَّذِکۡرٰی لِقَوۡمٍ یُّؤۡمِنُوۡنَ ٪


আওয়ালাম ইয়াকফিহিম আন্নাআনঝালনা-‘আলাইকাল কিতা-বা ইউতলা-‘আলাইহিম ইন্না ফী যা-লিকা লারাহমাতাওঁ ওয়া যিকরা-লিকাওমিইঁ ইউ’মিনূন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তবে কি তাদের জন্য এটা (অর্থাৎ এই নিদর্শন) যথেষ্ট নয় যে, আমি তোমার প্রতি কিতাব নাযিল করেছি, যা তাদেরকে পড়ে শোনানো হচ্ছে? নিশ্চয়ই যে সমস্ত লোক বিশ্বাস করে তাদের জন্য এতে রয়েছে রহমত ও উপদেশ।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এটাকি তাদের জন্যে যথেষ্ট নয় যে, আমি আপনার প্রতি কিতাব নাযিল করেছি, যা তাদের কাছে পাঠ করা হয়। এতে অবশ্যই বিশ্বাসী লোকদের জন্যে রহমত ও উপদেশ আছে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এটা কি এদের জন্যে যথেষ্ট নয় যে, আমি তোমার প্রতি কুরআন অবতীর্ণ করেছি, যা এদের নিকট পাঠ করা হয় ? এতে অবশ্যই অনুগ্রহ ও উপদেশ রয়েছে সেই কওমের জন্যে যারা ঈমান আনে।


৫২


قُلۡ کَفٰی بِاللّٰہِ بَیۡنِیۡ وَبَیۡنَکُمۡ شَہِیۡدًا ۚ یَعۡلَمُ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضِ ؕ وَالَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا بِالۡبَاطِلِ وَکَفَرُوۡا بِاللّٰہِ ۙ اُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡخٰسِرُوۡنَ


কুল কাফা-বিল্লা-হি বাইনী ওয়াবাইনাকুম শাহীদাইঁ ইয়া‘লামুমা-ফিছছামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদি ওয়াল্লাযীনা আ-মানূবিলবা-তিলি ওয়া কাফারূ বিল্লা-হি উলাইকা হুমুল খা-ছিরূন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

বল, আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষ্য দানের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। তিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে যা-কিছু আছে সবই জানেন। যারা ভ্রান্ত বিষয়ে ঈমান এনেছে ও আল্লাহকে অস্বীকার করেছে, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

বলুন, আমার মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে আল্লাহই সাক্ষীরূপে যথেষ্ট। তিনি জানেন যা কিছু নভোমন্ডলে ও ভূ-মন্ডলে আছে। আর যারা মিথ্যায় বিশ্বাস করে ও আল্লাহকে অস্বীকার করে, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

বল, ‘আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী হিসেবে আল্লাহ্ই যথেষ্ট। আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে যা আছে তা তিনি অবগত এবং যারা অসত্যে বিশ্বাস করে ও আল্লাহ্কে অস্বীকার করে তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত।’


৫৩


وَیَسۡتَعۡجِلُوۡنَکَ بِالۡعَذَابِ ؕ وَلَوۡلَاۤ اَجَلٌ مُّسَمًّی لَّجَآءَہُمُ الۡعَذَابُ ؕ وَلَیَاۡتِیَنَّہُمۡ بَغۡتَۃً وَّہُمۡ لَا یَشۡعُرُوۡنَ


ওয়া ইয়াছতা‘জিলূনাকা বিল ‘আযা-বি ওয়া লাওলাআজালুম মুছাম্মাল লাজাআহুমুল ‘আযা-বু ওয়ালাইয়া’তিইয়ান্নাহুম বাগতাতাওঁ ওয়া হুম লা-ইয়াশ‘উরূন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তারা তোমাকে তাড়াতাড়ি শাস্তি এনে দিতে বলে। যদি (শাস্তির জন্য) এক নির্দিষ্ট সময় না থাকত, তবে তাদের উপর অবশ্যই শাস্তি এসে যেত। আর তা অবশ্যই তাদের উপর এমন অতর্কিতভাবে আসবে যে তারা টেরও পাবে না।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তারা আপনাকে আযাব ত্বরান্বিত করতে বলে। যদি আযাবের সময় নির্ধারিত না থাকত, তবে আযাব তাদের উপর এসে যেত। নিশ্চয়ই আকস্মিকভাবে তাদের কাছে আযাব এসে যাবে, তাদের খবরও থাকবে না।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরা তোমাকে শাস্তি ত্বরান্বিত করতে বলে। যদি নির্ধারিত কাল না থাকত তবে শাস্তি তাদের ওপর অবশ্যই আসত। নিশ্চয়ই এদের ওপর শাস্তি আসবে আকস্মিকভাবে, এদের অজ্ঞাতসারে।


৫৪


یَسۡتَعۡجِلُوۡنَکَ بِالۡعَذَابِ ؕ  وَاِنَّ جَہَنَّمَ لَمُحِیۡطَۃٌۢ بِالۡکٰفِرِیۡنَ ۙ


ইয়াছতা‘জিলূনাকা বিল‘আযা-বি ওয়াইন্না জাহান্নামা লামুহীতাতুম বিলকা-ফিরীন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তারা তোমাকে শাস্তি তাড়াতাড়ি এনে দিতে বলে। নিশ্চয়ই জাহান্নাম কাফেরদেরকে পরিবেষ্টন করে ফেলবে,


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তারা আপনাকে আযাব ত্বরান্বিত করতে বলে; অথচ জাহান্নাম কাফেরদেরকে ঘেরাও করছে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরা তোমাকে শাস্তি ত্বরান্বিত করতে বলে, জাহান্নাম তো কাফিরদেরকে পরিবেষ্টন করবেই।


৫৫


یَوۡمَ یَغۡشٰہُمُ الۡعَذَابُ مِنۡ فَوۡقِہِمۡ وَمِنۡ تَحۡتِ اَرۡجُلِہِمۡ وَیَقُوۡلُ ذُوۡقُوۡا مَا کُنۡتُمۡ تَعۡمَلُوۡنَ


ইয়াওমা ইয়াগশা-হুমুল‘আযা-বুমিন ফাওকিহিম ওয়া মিন তাহতি আরজুলিহিম ওয়া ইয়াকূলু যূকূমা-কুনতুম তা‘মালূন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

সেই দিন, যে দিন আযাব তাদেরকে আচ্ছন্ন করবে উপর দিক থেকেও এবং তাদের পায়ের নিচ থেকেও। আর তিনি বলবেন, তোমরা তোমাদের কৃতকর্মের স্বাদ গ্রহণ কর।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যেদিন আযাব তাদেরকে ঘেরাও করবে মাথার উপর থেকে এবং পায়ের নীচ থেকে। আল্লাহ বললেন, তোমরা যা করতে, তার স্বাদ গ্রহণ কর।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

সেই দিন শাস্তি এদেরকে আচ্ছন্ন করবে ঊর্ধ্ব ও অধঃদেশ হতে এবং তিনি বলবেন, ‘তোমরা যা করতে তা আস্বাদন কর।’


৫৬


یٰعِبَادِیَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِنَّ اَرۡضِیۡ وَاسِعَۃٌ فَاِیَّایَ فَاعۡبُدُوۡنِ


ইয়া-‘ইবা-দিয়াল্লাযীনা আ-মানূইন্না আরদী ওয়া-ছি‘আতুন ফাইইয়া-ইয়া ফা‘বুদূন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

হে আমার মুমিন বান্দাগণ! নিশ্চয়ই আমার ভূমি অতি প্রশস্ত। সুতরাং তোমরা আমারই ইবাদত কর। ৩৭


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

হে আমার ঈমানদার বান্দাগণ, আমার পৃথিবী প্রশস্ত। অতএব তোমরা আমারই এবাদত কর।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

হে আমার মু’মিন বান্দাগণ ! নিশ্চয় আমার পৃথিবী প্রশস্ত ; সুতরাং তোমরা আমারই ‘ইবাদত কর।


তাফসীরঃ

৩৭. সূরাটির পরিচিতিতে বলা হয়েছে যে, এ সূরাটি নাযিল হয়েছিল মক্কী জীবনে মুসলিমদের এক চরম সঙ্কটকালে। মক্কার কাফেরগণ তাদের উপর চরম নির্যাতন চালাচ্ছিল। পরিস্থিতি এমনই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল যে, মুমিনদের জীবন সেখানে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল। এ অবস্থায় তারা কী করবে সে নিয়ে তারা বড় পেরেশান ছিল। সূরাটির শুরুতে তো তাদেরকে সবর ও অবিচলতার উপদেশ দেওয়া হয়েছিল। এবার এ আয়াতে বলা হচ্ছে, মক্কা মুকাররমায় দীন রক্ষা করা কঠিন হলে আল্লাহর ভূমি তো সংকীর্ণ নয়। তোমরা হিজরত করে এমন কোন স্থানে চলে যাও, যেখানে শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে আল্লাহ তাআলার ইবাদত করতে পারবে।


৫৭


کُلُّ نَفۡسٍ ذَآئِقَۃُ الۡمَوۡتِ ۟ ثُمَّ اِلَیۡنَا تُرۡجَعُوۡنَ


কুল্লুনাফছিন যাইকাতুল মাওতি ছু ম্মা ইলাইনা-তুরজা‘ঊন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

জীব মাত্রকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। তারপর তোমাদের সকলকে আমারই কাছে ফিরিয়ে আনা হবে। ৩৮


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

জীবমাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। অতঃপর তোমরা আমারই কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

জীবমাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণকারী ; এরপর তোমরা আমারই নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে।


তাফসীরঃ

৩৮. অর্থাৎ, ‘আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদেরকে ছাড়তে হবে’এই অনুভূতিই যদি তোমাদের হিজরতের পক্ষে বাধা হয়, তবে চিন্তা কর না কেন একদিন তাদেরকে ছেড়ে যেতেই হবে। কেননা একদিন না একদিন প্রত্যেকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। তারপর যখন তোমরা সকলে আমার কাছে ফিরে আসবে, তখন তোমাদের মধ্যে স্থায়ী মিলন ঘটবে। তারপর আর কখনও বিচ্ছেদ-বেদনা তোমাদেরকে স্পর্শ করবে না।


৫৮


وَالَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ لَنُبَوِّئَنَّہُمۡ مِّنَ الۡجَنَّۃِ غُرَفًا تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِہَا الۡاَنۡہٰرُ خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَا ؕ  نِعۡمَ اَجۡرُ الۡعٰمِلِیۡنَ ٭ۖ


ওয়াল্লাযীনা আ-মানূওয়া ‘আমিলুসসা-লিহা-তি লানুবাওবিআন্নাহুম মিনাল জান্নাতি গুরাফান তাজরী মিন তাহতিহাল আনহা-রু খা-লিদীনা ফীহা- নি‘মা আজরুল ‘আ-মিলীন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে, আমি তাদেরকে অবশ্যই জান্নাতের এমন বালাখানায় বসবাস করতে দেব, যার তলদেশে নহর প্রবাহিত থাকবে। তাতে তারা সদা-সর্বদা থাকবে। অতি উৎকৃষ্ট প্রতিদান সেই কর্মশীলদের জন্য


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, আমি অবশ্যই তাদেরকে জান্নাতের সুউচ্চ প্রাসাদে স্থান দেব, যার তলদেশে প্রস্রবণসমূহ প্রবাহিত। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। কত উত্তম পুরস্কার কর্মীদের।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আমি অবশ্যই তাদের বসবাসের জন্যে সুউচ্চ প্রাসাদ দান করব জান্নাতে, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেখানে তারা স্থায়ী হবে, কত উত্তম প্রতিদান সেই সকল কর্মশীলদের জন্যে,


৫৯


الَّذِیۡنَ صَبَرُوۡا وَعَلٰی رَبِّہِمۡ یَتَوَکَّلُوۡنَ


আল্লাযীনা সাবারূ ওয়া ‘আলা-রাব্বিহিম ইয়াতাওয়াক্কালূন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

যারা সবর অবলম্বন করেছে এবং তারা নিজ প্রতিপালকের উপর ভরসা রাখে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যারা সবর করে এবং তাদের পালনকর্তার উপর ভরসা করে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যারা ধৈর্য ধারণ করে এবং তাদের প্রতিপালকের ওপর নির্ভর করে।


৬০


وَکَاَیِّنۡ مِّنۡ دَآبَّۃٍ لَّا تَحۡمِلُ رِزۡقَہَا ٭ۖ اَللّٰہُ یَرۡزُقُہَا وَاِیَّاکُمۡ ۫ۖ وَہُوَ السَّمِیۡعُ الۡعَلِیۡمُ


ওয়া কাআইয়িম মিন দাব্বাতিল লা-তাহমিলুরিঝকাহা-আল্লা-হু ইয়ারঝুকুহাওয়া ইয়্যা-কুম ওয়া হুওয়াছ ছামী‘উল ‘আলীম।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এমন কত জীবজন্তু আছে, যারা নিজেদের খাদ্য সঙ্গে বয়ে বেড়ায় না। আল্লাহই তাদেরকে রিযক দান করেন এবং তোমাদেরকেও। ৩৯ তিনিই সব কথা শোনেন, সকল কিছু জানেন।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এমন অনেক জন্তু আছে, যারা তাদের খাদ্য সঞ্চিত রাখে না। আল্লাহই রিযিক দেন তাদেরকে এবং তোমাদেরকেও। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এমন কত জীবজন্তু আছে যারা নিজেদের খাদ্য মওজুদ রাখে না। আল্লাহ্ই রিযিক দান করেন এদেরকে ও তোমাদেরকে ; এবং তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।


তাফসীরঃ

৩৯. হিজরতের পক্ষে এই চিন্তা অন্তরায় হতে পারত যে, এখানে তো আমাদের আয়-রোজগারের একটা না একটা ব্যবস্থা আছে। অন্য কোথাও যাওয়ার পর উপযুক্ত কোন ব্যবস্থা পাওয়া যাবে কি না কে জানে! এখানে তারই জবাব দেওয়া হয়েছে যে, দুনিয়ায় কত প্রাণী আছে, যারা নিজেদের খাদ্য সাথে বয়ে বেড়ায় না; বরং তারা যেখানেই যায় আল্লাহ তাালা সেখানেই তাদের খাদ্যের ব্যবস্থা করে দেন। সুতরাং এটা কি করে সম্ভব যে, আল্লাহ তাআলার হুকুমের প্রতি আনুগত্য দেখিয়ে যারা দেশ ছাড়বে, আল্লাহ তাআলা তাদের রিযকের ব্যবস্থা করবেন না? অবশ্যই করবেন, এতে কোন সন্দেহ নেই। হাঁ, এটা ভিন্ন কথা যে, তিনি কাউকে রিযক বেশি দেন এবং কাউকে কম দেন। এই কম-বেশি করাটা সম্পূর্ণই তাঁর হেকমতের উপর নির্ভরশীল। কাকে কতটুকু দিবেন তা তিনিই নিজ হেকমত অনুযায়ী স্থির করেন।


৬১


وَلَئِنۡ سَاَلۡتَہُمۡ مَّنۡ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضَ وَسَخَّرَ الشَّمۡسَ وَالۡقَمَرَ لَیَقُوۡلُنَّ اللّٰہُ ۚ فَاَنّٰی یُؤۡفَکُوۡنَ


ওয়া লাইন ছাআলতাহুম মান খালাকাছছামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদা ওয়াছাখখারাশশামছা ওয়াল কামারা লাইয়াকূলুন্নাল্লা-হু ফাআন্না-ইউ’ফাকূন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তুমি যদি তাদেরকে জিজ্ঞেস কর, কে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং সূর্য ও চন্দ্রকে কাজে নিয়োজিত করেছেন, তবে তারা অবশ্যই বলবে, আল্লাহ! তাহলে তারা দিকভ্রান্ত হয়ে কোন দিকে ফিরে যাচ্ছে? ৪০


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যদি আপনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন, কে নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডল সৃষ্টি করেছে, চন্দ্র ও সূর্যকে কর্মে নিয়োজিত করেছে? তবে তারা অবশ্যই বলবে আল্লাহ। তাহলে তারা কোথায় ঘুরে বেড়াচ্ছে?


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যদি তুমি এদেরকে জিজ্ঞাসা কর, ‘কে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং চন্দ্র-সূর্যকে নিয়ন্ত্রিত করেছেন ?’ এরা অবশ্যই বলবে, ‘আল্লাহ্’। তা হলে, এরা কোথায় ফিরে যাচ্ছে!


তাফসীরঃ

৪০. অর্থাৎ, তারা যখন স্বীকার করছে আল্লাহ তাআলাই এসব করছেন, তখন এর স্বাভাবিক দাবি ছিল, তারা কেবল তাঁরই ইবাদত করবে, তাঁরই অনুগত থাকবে, অন্য কারও নয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাদের কি হল যে, এই যুক্তিসঙ্গত দাবি অগ্রাহ্য করে তারা শিরকী কার্যকলাপে লিপ্ত রয়েছে?


৬২


اَللّٰہُ یَبۡسُطُ الرِّزۡقَ لِمَنۡ یَّشَآءُ مِنۡ عِبَادِہٖ وَیَقۡدِرُ لَہٗ ؕ اِنَّ اللّٰہَ بِکُلِّ شَیۡءٍ عَلِیۡمٌ


আল্লাহু ইয়াবছুতুর রিঝকা লিমাইঁ ইয়াশাউ মিন ‘ইবা-দিহী ওয়া ইয়াকদিরুলাহূ ইন্নাল্লা-হা বিকুল্লি শাইয়িন ‘আলীম।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আল্লাহ নিজ বান্দাদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা রিযক প্রশস্ত করে দেন এবং যার জন্য ইচ্ছা সংকীর্ণ করে দেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ প্রতিটি বিষয়ে সম্যক জ্ঞাত।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা রিযিক প্রশস্ত করে দেন এবং যার জন্য ইচ্ছা হ্রাস করেন। নিশ্চয়, আল্লাহ সর্ববিষয়ে সম্যক পরিজ্ঞাত।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার জন্যে ইচ্ছা তার রিযিক বর্ধিত করেন এবং যার জন্যে ইচ্ছা তা সীমিত করেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সর্ববিষয়ে সম্যক অবহিত।


৬৩


وَلَئِنۡ سَاَلۡتَہُمۡ مَّنۡ نَّزَّلَ مِنَ السَّمَآءِ مَآءً فَاَحۡیَا بِہِ الۡاَرۡضَ مِنۡۢ بَعۡدِ مَوۡتِہَا لَیَقُوۡلُنَّ اللّٰہُ ؕ  قُلِ الۡحَمۡدُ لِلّٰہِ ؕ  بَلۡ اَکۡثَرُہُمۡ لَا یَعۡقِلُوۡنَ ٪


ওয়া লাইন ছাআলতাহুম মান্নাঝঝালা মিনাছছামাই মাআন ফাআহইয়া-বিহিল আরদা মিম বা‘দি মাওতিহা- লাইয়াকূলুন্নাল্লা-হু কুল্লি হামদুলিল্লা-হি বাল আকছারুহুম লা-ইয়া‘কিলূন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তুমি যদি তাদেরকে জিজ্ঞেস কর, কে আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করেছেন অতঃপর তা দ্বারা ভূমিকে তার মৃত্যুর পর সঞ্জীবিত করেছেন, তবে তারা অবশ্যই বলবে, আল্লাহ! বল, ‘আলহামদুলিল্লাহ’। ৪১ কিন্তু তাদের অধিকাংশেই বুদ্ধিকে কাজে লাগায় না।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যদি আপনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন, কে আকাশ থেকে বারি বর্ষণ করে, অতঃপর তা দ্বারা মৃত্তিকাকে উহার মৃত হওয়ার পর সঞ্জীবিত করে? তবে তারা অবশ্যই বলবে, আল্লাহ। বলুন, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই। কিন্তু তাদের অধিকাংশই তা বোঝে না।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যদি তুমি এদেরকে জিজ্ঞাসা কর, আকাশ হতে বারি বর্ষণ করে কে ভূমিকে সঞ্জীবিত করেন এর মৃত্যুর পর ? এরা অবশ্যই বলবে, ‘আল্লাহ্’। বল, ‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্ র ই।’ কিন্তু এদের অধিকাংশই এটা অনুধাবন করে না।


তাফসীরঃ

৪১. আলহামদুলিল্লাহ, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর। তারা নিজেদের মুখেই স্বীকার করে নিয়েছে, এই বিশ্বজগতের সৃষ্টিকর্তা কেবল আল্লাহ তাআলা, অন্য কেউ নয়। এ স্বীকারোক্তির অনিবার্য ফল হল, তাদের অংশীবাদীসুলভ আকীদা-বিশ্বাস সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, বিলকুল বাতিল।


৬৪


وَمَا ہٰذِہِ الۡحَیٰوۃُ الدُّنۡیَاۤ اِلَّا لَہۡوٌ وَّلَعِبٌ ؕ وَاِنَّ الدَّارَ الۡاٰخِرَۃَ لَہِیَ الۡحَیَوَانُ ۘ لَوۡ کَانُوۡا یَعۡلَمُوۡنَ


ওয়ামা-হা-যিহিল হায়া-তুদ দুনইয়া-ইল্লা-লাহউওঁ ওয়ালা‘ইবুওঁ ওয়া ইন্নাদ দা-রাল আখিরাতা লাহিয়াল হায়াওয়া-ন । লাও কা-নূইয়া‘লামূন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এই পার্থিব জীবন খেলাধুলা ছাড়া কিছুই নয়। ৪২ বস্তুত আখেরাতের জীবনই প্রকৃত জীবন, যদি তারা জানত!


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এই পার্থিব জীবন ক্রীড়া-কৌতুক বৈ তো কিছুই নয়। পরকালের গৃহই প্রকৃত জীবন; যদি তারা জানত।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এই পার্থিব জীবন তো ক্রীড়া-কৌতুক ব্যতীত কিছুই নয়। পারলৌকিক জীবনই তো প্রকৃত জীবন, যদি এরা জানত!


তাফসীরঃ

৪২. অর্থাৎ, খেলাধুলা কোন স্থায়ী জিনিস নয়, তার আনন্দ ক্ষণিকের। কিছুক্ষণ খেলাধুলা চলার পর এক সময় সব ফূর্তি শেষ হয়ে যায়। দুনিয়ার জীবনটাও এ রকমই। এর কোন সুখ ও কোন আনন্দই স্থায়ী নয়। সবই অতি ক্ষণস্থায়ী। কিছুকাল পর সব খতম হয়ে যায়। পক্ষান্তরে আখেরাতের জীবন স্থায়ী ও অনিঃশেষ। তাই তার আনন্দ ও নি‘আমত চিরস্থায়ী। তার বসন্ত সদা অম্লান। সুতরাং প্রকৃত জীবন কেবল আখেরাতেরই জীবন।

(ads1)

(getButton) #text=(আল কোরআন বাংলা অনুবাদ সহ এক সাথে ) #icon=(link) #color=(#b50404)

৬৫


فَاِذَا رَکِبُوۡا فِی الۡفُلۡکِ دَعَوُا اللّٰہَ مُخۡلِصِیۡنَ لَہُ الدِّیۡنَ ۬ۚ  فَلَمَّا نَجّٰہُمۡ اِلَی الۡبَرِّ اِذَا ہُمۡ یُشۡرِکُوۡنَ ۙ


ফাইযা-রাকিবূফিল ফুলকি দা‘আ-উল্লা-হা মুখলিসীনা লাহুদদীনা ফালাম্মা-নাজ্জা-হুম ইলাল বাররি ইযা-হুম ইউশরিকূন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তারা যখন নৌকায় চড়ে, তখন তারা আল্লাহকে ডাকে তাঁর আনুগত্যে একনিষ্ঠ হয়ে। ৪৩ তারপর তাদেরকে উদ্ধার করে যখন স্থলে নিয়ে আসেন, অমনি তারা শিরকে লিপ্ত হয়ে পড়ে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তারা যখন জলযানে আরোহণ করে তখন একনিষ্ঠভাবে আল্লাহকে ডাকে। অতঃপর তিনি যখন স্থলে এনে তাদেরকে উদ্ধার করেন, তখনই তারা শরীক করতে থাকে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরা যখন নৌযানে আরোহণ করে তখন এরা বিশুদ্ধচিত্ত হয়ে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহ্কে ডাকে। এরপর তিনি যখন স্থলে ভিড়িয়ে এদেরকে উদ্ধার করেন, তখন এরা শিরকে লিপ্ত হয়,


তাফসীরঃ

৪৩. আরব মুশরিকদের রীতি ছিল বড় আজব। যখন সাগরে তরঙ্গ-বেষ্টিত হয়ে পড়ত এবং সাক্ষাৎ মৃত্যুর সম্মুখীন হত, তখন তাদের কোনও মূর্তির কথা স্মরণ হত না, দেব-দেবীর কথাও না; তখন সাহায্যের জন্য কেবল আল্লাহ তাআলাকেই ডাকত। কিন্তু আল্লাহ তাআলার রহমতে যখন প্রাণ নিয়ে তীরে পৌঁছতে সক্ষম হত, তখন তাঁকে ছেড়ে আবার সেই প্রতিমাদের পূজায়ই লিপ্ত হত।


৬৬


لِیَکۡفُرُوۡا بِمَاۤ اٰتَیۡنٰہُمۡ ۚۙ وَلِیَتَمَتَّعُوۡا ٝ فَسَوۡفَ یَعۡلَمُوۡنَ


লিইয়াকফুরূ বিমাআ-তাইনা-হুম ওয়া লিইয়াতামাত্তা‘ঊ ফাছাওফা ইয়া‘লামূন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আমি তাদেরকে যে নি‘আমত দিয়েছি, তারা তার অকৃতজ্ঞতা করতে থাকুক এবং লুটে নিক কিছু মজা! সেই সময় দূরে নয়, যখন তারা সবই জানতে পারবে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যাতে তারা তাদের প্রতি আমার দান অস্বীকার করে এবং ভোগ-বিলাসে ডুবে থাকে। সত্বরই তারা জানতে পারবে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যাতে এদের প্রতি আমার দান এরা অস্বীকার করে এবং ভোগ-বিলাসে মত্ত থাকে ; অচিরেই এরা জানতে পারবে !


৬৭


اَوَلَمۡ یَرَوۡا اَنَّا جَعَلۡنَا حَرَمًا اٰمِنًا وَّیُتَخَطَّفُ النَّاسُ مِنۡ حَوۡلِہِمۡ ؕ اَفَبِالۡبَاطِلِ یُؤۡمِنُوۡنَ وَبِنِعۡمَۃِ اللّٰہِ یَکۡفُرُوۡنَ


আওয়া লাম ইয়ারাও আন্না-জা‘আলনা-হারামান আ-মিনাওঁ ওয়া ইউতাখাত্তাফুন্না-ছুমিন হাওলিহিম আফাবিলবা-তিলি ইউ’মিনূনা ওয়া বিনি‘মাতিল্লা-হি ইয়াকফুরূন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তারা কি লক্ষ্য করেনি, আমি (তাদের নগরকে) এক নিরাপদ হরম বানিয়ে দিয়েছি, অথচ তাদের আশপাশের লোকদের উপর হয় অতর্কিত হামলা। ৪৪ তারপরও কি তারা অলীক বস্তুর প্রতি বিশ্বাস রাখছে ও আল্লাহর নি‘আমতের নাশোকরী করছে?


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তারা কি দেখে না যে, আমি একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল করেছি। অথচ এর চতুপার্শ্বে যারা আছে, তাদের উপর আক্রমণ করা হয়। তবে কি তারা মিথ্যায়ই বিশ্বাস করবে এবং আল্লাহর নেয়ামত অস্বীকার করবে?


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরা কি দেখে না আমি ‘হারাম’কে নিরাপদ স্থান করেছি, অথচ এটার চতুষ্পার্শ্বে যেসব মানুষ আছে, তাদের ওপর হামলা করা হয়, তবে কি এরা অসত্যেই বিশ্বাস করবে এবং আল্লাহ্ র অনুগ্রহ অস্বীকার করবে ?


তাফসীরঃ

৪৪. পূর্বের সূরা অর্থাৎ সূরা কাসাস (২৮ : ৫৭)-এ গত হয়েছে, মুশরিকগণ তাদের ঈমান না আনার পক্ষে অজুহাত খাড়া করত, যেই আরববাসী এখন আমাদেরকে ইজ্জত-সম্মান করে, ঈমান আনলে তারা আমাদের শত্রু হয়ে যাবে এবং আমাদেরকে আমাদের মাতৃভূমি থেকে বের করে দেবে। এ আয়াতে তাদের সে অজুহাতের জবাব দেওয়া হয়েছে যে, আল্লাহ তাআলাই তো মক্কা মুকাররমাকে নিরাপদ হরম বানিয়েছেন। ফলে এখানে কেউ লুটতরাজ ও খুন-খারাবি করার সাহস পায় না, অথচ এর আশেপাশেই দিনে-দুপুরে ডাকাতি, দস্যুবৃত্তি চলে। সেখানে মানুষের জান-মালের কোন নিরাপত্তা নেই, যে নিরাপত্তা হরমের বাসিন্দা হওয়ার সুবাদে তোমরা পাচ্ছ। তো আল্লাহ তাআলার নাফরমানী করা সত্ত্বেও যখন তিনি এরূপ স্বস্তির জীবন দান করেছেন, তখন তাঁর আনুগত্য স্বীকারের পর কি তিনি তোমাদেরকে এ নি‘আমত থেকে বঞ্চিত করবেন? দ্বিতীয়ত এ আয়াতে এদিকেও দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে যে, মক্কা মুকাররমাকে নিরাপদ হরম কি কোন প্রতিমা বা দেব-দেবী বানিয়েছেন যে, তোমরা তাদের পূজা-অর্চনায় লিপ্ত রয়েছ? এ ভূখণ্ডকে এরূপ মর্যাদা তো আল্লাহ তাআলাই দান করেছেন, যা তোমরাও স্বীকার কর। সুতরাং চিন্তা করে দেখ, ইবাদত-বন্দেগীর উপযুক্ত আসলে কে?


৬৮


وَمَنۡ اَظۡلَمُ مِمَّنِ افۡتَرٰی عَلَی اللّٰہِ کَذِبًا اَوۡ کَذَّبَ بِالۡحَقِّ لَمَّا جَآءَہٗ ؕ اَلَیۡسَ فِیۡ جَہَنَّمَ مَثۡوًی لِّلۡکٰفِرِیۡنَ


ওয়া মান আজলামুমিম্মানিফ তারা-‘আলাল্লা-হি কাযিবান আও কাযযাবা বিলহাক্কি লাম্মা-জাআহূ আলাইছা ফী জাহান্নামা মাছওয়াল লিল কা-ফিরীন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তার চেয়ে বড় জালেম আর কে হতে পারে, যে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা অপবাদ আরোপ করে কিংবা যখন তার কাছে সত্য বাণী পৌঁছে, তখন তা প্রত্যাখ্যান করে? (এরূপ) কাফেরদের ঠিকানা কি জাহান্নামে নয়?


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যে আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা কথা গড়ে অথবা তার কাছে সত্য আসার পর তাকে অস্বীকার করে, তার কি স্মরণ রাখা উচিত নয় যে, জাহান্নামই সেসব কাফেরের আশ্রয়স্থল হবে?


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যে ব্যক্তি আল্লাহ্ সম্বন্ধে মিথ্যা রচনা করে বা তাঁর নিকট হতে আগত সত্যকে অস্বীকার করে তার অপেক্ষা অধিক জালিম আর কে ? জাহান্নামই কি কাফিরদের আবাস নয় ?


৬৯


وَالَّذِیۡنَ جَاہَدُوۡا فِیۡنَا لَنَہۡدِیَنَّہُمۡ سُبُلَنَا ؕ  وَاِنَّ اللّٰہَ لَمَعَ الۡمُحۡسِنِیۡنَ ٪


ওয়াল্লাযীনা জা-হাদূফীনা-লানাহদিয়ান্নাহুম ছুবুলানা- ওয়া ইন্নাল্লা-হা লামা‘আল মুহছিনীন।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

যারা আমার উদ্দেশ্যে প্রচেষ্টা চালায়, আমি তাদেরকে অবশ্যই আমার পথে উপনীত করব। ৪৫ নিশ্চয়ই আল্লাহ সৎকর্মশীলদের সঙ্গে আছেন।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যারা আমার পথে সাধনায় আত্মনিয়োগ করে, আমি অবশ্যই তাদেরকে আমার পথে পরিচালিত করব। নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মপরায়ণদের সাথে আছেন।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যারা আমার উদ্দেশ্যে সংগ্রাম করে আমি তাদেরকে অবশ্যই আমার পথে পরিচালিত করব। আল্লাহ্ অবশ্যই সৎকর্মপরায়ণদের সঙ্গে থাকেন।


তাফসীরঃ

৪৫. যারা নিজেরা দীনের উপর চলে ও অন্যকে চালানোর চেষ্টা করে, তাদের জন্য এটা এক মহা সুসংবাদ। আল্লাহ তাআলার ওয়াদা হল, যারা দীনের পথে চেষ্টারত থাকবে এবং কখনও হতাশ হয়ে পিছিয়ে যাবে না, তিনি অবশ্যই তাদেরকে লক্ষ্যস্থলে পৌঁছাবেন। সুতরাং পথের কষ্ট-ক্লেশের কাছে হার না মেনে প্রতিটি বাঁক থেকে নতুন উদ্যম ও প্রত্যেক সঙ্কট থেকে নতুন হিম্মতের রসদ নিয়ে অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখা চাই। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে এর তাওফীক দান করুন। আমীন।

Post a Comment

0 Comments