নামায শুদ্ধ হওয়ার জন্য শর্ত কয়টি ও কি কি, নামাজ কবুল হওয়ার শর্ত জানাজার নামাজের শর্ত কয়টি,ফজরের নামাজ পড়লে চেহারা সুন্দর হয়,নামাজের রুকন কয়টি,নামাজের ওয়াজিব কয়টি,তাকবীরে তাহরীমা বাধার নিয়ম

 

কিছু শর্ত আছে, যা নামাজ সহিহ হওয়ার জন্য আবশ্যক। যদি ওই শর্তগুলোর মধ্যে শুধু একটি মাত্র শর্তও পাওয়া না যায় তাহলে নামাজ সহিহ হবে না।


 


১।    পবিত্রতা অর্জন ছাড়া নামাজ সহিহ হবে না।


বিজ্ঞাপন


(বুখারি, হাদিস : ৬৪৪০)

     ক. নামাজির শরীর পবিত্র হওয়া। (বুখারি, হাদিস : ২৯৬)


     খ. নামাজির কাপড় পবিত্র হওয়া। (সুরা : মুদ্দাসসির, আয়াত : ৪)


     গ. জায়গা পবিত্র হওয়া। অর্থাৎ যে স্থানে নামাজ পড়া হবে ওই স্থানটি পবিত্র হতে হবে। জায়গার সর্বনিম্ন পরিমাণ হলো দুই পা, দুই হাত, হাঁটু এবং কপাল রাখার স্থান। ন্যূনতম এটুকু স্থান পবিত্র হতে হবে।


     (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১২৫, তিরমিজি, হাদিস : ৫৪২)


 


২।    সতর ঢেকে রাখা। (সুরা : আরাফ, আয়াত : ৩১, তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৪)


     সতর ঢেকে রাখার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও বিবস্ত্র হয়ে নামাজ পড়লে হবে না। নামাজের শুরু থেকে শেষ পর্যন্তই সতর ঢাকা থাকতে হবে। নামাজের শুরু থেকেই যদি সতরের এক-চতুর্থাংশ উন্মুক্ত থাকে তখনো নামাজ হবে না। নামাজ পড়াকালীন এক রুকন আদায় করার সময় পর্যন্ত যদি সতর খোলা থাকে তাহলে নামাজ বাতিল হয়ে যাবে। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া ২/৪৫১, বাদায়ে ১/৪৭৭)


 


৩।    কিবলামুখী হয়ে নামাজ পড়া। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যদি কেউ কিবলামুখী হয়ে নামাজ না পড়ে, তার নামাজ হবে না। (সুরা : বাকারা ১৪৯, ১৫০, বুখারি ২/১৫৮)


     কিবলা হলো সরাসরি কাবাঘর। সেদিক হয়েই নামাজ পড়তে হবে। এটি মক্কার বাসিন্দাদের জন্য, যারা সরাসরি কাবা শরিফ দেখে দেখে নামাজ পড়তে সক্ষম। (বুখারি ৩৮৩)। অথবা কাবার দিকে ফিরে নামাজ পড়বে। এটি সেসব লোকের জন্য, যারা কাবাঘর সরাসরি দেখতে পারছেন না। যারা মক্কা মুকাররামা থেকে দূরে অবস্থান করে তাদের জন্যও কাবার দিক হয়ে নামাজ পড়া আবশ্যক। যদি কেউ রোগের কারণে বা দুশমনের ভয়ে কাবার দিক হয়ে নামাজ পড়তে অক্ষম হয়, তাহলে সে যেদিকে নামাজ পড়তে সক্ষম সেদিক হয়ে নামাজ পড়তে পারবে। (বুখারি ৩৮৮, ৪১৭১)


 


৪।    নামাজের ওয়াক্ত হওয়া। নামাজের ওয়াক্ত আসা ছাড়া নামাজ শুদ্ধ হবে না। (সুরা : নিসা ১০৩, মুসলিম ১২১)


 


৫।    নিয়ত করা। নিয়ত ছাড়া নামাজ সহিহ হবে না। (বুখারি, হাদিস : ১,  সুরা : বায়্যিনা, আয়াত : ৪)


     ফরজ নামাজ হলে কোন সময়ের নামাজ, তা নির্দিষ্ট করা আবশ্যক। যেমন—জোহর অথবা আসরের নামাজ। সেরূপ ওয়াজিব নামাজ হলে তাও নির্দিষ্ট করা জরুরি। যেমন—বিতরের নামাজ, ঈদের নামাজ ইত্যাদি। কিন্তু নফল নামাজে নির্দিষ্ট করে নিয়ত করার প্রয়োজন নেই। তখন শুধু নামাজের নিয়ত করলেই হবে। কেননা ফরজ নামাজ বা ওয়াজিব নামাজ নামাজের সময় বা প্রকার হিসেবে ভিন্ন ভিন্ন। সে কারণে তা নির্দিষ্ট করে নিয়ত করতে হবে। (বুখারি, হাদিস : ১, সুরা বায়্যিনা, আয়াত : ৪, আল আশবাহ : ১/৪৩)


     জামাতে নামাজ হলে মুক্তাদিদের ইমামের অনুসরণের নিয়ত করা আবশ্যক।


 


৬।    তাহরিমা। অর্থাৎ একমাত্র আল্লাহর জিকির দ্বারা নামাজ আরম্ভ করা। যেমন—আল্লাহু আকবার। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা ১/২৩৮)। নিয়ত আর তাকবিরে তাহরিমার মাঝে কোনো অন্য কাজ না করা। যেমন—খানাপিনা ইত্যাদি। (আল আশবাহ ১/৫৮)। তাহরিমার ব্যাপারে শর্ত হলো, তা রুকুর জন্য ঝুঁকে পড়ার আগে দাঁড়ানো অবস্থায় করা। (বুখারি, হাদিস : ৭১৫)


     নিয়ত তাকবিরে তাহরিমার পরে না করা। (বুখারি, হাদিস : ৭১৫)


     তাকবির ‘আল্লাহু আকবার’ এমনভাবে বলা, যাতে নিজে শুনতে পায়। (সুরা : মুদ্দাসসির, আয়াত : ৩, তিরমিজি, হাদিস : ৩)

Post a Comment

0 Comments