সূরা ফুরকান ডাউনলোড, নামাজের শেষে সুরা ফুরকান পাঠের গুরুত্ব, ৫ ওয়াক্ত সালাতে ফুরকান পড়ার গুরুত্ব,৫ ওয়াক্ত নামাজে ফুরকান আমল ও ফজিলত, ৫০৫ বার সূরা ফুরকান, ৯৯৯ বার সূরা ফুরকান,

 

সূরা ফুরকান বাংলা উচ্চারণ সহ অনুবাদ,সূরা ফুরকান বাংলা উচ্চারণ, সূরা আল ফুরকান বাংলা তরজমা,সূরা ফুরকান বাংলা তাফসীর, আমল সূরা আল ফুরকান, সকল আমল সূরা আল ফুরকান,

২৫ . আল ফুরকান - ( الفرقان ) | সত্য মিথ্যার পার্থক্য নির্ধারণকারী গ্রম্থ

মাক্কী, মোট আয়াতঃ ৭৭

আরো পড়ুন :-

স্মরণ শক্তি বৃদ্ধির দোয়া,মেধা বৃদ্ধির দোয়া,স্মৃতি শক্তি বাড়ানোর দোয়া!নামাজের পর ২১ বাড় পড়ুন

গর্ভের সন্তান কখন নষ্ট করা যাবে?,কতদিনের বাচ্চা নষ্ট করলে গুনাহ হবে না?, বাচ্চা নষ্ট করা জায়েজ আছে?, 

দোয়াটি পড়লে সাথে সাথে রাগ কমে যায়, রাগ কমানোর দোয়া,শিশুদের রাগ কমানোর আমল

(ads2)

(getButton) #text=(আল কোরআন বাংলা অনুবাদ সহ এক সাথে ) #icon=(link) #color=(#b50404)

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ


تَبَارَكَ الَّذِي نَزَّلَ الْفُرْقَانَ عَلَىٰ عَبْدِهِ لِيَكُونَ لِلْعَالَمِينَ نَذِيرًا


তাবা-রাকাল্লাযী নাঝঝালাল ফুরকা-না ‘আলা-‘আবদিহী লিইয়াকূনা লিল‘আ-লামীনা নাযীরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

মহিমময় সেই সত্তা, যিনি নিজ বান্দার প্রতি সত্য ও মিথ্যার মধ্যে মীমাংসাকারী কিতাব নাযিল করেছেন, যাতে তা বিশ্ববাসীর জন্য হয় সতর্ককারী।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

পরম কল্যাণময় তিনি যিনি তাঁর বান্দার প্রতি ফয়সালার গ্রন্থ অবর্তীণ করেছেন, যাতে সে বিশ্বজগতের জন্যে সতর্ককারী হয়,।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

কত মহান তিনি যিনি তাঁর বান্দার প্রতি ফুরকান অবতীর্ণ করেছেন যাতে সে বিশ্বজগতের জন্যে সতর্ককারী হতে পারে!



الَّذِي لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَلَمْ يَتَّخِذْ وَلَدًا وَلَمْ يَكُن لَّهُ شَرِيكٌ فِي الْمُلْكِ وَخَلَقَ كُلَّ شَيْءٍ فَقَدَّرَهُ تَقْدِيرًا


আল্লাযীলাহুমুলকুছছামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদি ওয়ালাম ইয়াত্তাখিয ওয়ালাদাওঁ ওয়ালাম ইয়াকুল্লাহূশারীকুন ফিল মুলকি ওয়া খালাকা কুল্লা শাইয়িন ফাকাদ্দারাহূতাকদীরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

সেই সত্তা, যিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্বের একমাত্র মালিক। যিনি কোন পুত্র গ্রহণ করেননি এবং রাজত্বে নেই তাঁর কোন অংশীদার। আর যিনি প্রতিটি বস্তুকে সৃষ্টি করে তাকে দান করেছেন এক সুনির্দিষ্ট পরিমিতি। ১


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তিনি হলেন যাঁর রয়েছে নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের রাজত্ব। তিনি কোন সন্তান গ্রহণ করেননি। রাজত্বে তাঁর কোন অংশীদার নেই। তিনি প্রত্যেক বস্তু সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তাকে শোধিত করেছেন পরিমিতভাবে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্বের অধিকারী ; তিনি কোন সন্তান গ্রহণ করেন নাই ; সার্বভৌমত্বে তাঁর কোন শরীক নাই। তিনি সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেছেন এবং প্রত্যেককে পরিমিত করেছেন যথাযথ অনুপাতে।


তাফসীরঃ

১. অর্থাৎ প্রত্যেকটি জিনিসকে এমনভাবে সৃষ্টি করেছেন যে, তার আকার-আকৃতি, গুণাবলী, যোগ্যতা-ক্ষমতা, আয়ু, খাদ্য, অবস্থা ও প্রাসঙ্গিক সবকিছুর একটা পরিমাণ স্থির করে দিয়েছেন এবং সেই অনুযায়ীই তা সংঘটিত হয়। স্থিরীকৃত সে পরিমাণ-পরিধির মধ্যেই প্রতিটি সৃষ্টি বিরাজ-বিচরণ করে, তা অতিক্রম করার সাধ্য নেই কারও। -অনুবাদক



وَاتَّخَذُوا مِن دُونِهِ آلِهَةً لَّا يَخْلُقُونَ شَيْئًا وَهُمْ يُخْلَقُونَ وَلَا يَمْلِكُونَ لِأَنفُسِهِمْ ضَرًّا وَلَا نَفْعًا وَلَا يَمْلِكُونَ مَوْتًا وَلَا حَيَاةً وَلَا نُشُورًا


ওয়াত্তাখাযূমিন দূনিহীআ-লিহাতাল লা-ইয়াখলুকূ না শাইআওঁ ওয়াহুম ইউখলাকূ না ওয়ালা-ইয়ামলিকূনা লিআনফুছিহিম দাররাওঁ ওয়ালা-নাফ‘আওঁ ওয়ালা-ইয়ামলিকূনা মাওতাওঁ ওয়ালা-হায়া-তাওঁ ওয়ালা-নুশূরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আর মানুষ তাকে ছেড়ে এমন সব মাবুদ গ্রহণ করে নিয়েছে, যারা কোন কিছু সৃষ্টি করতে পারে না; বরং খোদ তাদেরকেই সৃষ্টি করা হয়। তাদের নেই খোদ নিজেদেরও কোন ক্ষতি বা উপকার করার ক্ষমতা। আর না আছে কারও মৃত্যু ও জীবন দান কিংবা কাউকে পুনরুজ্জীবিত করার ক্ষমতা।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তারা তাঁর পরিবর্তে কত উপাস্য গ্রহণ করেছে, যারা কিছুই সৃষ্টি করে না এবং তারা নিজেরাই সৃষ্ট এবং নিজেদের ভালও করতে পারে না, মন্দও করতে পারে না এবং জীবন, মরণ ও পুনরুজ্জীবনের ও তারা মালিক নয়।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আর তারা তাঁর পরিবর্তে ইলাহ রূপে গ্রহণ করেছে অন্যদেরকে, যারা কিছুই সৃষ্টি করে না, বরং এরা নিজেরাই সৃষ্ট এবং এরা নিজেদের অপকার বা উপকার করার ক্ষমতা রাখে না এবং মৃত্যু, জীবন ও উত্থানের ওপরও কোন ক্ষমতা রাখে না।



وَقَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا إِنْ هَـٰذَا إِلَّا إِفْكٌ افْتَرَاهُ وَأَعَانَهُ عَلَيْهِ قَوْمٌ آخَرُونَ ۖ فَقَدْ جَاءُوا ظُلْمًا وَزُورًا


ওয়া কা-লাল্লাযীনা কাফারূইন হা-যাইল্লাইফকুনিফতারা-হু ওয়াআ‘আ-নাহূ ‘আলাইহি কাওমুন আ-খারূনা ফাকাদ জাঊ জুলমাওঁ ওয়াঝূরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

যারা কুফর অবলম্বন করেছে, তারা বলে, এটা (অর্থাৎ কুরআন) এক মনগড়া জিনিস ছাড়া কিছুই নয়, যা সে নিজে রচনা করেছে এবং অপর এক গোষ্ঠী তাকে এ কাজে সাহায্য করেছে। ২ এভাবে (এ মন্তব্য করে) তারা ঘোর জুলুম ও প্রকাশ্য মিথ্যাচারে লিপ্ত হয়েছে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

কাফেররা বলে, এটা মিথ্যা বৈ নয়, যা তিনি উদ্ভাবন করেছেন এবং অন্য লোকেরা তাঁকে সাহায্য করেছে। অবশ্যই তারা অবিচার ও মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

কাফিররা বলে, ‘এটা মিথ্যা ব্যতীত কিছুই নয়, সে এটা উদ্ভাবন করেছে এবং ভিন্ন সম্প্রদায়ের লোক তাকে এই ব্যাপারে সাহায্য করেছে।’ এইরূপে এরা অবশ্যই জুলুম ও মিথ্যায় উপনীত হয়েছে।


তাফসীরঃ

২. মক্কা মুকাররমার কতিপয় কাফের অপবাদ দিয়েছিল, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইয়াহুদীদের কাছ থেকে বিগত কালের নবী-রাসূলের ঘটনাবলী শিখে নিয়েছেন আর সেসব ঘটনা কারও দ্বারা লিপিবদ্ধ করিয়ে এই কুরআন বানিয়ে নিয়েছেন (নাউযুবিল্লাহ), অথচ তারা যে সকল ইয়াহুদীর কথা বলত, তারা ইসলাম গ্রহণ করেছিল। তিনি যদি তাদের কাছ থেকে শিখে নেওয়া বিষয়কে আল্লাহর কালাম বলে চালানোর চেষ্টা করতেন, তবে সবার আগে সেই ইয়াহুদীদের কাছেই সে গোমর ফাঁস হয়ে যেত। আর এহেন অবস্থায় তারা তাকে সত্য নবী বলে স্বীকার করে তাঁর প্রতি ঈমান আনে কী করে?



وَقَالُوا أَسَاطِيرُ الْأَوَّلِينَ اكْتَتَبَهَا فَهِيَ تُمْلَىٰ عَلَيْهِ بُكْرَةً وَأَصِيلًا


ওয়া কা-লূআছা-তীরুল আওওয়ালীনাক তাতাবাহা-ফাহিয়া তুমলা-আলাইহি বুকরাতাওঁ ওয়াআসীলা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এবং তারা বলে, এটা তো পূর্ববর্তী লোকদের লেখা আখ্যান, যা সে লিখিয়ে নিয়েছে। সকাল-সন্ধ্যায় সেটাই তার সামনে পড়ে শোনানো হয়।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তারা বলে, এগুলো তো পুরাকালের রূপকথা, যা তিনি লিখে রেখেছেন। এগুলো সকাল-সন্ধ্যায় তাঁর কাছে শেখানো হয়।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরা বলে, ‘এইগুলি তো সেকালের উপকথা, যা সে লিখেয়ে নিয়েছে; এইগুলি সকাল-সন্ধ্যা তার নিকট পাঠ করা হয়।’



قُلْ أَنزَلَهُ الَّذِي يَعْلَمُ السِّرَّ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۚ إِنَّهُ كَانَ غَفُورًا رَّحِيمًا


কুল আনঝা-লাহুল্লাযী ইয়া‘লামুছছিররা ফিছছামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদি ইন্নাহূকা-না গাফূরার রাহীমা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

বলে দাও, এটা (এই বাণী) তো নাযিল করেছেন সেই সত্তা, যিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর যাবতীয় গুপ্ত রহস্য জানেন। নিশ্চয়ই তিনি অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

বলুন, একে তিনিই অবতীর্ণ করেছেন, যিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের গোপন রহস্য অবগত আছেন। তিনি ক্ষমাশীল, মেহেরবান।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

বল, ‘এটা তিনিই অবতীর্ণ করেছেন যিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সমুদয় রহস্য অবগত আছেন ; নিশ্চয়ই তিনি পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’



وَقَالُوا مَالِ هَـٰذَا الرَّسُولِ يَأْكُلُ الطَّعَامَ وَيَمْشِي فِي الْأَسْوَاقِ ۙ لَوْلَا أُنزِلَ إِلَيْهِ مَلَكٌ فَيَكُونَ مَعَهُ نَذِيرًا


ওয়া কা-লূমা-লি হা-যার রাছূলি ইয়া’কুলুততা‘আমা ওয়া ইয়ামশী ফিল আছওয়া-কি লাওলাউনঝিলা ইলাইহি মালাকুন ফাইয়াকূনা মা‘আহূনাযীরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এবং তারা বলে, এ কেমন রাসূল, যে খাবার খায় এবং হাটে-বাজারেও চলাফেরা করে? তার কাছে কোন ফিরিশতা অবতীর্ণ করা হল না কেন, যে তার সঙ্গে থাকত একজন সতর্ককারীরূপে?


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তারা বলে, এ কেমন রসূল যে, খাদ্য আহার করে এবং হাটে-বাজারে চলাফেরা করে? তাঁর কাছে কেন কোন ফেরেশতা নাযিল করা হল না যে, তাঁর সাথে সতর্ককারী হয়ে থাকত?


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরা বলে, ‘এ কেমন রাসূল’ যে আহার করে এবং হাটে-বাজারে চলাফেরা করে ; তার নিকট কোন ফেরেশতা কেন অবতীর্ণ করা হল না, যে তার সঙ্গে থাকত সতর্ককারীরূপে ?’



أَوْ يُلْقَىٰ إِلَيْهِ كَنزٌ أَوْ تَكُونُ لَهُ جَنَّةٌ يَأْكُلُ مِنْهَا ۚ وَقَالَ الظَّالِمُونَ إِن تَتَّبِعُونَ إِلَّا رَجُلًا مَّسْحُورًا


আও ইউলকাইলাইহি কানঝুন আও তাকূনুলাহূজান্নাতুইঁ ইয়া’কুলুমিনহা- ওয়া কালাজ্জা-লিমূনা ইন তাত্তাবি‘ঊনা ইল্লা-রাজুলাম মাছহূরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

অথবা তাকে কোন ধনভাণ্ডারই দেওয়া হত কিংবা তার থাকত কোন বাগান, যা থেকে সে খেতে পারত? জালেমগণ (মুসলিমদেরকে) আরও বলে, তোমরা তো একজন যাদুগ্রস্ত ব্যক্তিরই অনুসরণ করছ।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

অথবা তিনি ধন-ভান্ডার প্রাপ্ত হলেন না কেন, অথবা তাঁর একটি বাগান হল না কেন, যা থেকে তিনি আহার করতেন? জালেমরা বলে, তোমরা তো একজন জাদুগ্রস্ত ব্যক্তিরই অনুসরণ করছ।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

অথবা তাকে ধনভাণ্ডার দেওয়া হয় না কেন বা তার একটি বাগান নাই কেন, যা হতে সে আহার সংগ্রহ করতে পারে ?’ সীমালংঘনকারীরা আরও বলে, ‘তোমরা তো এক জাদুগ্রস্ত ব্যক্তিরই অনুসরণ করছো।’



انظُرْ كَيْفَ ضَرَبُوا لَكَ الْأَمْثَالَ فَضَلُّوا فَلَا يَسْتَطِيعُونَ سَبِيلًا


উনজু র কাইফা দারাবূলাকাল আমছা-লা ফাদাললূফালা-ইয়াছতাতী‘ঊনা ছাবীলা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

(হে নবী!) দেখ, তারা তোমার সম্পর্কে কেমন সব উপমা পেশ করছে! ৩ ফলে তারা এমনই বিভ্রান্ত হয়েছে যে, সঠিক পথে আসা তাদের পক্ষে সম্ভবই নয়।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

দেখুন, তারা আপনার কেমন দৃষ্টান্ত বর্ণনা করে! অতএব তারা পথভ্রষ্ট হয়েছে, এখন তারা পথ পেতে পারে না।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

দেখ, এরা তোমার কী উপমা দেয়! এরা পথভ্রষ্ট হয়েছে, ফলে এরা পথ পাবে না।


তাফসীরঃ

৩. অর্থাৎ কেমন আজব-আজব কথা তৈরি করছে। কখনও বলছে অন্যরা এ কুরআন রচনা করে দিয়েছে। কখনও বলছে, এটা পুরাকালের আখ্যান, কখনও বলছে রাসূল পানাহার করবে কেন, কেনই বা হাটেবাজারে যাবে, কখনও বলছে, সে একজন বড় ধনী হল না কেন, আবার বলছে, সে যাদুগ্রস্ত। কুরআন ও রাসূলের শানে এসব কথা এমনই আজব, যা অবান্তর উপমারই নামান্তর। -অনুবাদক


১০


تَبَارَكَ الَّذِي إِن شَاءَ جَعَلَ لَكَ خَيْرًا مِّن ذَٰلِكَ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ وَيَجْعَل لَّكَ قُصُورًا


তাবা-রাকাল্লাযীইন শাআ জা‘আলা লাকা খাইরাম মিন যা-লিকা জান্না-তিন তাজরী মিন তাহতিহাল আনহা-রু ওয়া ইয়াজ‘আল লাকা কুসূরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

মহিমময় সেই সত্তা, যিনি ইচ্ছা করলে তোমাকে তার চেয়ে উৎকৃষ্ট জিনিস দিতে পারেন। (কেবল একটি নয়) দিতে পারেন এমন বহু বাগান, যার নিচে বহমান থাকবে নদ-নদী এবং তোমাকে বানাতে পারেন বহু অট্টালিকার মালিক। ৪


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

কল্যানময় তিনি, যিনি ইচ্ছা করলে আপনাকে তদপেক্ষা উত্তম বস্তু দিতে পারেন-বাগ-বাগিচা, যার তলদেশে নহর প্রবাহিত হয় এবং দিতে পারেন আপনাকে প্রাসাদসমূহ।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

কত মহান তিনি যিনি ইচ্ছা করলে তোমাকে দিতে পারেন এটা অপেক্ষা উৎকৃষ্ট বস্তু-উদ্যানসমূহ যার নিম্নদেশে নদী-নালা প্রবাহিত এবং তিনি দিতে পারেন তোমাকে প্রাসাদসমূহ!


তাফসীরঃ

৪. অর্থাৎ কাফেরদের ফরমায়েশ মত আল্লাহ তাআলা চাইলে আপনাকে বহুমূল্য উদ্যান-অট্টালিকার মালিক বানিয়ে দিতে পারেন। ভূ-পৃষ্ঠের সমুদয় সম্পদও আপনাকে দিয়ে দিতে পারেন। তাঁর ভাণ্ডারে তো কোন কিছুর অভাব নেই, কিন্তু তা দিচ্ছেন না এ কারণে যে, আপনার রিসালাত প্রমাণের জন্য যে নিদর্শন দরকার ছিল তা দেওয়া হয়ে গেছে। ঈমান আনার ইচ্ছা থাকলে নিদর্শন হিসাবে তাই যথেষ্ট। ইচ্ছা নেই বলেই তা দেখা সত্ত্বেও তারা ঈমান আনছে না। কাজেই তাদের চাহিদামত নিদর্শন দিলেও তারা ঈমান আনবে না। কোনও না কোনও বাহানা দেখিয়ে মুখ ফিরিয়ে নেবে। আর তখন তাদের ধ্বংস অনিবার্য হয়ে যাবে, কিন্তু তাদেরকে এখনই ধ্বংস করা যেহেতু আল্লাহর ইচ্ছা নয় তাই তিনি তাদের চাহিদামত নিদর্শন দেখাচ্ছেন না। -অনুবাদক


১১


بَلْ كَذَّبُوا بِالسَّاعَةِ ۖ وَأَعْتَدْنَا لِمَن كَذَّبَ بِالسَّاعَةِ سَعِيرًا


বাল কাযযাবূবিছছা-‘আতি ওয়া আ‘তাদনা-লিমান কাযযাবা বিছছা-‘আতি ছা‘ঈরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

প্রকৃত ব্যাপার হল, তারা কিয়ামতকে মিথ্যা সাব্যস্ত ৫ করেছে, আর যে-কেউ কিয়ামতকে মিথ্যা সাব্যস্ত করে আমি তার জন্য প্রজ্বলিত আগুন তৈরি করে রেখেছি।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

বরং তারা কেয়ামতকে অস্বীকার করে এবং যে কেয়ামতকে অস্বীকার করে, আমি তার জন্যে অগ্নি প্রস্তুত করেছি।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

কিন্তু এরা কিয়ামতকে অস্বীকার করেছে এবং যে কিয়ামতকে অস্বীকার করে তার জন্যে আমি প্রস্তুত রেখেছি জ্বলন্ত অগ্নি।


তাফসীরঃ

৫. অর্থাৎ, তারা যেসব কথা বানাচ্ছে তার প্রকৃত কারণ সত্যসন্ধানী মনোভাব নয় যে, সত্য তালাশ করতে গিয়ে তাদের মনে এসব খটকা জেগেছে এবং খটকাগুলো দূর হলেই তারা ঈমান আনবে। আসল কারণ তাদের অবহেলা, চিন্তাশক্তিকে কাজে না লাগানো। যেহেতু কিয়ামত ও আখেরাতের উপর তাদের ঈমান নেই, তাই এসব বেহুদা কথা তারা নির্ভয়ে বলতে পারছে। কেননা আখেরাতের উপর ঈমান না থাকার কারণে সেখানে যে এসব কথার কারণে শাস্তিভোগ করতে হতে পারে, সেই চিন্তাই তারা করে না।


১২


إِذَا رَأَتْهُم مِّن مَّكَانٍ بَعِيدٍ سَمِعُوا لَهَا تَغَيُّظًا وَزَفِيرًا


ইযা-রাআতহুম মিম মাকা-নিম বা‘ঈদিন ছামি‘ঊ লাহা-তাগাইয়ুজাওঁ ওয়া ঝাফীরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তা যখন দূর থেকে তাদেরকে দেখবে, তখন তারা শুনতে পাবে তার ফোঁস-ফোঁসানি ও গর্জনধ্বনি।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

অগ্নি যখন দূর থেকে তাদেরকে দেখবে, তখন তারা শুনতে পাবে তার গর্জন ও হুঙ্কার।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

দূর হতে অগ্নি যখন এদেরকে দেখবে তখন এরা শুনতে পাবে এটার ক্রুদ্ধ গর্জন ও চীৎকার;


১৩


وَإِذَا أُلْقُوا مِنْهَا مَكَانًا ضَيِّقًا مُّقَرَّنِينَ دَعَوْا هُنَالِكَ ثُبُورًا


ওয়া ইযাউলকূ মিনহা-মাকা-নান দাইয়িকাম মুকাররানীনা দা‘আও হুনা-লিকা ছুবূরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

যখন তাদেরকে ভালোভাবে বেঁধে তার কোন এক সংকীর্ণ স্থানে নিক্ষেপ করা হবে, তখন তারা মৃত্যুকে ডাকবে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যখন এক শিকলে কয়েকজন বাঁধা অবস্থায় জাহান্নামের কোন সংকীর্ণ স্থানে নিক্ষেপ করা হবে, তখন সেখানে তারা মৃত্যুকে ডাকবে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এবং যখন এদেরকে শৃংখলিত অবস্থায় এর কোন সংকীর্ণ স্থানে নিক্ষেপ করা হবে তখন এরা সেখানে ধ্বংস কামনা করবে।


১৪


لَّا تَدْعُوا الْيَوْمَ ثُبُورًا وَاحِدًا وَادْعُوا ثُبُورًا كَثِيرًا


লা-তাদ‘ঊল ইয়াওমা ছুবূরাওঁ ওয়া-হিদাওঁ ওয়াদ‘ঊ ছুবূরান কাছীরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

(তখন তাদেরকে বলা হবে,) আজ তোমরা মৃত্যুকে কেবল একবার ডেক না; বরং মৃত্যুকে ডাকতে থাক বারবার। ৬


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

বলা হবে, আজ তোমরা এক মৃত্যুকে ডেকো না অনেক মৃত্যুকে ডাক।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এদেরকে বলা হবে, ‘আজ তোমরা একবারের জন্যে ধ্বংস কামনা কর না, বহুবার ধ্বংস হওয়ার কামনা করতে থাক।’


তাফসীরঃ

৬. আয়াতের এ তরজমা করা হয়েছে প্রখ্যাত মুফাসসির আবুস সুয়ূদ (রহ.)-এর তাফসীরের ভিত্তিতে যা আল্লামা আলুসী (রহ.)ও নিজ গ্রন্থে উদ্ধৃত করেছেন। এ হিসেবে আয়াতের মর্ম হল, তোমরা কঠিন শাস্তির কারণে ঘাবড়ে গিয়ে যে মৃত্যুকে ডাকছ, তা তো আর কখনও আসার নয়। বরং তোমাদেরকে নিত্য নতুন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে এবং প্রত্যেকবারই যন্ত্রণার তীব্রতায় তোমাদের মৃত্যু কামনা করতে হবে।


১৫


قُلْ أَذَٰلِكَ خَيْرٌ أَمْ جَنَّةُ الْخُلْدِ الَّتِي وُعِدَ الْمُتَّقُونَ ۚ كَانَتْ لَهُمْ جَزَاءً وَمَصِيرًا


কুল আযা-লিকা খাইরুন আম জান্নাতুল খুলদিল্লাতী উ‘ইদাল মুত্তাকূনা কা-নাত লাহুম জাঝাআওঁ ওয়া মাসীরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

বল, এই পরিণাম শ্রেয়, না স্থায়ীভাবে থাকার জান্নাত, যার প্রতিশ্রুতি মুত্তাকীদেরকে দেওয়া হয়েছে? তা হবে তাদের পুরস্কার ও তাদের শেষ পরিণাম।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

বলুন এটা উত্তম, না চিরকাল বসবাসের জান্নাত, যার সুসংবাদ দেয়া হয়েছে মুত্তাকীদেরকে? সেটা হবে তাদের প্রতিদান ও প্রত্যাবর্তন স্থান।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এদেরকে জিজ্ঞাসা কর, ‘এটাই শ্রেয়, না স্থায়ী জান্নাত, যার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে মুত্তাকীদেরকে?’ এটাই তো তাদের পুরস্কার ও প্রত্যাবর্তনস্থল।


১৬


لَّهُمْ فِيهَا مَا يَشَاءُونَ خَالِدِينَ ۚ كَانَ عَلَىٰ رَبِّكَ وَعْدًا مَّسْئُولًا


লাহুম ফীহা-মা-ইয়াশাঊনা খা-লিদীনা কা-না ‘আলা-রাব্বিকা ওয়া‘দাম মাছঊলা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তারা সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসরত থেকে যা চাবে তাই পাবে। এটা এমন এক দায়িত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি, যা তোমার প্রতিপালক নিজের প্রতি অবধারিত করেছেন।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তারা চিরকাল বসবাসরত অবস্থায় সেখানে যা চাইবে, তাই পাবে। এই প্রার্থিত ওয়াদা পূরণ আপনার পালনকর্তার দায়িত্ব।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

সেখানে তারা যা চাইবে তাদের জন্যে তাই থাকবে এবং তারা স্থায়ী হবে; এই প্রতিশ্রুতি পূরণ তোমার প্রতিপালকেরই দায়িত্ব।


১৭


وَيَوْمَ يَحْشُرُهُمْ وَمَا يَعْبُدُونَ مِن دُونِ اللَّهِ فَيَقُولُ أَأَنتُمْ أَضْلَلْتُمْ عِبَادِي هَـٰؤُلَاءِ أَمْ هُمْ ضَلُّوا السَّبِيلَ


ওয়া ইয়াওমা ইয়াহশুরুহুম ওয়ামা- ইয়া‘বুদূনা মিন দূনিল্লা-হি ফাইয়াকূলুআআনতুম আদলালতুম ‘ইবা-দী হাউলাই আম হুম দাল্লুছছাবীল।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এবং (তাদেরকে সেই দিনের কথা স্মরণ করিয়ে দাও) যে দিন আল্লাহ (হাশরের ময়দানে) একত্র করবেন তাদেরকে এবং তারা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের ইবাদত করত তাদেরকেও। তারপর তিনি তাদের (সেই মাবুদদেরকে) বলবেন, তোমরাই কি আমার ওই বান্দাদেরকে বিপথগামী করেছিলে, না তারা নিজেরাই বিপথগামী হয়েছিল?


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

সেদিন আল্লাহ একত্রিত করবেন তাদেরকে এবং তারা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের এবাদত করত তাদেরকে, সেদিন তিনি উপাস্যদেরকে বলবেন, তোমরাই কি আমার এই বান্দাদেরকে পথভ্রান্ত করেছিলে, না তারা নিজেরাই পথভ্রান্ত হয়েছিল?


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এবং যেদিন তিনি একত্র করবেন এদেরকে এবং এরা আল্লাহ্ র পরিবর্তে যাদের ‘ইবাদত করত তাদেরকে, সেদিন তিনি জিজ্ঞাসা করবেন, ‘তোমরাই কি আমার এই বান্দাদেরকে বিভ্রান্ত করেছিলে, না এরা নিজেরাই পথভ্রষ্ট হয়েছিল ?’


১৮


قَالُوا سُبْحَانَكَ مَا كَانَ يَنبَغِي لَنَا أَن نَّتَّخِذَ مِن دُونِكَ مِنْ أَوْلِيَاءَ وَلَـٰكِن مَّتَّعْتَهُمْ وَآبَاءَهُمْ حَتَّىٰ نَسُوا الذِّكْرَ وَكَانُوا قَوْمًا بُورًا


কা-লূছুবহা-নাকা মা-কা-না ইয়ামবাগী লানাআন নাত্তাখিযা মিন দূ নিকা মিন আওলিয়াআ ওয়ালা-কিম মাত্তা‘তাহুম ওয়া আ-বাআহুম হাত্তা-নাছুযযিকরা- ওয়া কা-নূকাওমাম বূরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তারা বলবে, আপনার সত্তা সকল দোষ-ত্রুটি থেকে পবিত্র! আমরা আপনার পরিবর্তে অন্যান্য অভিভাবক গ্রহণ করতে পারি না। ৭ কিন্তু ব্যাপার হল, আপনি তাদেরকে ও তাদের বাপ-দাদাদেরকে দুনিয়ার ভোগ-সম্ভার দিয়েছিলেন, পরিণামে তারা উপদেশ ভুলে গিয়েছিল। আর (এভাবে) তারা হয়ে গিয়েছিল এক ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতি।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তারা বলবে-আপনি পবিত্র, আমরা আপনার পরিবর্তে অন্যকে মুরুব্বীরূপে গ্রহণ করতে পারতাম না; কিন্তু আপনিই তো তাদেরকে এবং তাদের পিতৃপুরুষদেরকে ভোগসম্ভার দিয়েছিলেন, ফলে তারা আপনার স্মৃতি বিস্মৃত হয়েছিল এবং তারা ছিল ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতি।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরা বলবে, ‘পবিত্র ও মহান তুমি! তোমার পরিবর্তে আমরা অন্যকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করতে পারি না; তুমিই তো এদেরকে এবং এদের পিতৃপুরুষদেরকে ভোগসম্ভার দিয়েছিলে; পরিণামে এরা উপদেশ বিস্মৃত হয়েছিল এবং পরিণত হয়েছিল এক ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতিতে।


তাফসীরঃ

৭. তারা তাদের যে উপাস্যদেরকে প্রভুত্বের মর্যাদা দান করেছিল তারা ছিল বিভিন্ন প্রকার ক.কতক ফেরেশতা, যাদেরকে তারা আল্লাহ তাআলার কন্যা বলে বিশ্বাস করত; খ.কোন কোন নবী ও বুযুর্গ ব্যক্তিবর্গ। অনেকে তাদেরকে প্রভুত্বের আসনে বসিয়েছিল এবং তাদের পূজা-অর্চনায় লিপ্ত থাকত। এ দুই শ্রেণীর পক্ষ হতে তো এ উত্তর বোধগম্য যে, ‘আপনাকে ছেড়ে অন্য কাউকে অভিভাবক বানানোর সাধ্য আমাদের ছিল না,’ অর্থাৎ আমরা কি প্রভু হব, আপনিই তো আমাদেরসহ সকল সৃষ্টির প্রভু। ইবাদত তো কেবল আপনারই করা যায় এবং তাতে অন্য কাউকে শরীক করার কোন অবকাশ নেই। গ.তাদের তৃতীয় প্রকারের উপাস্য হল প্রতিমা, যাদেরকে তারা নিজ হাতে মাটি বা পাথর দ্বারা তৈরি করত। এক্ষেত্রে প্রশ্ন হতে পারে, পাথরের প্রতিমার কি বাকশক্তি আছে যে, তারা এ রকম জবাব দেবে? এর দু’টি ব্যাখ্যা হতে পারে (ক) এখানে কেবল সেই সকল মুশরিকদের কথা বলা হয়েছে, যারা বিশেষ মানুষ বা ফেরেশতাকে প্রভুত্বের আসনে বসিয়ে তাদের প্রতীকরূপে প্রতিমাদের পূজা করত। (খ) এমনও হতে পারে যে, আল্লাহ তাআলা তখন মূর্তিদেরকে কথা বলার শক্তি দান করবেন। ফলে তাদের পক্ষে একথা বলা সম্ভব হবে।

আরো পড়ুন :-

স্মরণ শক্তি বৃদ্ধির দোয়া,মেধা বৃদ্ধির দোয়া,স্মৃতি শক্তি বাড়ানোর দোয়া!নামাজের পর ২১ বাড় পড়ুন

গর্ভের সন্তান কখন নষ্ট করা যাবে?,কতদিনের বাচ্চা নষ্ট করলে গুনাহ হবে না?, বাচ্চা নষ্ট করা জায়েজ আছে?, 

দোয়াটি পড়লে সাথে সাথে রাগ কমে যায়, রাগ কমানোর দোয়া,শিশুদের রাগ কমানোর আমল

(ads1)

(getButton) #text=(আল কোরআন বাংলা অনুবাদ সহ এক সাথে ) #icon=(link) #color=(#b50404)

১৯


فَقَدْ كَذَّبُوكُم بِمَا تَقُولُونَ فَمَا تَسْتَطِيعُونَ صَرْفًا وَلَا نَصْرًا ۚ وَمَن يَظْلِم مِّنكُمْ نُذِقْهُ عَذَابًا كَبِيرًا


ফাকাদ কাযযাবূকুম বিমা-তাকূলূনা ফামা-তাছতী‘ঊনা সারফাওঁ ওয়ালা-নাসরাওঁ ওয়া মাইঁ ইয়াজলিম মিনকুম নুযিকহু ‘আযা-বান কাবীরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

দেখ, (হে কাফেরগণ!) তোমরা যা বলছ, সে ব্যাপারে তো তারা তোমাদেরকে মিথ্যুক সাব্যস্ত করল। সুতরাং (শাস্তি) টলানোর বা সাহায্য লাভের সাধ্য তোমাদের নেই। তোমাদের মধ্যে যে-কেউ জুলুমের কাজে জড়িত, তাকে আমি কঠিন শাস্তির স্বাদ গ্রহণ করাব।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আল্লাহ মুশরিকদেরকে বলবেন, তোমাদের কথা তো তারা মিথ্যা সাব্যস্ত করল, এখন তোমরা শাস্তি প্রতিরোধ করতে পারবে না এবং সাহায্যও করতে পারবে না। তোমাদের মধ্যে যে গোনাহগার আমি তাকে গুরুতর শাস্তি আস্বাদন করাব।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আল্লাহ্ মুশরিকদেরকে বলবেন, ‘তোমরা যা বলতে এরা তা মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে। সুতরাং তোমরা শাস্তি প্রতিরোধ করতে পারবে না এবং সাহায্যও পাবে না। তোমাদের মধ্যে যে সীমালংঘন করবে আমি তাকে মহাশাস্তি আস্বাদ করাব।’


২০


وَمَا أَرْسَلْنَا قَبْلَكَ مِنَ الْمُرْسَلِينَ إِلَّا إِنَّهُمْ لَيَأْكُلُونَ الطَّعَامَ وَيَمْشُونَ فِي الْأَسْوَاقِ ۗ وَجَعَلْنَا بَعْضَكُمْ لِبَعْضٍ فِتْنَةً أَتَصْبِرُونَ ۗ وَكَانَ رَبُّكَ بَصِيرًا


ওয়ামাআরছালনা-কাবলাকা মিনাল মুরছালীনা ইল্লাইন্নাহুম লাইয়া’কুলূনাততা‘আ-মা ওয়া ইয়ামশূনা ফিল আছওয়া-কি ওয়াজা‘আলনা-বা‘দাকুম লিবা‘দিন ফিতনাতান আতাসবিরূনা ওয়া কা-না রাব্বুকা বাসীরা।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

(হে নবী!) তোমার পূর্বে যত রাসূলই পাঠিয়েছি, তারা সকলে খাবার খেত ও বাজারে চলাফেরা করত। আমি তোমাদের একজনকে অন্যজনের জন্য পরীক্ষাস্বরূপ করেছি। বল, তোমরা কি সবর করবে? ৮ তোমার প্রতিপালক সবকিছুই দেখছেন।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আপনার পূর্বে যত রসূল প্রেরণ করেছি, তারা সবাই খাদ্য গ্রহণ করত এবং হাটে-বাজারে চলাফেরা করত। আমি তোমাদের এককে অপরের জন্যে পরীক্ষাস্বরূপ করেছি। দেখি, তোমরা সবর কর কিনা। আপনার পালনকর্তা সব কিছু দেখেন।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তোমার পূর্বে আমি যে সকল রাসূল প্রেরণ করেছি তারা সকলেই তো আহার করত ও হাটে বাজারে চলাফেরা করত। হে মানুষ ! আমি তোমাদের মধ্যে এক-কে অপরের জন্যে পরীক্ষাস্বরূপ করেছি। তোমরা ধৈর্য ধারণ করবে কি ? তোমার প্রতিপালক সমস্ত কিছু দেখেন।


তাফসীরঃ

৮. কাফেরদের বিভিন্ন আপত্তির উত্তর দেওয়ার পর এবার মুমিনদেরকে লক্ষ করে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করছেন, তোমাদের বিরুদ্ধবাদীরা নানা রকমের আপত্তি তুলে তোমাদেরকে যে উত্যক্ত করছে, এর কারণ আল্লাহ তাআলা তোমাদের মাধ্যমে তাদেরকে এবং তাদের মাধ্যমে তোমাদেরকে পরীক্ষা করছেন। তাদেরকে পরীক্ষা করছেন তো এভাবে যে, আল্লাহ তাআলা দেখছেন, সত্য স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পর তারা তা স্বীকার করে নিচ্ছে কি না। আর তোমাদেরকে পরীক্ষা করে দেখছেন, তাদের দেওয়া কষ্ট-ক্লেশে তোমরা সবর করছ কি না। তোমাদের সবর দ্বারাই প্রমাণ হবে সত্য গ্রহণে তোমরা কতটুকু আন্তরিক।


২১


۞ وَقَالَ الَّذِينَ لَا يَرْجُونَ لِقَاءَنَا لَوْلَا أُنزِلَ عَلَيْنَا الْمَلَائِكَةُ أَوْ نَرَىٰ رَبَّنَا ۗ لَقَدِ اسْتَكْبَرُوا فِي أَنفُسِهِمْ وَعَتَوْا عُتُوًّا كَبِيرًا


ওয়া কালাল্লাযীনা লা-ইয়ারজূনা লিকাআনা-লাওলাউনঝিলা ‘আলাইনাল মালাইকাতু আও নারা-রাব্বানা- লাকাদিছতাকবারূফীআনফুছিহিম ওয়া‘আতাওঁ‘উতুওয়ান কাবীরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

যারা আমার সঙ্গে সাক্ষাতের আশাই করে না, তারা বলে, আমাদের প্রতি ফিরিশতা অবতীর্ণ করা হয় না কেন? কিংবা আমরা আমাদের প্রতিপালককে দেখতে পাই না কেন? বস্তুত তারা আপন মনে নিজেদেরকে অনেক বড় গণ্য করে ৯ এবং তারা গুরুতর অবাধ্যতায় লিপ্ত রয়েছে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যারা আমার সাক্ষাৎ আশা করে না, তারা বলে, আমাদের কাছে ফেরেশতা অবতীর্ণ করা হল না কেন? অথবা আমরা আমাদের পালনকর্তাকে দেখি না কেন? তারা নিজেদের অন্তরে অহংকার পোষণ করে এবং গুরুতর অবাধ্যতায় মেতে উঠেছে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যারা আমার সাক্ষাৎ কামনা করে না তারা বলে, ‘আমাদের নিকট ফিরিশতা অবতীর্ণ করা হয় না কেন ? বা আমরা আমাদের প্রতিপালককে প্রত্যক্ষ করি না কেন ? এরা তো এদের অন্তরে অহংকার পোষণ করে এবং এরা সীমালংঘন করেছে গুরুতররূপে।


তাফসীরঃ

৯. অর্থাৎ, তারা অহমিকার বশবর্তী হয়েই এসব কথা বলছে। তারা নিজেদেরকে এতটাই বড় মনে করে যে, নিজেদের হেদায়াতের জন্য কোন নবী-রাসূলের কথা মেনে চলাকে আত্মসম্মানের পরিপন্থী মনে করে। তাদের দাবি হল, আল্লাহ তাআলা নিজে এসে তাদেরকে তাঁর দীন বুঝিয়ে দিন কিংবা এ কাজের জন্য অন্ততপক্ষে কোন ফিরিশতাকেই পাঠিয়ে দিন।


২২


يَوْمَ يَرَوْنَ الْمَلَائِكَةَ لَا بُشْرَىٰ يَوْمَئِذٍ لِّلْمُجْرِمِينَ وَيَقُولُونَ حِجْرًا مَّحْجُورًا


ইয়াওমা ইয়ারাওনাল মালাইকাতা লা-বুশরা-ইয়াওমাইযিল লিলমুজরিমীনা ওয়া ইয়াকূ লূনা হিজরাম মাহজূরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

যে দিন তারা ফিরিশতাদের দেখতে পাবে, সে দিন অপরাধীদের আনন্দ করার কোন সুযোগ থাকবে না। বরং তারা বলতে থাকবে, (হে আল্লাহ!) আমাদেরকে দাও, ‘এক অলঙ্ঘনীয় অন্তরায়’। ১০


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যেদিন তারা ফেরেশতাদেরকে দেখবে, সেদিন অপরাধীদের জন্যে কোন সুসংবাদ থাকবে না এবং তারা বলবে, কোন বাধা যদি তা আটকে রাখত।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যেদিন এরা ফেরেশতাদেরকে প্রত্যক্ষ করবে সেদিন অপরাধীদের জন্যে সুসংবাদ থাকবে না এবং এরা বলবে, ‘রক্ষা কর, রক্ষা কর।’


তাফসীরঃ

১০. অর্থাৎ, ফিরিশতাদের দেখতে পারার ক্ষমতাই তাদের নেই। কাফেরগণ ফিরিশতাদেরকে দেখতে পাবে এমন এক সময়, যখন তাদেরকে দেখাটা তাদের পক্ষে প্রীতিকর হবে না। ফিরিশতাগণ তখন তাদের সামনে আসবে তাদেরকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করার জন্য। তাদেরকে দেখামাত্র তারা এমন আশ্রয়স্থল কামনা করবে, যেখানে প্রবেশ করলে তারা ফিরিশতাদের দেখা থেকে রক্ষা পাবে। কিন্তু তাদের সে আশা পূরণ হওয়ার নয়। [অলঙ্ঘনীয় অন্তরায় অর্থাৎ আমাদের ও ফিরিশতাদের মাঝখানে এমন এক প্রতিবন্ধক সৃষ্টি করে দাও, যাতে তারা তা পার হয়ে আমাদের পর্যন্ত পৌঁছতে না পারে]


২৩


وَقَدِمْنَا إِلَىٰ مَا عَمِلُوا مِنْ عَمَلٍ فَجَعَلْنَاهُ هَبَاءً مَّنثُورًا


ওয়া কাদিমনাইলা-মা-‘আমিলূমিন ‘আমালিন ফাজা‘আলনা-হু হাবাআম মানছূরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তারা (দুনিয়ায়) যা-কিছু আমল করেছে, আমি তার ফায়সালা করতে আসব এবং সেগুলোকে শূন্যে বিক্ষিপ্ত ধুলোবালি (-এর মত মূল্যহীন) করে দেব। ১১


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি তাদের কৃতকর্মের প্রতি মনোনিবেশ করব, অতঃপর সেগুলোকে বিক্ষিপ্ত ধুলিকণারূপে করে দেব।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আমি এদের কৃতকর্মের প্রতি লক্ষ্য করব, এরপর সেগুলিকে বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত করব।


তাফসীরঃ

১১. অর্থাৎ, তারা যে সকল কাজকে পুণ্য মনে করত, আখেরাতে তা ধুলোবালির মত মিথ্যা মনে হবে। আর তাদের যেসব কাজ বাস্তবিকই ভালো ছিল তার ফল তো তাদেরকে দুনিয়াতেই দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আখেরাতে তার বিনিময়ে কিছু পাবে না। কেননা আখেরাতে কোন কাজ গৃহীত হওয়ার জন্য ঈমান শর্ত। তা তো তাদের ছিল না। তাই সেখানে এসব কোন কাজে আসবে না।


২৪


أَصْحَابُ الْجَنَّةِ يَوْمَئِذٍ خَيْرٌ مُّسْتَقَرًّا وَأَحْسَنُ مَقِيلًا


আসহা-বুল জান্নাতি ইয়াওমাইযিন খাইরুম মুছতাকাররাওঁ ওয়া আহছানুমাকীলা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

সে দিন জান্নাতবাসীদের বাসস্থান হবে উৎকৃষ্ট এবং বিশ্রামস্থল হবে মনোরম।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

সেদিন জান্নাতীদের বাসস্থান হবে উত্তম এবং বিশ্রামস্থল হবে মনোরম।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

সেই দিন হবে জান্নাতবাসীদের বাসস্থান উৎকৃষ্ট এবং বিশ্রামস্থল মনোরম।


২৫


وَيَوْمَ تَشَقَّقُ السَّمَاءُ بِالْغَمَامِ وَنُزِّلَ الْمَلَائِكَةُ تَنزِيلًا


ওয়া ইয়াওমা তাশাক্কাকুছছামাউ বিলগামা-মি ওয়ানুঝঝিলাল মালাইকাতুতানঝীলা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

যে দিন আকাশ বিদীর্ণ হয়ে এক মেঘকে পথ করে দেবে ১২ এবং ফিরিশতাদেরকে অবতীর্ণ করা হবে লাগাতার।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

সেদিন আকাশ মেঘমালাসহ বিদীর্ণ হবে এবং সেদিন ফেরেশতাদের নামিয়ে দেয়া হবে,


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আর সেদিন আকাশ মেঘপুঞ্জসহ বিদীর্ণ হবে এবং ফিরিশতাদেরকে নামিয়ে দেয়া হবে-


তাফসীরঃ

১২. কিয়ামতের দিন আকাশ বিদীর্ণ হওয়ার পর উপর থেকে মেঘের মত একটা জিনিস নামতে দেখা যাবে। তাতে আল্লাহ তাআলার বিশেষ তাজাল্লী থাকবে। আমরা তাকে রাজছত্র শব্দে ব্যক্ত করতে পারি। এর সাথে থাকবে অসংখ্য ফিরিশতা। তারা লাগাতার আসমান থেকে হাশরের মাঠে নামতে থাকবে তাফসীরে উসমানী, সংক্ষেপিত -অনুবাদক


২৬


الْمُلْكُ يَوْمَئِذٍ الْحَقُّ لِلرَّحْمَـٰنِ ۚ وَكَانَ يَوْمًا عَلَى الْكَافِرِينَ عَسِيرًا


আলমুলকুইয়াওমাইযিনিল হাক্কুলিররাহমা-নি ওয়া কা-না ইয়াওমান ‘আলাল কাফিরীনা ‘আছীরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

সে দিন সত্যিকারের রাজত্ব হবে দয়াময় (আল্লাহ)-এর আর সে দিনটি কাফেরদের জন্য হবে অতি কঠিন।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

সেদিন সত্যিকার রাজত্ব হবে দয়াময় আল্লাহর এবং কাফেরদের পক্ষে দিনটি হবে কঠিন।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

সেদিন কর্তৃত্ব হবে বস্তুত দয়াময়ের এবং কাফিরদের জন্যে সেদিন হবে কঠিন।


২৭


وَيَوْمَ يَعَضُّ الظَّالِمُ عَلَىٰ يَدَيْهِ يَقُولُ يَا لَيْتَنِي اتَّخَذْتُ مَعَ الرَّسُولِ سَبِيلًا


ওয়া ইয়াওমা ইয়া‘আদ্দুজ্জা-লিমু‘আলা-ইয়াদাইহি ইয়াকূ লুইয়া-লাইতানিততাখাযতু মা‘আর রাছূলি ছাবীলা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এবং যে দিন জালেম ব্যক্তি (মনস্তাপে) নিজের হাত কামড়াবে এবং বলবে, হায়! আমি যদি রাসূলের সাথে পথ ধরতাম ১৩!


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

জালেম সেদিন আপন হস্তদ্বয় দংশন করতে করতে বলবে, হায় আফসোস! আমি যদি রসূলের সাথে পথ অবলম্বন করতাম।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

জালিম ব্যক্তি সেদিন নিজ হস্তদ্বয় দংশন করতে করতে বলবে, ‘হায়, আমি যদি রাসূলের সঙ্গে সৎপথ অবলম্বন করতাম!


তাফসীরঃ

১৩. অর্থাৎ যদি রাসূলের অনুসরণ করতাম এবং তাঁর শিক্ষা মোতাবেক সরল সঠিক পথে চলতাম, তবে আজ এই আযাব থেকে আমি মুক্তি পেতাম! -অনুবাদক


২৮


يَا وَيْلَتَىٰ لَيْتَنِي لَمْ أَتَّخِذْ فُلَانًا خَلِيلًا


ইয়া-ওয়াইলাতা-লাইতানী লাম আত্তাখিযফুলা-নান খালীলা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

হায় আমার দুর্ভোগ! আমি যদি অমুক ব্যক্তিকে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম!


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

হায় আমার দূর্ভাগ্য, আমি যদি অমুককে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘হায়, দুর্ভোগ আমার, আমি যদি অমুককে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম!


২৯


لَّقَدْ أَضَلَّنِي عَنِ الذِّكْرِ بَعْدَ إِذْ جَاءَنِي ۗ وَكَانَ الشَّيْطَانُ لِلْإِنسَانِ خَذُولًا


লাকাদ আদাল্লানী ‘আনিযযিকরি বা‘দা ইযজাআনী ওয়া কা-নাশশাইতা-নু লিলইনছা-নি খাযূলা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আমার কাছে তো উপদেশ এসে গিয়েছিল, কিন্তু সে (ওই বন্ধু) আমাকে তা থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছিল। ১৪ আর শয়তান তো (এমনই চরিত্রের যে, সময়কালে সে) মানুষকে অসহায় অবস্থায় ফেলে চলে যায়। ১৫


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমার কাছে উপদেশ আসার পর সে আমাকে তা থেকে বিভ্রান্ত করেছিল। শয়তান মানুষকে বিপদকালে ধোঁকা দেয়।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘আমাকে তো সে বিভ্রান্ত করেছিল আমার নিকট উপদেশ পৌঁছিবার পর।’ শয়তান তো মানুষের জন্যে মহাপ্রতারক।


তাফসীরঃ

১৪. অসৎ সঙ্গের পরিণতি যে কি ভয়ঙ্কর এ আয়াত সেদিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। দুনিয়ায় অনেকেরই অবস্থা এমন, যাদের কাছে দীনের দাওয়াত পৌঁছে এবং তার মন-মস্তিষ্ক তা কবুলও করে, কিন্তু সঙ্গী-সাথী ভালো ও দীনদার না হওয়ার কারণে সে বাস্তব জীবনে তা প্রতিফলিত করতে পারে না। ফলে তার জীবন ও মরণ হয় তাদেরই একজন হিসেবে। চৈতন্য হবে কিয়ামতে। কিন্তু সেই চৈতন্য তো কোন কাজে আসবে না। তখন আক্ষেপে আঙ্গুল কামড়াবে আর বলবে আহা! আমি যদি ওদেরকে বন্ধু না বানাতাম! ওদের সাথে চলাফেরা করেই তো আমি বিপথগামী হয়েছি। আজকের এ করুণ পরিণতি তো সে কারণেই! বস্তুত সঙ্গদোষকে অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। তাই কুরআন মাজীদের বিভিন্ন স্থানে সৎসঙ্গ গ্রহণের জন্য উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন হাদীসেও সৎ ও অসৎ সঙ্গের লাভ-ক্ষতির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। -অনুবাদক


১৫. অর্থাৎ শয়তান, তা মানব শয়তানই হোক বা জিন শয়তান, মানুষকে ধোঁকা ও প্ররোচনা দিয়ে বিপথগামী করে ঠিকই, কিন্তু মসিবতের সময় তাকে আর ধারে কাছে পাওয়া যায় না। বরং স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, তোমার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। দুনিয়াতেও সে এ রকমই করে আর আখিরাতেও তাই করবে। তখন তো তার নিজেরও দুর্গতির সীমা থাকবে না। -অনুবাদক


৩০


وَقَالَ الرَّسُولُ يَا رَبِّ إِنَّ قَوْمِي اتَّخَذُوا هَـٰذَا الْقُرْآنَ مَهْجُورًا


ওয়া কা-লাররাছূলুইয়া-রাব্বি ইন্না কাওমিততাখাযূহা-যাল কুরআ-না মাহজূরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলবে, হে আমার প্রতিপালক! আমার সম্প্রদায় এ কুরআনকে বিলকুল পরিত্যাগ করেছিল। ১৬


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

রসূল বললেনঃ হে আমার পালনকর্তা, আমার সম্প্রদায় এই কোরআনকে প্রলাপ সাব্যস্ত করেছে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

রাসূল বলল, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমার সম্প্রদায় তো এই কুরআনকে পরিত্যাজ্য মনে করে।’


তাফসীরঃ

১৬. আলোচনার ধারাবাহিকতার প্রতি লক্ষ করলে যদিও বোঝা যায়, এখানে ‘সম্প্রদায়’ বলে কাফেরদের প্রতিই ইঙ্গিত করা হয়েছে, কিন্তু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যে বক্তব্য আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে, মুসলিমদের জন্যও তা ভয়ের কারণ। কেননা মুসলিম হওয়া সত্ত্বেও যদি কুরআন মাজীদকে অবহেলা করা হয় এবং জীবনের পথ চলায় তার হেদায়াত ও নির্দেশনাকে আমলে নেওয়া না হয়, তবে এ কঠিন বাক্যটির আওতায় তাদেরও পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে এমনও হতে পারে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুপারিশ না করে উল্টো তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়েই দাঁড়িয়ে যাবেন। (আল্লাহ তাআলা তা থেকে রক্ষা করুন)।

আরো পড়ুন :-

স্মরণ শক্তি বৃদ্ধির দোয়া,মেধা বৃদ্ধির দোয়া,স্মৃতি শক্তি বাড়ানোর দোয়া!নামাজের পর ২১ বাড় পড়ুন

গর্ভের সন্তান কখন নষ্ট করা যাবে?,কতদিনের বাচ্চা নষ্ট করলে গুনাহ হবে না?, বাচ্চা নষ্ট করা জায়েজ আছে?, 

দোয়াটি পড়লে সাথে সাথে রাগ কমে যায়, রাগ কমানোর দোয়া,শিশুদের রাগ কমানোর আমল

(ads2)

(getButton) #text=(আল কোরআন বাংলা অনুবাদ সহ এক সাথে ) #icon=(link) #color=(#b50404)

৩১


وَكَذَٰلِكَ جَعَلْنَا لِكُلِّ نَبِيٍّ عَدُوًّا مِّنَ الْمُجْرِمِينَ ۗ وَكَفَىٰ بِرَبِّكَ هَادِيًا وَنَصِيرًا


ওয়া কাযা-লিকা জা‘আলনা-লিকুল্লি নাবিইয়িন ‘আদুওওয়াম মিনাল মুজরিমীনা ওয়া কাফা-বিরাব্বিকা হা-দিয়াওঁ ওয়া নাসীরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এভাবেই আমি প্রত্যেক নবীর শত্রু বানিয়েছিলাম অপরাধীদেরকে। ১৭ তোমার প্রতিপালকই হেদায়াতকারী ও সাহায্যকারী হিসেবে যথেষ্ট।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এমনিভাবে প্রত্যেক নবীর জন্যে আমি অপরাধীদের মধ্য থেকে শত্রু করেছি। আপনার জন্যে আপনার পালনকর্তা পথপ্রদর্শক ও সাহায্যকারীরূপে যথেষ্ট।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আল্লাহ্ বলেন, এইভাবেই প্রত্যেক নবীর শত্রু করেছিলাম আমি অপরাধীদেরকে। তোমার জন্যে তোমার প্রতিপালকই পথপ্রদর্শক ও সাহায্যকারীরূপে যথেষ্ট।’


তাফসীরঃ

১৭. মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সান্তনা দেওয়া হচ্ছে যে, আপনার সঙ্গে মক্কার কাফেরগণ যে শত্রুতা করছে, এটা নতুন কোন বিষয় নয়। যত নবী-রাসূল আমি পাঠিয়েছি, প্রত্যেকের সাথেই এ রকম আচরণ করা হয়েছে। অতঃপর আল্লাহ তাআলা যাদের ভাগ্যে হেদায়েত রেখেছেন, তাদেরকে হেদায়েত গ্রহণের তাওফীক দেন এবং নবীদের সাহায্য করেন।


৩২


وَقَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا لَوْلَا نُزِّلَ عَلَيْهِ الْقُرْآنُ جُمْلَةً وَاحِدَةً ۚ كَذَٰلِكَ لِنُثَبِّتَ بِهِ فُؤَادَكَ ۖ وَرَتَّلْنَاهُ تَرْتِيلًا


ওয়া কা-লাল্লাযীনা কাফারূলাওলা-নুঝঝিলা ‘আলাইহিল কুরআ-নুজুম লাতাওঁ ওয়াহিদাতান কাযা-লিকা লিনুছাব্বিতা বিহী ফুআ-দাকা ওয়া রাত্তালনা-হু তারতীলা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

কাফেরগণ বলে, তার প্রতি সম্পূর্ণ কুরআন একবারেই নাযিল করা হল না কেন? (হে নবী!) আমি এরূপ করেছি এর মাধ্যমে তোমার অন্তর মজবুত রাখার জন্য। ১৮ আর আমি তো এটা পাঠ করিয়েছি থেমে থেমে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

সত্য প্রত্যাখানকারীরা বলে, তাঁর প্রতি সমগ্র কোরআন একদফায় অবতীর্ণ হল না কেন? আমি এমনিভাবে অবতীর্ণ করেছি এবং ক্রমে ক্রমে আবৃত্তি করেছি আপনার অন্তকরণকে মজবুত করার জন্যে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

কাফিররা বলে, ‘সমগ্র কুরআন তার নিকট একবার অবতীর্ণ হল না কেন ? এইভাবেই আমি অবতীর্ণ করেছি তোমার হৃদয়কে তা দিয়ে মযবুত করার জন্যে এবং তা ক্রমে ক্রমে স্পষ্টভাবে আবৃত্তি করেছি।


তাফসীরঃ

১৮. অর্থাৎ, সম্পূর্ণ কুরআন মাজীদকে একসঙ্গে নাযিল না করে অল্প-অল্প নাযিল করার ফায়দা বহুবিধ। একটা উল্লেখযোগ্য ফায়দা হল, বিরুদ্ধবাদীদের পক্ষ হতে আপনাকে যে নিত্য-নতুন কষ্ট দেওয়া হয়, তার পরিপ্রেক্ষিতে নতুন-নতুন আয়াত নাযিল করে আপনাকে সান্তনা দিয়ে থাকি।


৩৩


وَلَا يَأْتُونَكَ بِمَثَلٍ إِلَّا جِئْنَاكَ بِالْحَقِّ وَأَحْسَنَ تَفْسِيرًا


ওয়ালা ইয়া’তূনাকা বিমাছালিন ইল্লা-জি’না-কা বিল হাক্কিওয়া আহছানা তাফছীরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

যখনই তারা তোমার কাছে কোন সমস্যা নিয়ে হাজির হয়, আমি তোমাকে দান করি (তার) যথাযথ সমাধান ও সুন্দর ব্যাখ্যা। ১৯


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তারা আপনার কাছে কোন সমস্যা উপস্থাপিত করলেই আমি আপনাকে তার সঠিক জওয়াব ও সুন্দর ব্যাখ্যা দান করি।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরা তোমার নিকট এমন কোন সমস্যা উপস্থিত করে না, যার সঠিক সমাধান ও সুন্দর ব্যাখ্যা আমি তোমাকে দান করি না।


তাফসীরঃ

১৯. এটা কুরআন মাজীদকে অল্প-অল্প করে নাযিল করার দ্বিতীয় উপকারিতা। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওয়াত ও ইসলাম সম্পর্কে কাফেরগণ নিত্য-নতুন আপত্তি উত্থাপন করত। তো তারা যখন যে আপত্তি তুলত আল্লাহ তাআলা সে সম্পর্কে আয়াত নাযিল করে তার সুস্পষ্ট সমাধান জানিয়ে দিতেন। ফলে একদিকে তাদের আপত্তির অসারতা প্রমাণ হয়ে যেত, অন্য দিকে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওয়াতের সত্যতা হয়ে উঠত পরিস্ফুট।


৩৪


الَّذِينَ يُحْشَرُونَ عَلَىٰ وُجُوهِهِمْ إِلَىٰ جَهَنَّمَ أُولَـٰئِكَ شَرٌّ مَّكَانًا وَأَضَلُّ سَبِيلًا


আল্লাযীনা ইউহশারূনা ‘আলা-উজূহিহিম ইলা-জাহান্নামা উলাইকা শাররুম মাকানাওঁ ওয়া আদাল্লুছাবীলা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

যাদেরকে একত্র করে মুখে ভর দিয়ে চলা অবস্থায় জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে, তাদেরই স্থান অতি নিকৃষ্ট এবং পথ সর্বাপেক্ষা ভ্রান্ত।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যাদেরকে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা অবস্থায় জাহান্নামের দিকে একত্রিত করা হবে, তাদেরই স্থান হবে নিকৃষ্ট এবং তারাই পথভ্রষ্ট।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যাদেরকে মুখে ভর দিয়ে চলা অবস্থায় জাহান্নামের দিকে একত্র করা হবে, এরা স্থানের দিক দিয়ে অতি নিকৃষ্ট এবং অধিক পথভ্রষ্ট।


৩৫


وَلَقَدْ آتَيْنَا مُوسَى الْكِتَابَ وَجَعَلْنَا مَعَهُ أَخَاهُ هَارُونَ وَزِيرًا


ওয়ালাকাদ আ-তাইনা- মূছাল কিতা-বা ওয়া জা‘আলনা- মা‘আহূআখা-হুহা-রূনা ওয়াঝীরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

নিশ্চয়ই আমি মূসাকে কিতাব দিয়েছিলাম এবং তার সাথে তার ভাই হারূনকে সহযোগী বানিয়েছিলাম।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি তো মূসাকে কিতাব দিয়েছি এবং তাঁর সাথে তাঁর ভ্রাতা হারুনকে সাহায্যকারী করেছি।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আমি তো মূসাকে কিতাব দিয়েছিলাম এবং তার সঙ্গে তার ভাই হারূনকে সাহায্যকারী করেছিলাম,


৩৬


فَقُلْنَا اذْهَبَا إِلَى الْقَوْمِ الَّذِينَ كَذَّبُوا بِآيَاتِنَا فَدَمَّرْنَاهُمْ تَدْمِيرًا


ফাকুলনাযহাবাইলাল কাওমিল্লাযীনা কাযযাবূবিআ-য়া-তিনা- ফাদাম্মারনা-হুম তাদমীরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আমি বলেছিলাম, যে সম্প্রদায় আমার নিদর্শনাবলী প্রত্যাখ্যান করেছে, তোমরা তাদের কাছে যাও। পরিশেষে আমি তাদেরকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে ফেললাম।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

অতঃপর আমি বলেছি, তোমরা সেই সম্প্রদায়ের কাছে যাও, যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা অভিহিত করেছে। অতঃপর আমি তাদেরকে সমূলে ধ্বংস করে দিয়েছি।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এবং বলেছিলাম, ‘তোমরা সেই সম্প্রদায়ের নিকট যাও যারা আমার নিদর্শনাবলীকে অস্বীকার করেছে।’ এরপর আমি এদেরকে সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত করেছিলাম।


৩৭


وَقَوْمَ نُوحٍ لَّمَّا كَذَّبُوا الرُّسُلَ أَغْرَقْنَاهُمْ وَجَعَلْنَاهُمْ لِلنَّاسِ آيَةً ۖ وَأَعْتَدْنَا لِلظَّالِمِينَ عَذَابًا أَلِيمًا


ওয়া কাওমা নূহিল লাম্মা-কাযযাবুর রুছুলা আগরাকনা-হুম ওয়া জা‘আলনা-হুম লিন্না-ছি আ-য়াতাওঁ ওয়া আ‘তাদনা-লিজ্জা-লিমীনা ‘আযা-বান আলীমা-


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এবং নূহের সম্প্রদায় যখন রাসূলগণকে অস্বীকার করল, তখন আমি তাদেরকে নিমজ্জিত করলাম এবং তাদেরকে মানুষের জন্য দৃষ্টান্ত বানিয়ে দিলাম। আমি সে জালেমদের জন্য যন্ত্রণাময় শাস্তি প্রস্তুত রেখেছি।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

নূহের সম্প্রদায় যখন রসূলগণের প্রতি মিথ্যারোপ করল, তখন আমি তাদেরকে নিমজ্জত করলাম এবং তাদেরকে মানবমন্ডলীর জন্যে নিদর্শন করে দিলাম। জালেমদের জন্যে আমি যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এবং নূহের সম্প্রদায়কেও, যখন তারা রাসূলগণের প্রতি মিথ্যা আরোপ করল তখন আমি এদেরকে নিমজ্জিত করলাম এবং এদেরকে মানবজাতির জন্যে নিদর্শনস্বরূপ করে রাখলাম। জালিমদের জন্যে আমি মর্মন্তুদ শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি।


৩৮


وَعَادًا وَثَمُودَ وَأَصْحَابَ الرَّسِّ وَقُرُونًا بَيْنَ ذَٰلِكَ كَثِيرًا


ওয়া-‘আদাওঁ ওয়া ছামূদা ওয়া আসহা-বার রাছছি ওয়া কুরূনাম বাইনা যা-লিকা কাছীরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এভাবেই আমি আদ, ছামুদ ও আসহাবুর রাসস্ ২০ এবং তাদের মাঝখানে বহু সম্প্রদায়কে ধ্বংস করেছি।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি ধ্বংস করেছি আদ, সামুদ, কপবাসী এবং তাদের মধ্যবর্তী অনেক সম্প্রদায়কে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আমি ধ্বংস করেছিলাম ‘আদ, সামূদ ও ‘রাস্’-এর অধিবাসীকে এবং এদের অন্তর্বর্তীকালের বহু সম্প্রদায়কেও।


তাফসীরঃ

২০. সূরা আরাফে (৭ : ৬৫-৮৪) আদ ও ছামুদ জাতির বৃত্তান্ত চলে গেছে। ‘আসহাবুর রাস্স’-এর শাব্দিক অর্থ ‘কুয়াওয়ালাগণ’। অনুমান করা যায়, তারা কোন কুয়ার আশেপাশে বাস করত। কুরআন মাজীদে তাদের সম্পর্কে কেবল এতটুকুই বলা হয়েছে যে, নাফরমানীর কারণে তাদেরকে ধ্বংস করে ফেলা হয়েছিল। এর বেশি তাদের বিস্তারিত বৃত্তান্ত না কুরআন মাজীদে বর্ণিত হয়েছে, না সহীহ হাদীসে। ইতিহাসের বর্ণনায় তাদের বিভিন্ন ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায়, কিন্তু তা এতটা নির্ভরযোগ্য নয়, যার উপর ভিত্তি করে কোন সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায়। তবে এতটুকু বিষয় স্পষ্ট যে, তাদের কাছে কোন একজন নবীকে পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু তারা সে নবীর কথায় কর্ণপাত করেনি; বরং উপর্যুপরি তাঁর অবাধ্যতা ও তাঁর সঙ্গে শত্রুতা করেছে। পরিণামে তাদেরকে ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। কোন কোন বর্ণনায় আছে, তারা তাদের নবীকে একটি কুয়ার ভেতর ঝুলিয়ে ফাঁসি দিয়েছিল আর সে কারণেই তাদের নাম পড়ে গেছে আসহাবুর রাস্স বা কুয়াওয়ালা।


৩৯


وَكُلًّا ضَرَبْنَا لَهُ الْأَمْثَالَ ۖ وَكُلًّا تَبَّرْنَا تَتْبِيرًا


ওয়া কুল্লান দারাবনা-লাহুল আমছা-লা ওয়া কুল্লান তাব্বারনা-তাতবীরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তাদের প্রত্যেককে বোঝানোর জন্য আমি দৃষ্টান্ত দিয়েছিলাম। আর (তারা যখন মানেনি তখন) প্রত্যেককেই আমি পিষ্ট করে ফেলি।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি প্রত্যেকের জন্যেই দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছি এবং প্রত্যেককেই সম্পুর্ণরূপে ধ্বংস করেছি।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আমি এদের প্রত্যেকের জন্যে দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছিলাম, আর এদের সকলকেই আমি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেছিলাম।


৪০


وَلَقَدْ أَتَوْا عَلَى الْقَرْيَةِ الَّتِي أُمْطِرَتْ مَطَرَ السَّوْءِ ۚ أَفَلَمْ يَكُونُوا يَرَوْنَهَا ۚ بَلْ كَانُوا لَا يَرْجُونَ نُشُورًا


ওয়া লাকাদ আতাও ‘আলাল কারয়াতিল্লাতীউমতিরাত মাতারাছছাওই আফালাম ইয়াকূনূইয়ারাওনাহা- বাল কা-নূলা-ইয়ারজূনা নুশূরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তারা (অর্থাৎ মক্কার কাফেরগণ) সেই জনপদের উপর দিয়ে যাতায়াত করেছে, যার উপর বর্ষণ করা হয়েছিল মন্দ (পাথরের) বৃষ্টি। ২১ তারা কি সে জনপদটিকে দেখতে পেত না? (তা সত্ত্বেও তাদের শিক্ষালাভ হয়নি); বরং পুনরুত্থিত হওয়ার আশঙ্কাই তারা করত না।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তারা তো সেই জনপদের উপর দিয়েই যাতায়াত করে, যার ওপর বর্ষিত হয়েছে মন্দ বৃষ্টি। তবে কি তারা তা প্রত্যক্ষ করে না? বরং তারা পুনরুজ্জীবনের আশঙ্কা করে না।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরা তো সেই জনপদ দিয়েই যাতায়াত করে যার ওপর বর্ষিত হয়েছিল অকল্যাণের বৃষ্টি, তবে কি এরা এটা প্রত্যক্ষ করে না ? বস্তুত এরা পুনরুত্থানের আশংকা করে না।


তাফসীরঃ

২১. ইশারা হযরত লূত আলাইহিস সালামের সম্প্রদায়ের প্রতি। সূরা হুদে (১১ : ৭৭-৮৩) তাদের ঘটনা চলে গেছে।


৪১


وَإِذَا رَأَوْكَ إِن يَتَّخِذُونَكَ إِلَّا هُزُوًا أَهَـٰذَا الَّذِي بَعَثَ اللَّهُ رَسُولًا


ওয়া ইযা-রাআওকা ইয়ঁইয়াত্তাখিযূনাকা ইল্লা-হুঝুওয়ান আহা-যাল্লাযী বা‘আছাল্লাহু রাছূলা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

(হে রাসূল!) তারা যখন তোমাকে দেখে তখন তারা কেবল তোমাকে ঠাট্টা-বিদ্রূপেরই পাত্র বানায়। তারা বলে, এই বুঝি সেই, যাকে আল্লাহ নবী বানিয়ে পাঠিয়েছেন?


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তারা যখন আপনাকে দেখে, তখন আপনাকে কেবল বিদ্রুপের পাত্ররূপে গ্রহণ করে, বলে, এ-ই কি সে যাকে আল্লাহ ‘রসূল’ করে প্রেরণ করেছেন?


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরা যখন তোমাকে দেখে তখন এরা তোমাকে কেবল ঠাট্টা-বিদ্রুপের পাত্ররূপে গণ্য করে এবং বলে, ‘এই-ই কি সে, যাকে আল্লাহ্ রাসূল করে পাঠিয়েছেন ?


৪২


إِن كَادَ لَيُضِلُّنَا عَنْ آلِهَتِنَا لَوْلَا أَن صَبَرْنَا عَلَيْهَا ۚ وَسَوْفَ يَعْلَمُونَ حِينَ يَرَوْنَ الْعَذَابَ مَنْ أَضَلُّ سَبِيلًا


ইন কা-দা লাইউদিল্লুনা-‘আন আ-লিহাতিনা- লাওলাআন সাবারনা-‘আলাইহা- ওয়া ছাওফা ইয়া‘লামূনা হীনা ইয়ারাওনাল ‘আযা-বা মান আদাল্লুছাবীলা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আমরা নিজ দেবতাদের প্রতি (ভক্তি-বিশ্বাসে) অবিচলিত না থাকলে সে তো আমাদেরকে প্রায় বিভ্রান্ত করে ফেলছিলই। (যারা এসব কথা বলে,) তারা যখন শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে, তখন তারা জানতে পারবে কে সঠিক পথ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্যুত ছিল।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

সে তো আমাদেরকে আমাদের উপাস্যগণের কাছ থেকে সরিয়েই দিত, যদি আমরা তাদেরকে আঁকড়ে ধরে না থাকতাম। তারা যখন শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে, তখন জানতে পারবে কে অধিক পথভ্রষ্ট।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘সে তো আমাদেরকে আমাদের দেবতাগণ হতে দূরে সরাইয়াই দিত, যদি না আমরা তাদের আনুগত্যে দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত থাকতাম। যখন এরা শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে তখন এরা জানবে কে অধিক পথভ্রষ্ট।


৪৩


أَرَأَيْتَ مَنِ اتَّخَذَ إِلَـٰهَهُ هَوَاهُ أَفَأَنتَ تَكُونُ عَلَيْهِ وَكِيلًا


আরাআইতা মানিততাখাযা ইলা-হাহূহাওয়া-হু আফাআনতা তাকূনু‘আলাইহি ওয়াকীলা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আচ্ছা বল তো যে ব্যক্তি নিজের কুপ্রবৃত্তিকে আপন মাবুদ বানিয়ে নিয়েছে, (হে নবী!) তুমি কি তার দায়-দায়িত্ব নিতে পারবে। ২২


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আপনি কি তাকে দেখেন না, যে তারা প্রবৃত্তিকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করে? তবুও কি আপনি তার যিম্মাদার হবেন?


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তুমি কি দেখ না তাকে, যে তার কামনা-বাসনাকে ইলাহ রূপে গ্রহণ করে ? তবুও কি তুমি তার কর্মবিধায়ক হবে ?


তাফসীরঃ

২২. নিজ উম্মতের প্রতি মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মায়া-মমতা ছিল প্রচণ্ড। তার সতত কামনা ও চেষ্টা ছিল যারা কুফর ও শিরকের উপর জিদ ধরে বসে আছে, যেকোন প্রকারে তারাও ঈমান আনুক। তাদের কেউ ঈমান আনলে তিনি বড় খুশী হতেন। আর কেউ যদি ঈমান না আনত তবে তাঁর মনোবেদনার সীমা থাকত না। তাই কুরআন মাজীদ তাঁকে মাঝে মধ্যেই সান্তনা দিয়েছে যে, আপনার দায়িত্ব তো সত্য কথা পৌঁছানো পর্যন্তই সীমিত। যারা নিজেদের মনের ইচ্ছাকে মাবুদ বানিয়ে নিয়েছে, যে কারণে আপনার কথা মানছে না, তাদের দায়-দায়িত্ব আপনার উপর অর্পিত হয়নি।


৪৪


أَمْ تَحْسَبُ أَنَّ أَكْثَرَهُمْ يَسْمَعُونَ أَوْ يَعْقِلُونَ ۚ إِنْ هُمْ إِلَّا كَالْأَنْعَامِ ۖ بَلْ هُمْ أَضَلُّ سَبِيلًا


আম তাহছাবুআন্না আকছারাহুম ইয়াছমা‘ঊনা আও ইয়া‘কিলূনা ইন হুম ইল্লা-কাল আন‘আ-মি বাল হুম আদাল্লুছাবীলা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

নাকি তুমি মনে কর তাদের অধিকাংশে শোনে অথবা বোঝে? না, তারা তো চতুষ্পদ জন্তুর মত; বরং তারা তার চেয়েও বেশি বিপথগামী।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আপনি কি মনে করেন যে, তাদের অধিকাংশ শোনে অথবা বোঝে ? তারা তো চতুস্পদ জন্তুর মত; বরং আরও পথভ্রান্ত


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তুমি কি মনে কর যে, এদের অধিকাংশ শুনে ও বুঝে ? এরা তো পশুর মতই ; বরং এরা অধিক পথভ্রষ্ট !


৪৫


أَلَمْ تَرَ إِلَىٰ رَبِّكَ كَيْفَ مَدَّ الظِّلَّ وَلَوْ شَاءَ لَجَعَلَهُ سَاكِنًا ثُمَّ جَعَلْنَا الشَّمْسَ عَلَيْهِ دَلِيلًا


আলাম তারা ইলা-রাব্বিকা কাইফা মাদ্দাজজিল্লা ওয়ালাও শাআ লাজা‘আলাহূছাকিনান ছু ম্মা জা‘আলনাশশামছা ‘আলাইহি দালীলা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তুমি কি নিজ প্রতিপালকের (কুদরতের) প্রতি লক্ষ করনি যে, তিনি কিভাবে ছায়াকে সম্প্রসারিত করেন? তিনি ইচ্ছা করলে তা স্থির রাখতে পারতেন। অতঃপর আমি সূর্যকে তার পথনির্দেশক বানিয়ে দিয়েছি।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তুমি কি তোমার পালনকর্তাকে দেখ না, তিনি কিভাবে ছায়াকে বিলম্বিত করেন? তিনি ইচ্ছা করলে একে স্থির রাখতে পারতেন। এরপর আমি সূর্যকে করেছি এর নির্দেশক।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তুমি কি তোমার প্রতিপালকের প্রতি লক্ষ্য কর না কিভাবে তিনি ছায়া সম্প্রসারিত করেন ? তিনি ইচ্ছা করলে এটাকে তো স্থির রাখতে পারতেন ; অনন্তর আমি সূর্যকে করেছি এটার নির্দেশক।


৪৬


ثُمَّ قَبَضْنَاهُ إِلَيْنَا قَبْضًا يَسِيرًا


ছু ম্মা কাবাদনা-হু ইলাইনা-কাবদাইঁ ইয়াছীরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

অতঃপর আমি অল্প-অল্প করে তাকে নিজের দিকে গুটিয়ে আনি। ২৩


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

অতঃপর আমি একে নিজের দিকে ধীরে ধীরে গুটিয়ে আনি।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরপর আমি এটাকে আমার দিকে ধীরে ধীরে গুটিয়ে আনি।


তাফসীরঃ

২৩. এখান থেকে আল্লাহ তাআলা তাঁর কুদরতের কয়েকটি নিদর্শনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। এর প্রত্যেকটি নিদর্শনই আল্লাহ তাআলার তাওহীদের প্রমাণ বহন করে। চিন্তাশীল মাত্রই চিন্তা করলে বিষয়টি সহজেই বুঝতে পারবে। সর্বপ্রথম দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে রোদ ও ছায়ার পরিবর্তনের দিকে। এ পরিবর্তন মানব জীবনের জন্য অতীব জরুরী। পৃথিবীতে সর্বক্ষণ রোদ থাকলে যেমন মানব জীবন অতিষ্ঠ হয়ে যাবে, তেমনি সর্বদা ছায়া থাকলেও জীবনের সব ক্ষেত্রে দেখা দেবে মহা বিপর্যয়। তাই আল্লাহ তাআলা মানুষের কল্যাণার্থে উভয়টিকে এক চমৎকার নিয়ম-নিগড়ে বেঁধে দিয়েছেন। প্রতিদিন মানুষ ক্রমবৃদ্ধি ও ক্রমহ্রাস প্রক্রিয়ায় উভয়টিই পেয়ে থাকে। ভোরবেলা ছায়া থাকে সম্প্রসারিত। তারপর রোদের ক্রমবৃদ্ধির সাথে সাথে ছায়া ক্রমশ সঙ্কুচিত হতে থাকে। সূর্যকে ছায়ার পথনির্দেশক বানানোর অর্থ এটাই যে, সূর্য যত উপরে ওঠে ছায়া তত কমতে থাকে। এভাবে কমতে কমতে দুপুর সময়ে তা একেবারে নিঃশেষ হয়ে যায়। যে বিষয়টাকে আল্লাহ পাক “নিজের দিকে গুটিয়ে আনি” বলে ব্যক্ত করেছেন। অতঃপর সূর্য যতই পশ্চিম দিগন্তে ঢলে পড়ে ছায়া ততই ধীরে ধীরে পুনরায় বৃদ্ধি পেতে থাকে। এমনকি সূর্যাস্তকালে তা পুরো দিগন্ত ঘিরে ফেলে। এভাবে রোদ ও ছায়ার এ পরিবর্তন মানুষ ধীরে ধীরে লাভ করে। ফলে অকস্মাৎ পরিবর্তনের ক্ষতি থেকে সে রক্ষা পায়।


৪৭


وَهُوَ الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ اللَّيْلَ لِبَاسًا وَالنَّوْمَ سُبَاتًا وَجَعَلَ النَّهَارَ نُشُورًا


ওয়া হুওয়াল্লাযী জা‘আলা লাকুমুল্লাইলা লিবা-ছাওঁ ওয়ান নাওমা ছুবা-তাওঁ ওয়া জা‘আলান্নাহা-রা নুশূরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তিনিই রাতকে তোমাদের জন্য করেছেন পোশাক-স্বরূপ এবং ঘুমকে শান্তিময়। আর দিনকে ফের উঠে দাঁড়ানোর মাধ্যম বানিয়েছেন।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তিনিই তো তোমাদের জন্যে রাত্রিকে করেছেন আবরণ, নিদ্রাকে বিশ্রাম এবং দিনকে করেছেন বাইরে গমনের জন্যে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এবং তিনিই তোমাদের জন্যে রাত্রিকে করেছেন আবরণস্বরূপ, বিশ্রামের জন্যে তোমাদের দিয়েছেন নিদ্রা এবং সমুত্থানের জন্যে দিয়েছেন দিবস।


৪৮


وَهُوَ الَّذِي أَرْسَلَ الرِّيَاحَ بُشْرًا بَيْنَ يَدَيْ رَحْمَتِهِ ۚ وَأَنزَلْنَا مِنَ السَّمَاءِ مَاءً طَهُورًا


ওয়া হুওয়াল্লাযীআরছালাররিয়া-হা বুশরাম বাইনা ইয়াদাই রাহমাতিহী ওয়া আনঝালনা-মিনাছছামাই মাআন তাহূরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তিনিই নিজ রহমত (অর্থাৎ বৃষ্টি)-এর আগে বায়ু পাঠান (বৃষ্টির) সুসংবাদবাহীরূপে এবং আমি আকাশ থেকে বর্ষণ করি পবিত্র পানি


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তিনিই স্বীয় রহমতের প্রাক্কালে বাতাসকে সুসংবাদবাহীরূপে প্রেরণ করেন। এবং আমি আকাশ থেকে পবিত্রতা অর্জনের জন্যে পানি বর্ষণ করি।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তিনিই স্বীয় অনুগ্রহের প্রাক্কালে সুসংবাদবাহীরূপে বায়ু প্রেরণ করেন এবং আমি আকাশ হতে বিশুদ্ধ পানি বর্ষণ করি-


৪৯


لِّنُحْيِيَ بِهِ بَلْدَةً مَّيْتًا وَنُسْقِيَهُ مِمَّا خَلَقْنَا أَنْعَامًا وَأَنَاسِيَّ كَثِيرًا


লিনুহইইয়া বিহী বালদাতাম মাইতাওঁ ওয়া নুছকিয়াহূমিম্মা- খালাকনাআন‘আ-মাওঁ ওয়াআনা-ছিইইয়া কাছীরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তা দ্বারা মৃত ভূমিকে সঞ্জীবিত করা এবং আমার সৃষ্ট বহু জীবজন্তু ও মানুষকে তা পান করানোর জন্য।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তদ্দ্বারা মৃত ভূভাগকে সঞ্জীবিত করার জন্যে এবং আমার সৃষ্ট জীবজন্তু ও অনেক মানুষের তৃষ্ণা নিবারণের জন্যে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যা দিয়ে আমি মৃত ভ‚খণ্ডকে সঞ্জীবিত করি এবং আমার সৃষ্টির মধ্যে বহু জীবজন্তু ও মানুষকে তা পান করাই,


৫০


وَلَقَدْ صَرَّفْنَاهُ بَيْنَهُمْ لِيَذَّكَّرُوا فَأَبَىٰ أَكْثَرُ النَّاسِ إِلَّا كُفُورًا


ওয়া লাকাদ সাররাফনা-হু বাইনাহুম লিয়াযযাক্কারূ ফাআবা আকছারুন্না-ছি ইল্লাকুফূরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আমি মানুষের কল্যাণার্থে তাকে (অর্থাৎ পানিকে) আবর্তমান করে রেখেছি, ২৪ যাতে তারা শিক্ষা গ্রহণ করে, কিন্তু অধিকাংশ লোক অকৃতজ্ঞতা ছাড়া কোন কিছুতে সম্মত নয়।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এবং আমি তা তাদের মধ্যে বিভিন্নভাবে বিতরণ করি, যাতে তারা স্মরণ করে। কিন্তু অধিকাংশ লোক অকৃতজ্ঞতা ছাড়া কিছুই করে না।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এবং আমি তো এই পানি এদের মধ্যে বিতরণ করি যাতে এরা স্মরণ করে। কিন্তু অধিকাংশ লোক কেবল অকৃতজ্ঞতাই প্রকাশ করে।


তাফসীরঃ

২৪. ‘পানিকে আবর্তমান করে রাখা’এর এক অর্থ, আল্লাহ তাআলা মানুষের মধ্যে নিজ হেকমত অনুযায়ী এক বিশেষ অনুপাত ও সঙ্গতির সাথে পানি বণ্টন করে থাকেন। সেই সঙ্গে এ অর্থও হতে পারে যে, পানির মূল উৎস হল সাগর। সেখান থেকে আল্লাহ তাআলা মেঘের মাধ্যমে তা উপরে তুলে আনেন এবং বরফ আকারে পাহাড়-পর্বতে জমা করেন। তারপর সে পানি গলে গলে নদ-নদীতে পরিণত হয়। নদীর প্রবাহিত জলধারা দ্বারা মানুষ তাদের প্রয়োজন সমাধা করে। ফলে স্বচ্ছ ও পবিত্র পানি নষ্ট ও দূষিত হয়ে যায়। তারপর আবার তাদের ব্যবহৃত পানি নদী-নালা হয়ে সাগরে পতিত হয় এবং সাগরের পবিত্র জলরাশির সাথে মিশে তার সমস্ত ক্লেদ খতম হয়ে যায়। ফের সেই পানি মেঘের মাধ্যমে উপরে তুলে আনা হয়।


৫১


وَلَوْ شِئْنَا لَبَعَثْنَا فِي كُلِّ قَرْيَةٍ نَّذِيرًا


ওয়ালাও শি’না-লাবা‘আছনা-ফী কুল্লি কারইয়াতিন নাযীরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

আমি ইচ্ছা করলে প্রতিটি জনপদে এক স্বতন্ত্র সতর্ককারী (নবী) পাঠাতে পারতাম।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি ইচ্ছা করলে প্রত্যেক জনপদে একজন ভয় প্রদর্শনকারী প্রেরণ করতে পারতাম।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আমি ইচ্ছা করলে প্রতিটি জনপদে একজন সতর্ককারী প্রেরণ করতে পারতাম।


৫২


فَلَا تُطِعِ الْكَافِرِينَ وَجَاهِدْهُم بِهِ جِهَادًا كَبِيرًا


ফালা-তুতি‘ইল কা-ফিরীনা ওয়া জা-হিদহুম বিহী জিহা-দান কাবীরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

সুতরাং (হে নবী!) তুমি কাফেরদের কথা শুনো না; বরং এ কুরআনের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে সর্বশক্তিতে সংগ্রাম চালিয়ে যাও। ২৫


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

অতএব আপনি কাফেরদের আনুগত্য করবেন না এবং তাদের সাথে এর সাহায্যে কঠোর সংগ্রাম করুন।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

সুতরাং তুমি কাফিরদের আনুগত্য কর না এবং তুমি কুরআনের সাহায্যে এদের সঙ্গে প্রবল সংগ্রাম চালিয়ে যাও।


তাফসীরঃ

২৫. অর্থাৎ নবীর আগমন আশ্চর্যের কোন ব্যাপার নয়। আল্লাহ চাইলে এখনও নবীদের সংখ্যাবৃদ্ধি করে প্রত্যেক এলাকায় পৃথক-পৃথক নবী পাঠাতে পারতেন, কিন্তু এই আখেরি যমানার জন্য আল্লাহ তাআলার সিদ্ধান্ত সে রকম নয়। এখন সারা জাহানের সমস্ত মানুষের কল্যাণ একই নবীর অনুসরণে। তাই আপনাকে বিশ্বনবী করে পাঠানো হয়েছে। কাজেই আপনি অবিশ্বাসীদের অজ্ঞতাসুলভ অভিযোগ-আপত্তি ও তাদের হঠকারিতাপূর্ণ কূটকচালিতে কান না দিয়ে পূর্ণোদ্যমে আপন কাজ চালিয়ে যান এবং কুরআন হাতে তাদের মুকাবিলা করতে থাকুন। আল্লাহ তাআলা আপনাকেই কৃতকার্য করবেন (-অনুবাদক তাফসীরে উসমানী থেকে)।


৫৩


۞ وَهُوَ الَّذِي مَرَجَ الْبَحْرَيْنِ هَـٰذَا عَذْبٌ فُرَاتٌ وَهَـٰذَا مِلْحٌ أُجَاجٌ وَجَعَلَ بَيْنَهُمَا بَرْزَخًا وَحِجْرًا مَّحْجُورًا


ওয়া হুওয়াল্লাযী মারাজাল বাহরাইনি হা-যা-‘আযবুন ফুরা-তুওঁ ওয়া হা-যা-মিলহুন উজা-জুওঁ ওয়া জা‘আলা বাইনাহুমা-বারঝাখাওঁ ওয়া হিজরাম মাহজূরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তিনিই দুই নদীকে মিলিতভাবে প্রবাহিত করেছেন, যার একটি মিষ্টি, তৃপ্তিকর এবং একটি লোনা, অত্যন্ত কটু। উভয়ের মাঝখানে রেখে দিয়েছেন এক আড়াল ও অলংঘনীয় প্রতিবন্ধক। ২৬


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তিনিই সমান্তরালে দুই সমুদ্র প্রবাহিত করেছেন, এটি মিষ্ট, তৃষ্ণা নিবারক ও এটি লোনা, বিস্বাদ; উভয়ের মাঝখানে রেখেছেন একটি অন্তরায়, একটি দুর্ভেদ্য আড়াল।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তিনিই দুই দরিয়াকে মিলিতভাবে প্রবাহিত করেছেন, একটি মিষ্ট, সুপেয় এবং অপরটি লোনা, খর ; উভয়ের মধ্যে রেখে দিয়েছেন এক অন্তরায়, এক অনতিক্রম্য ব্যবধান।


তাফসীরঃ

২৬. নদ-নদী ও সাগরের সঙ্গমস্থলে এ রকম দৃশ্য সকলেরই চোখে পড়ে। দুই রকম পানির স্রোতধারা পাশাপাশি ছুটে চলে, অথচ একটি আরেকটির সাথে মিশ্রিত হয় না। দূর-দূরান্ত পর্যন্ত তাদের বৈশিষ্ট্য আলাদাভাবে চোখে পড়ে। এটাই সেই বিস্ময়কর প্রতিবন্ধ, যা উভয়ের কোনটিকে অন্যটির সীমানা ভেদ করতে দেয় না।


৫৪


وَهُوَ الَّذِي خَلَقَ مِنَ الْمَاءِ بَشَرًا فَجَعَلَهُ نَسَبًا وَصِهْرًا ۗ وَكَانَ رَبُّكَ قَدِيرًا


ওয়া হুওয়াল্লাযী খালাকা মিনাল মাই বাশরান ফাজা‘আলাহূনাছাবাওঁ ওয়া সিহরাও ওয়া কা-না রাব্বুকা কাদীরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তিনিই পানি দ্বারা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন, তারপর তাকে বংশগত ও বৈবাহিক আত্মীয়তা দান করেছেন। তোমার প্রতিপালক সর্বশক্তিমান।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তিনিই পানি থেকে সৃষ্টি করেছেন মানবকে, অতঃপর তাকে রক্তগত, বংশ ও বৈবাহিক সম্পর্কশীল করেছেন। তোমার পালনকর্তা সবকিছু করতে সক্ষম।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এবং তিনিই মানুষকে সৃষ্টি করেছেন পানি হতে ; এরপর তিনি তার বংশগত ও বৈবাহিক সম্বন্ধ স্থাপন করেছেন। তোমার প্রতিপালক সর্বশক্তিমান।


৫৫


وَيَعْبُدُونَ مِن دُونِ اللَّهِ مَا لَا يَنفَعُهُمْ وَلَا يَضُرُّهُمْ ۗ وَكَانَ الْكَافِرُ عَلَىٰ رَبِّهِ ظَهِيرًا


ওয়া ইয়া‘বুদূ না মিন দূ নিল্লা-হি মা-লা-ইয়ানফা‘উহুম ওয়ালা-ইয়াদুররুহুম ওয়া কা-নাল কা-ফিরু ‘আলা-রাব্বিহী জাহীরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তারা আল্লাহর পরিবর্তে এমন সব বস্তুর ইবাদত করছে, যা তাদের কোন উপকার করতে পারে না এবং অপকারও নয়। বস্তুত কাফের ব্যক্তি নিজ প্রতিপালকের ঘোর বিরোধি।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তারা এবাদত করে আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুর, যা তাদের উপকার করতে পারে না এবং ক্ষতিও করতে পারে না। কাফের তো তার পালনকর্তার প্রতি পৃষ্ঠপ্রদর্শনকারী।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরা আল্লাহ্ র পরিবর্তে এমন কিছুর ‘ইবাদত করে যা এদেরকে উপকার করতে পারে না এবং এদের অপকারও করতে পারে না, কাফির তো স্বীয় প্রতিপালকের বিরোধী।


৫৬


وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا مُبَشِّرًا وَنَذِيرًا


ওয়ামাআরছালনা-কা ইল্লা-মুবাশশিরাওঁ ওয়া নাযীরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

(হে নবী!) আমি তো তোমাকে কেবল একজন সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপেই পাঠিয়েছি।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি আপনাকে সুসংবাদ ও সতর্ককারীরূপেই প্রেরণ করেছি।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আমি তো তোমাকে কেবল সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপেই প্রেরণ করেছি।


৫৭


قُلْ مَا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ إِلَّا مَن شَاءَ أَن يَتَّخِذَ إِلَىٰ رَبِّهِ سَبِيلًا


কুলমাআছআলুকুম ‘আলাইহি মিন আজরিন ইল্লা-মান শাআ আইঁ ইয়াত্তাখিযাইলারাব্বিহী ছাবীলা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

বলে দাও, আমি এ কাজের জন্য তোমাদের থেকে কোন পারিশ্রমিক চাই না। তবে যে ইচ্ছা করে, সে তার প্রতিপালকের কাছে পৌঁছার পথ অবলম্বন করুক (সেটাই হবে আমার প্রতিদান)।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

বলুন, আমি তোমাদের কাছে এর কোন বিনিময় চাই না, কিন্তু যে ইচ্ছা করে, সে তার পালনকর্তার পথ অবলম্বন করুক।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

বল, ‘আমি তোমাদের নিকট এটার জন্যে কোন প্রতিদান চাহি না, তবে যে ইচ্ছা করে সে তার প্রতিপালকের দিকের পথ অবলম্বন করুক।’


৫৮


وَتَوَكَّلْ عَلَى الْحَيِّ الَّذِي لَا يَمُوتُ وَسَبِّحْ بِحَمْدِهِ ۚ وَكَفَىٰ بِهِ بِذُنُوبِ عِبَادِهِ خَبِيرًا


ওয়া তাওয়াক্কাল ‘আলাল হাইয়িল্লাযী লা-ইয়ামূতুওয়া ছাব্বিহবিহামদিহী ওয়া কাফাবিহী বিযুনূবি ‘ইবা-দিহী খাবীরা ।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তুমি নির্ভর কর সেই সত্তার উপর, যিনি চিরঞ্জীব যার মৃত্যু নেই এবং তাঁরই প্রশংসার সাথে তাসবীহ আদায় করতে থাক। নিজ বান্দাদের গুনাহের খবর রাখার জন্য তিনিই যথেষ্ট।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আপনি সেই চিরঞ্জীবের উপর ভরসা করুন, যার মৃত্যু নেই এবং তাঁর প্রশংসাসহ পবিত্রতা ঘোষণা করুন। তিনি বান্দার গোনাহ সম্পর্কে যথেষ্ট খবরদার।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তুমি নির্ভর কর তাঁর ওপর যিনি চিরঞ্জীব, যিনি মরিবেন না এবং তাঁর সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর, তিনি তাঁর বান্দাদের পাপ সম্পর্কে সম্যক অবহিত।


৫৯


الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَىٰ عَلَى الْعَرْشِ ۚ الرَّحْمَـٰنُ فَاسْأَلْ بِهِ خَبِيرًا


আল্লাযী খালাকাছছামা-ওয়া-তি ওয়ালা আরদা ওয়ামা-বাইনাহুমা-ফী ছিত্তাতি আইয়া-মিন ছু ম্মাছতাওয়া-‘আলাল ‘আরশি আররাহমা-নূফাছআল বিহী খাবীরা-


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

যিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে, তারপর তিনি আরশে ‘ইসতিওয়া’ ২৭ গ্রহণ করেছেন। তিনি ‘রহমান’। তাঁর (মহিমা) সম্পর্কে জিজ্ঞেস কর কোন জ্ঞাতজনকে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তিনি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও এতদুভয়ের অন্তর্বর্তী সবকিছু ছয়দিনে সৃস্টি করেছেন, অতঃপর আরশে সমাসীন হয়েছেন। তিনি পরম দয়াময়। তাঁর সম্পর্কে যিনি অবগত, তাকে জিজ্ঞেস কর।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তিনি আকাশমণ্ডলী, পৃথিবী ও এদের মধ্যবর্তী সমস্ত কিছু ছয় দিবসে সৃষ্টি করেন ; এরপর তিনি র্আশে সমাসীন হন। তিনিই ‘রাহমান’, তাঁর সম্বন্ধে যে অবগত আছে, তাকে জিজ্ঞাসা করে দেখ।


তাফসীরঃ

২৭. ‘ইসতিওয়া’-এর আভিধানিক অর্থ সোজা হওয়া, দৃঢ়ভাবে আসীন হওয়া। আরশে আল্লাহ তাআলার ‘ইসতিওয়া গ্রহণ’-এর ব্যাখ্যা কি এবং তা কিভাবে হয়ে থাকে, আমাদের সীমিত জ্ঞানবুদ্ধির দ্বারা তা বোঝা সম্ভব নয়। তা আমাদের জ্ঞানবুদ্ধির অতীত। সূরা আলে-ইমরানের শুরুতে যে ‘মুতাশাবিহাত’-এর কথা বলা হয়েছে, এটা তার অন্যতম। সুতরাং আয়াতে যতটুকু বলা হয়েছে ততটুকুর প্রতি ঈমান রাখাই যথেষ্ট। এর স্বরূপ উদ্ঘাটনের চেষ্টা বৃথা। বৃথা চেষ্টায় রত না হওয়াই ভালো।


৬০


وَإِذَا قِيلَ لَهُمُ اسْجُدُوا لِلرَّحْمَـٰنِ قَالُوا وَمَا الرَّحْمَـٰنُ أَنَسْجُدُ لِمَا تَأْمُرُنَا وَزَادَهُمْ نُفُورًا ۩


ওয়া ইযা-কীলা লাহুমুছজু দূ লিররাহমা-নি কা-লূ ওয়ামার রাহমা-নু আনাছজুদু লিমা-তা’মুরুনা-ওয়া ঝা-দাহুম নুফূরা (ছিজদাহ-৭) ।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তাদেরকে যখন বলা হয়, ‘রহমান’কে সিজদা কর, তারা বলে রহমান কী? তুমি যে-কাউকে সিজদা করতে বললেই কি আমরা তাকে সিজদা করব? ২৮ এতে তারা আরও বেশি বিমুখ হয়ে পড়ে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তাদেরকে যখন বলা হয়, দয়াময়কে সেজদা কর, তখন তারা বলে, দয়াময় আবার কে? তুমি কাউকে সেজদা করার আদেশ করলেই কি আমরা সেজদা করব? এতে তাদের পলায়নপরতাই বৃদ্ধি পায়।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যখন এদেরকে বলা হয়, ‘সিজ্দাবনত হও ‘রাহ্মান’এর প্রতি’, তখন এরা বলে, ‘রাহমান আবার কে ? তুমি কাউকেও সিজ্দা করতে বললেন কি আমরা তাকে সিজ্দা করব ?’ এতে এদের বিমুখতাই বৃদ্ধি পায়।


তাফসীরঃ

২৮. মক্কার মুশরিকগণ আল্লাহ তাআলার সত্তায় বিশ্বাসী ছিল বটে, কিন্তু তাঁর ‘রহমান’ নামকে স্বীকার করত‘ না। তাই যখন এ নামে আল্লাহ তাআলাকে স্মরণ করা হত, তারা চরম ধৃষ্টতার সাথে এ পবিত্র নামকে প্রত্যাখ্যান করত।


৬১


تَبَارَكَ الَّذِي جَعَلَ فِي السَّمَاءِ بُرُوجًا وَجَعَلَ فِيهَا سِرَاجًا وَقَمَرًا مُّنِيرًا


তাবা-রাকাল্লাযী জা‘আলা ফিছছামাইবুরূজাওঁ ওয়া জা‘আলা ফীহা- ছিরা-জাওঁ ওয়া কামারাম মুনীরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

মহিমময় সেই সত্তা, যিনি আকাশে ‘বুরূজ’ ২৯ বানিয়েছেন এবং তাতে এক উজ্জ্বল প্রদীপ ও আলো বিস্তারকারী চাঁদ সৃষ্টি করেছেন।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

কল্যাণময় তিনি, যিনি নভোমন্ডলে রাশিচক্র সৃষ্টি করেছেন এবং তাতে রেখেছেন সূর্য ও দীপ্তিময় চন্দ্র।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

কত মহান তিনি যিনি নভোমণ্ডলে সৃষ্টি করেছেন রাশিচক্র এবং এতে স্থাপন করেছেন প্রদীপ ও জ্যোতির্ময় চন্দ্র।


তাফসীরঃ

২৯. বুরূজ শব্দটি র্বুজ (بُرْجْ) এর বহুবচন। আয়াতে এর বিভিন্ন অর্থ করার অবকাশ আছে, যেমন (ক) তারকারাজি; (খ) মহাকাশের বিভিন্ন এলাকা, যাকে জ্যোতির্বিদগণ বুরূজ বা কক্ষপথ নামে অভিহিত করে থাকে; (গ) এটাও সম্ভব যে, বুরূজ বলতে নভোম-লীয় এমন কিছু সৃষ্টিকে বোঝানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত যা মানুষের নজরে আসেনি।


৬২


وَهُوَ الَّذِي جَعَلَ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ خِلْفَةً لِّمَنْ أَرَادَ أَن يَذَّكَّرَ أَوْ أَرَادَ شُكُورًا


ওয়া হুওয়াল্লাযী জা‘আলাল লাইলা ওয়ান্নাহা-রা খিলফাতাল লিমান আরা-দা আইঁ ইয়াযযাক্কারা আও আরা-দা শুকূরা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এবং তিনিই সেই সত্তা, যিনি রাত ও দিনকে পরস্পরের অনুগামী করে সৃষ্টি করেছেন (কিন্তু এসব বিষয় উপকারে আসে কেবল) সেই ব্যক্তির জন্য, যে উপদেশ গ্রহণের ইচ্ছা রাখে কিংবা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করতে চায়।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যারা অনুসন্ধানপ্রিয় অথবা যারা কৃতজ্ঞতাপ্রিয় তাদের জন্যে তিনি রাত্রি ও দিবস সৃষ্টি করেছেন পরিবর্তনশীলরূপে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তিনিই সৃষ্টি করেছেন রাত্রি এবং দিবসকে পরস্পরের অনুগামীরূপে তার জন্যে-যে উপদেশ গ্রহণ করতে ও কৃতজ্ঞ হতে চায়।


৬৩


وَعِبَادُ الرَّحْمَـٰنِ الَّذِينَ يَمْشُونَ عَلَى الْأَرْضِ هَوْنًا وَإِذَا خَاطَبَهُمُ الْجَاهِلُونَ قَالُوا سَلَامًا


ওয়া ‘ইবা-দুররাহমা-নিল্লাযীনা ইয়ামশূনা ‘আলাল আরদি হাওনাওঁ ওয়া ইযা তাবাহুমুল জা-হিলূনা কা-লূছালা-মা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

রহমানের বান্দা তারা, যারা ভূমিতে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং অজ্ঞলোক যখন তাদেরকে লক্ষ্য করে (অজ্ঞতাসুলভ) কথা বলে, তখন তারা শান্তিপূর্ণ কথা ৩০ বলে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

রহমান-এর বান্দা তারাই, যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং তাদের সাথে যখন মুর্খরা কথা বলতে থাকে, তখন তারা বলে, সালাম।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘রাহ্মান’-এর বান্দা তারাই, যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং তাদেরকে যখন অজ্ঞ ব্যক্তিরা সম্বোধন করে, তখন তারা বলে, ‘সালাম’;


তাফসীরঃ

৩০. অর্থাৎ, তারা অজ্ঞজনদের কটু কথা ও গালিগালাজের জবাব মন্দ কথা দ্বারা দেয় না; বরং ভদ্রোচিত ভাষায় দিয়ে থাকে।


৬৪


وَالَّذِينَ يَبِيتُونَ لِرَبِّهِمْ سُجَّدًا وَقِيَامًا


ওয়াল্লাযীনা ইয়াবীতূনা লিরাব্বিহিম ছুজ্জাদাওঁ ওয়া কিয়া-মা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এবং যারা রাত অতিবাহিত করে নিজ প্রতিপালকের সামনে (কখনও) সিজদারত অবস্থায় এবং (কখনও) দণ্ডায়মান অবস্থায়।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এবং যারা রাত্রি যাপন করে পালনকর্তার উদ্দেশ্যে সেজদাবনত হয়ে ও দন্ডায়মান হয়ে;


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এবং তারা রাত্রি অতিবাহিত করে তাদের প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে সিজ্দাবনত হয়ে ও দণ্ডায়মান থেকে;


৬৫


وَالَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَا اصْرِفْ عَنَّا عَذَابَ جَهَنَّمَ ۖ إِنَّ عَذَابَهَا كَانَ غَرَامًا


ওয়াল্লাযীনা ইয়াকূলূনা রাব্বানাসরিফ ‘আন্না-‘আযা-বা জাহান্নামা ইন্না ‘আযা-বাহাকা-না গারা-মা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এবং যারা বলে, হে আমাদের প্রতিপালক! জাহান্নামের আযাব আমাদের থেকে দূরে রাখুন। নিশ্চয়ই তার আযাব সদা সংলগ্ন হয়ে থাকে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এবং যারা বলে, হে আমার পালনকর্তা, আমাদের কাছথেকে জাহান্নামের শাস্তি হটিয়ে দাও। নিশ্চয় এর শাস্তি নিশ্চিত বিনাশ;


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এবং তারা বলে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের হতে জাহান্নামের শাস্তি বিদূরিত কর, এর শাস্তি তো নিশ্চিত বিনাশ,’


৬৬


إِنَّهَا سَاءَتْ مُسْتَقَرًّا وَمُقَامًا


ইন্নাহা-ছাআত মুছতাকাররাওঁ ওয়া মুকা-মা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

নিশ্চয়ই অবস্থানস্থল ও বাসস্থান হিসেবে তা অতি নিকৃষ্ট।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

বসবাস ও অবস্থানস্থল হিসেবে তা কত নিকৃষ্ট জায়গা।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

নিশ্চয়ই তা অস্থায়ী ও স্থায়ী আবাস হিসেবে নিকৃষ্ট।


৬৭


وَالَّذِينَ إِذَا أَنفَقُوا لَمْ يُسْرِفُوا وَلَمْ يَقْتُرُوا وَكَانَ بَيْنَ ذَٰلِكَ قَوَامًا


ওয়াল্লাযীনা ইযা-আনফাকূলাম ইউছরিফূওয়া লাম ইয়াকতুরূওয়া কা-না বাইনা যা-লিকা কাওয়া-মা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এবং যারা ব্যয় করার সময় না করে অপব্যয় এবং না করে কার্পণ্য; বরং তা হয় উভয়ের মাঝখানে ভারসাম্যমান।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এবং তারা যখন ব্যয় করে, তখন অযথা ব্যয় করে না কৃপণতাও করে না এবং তাদের পন্থা হয় এতদুভয়ের মধ্যবর্তী।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এবং যখন তারা ব্যয় করে তখন অপব্যয় করে না, কার্পণ্যও করে না, বরং তারা আছে এতদুভয়ের মাঝে মধ্যম পন্থায়।


৬৮


وَالَّذِينَ لَا يَدْعُونَ مَعَ اللَّهِ إِلَـٰهًا آخَرَ وَلَا يَقْتُلُونَ النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللَّهُ إِلَّا بِالْحَقِّ وَلَا يَزْنُونَ ۚ وَمَن يَفْعَلْ ذَٰلِكَ يَلْقَ أَثَامًا


ওয়াল্লাযীনা লা-ইয়াদ‘ঊনা মা‘আল্লা-হি ইলা-হান আ-খারা ওয়ালা-ইয়াকতুলূনান নাফছাল্লাতী হাররামাল্লা-হু ইল্লা-বিলহাক্কিওয়ালা-ইয়াঝনূনা ওয়া মাইঁ ইয়াফ‘আল যা-লিকা ইয়ালকা আছা-মা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এবং যারা আল্লাহর সঙ্গে অন্য কোন মাবুদের ইবাদত করে না এবং আল্লাহ যে প্রাণকে মর্যাদা দান করেছেন, তাকে অন্যায়ভাবে বধ করে না এবং তারা ব্যভিচার করে না। যে ব্যক্তিই এরূপ করবে তাকে তার গুনাহের (শাস্তির) সম্মুখীন হতে হবে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এবং যারা আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যের এবাদত করে না, আল্লাহ যার হত্যা অবৈধ করেছেন, সঙ্গত কারণ ব্যতীত তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। যারা একাজ করে, তারা শাস্তির সম্মুখীন হবে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এবং তারা আল্লাহ্ র সঙ্গে কোন ইলাহ্কে ডাকে না। আল্লাহ্ যার হত্যা নিষেধ করেছেন, যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। যে এইগুলি করে সে শাস্তি ভোগ করবে।


৬৯


يُضَاعَفْ لَهُ الْعَذَابُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَيَخْلُدْ فِيهِ مُهَانًا


ইউদা-‘আফ লাহুল ‘আযা-বুইয়াওমাল কিয়া-মাতি ওয়া ইয়াখলুদ ফীহি মুহা-না-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

কিয়ামতের দিন তার শাস্তি বৃদ্ধি করে দ্বিগুণ করা হবে এবং সে লাঞ্ছিত অবস্থায় তাতে সদা-সর্বদা থাকবে। ৩১


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

কেয়ামতের দিন তাদের শাস্তি দ্বিগুন হবে এবং তথায় লাঞ্ছিত অবস্থায় চিরকাল বসবাস করবে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

কিয়ামতের দিন এর শাস্তি দ্বিগুণ করা হবে এবং সেখানে সে স্থায়ী হবে হীন অবস্থায় ;


তাফসীরঃ

৩১. এর দ্বারা কাফের ও মুশরিকদেরকে বোঝানো হয়েছে। কেননা মুমিনগণ জাহান্নামের স্থায়ী শাস্তি ভোগ করবে না। তাদেরকে যদি তাদের গুনাহের কারণে শাস্তি দেওয়া হয়, তবে সে শাস্তি ভোগের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তাদেরকে জান্নাতে নিয়ে যাওয়া হবে।


৭০


إِلَّا مَن تَابَ وَآمَنَ وَعَمِلَ عَمَلًا صَالِحًا فَأُولَـٰئِكَ يُبَدِّلُ اللَّهُ سَيِّئَاتِهِمْ حَسَنَاتٍ ۗ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا


ইল্লা-মান তা-বা ওয়া আ-মানা ওয়া ‘আমিলা ‘আমালান সা-লিহান ফাউলাইকা ইউবাদ্দিলুল্লা-হু ছাইয়িআ-তিহিম হাছানা-তিও ওয়া কা-নাল্লা-হু গাফূরাররাহীমা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তবে কেউ তাওবা করলে, ঈমান আনলে এবং সৎকর্ম করলে, আল্লাহ এরূপ লোকদের পাপরাশিকে পুণ্য দ্বারা পরিবর্তিত করে দেবেন। ৩২ আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

কিন্তু যারা তওবা করে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের গোনাহকে পুন্য দ্বারা পরিবর্তত করে এবং দেবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তারা নয়, যারা তওবা করে, ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে। আল্লাহ্ এদের পাপ পরিবর্তন করে দিবেন পুণ্যের দিয়ে। আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।


তাফসীরঃ

৩২. অর্থাৎ, কাফের অবস্থায় তারা যেসব পাপ কাজ করেছে তাদের আমলনামা থেকে তা মুছে ফেলা হবে এবং ইসলাম গ্রহণোত্তর নেক কাজসমূহ তদস্থলে ঠাঁই পাবে।


৭১


وَمَن تَابَ وَعَمِلَ صَالِحًا فَإِنَّهُ يَتُوبُ إِلَى اللَّهِ مَتَابًا


ওয়া মান তা-বা ওয়া ‘আমিলা সা-লিহান ফাইন্নাহূইয়াতূবুইলাল্লা-হি মাতা-বা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এবং যে ব্যক্তি তাওবা করে ও সৎকর্ম করে, সে মূলত আল্লাহর দিকে যথাযথভাবে ফিরে আসে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যে তওবা করে ও সৎকর্ম করে, সে ফিরে আসার স্থান আল্লাহর দিকে ফিরে আসে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যে ব্যক্তি তওবা করে ও সৎকর্ম করে সে সম্পূর্ণরূপে আল্লাহ্ র অভিমুখী হয়।


৭২


وَالَّذِينَ لَا يَشْهَدُونَ الزُّورَ وَإِذَا مَرُّوا بِاللَّغْوِ مَرُّوا كِرَامًا


ওয়াল্লাযীনা লা-ইয়াশহাদূ নাঝঝূরা ওয়া ইযা-মাররূবিল্লাগবিমাররূকিরা-মা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এবং (রহমানের বান্দা তারা) যারা অন্যায় কাজে শামিল হয় না ৩৩ এবং যখন কোন বেহুদা কার্যকলাপের নিকট দিয়ে যায়, তখন আত্মসম্মান বাঁচিয়ে যায়। ৩৪


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এবং যারা মিথ্যা কাজে যোগদান করে না এবং যখন অসার ক্রিয়াকর্মের সম্মুখীন হয়, তখন মান রক্ষার্থে ভদ্রভাবে চলে যায়।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এবং যারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না এবং অসার ক্রিয়াকলাপের সম্মুখীন হলে স্বীয় মর্যাদার সঙ্গে তা পরিহার করে চলে।


তাফসীরঃ

৩৩. কুরআন মাজীদে এস্থলে শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে زور (যূর), যার আভিধানিক অর্থ মিথ্যা। তাছাড়া যে-কোন ভ্রান্ত ও অন্যায় কাজকেও ‘যূর’ বলে। এ হিসেবে আয়াতের অর্থ হচ্ছে, সেখানে কোন অন্যায় ও অবৈধ কাজ হয়, আল্লাহর নেক বান্দাগণ তাতে জড়িত হয় না। আবার এ অর্থও করা যেতে পারে যে, তারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না।


৩৪. অর্থাৎ, তারা যেমন বেহুদা ও অহেতুক কাজে শরীক হয় না, তেমনি যারা সে কাজে জড়িত, তাদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যও করে না; বরং তারা মন্দ কাজকে মন্দ জেনে নিজের মান রক্ষা করে সেখান থেকে চলে যায়।


৭৩


وَالَّذِينَ إِذَا ذُكِّرُوا بِآيَاتِ رَبِّهِمْ لَمْ يَخِرُّوا عَلَيْهَا صُمًّا وَعُمْيَانًا


ওয়াল্লাযীনা ইযা-যুক্কিরূবিআ-য়া-তি রাব্বিহিম লাম ইয়াখিররূ‘আলাইহা-সুম্মাওঁ ওয়া ‘উমইয়া-না-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এবং যখন তাদের প্রতিপালকের আয়াত দ্বারা তাদেরকে উপদেশ দেওয়া হয়, তখন তারা বধির ও অন্ধরূপে তার উপর পতিত হয় না। ৩৫


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এবং যাদেরকে তাদের পালনকর্তার আয়াতসমূহ বোঝানো হলে তাতে অন্ধ ও বধির সদৃশ আচরণ করে না।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এবং যারা তাদের প্রতিপালকের আয়াত স্মরণ করিয়ে দিলে এর প্রতি অন্ধ এবং বধিরসদৃশ আচরণ করে না,


তাফসীরঃ

৩৫. এর দ্বারা মুনাফিকদেরকে কটাক্ষ করা হয়েছে। তারা আল্লাহ তাআলার আয়াত শুনে বাহ্যত তার প্রতি আগ্রহ প্রদর্শন করত এবং তার সামনে এমন বিনীত ভাব দেখাত, মনে হত যেন উপুড় হয়ে পড়ে যাবে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সত্য কথা শুনতে তারা মোটেই আগ্রহী ছিল না। সে দিক থেকে তারা চোখণ্ডকান বন্ধ করে অন্ধ ও বধির সদৃশ হয়ে যেত। ফলে কুরআনের আয়াত দ্বারা তারা উপকৃত হতে পারত না। পক্ষান্তরে আল্লাহ তাআলার নেক বান্দাগণ কুরআনের আয়াতসমূহকে আন্তরিক আগ্রহের সাথে গ্রহণ করে নেয়। তার বিষয়বস্তু মন দিয়ে শোনে এবং তা যে সত্যের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে চোখণ্ডকান খোলা রেখে তা বোঝার ও হৃদয়ঙ্গম করার চেষ্টা করে।


৭৪


وَالَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا


ওয়াল্লাযীনা ইয়াকূ লূনা রাব্বানা-হাবলানা-মিন আঝওয়া-জিনা-ওয়া যুররিইইয়া-তিনা কুররাতা আ‘ইউনিওঁ ওয়াজ‘আলনা-লিলমুত্তাকীনা ইমা-মা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এবং যারা (এই) বলে (দোয়া করে যে), হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে আমাদের স্ত্রী ও সন্তানদের পক্ষ হতে দান কর নয়নপ্রীতি এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের নেতা বানাও। ৩৬


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এবং যারা বলে, হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের স্ত্রীদের পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানের পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে চোখের শীতলতা দান কর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্যে আদর্শস্বরূপ কর।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এবং যারা প্রার্থনা করে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক ! আমাদের জন্যে এমন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দান কর যারা হবে আমাদের জন্যে নয়নপ্রীতিকর এবং আমাদেরকে কর মুত্তাকীদের জন্যে অনুসরণযোগ্য।


তাফসীরঃ

৩৬. সাধারণত পিতা তার পরিবারবর্গের নেতা হয়ে থাকে। কুরআন মাজীদ তাকে এ দোয়া শিক্ষা দিচ্ছে। এর সারমর্ম হল, হে আল্লাহ! পিতা ও স্বামী হিসেবে আমি যখন স্ত্রী ও সন্তানদের নেতা, তখন আপনি আমার স্ত্রী-সন্তানদেরকে মুত্তাকী বানিয়ে দিন, যাতে আমি নেতা হই মুত্তাকীদের এবং তারা হয় আমার জন্য নয়নপ্রীতিকর। এর বিপরীতে আমি না হই ফাসেক ও পাপীদের নেতা, যারা আমার জন্য আযাব না হয়ে দাঁড়ায়। যারা নিজ পরিবারবর্গের আচার-আচরণে অতিষ্ঠ, তাদের নিয়মিতভাবে এ দোয়াটি করা উচিত।


৭৫


أُولَـٰئِكَ يُجْزَوْنَ الْغُرْفَةَ بِمَا صَبَرُوا وَيُلَقَّوْنَ فِيهَا تَحِيَّةً وَسَلَامًا


উলাইকা ইউজঝাওনাল গুরফাতা বিমা-সাবারূওয়া ইউলাক্কাওনা ফীহা-তাহিইইয়াতাওঁ ওয়া ছালা-মা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

এরাই তারা, যাদেরকে তাদের সবরের প্রতিদানে জান্নাতের সুউচ্চ প্রাসাদ দেওয়া হবে এবং সেখানে শুভেচ্ছা ও সালামের সাথে তাদের অভ্যর্থনা করা হবে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তাদেরকে তাদের সবরের প্রতিদানে জান্নাতে কক্ষ দেয়া হবে এবং তাদেরকে তথায় দোয়া ও সালাম সহকারে অভ্যর্থনা করা হবে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তাদেরকে প্রতিদান দেওয়া হবে জান্নাতের সুউচ্চ কক্ষ যেহেতু তারা ছিল ধৈর্যশীল, তাদেরকে সেখানে অভ্যর্থনা করা হবে অভিবাদন ও সালাম সহকারে।


৭৬


خَالِدِينَ فِيهَا ۚ حَسُنَتْ مُسْتَقَرًّا وَمُقَامًا


খা-লিদীনা ফীহা-; হাছুনাত মুছতাকাররাওঁ ওয়া মুকা-মা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

তারা তাতে স্থায়ী জীবন লাভ করবে। অবস্থানস্থল ও বাসস্থান হিসেবে তা অতি উত্তম।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তথায় তারা চিরকাল বসবাস করবে। অবস্থানস্থল ও বাসস্থান হিসেবে তা কত উত্তম।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

সেখানে তারা স্থায়ী হবে। আশ্রয়স্থল ও বসতি হিসেবে তা কত উৎকৃষ্ট।


৭৭


قُلْ مَا يَعْبَأُ بِكُمْ رَبِّي لَوْلَا دُعَاؤُكُمْ ۖ فَقَدْ كَذَّبْتُمْ فَسَوْفَ يَكُونُ لِزَامًا


কুল মা-ইয়া‘বাউ বিকুম রাববী লাওলা-দু‘আউকুম ফাকাদ কাযযাবতুম ফাছাওফা ইয়াকূনুলিঝা-মা-।


অর্থঃ

মুফতী তাকী উসমানী

(হে রাসূল! মানুষকে) বলে দাও, তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে না ডাকলে তার কিছুই আসে যায় না। ৩৭ আর (হে কাফেরগণ!) তোমরা তো সত্য প্রত্যাখ্যান করেছ। অচিরেই এ প্রত্যাখ্যান তোমাদের গললগ্ন হয়ে যাবে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

বলুন, আমার পালনকর্তা পরওয়া করেন না যদি তোমরা তাঁকে না ডাক। তোমরা মিথ্যা বলেছ। অতএব সত্বর নেমে আসবে অনিবার্য শাস্তি।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

বল, ‘তোমরা আমার প্রতিপালককে না ডাকিলে তাঁর কিছুই আসে যায় না। তোমরা অস্বীকার করেছ, ফলে অচিরে নেমে আসবে অপরিহার্য শাস্তি।


তাফসীরঃ

৩৭. এটা বলা হচ্ছে যারা আল্লাহ তাআলার ইবাদত-বন্দেগী করে তাদেরকে লক্ষ করে। বলা হচ্ছে যে, তোমরা যদি আল্লাহ তাআলার অভিমুখী না হতে এবং তাঁর ইবাদত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে, তবে আল্লাহ তাআলারও তাতে কিছু আসত যেত না, তিনি এর কোন পরওয়া করতেন না। কিন্তু দয়াময় আল্লাহর প্রকৃত বান্দাগণ, যারা তাঁর ইবাদত-বন্দেগীতে লিপ্ত থাকে এবং যারা উপরে বর্ণিত সৎকর্মসমূহ আঞ্জাম দেয়, তারা হবে উৎকৃষ্ট পরিণামের অধিকারী, যার যিম্মাদার আল্লাহ তাআলা নিজেই। তারপর কাফেরদেরকে লক্ষ করে বলা হয়েছে, তোমরা যখন এ মূলনীতি জানতে পারলে এবং তারপরও সত্য প্রত্যাখ্যানের নীতিতেই অটল থাকলে, তখন জেনে রেখ, আল্লাহ তাআলার অনুগত বান্দাদের মত পরিণাম তোমাদের হতে পারে না। তোমাদের এ কর্মকাণ্ড তোমাদের গলার কাঁটা হয়ে যাবে এবং পরিশেষে আখেরাতের আযাবরূপে তোমাদেরকে এমনভাবে জড়িয়ে ধরবে যে, তার থেকে মুক্তিলাভ কখনও সম্ভব হবে না।


আরো পড়ুন :-

স্মরণ শক্তি বৃদ্ধির দোয়া,মেধা বৃদ্ধির দোয়া,স্মৃতি শক্তি বাড়ানোর দোয়া!নামাজের পর ২১ বাড় পড়ুন

গর্ভের সন্তান কখন নষ্ট করা যাবে?,কতদিনের বাচ্চা নষ্ট করলে গুনাহ হবে না?, বাচ্চা নষ্ট করা জায়েজ আছে?, 

দোয়াটি পড়লে সাথে সাথে রাগ কমে যায়, রাগ কমানোর দোয়া,শিশুদের রাগ কমানোর আমল

(ads1)

(getButton) #text=(আল কোরআন বাংলা অনুবাদ সহ এক সাথে ) #icon=(link) #color=(#b50404)

Post a Comment

0 Comments