কোরআন ও হাদিসের আলোতে সূরা সাবা সকল তথ্য আল,সাবা আলমল ও ফজিলত, সূরা সাবা কতো বার পাঠ করলে কোন আলম ও ফজিলত, সূরা সাবা নাযিলের কারন গুলো কি কি

  


৩৪ . সাবা' - ( سبإ ) | সাবা সম্প্রদায়

মাক্কী, মোট আয়াতঃ ৫৪


بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ


اَلۡحَمۡدُ لِلّٰہِ الَّذِیۡ لَہٗ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَمَا فِی الۡاَرۡضِ وَلَہُ الۡحَمۡدُ فِی الۡاٰخِرَۃِ ؕ وَہُوَ الۡحَکِیۡمُ الۡخَبِیۡرُ


আলহামদুলিল্লা-হিল্লাযী লাহূমা-ফিছ ছামা-ওয়া-তি ওয়ামা-ফিল আরদিওয়া লাহুল হামদুফিল আ-খিরাতি ওয়াহুওয়াল হাকীমুল খাবীর।


মুফতী তাকী উসমানী

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি এমন যে, আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে যা-কিছু আছে, সব তাঁরই এবং আখেরাতেও প্রশংসা তাঁরই। তিনিই প্রজ্ঞাময়, সর্ববিষয়ে অবহিত।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি নভোমন্ডলে যা আছে এবং ভূমন্ডলে যা আছে সব কিছুর মালিক এবং তাঁরই প্রশংসা পরকালে। তিনি প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

সকল প্রশংসা আল্লাহ্ র , যিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্ত কিছুরই মালিক এবং আখিরাতেও প্রশংসা তাঁরই। তিনি প্রজ্ঞাময়, সর্ববিষয়ে অবহিত।


মাওলানা জহুরুল হক

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্‌র, তিনিই যাঁর অধীনে রয়েছে যা-কিছু আছে মহাকাশমন্ডলীতে ও যা-কিছু আছে পৃথিবীতে, আর তাঁরই সব প্রশংসা পরলোকে। আর তিনিই পরমজ্ঞানী, পূর্ণ ওয়াকিফহান।



یَعۡلَمُ مَا یَلِجُ فِی الۡاَرۡضِ وَمَا یَخۡرُجُ مِنۡہَا وَمَا یَنۡزِلُ مِنَ السَّمَآءِ وَمَا یَعۡرُجُ فِیۡہَا ؕ وَہُوَ الرَّحِیۡمُ الۡغَفُوۡرُ


ইয়া‘লামুমা-ইয়ালিজুফিল আরদিওয়ামা-ইয়াখরুজুমিনহা-ওয়ামা-ইয়ানঝিলু মিনাছছামাই ওয়ামা-ইয়া‘রুজুফীহা- ওয়া হুওয়ার রাহীমুল গাফূর।


মুফতী তাকী উসমানী

তিনি সেই সব কিছু জানেন, যা ভূমিতে প্রবেশ করে, যা তা থেকে নির্গত হয়, যা আকাশ থেকে অবতীর্ণ হয় এবং যা তাতে উত্থিত হয়। ১ তিনিই পরম দয়ালু, অতি ক্ষমাশীল।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তিনি জানেন যা ভূগর্ভে প্রবেশ করে, যা সেখান থেকে নির্গত হয়, যা আকাশ থেকে বর্ষিত হয় এবং যা আকাশে উত্থিত হয়। তিনি পরম দয়ালু ক্ষমাশীল।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তিনি জানেন যা ভূমিতে প্রবেশ করে, যা তা হতে নির্গত হয় এবং যা আকাশ হতে নাযিল হয় এবং যা কিছু এতে উত্থিত হয়। তিনিই পরম দয়ালু, অতিশয় ক্ষমাশীল।


মাওলানা জহুরুল হক

তিনি জানেন যা মাটির ভেতরে প্রবেশ করে আর যা তা থেকে বেরিয়ে আসে, আর যা আকাশ থেকে নেমে আসে আর যা তাতে উঠে যায়। আর তিনিই অফুরন্ত ফলদাতা, পরিত্রাণকারী।


তাফসীরঃ

১. ভূমিতে প্রবেশ করে বৃষ্টির পানি, গুপ্তধন, মরদেহ প্রভৃতি; তা থেকে নির্গত হয় উদ্ভিদ, খনিজ সম্পদ, ঝর্নাধারা প্রভৃতি; আকাশ থেকে অবতীর্ণ হয় বৃষ্টি, ফিরিশতা, রহমত, ওহী প্রভৃতি এবং তাতে উত্থিত হয় মানুষের সৎকর্ম, দু‘আ, ফিরিশতা, রূহ প্রভৃতি। এসব কিছুই আল্লাহ তাআলা বিশদভাবে জানেন। -অনুবাদক



وَقَالَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا لَا تَاۡتِیۡنَا السَّاعَۃُ ؕ  قُلۡ بَلٰی وَرَبِّیۡ لَتَاۡتِیَنَّکُمۡ ۙ  عٰلِمِ الۡغَیۡبِ ۚ  لَا یَعۡزُبُ عَنۡہُ مِثۡقَالُ ذَرَّۃٍ فِی السَّمٰوٰتِ وَلَا فِی الۡاَرۡضِ وَلَاۤ اَصۡغَرُ مِنۡ ذٰلِکَ وَلَاۤ اَکۡبَرُ اِلَّا فِیۡ کِتٰبٍ مُّبِیۡنٍ ٭ۙ


ওয়া কা-লাল্লাযীনা কাফারূ লা-তা’তীনাছছা-‘আতু কুলবালা-ওয়া রাববী লাতা’তিইয়ান্নাকুম ‘আ-লিমিল গাইবি লা-ইয়া‘ঝুবু‘আনহু মিছকা-লুযাররাতিন ফিছছামা-ওয়া-তি ওয়ালা-ফিল আরদিওয়ালাআসগারু মিন যা-লিকা ওয়ালাআকবারু ইল্লা-ফী কিতা-বিম মুবীন।


মুফতী তাকী উসমানী

যারা কুফর অবলম্বন করেছে, তারা বলে, আমাদের উপর কিয়ামত আসবে না। বলে দাও, কেন আসবে না? আমার আলিমুল গায়েব প্রতিপালকের কসম! তোমাদের উপর তা অবশ্যই আসবে। অণু পরিমাণ কোন জিনিসও তার দৃষ্টির আড়ালে থাকতে পারে না ২ না আকাশমণ্ডলীতে এবং না পৃথিবীতে। আর না তার চেয়ে ছোট কোন বস্তু আর না বড় কিছু। সবই এক সুস্পষ্ট কিতাবে (অর্থাৎ লাওহে মাহফুজে) লিপিবদ্ধ আছে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

কাফেররা বলে আমাদের উপর কেয়ামত আসবে না। বলুন কেন আসবে না? আমার পালনকর্তার শপথ-অবশ্যই আসবে। তিনি অদৃশ্য সম্পর্কে জ্ঞাত। নভোমন্ডলে ও ভূ-মন্ডলে তাঁর আগোচরে নয় অণু পরিমাণ কিছু, না তদপেক্ষা ক্ষুদ্র এবং না বৃহৎ-সমস্তই আছে সুস্পষ্ট কিতাবে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

কাফিররা বলে, ‘আমাদের নিকট কিয়ামত আসবে না।’ বল, ‘আসবেই, শপথ আমার প্রতিপালকের, নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট তা আসবে।’ তিনি অদৃশ্য সম্বন্ধে সম্যক পরিজ্ঞাত; আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে তাঁর অগোচর নয় অণু পরিমাণ কিছু কিংবা তদপেক্ষা ক্ষুদ্র বা বৃহৎ কিছু ; এটার প্রত্যেকটি আছে সুস্পষ্ট কিতাবে।


মাওলানা জহুরুল হক

আর যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা বলে -- "ঘড়িঘন্টা আমাদের উপরে আসবে না।" তুমি বলো -- "হাঁ, আমার প্রভুর কসম, এটি অবশ্যই তোমাদের উপরে এসে পড়বে, তিনি অদৃশ্য সন্বন্ধে পরিজ্ঞাত। এক অণুর ওজন পরিমাণও তাঁর থেকে লুকোনো যাবে না মহাকাশমন্ডলীতে, আর পৃথিবীতেও নয়, আর তার থেকে আরো ছোটও নেই এবং বড়ও নেই, -- বরং তা লিপিবদ্ধ রয়েছে এক সুস্পষ্ট গ্রন্থে, --


তাফসীরঃ

২. যে সকল কাফের আখেরাতের জীবনকে অস্বীকার করত, তারা বলত, মানুষ তো মৃত্যুর পর মাটিতে মিশে একাকার হয়ে যায়। এ অবস্থায় তাদের নতুনভাবে জীবন দান করা কিভাবে সম্ভব? এ আয়াতসমূহে তাদের সে প্রশ্নেরই উত্তর দেওয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে, তোমরা আল্লাহ তাআলার জ্ঞান ও শক্তিকে মানুষের জ্ঞান-শক্তির সাথে তুলনা করছ! আল্লাহ তাআলার জ্ঞান তো সর্বব্যাপী। বিশ্ব জগতের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বস্তুও তাঁর জ্ঞান দ্বারা বেষ্টিত। যেই সত্তা আসমান-যমীনের মত বিপুলায়তন মাখলুককে সম্পূর্ণ নাস্তি থেকে অস্তিতে আনয়ন করতে পারেন, তার পক্ষে মাটিতে মিশে যাওয়া মানব দেহের অণু-পরমাণুকে একত্র করে তাতে নতুন জীবন দান করা কঠিন হবে কেন? ৪ নং আয়াতে পরকালীন জীবনের যৌক্তিক প্রয়োজনও ব্যাখ্যা করা হয়েছে। যদি এ দুনিয়াই সবকিছু হয় এবং দ্বিতীয় আর কোন জীবন না থাকে তবে তার অর্থ দাঁড়ায় আল্লাহ তাআলা তাঁর অনুগত ও অবাধ্যদের মধ্যে কোন প্রভেদ রাখেননি, অথচ প্রভেদ থাকা অপরিহার্য। আর সে কারণেই আখেরাতের জীবন জরুরি। সেখানে অনুগতদেরকে তাদের সৎকর্মের পুরস্কার দেওয়া হবে এবং অবাধ্যদেরকে তাদের অসৎকর্মের শাস্তি দেওয়া হবে।



لِّیَجۡزِیَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ ؕ اُولٰٓئِکَ لَہُمۡ مَّغۡفِرَۃٌ وَّرِزۡقٌ کَرِیۡمٌ


লিইয়াজঝিয়াল্লাযীনা আ-মানূওয়া ‘আমিলুসসা-লিহা-তি উলাইকা লাহুম মাগফিরাতুওঁ ওয়ারিঝকুন কারীম।


মুফতী তাকী উসমানী

(কিয়ামত আসবে) এজন্য যে, যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে আল্লাহ তাদেরকে পুরস্কৃত করবেন। এরূপ লোকদের জন্য রয়েছে মাগফিরাত এবং মর্যাদাপূর্ণ রিযক।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তিনি পরিণামে যারা মুমিন ও সৎকর্ম পরায়ণ, তাদেরকে প্রতিদান দেবেন। তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও সম্মান জনক রিযিক।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এটা এজন্যে যে, যারা মু’মিন ও সৎকর্মপরায়ণ তিনি তাদেরকে পুরস্কৃত করবেন। এদেরই জন্যে আছে ক্ষমা ও সম্মানজনক রিযিক।


মাওলানা জহুরুল হক

যেন তিনি প্রতিদান দিতে পারেন তাদের যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে । এরাই -- এদেরই জন্য রয়েছে পরিত্রাণ এবং এক সম্মানিত জীবিকা।



وَالَّذِیۡنَ سَعَوۡ فِیۡۤ اٰیٰتِنَا مُعٰجِزِیۡنَ اُولٰٓئِکَ لَہُمۡ عَذَابٌ مِّنۡ رِّجۡزٍ اَلِیۡمٌ


ওয়াল্লাযীনা ছা‘আও ফী আয়া-তিনা- মু‘আজিঝীনা উলাইকা লাহুম ‘আযা-বুম্মির রিজঝিন আলীম।


মুফতী তাকী উসমানী

আর যারা আমার আয়াতসমূহকে ব্যর্থ করে দেওয়ার চেষ্টা করেছে, তাদের জন্য আছে মুসিবতের যন্ত্রণাময় শাস্তি।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আর যারা আমার আয়াত সমূহকে ব্যর্থ করার জন্য উঠে পড়ে লেগে যায়, তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যারা আমার আয়াতকে ব্যর্থ করার চেষ্টা করে তাদের জন্যে রয়েছে ভয়ংকর মর্মন্তুদ শাস্তি।


মাওলানা জহুরুল হক

আর যারা আমাদের নির্দেশাবলীকে ব্যর্থ করার প্রচেষ্টা চালায়, এরাই -- এদেরই জন্য রয়েছে এক মর্মন্তুদ দুর্দশার শাস্তি।



وَیَرَی الَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡعِلۡمَ الَّذِیۡۤ اُنۡزِلَ اِلَیۡکَ مِنۡ رَّبِّکَ ہُوَ الۡحَقَّ ۙ وَیَہۡدِیۡۤ اِلٰی صِرَاطِ الۡعَزِیۡزِ الۡحَمِیۡدِ


ওয়া ইয়ারাল্লাযীনা ঊতুল ‘ইলমাল্লাযীউনঝিলা ইলাইকা মির রাব্বিকা হুওয়াল হাক্কা ওয়া ইয়াহদীইলা-সিরা-তিল ‘আঝীঝিল হামীদ।


মুফতী তাকী উসমানী

(হে নবী!) যাদেরকে জ্ঞান দেওয়া হয়েছে, তারা ভালো করেই বোঝে তোমার প্রতি তোমার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে যা নাযিল করা হয়েছে তা সত্য এবং তা সেই সত্তার পথ দেখায় যিনি ক্ষমতারও মালিক, সমস্ত প্রশংসারও উপযুক্ত।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যারা জ্ঞানপ্রাপ্ত, তারা আপনার পালনকর্তার নিকট থেকে অবর্তীর্ণ কোরআনকে সত্য জ্ঞান করে এবং এটা মানুষকে পরাক্রমশালী, প্রশংসার্হ আল্লাহর পথ প্রদর্শন করে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যাদেরকে জ্ঞান দেওয়া হয়েছে তারা জানে যে, তোমার প্রতিপালকের নিকট হতে তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তাই সত্য ; এটা পরাক্রমশালী প্রশংসার্হ আল্লাহ্ র পথনির্দেশ করে।


মাওলানা জহুরুল হক

আর যাদের জ্ঞান দেওয়া হয়েছে তারা দেখতে পায় যে তোমার কাছে তোমার প্রভুর কাছ থেকে যা অবতারণ করা হয়েছে তাই সত্য, আর তা পরিচালিত করে মহাশক্তিশালী পরম প্রশংসিতের পথে।



وَقَالَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا ہَلۡ نَدُلُّکُمۡ عَلٰی رَجُلٍ یُّنَبِّئُکُمۡ اِذَا مُزِّقۡتُمۡ کُلَّ مُمَزَّقٍ ۙ  اِنَّکُمۡ لَفِیۡ خَلۡقٍ جَدِیۡدٍ ۚ


ওয়া কা-লাল্লাযীনা কাফারূহাল নাদুল্লুকুম ‘আলা-রাজুলিইঁ ইউনাব্বিউকুম ইযা-মুঝঝিকতুম কুল্লা মুমাঝঝাকিন ইন্নাকুম লাফী খালকিন জাদীদ।


মুফতী তাকী উসমানী

কাফেরগণ (একে অন্যকে) বলে, আমরা কি তোমাদেরকে এমন এক ব্যক্তির কথা জানাব, যে তোমাদেরকে সংবাদ দেয় যে, তোমরা (মৃত্যুর পর) যখন ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যাবে, তারপরও তোমরা এক নতুন জীবন লাভ করবে?


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

কাফেররা বলে, আমরা কি তোমাদেরকে এমন ব্যক্তির সন্ধান দেব, যে তোমাদেরকে খবর দেয় যে; তোমরা সম্পুর্ণ ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেও তোমরা নতুন সৃজিত হবে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

কাফিররা বলে, আমরা কি তোমাদেরকে এমন ব্যক্তির সন্ধান দিব যে তোমাদেরকে বলে, ‘তোমাদের দেহ সম্পূর্ণ ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়িলেও তোমরা নূতন সৃষ্টিরূপে উত্থিত হবেই ?’


মাওলানা জহুরুল হক

আর যারা অবিশ্বাস করে তারা বলে -- "আমরা কি তোমাদের সন্ধান দেব এমন এক ব্যক্তির যে তোমাদের জানায় যে যখন তোমরা চুরমার হয়ে গেছো পুরোপুরি চূর্ণবিচূর্ণ অবস্থায়, তখনও তোমরা কিন্তু নতুন সৃষ্টি লাভ করবে?

(ads2)

(getButton) #text=(আল কোরআন বাংলা অনুবাদ সহ এক সাথে ) #icon=(link) #color=(#084dc4)


اَفۡتَرٰی عَلَی اللّٰہِ کَذِبًا اَمۡ بِہٖ جِنَّۃٌ ؕ بَلِ الَّذِیۡنَ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ بِالۡاٰخِرَۃِ فِی الۡعَذَابِ وَالضَّلٰلِ الۡبَعِیۡدِ


আফতারা-‘আলাল্লা-হি কাযিবান আম বিহী জিন্নাতুম বালিল্লাযীনা লা-ইউ’মিনূনা বিলআ-খিরাতি ফিল ‘আযা-বি ওয়াদ্দালা-লিল বা‘ঈদ।


মুফতী তাকী উসমানী

(কে জানে) সে কি আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করছে না কি সে বিকারগ্রস্ত? না, বরং যারা আখেরাতে বিশ্বাস রাখে না তারা আযাব ও ঘোর বিভ্রান্তিতে রয়েছে। ৩


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

সে আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা বলে, না হয় সে উম্মাদ এবং যারা পরকালে অবিশ্বাসী, তারা আযাবে ও ঘোর পথভ্রষ্টতায় পতিত আছে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

সে কি আল্লাহ্ সম্বন্ধে মিথ্যা উদ্ভাবন করে বা সে কি উন্মাদ ? বস্তুত যারা আখিরাতে বিশ্বাস করে না তারা শাস্তি ও ঘোর বিভ্রান্তিতে রয়েছে।


মাওলানা জহুরুল হক

"সে আল্লাহ্‌র বিরুদ্ধে হয় মিথ্যা রচনা করেছে, নয়তো তার মধ্যে রয়েছে জিনভূত।" বস্তুতঃ যারা পরকালে বিশ্বাস করে না তারা আছে শাস্তিতে ও সুদূরপ্রসারী বিভ্রান্তিতে।


তাফসীরঃ

৩. এটা আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে কাফেরদের উল্লেখিত মন্তব্যের জবাব। তারা মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে দু’টি সম্ভাবনা উল্লেখ করেছিল। একটি এই যে, তিনি আল্লাহ তাআলার প্রতি মিথ্যা আরোপ করছেন, যা আল্লাহর শাস্তিকে ডেকে আনার নামান্তর। এর জবাবে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর আযাবকে ডেকে আনার মত কোন কাজ করেননি। এর বিপরীতে যারা আখেরাতকে অবিশ্বাস করছে তারাই বরং আযাবের কাজ করছে। কাফেরগণ দ্বিতীয় সম্ভাবনা ব্যক্ত করেছিল এই যে, তিনি বিকারগ্রস্ত হয়ে গেছেন আর উন্মাদ অবস্থায় যদিও শাস্তি দেওয়া হয় না, কিন্তু এরূপ ব্যক্তি তো অবশ্যই বিপথগামী হয়ে থাকে। এর উত্তরে বলা হয়েছে, বিপথগামী তিনি নন; বরং যারা আখেরাত অবিশ্বাস করে তারাই চরম গোমরাহীতে লিপ্ত।



اَفَلَمۡ یَرَوۡا اِلٰی مَا بَیۡنَ اَیۡدِیۡہِمۡ وَمَا خَلۡفَہُمۡ مِّنَ السَّمَآءِ وَالۡاَرۡضِ ؕ  اِنۡ نَّشَاۡ نَخۡسِفۡ بِہِمُ الۡاَرۡضَ اَوۡ نُسۡقِطۡ عَلَیۡہِمۡ کِسَفًا مِّنَ السَّمَآءِ ؕ  اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیَۃً لِّکُلِّ عَبۡدٍ مُّنِیۡبٍ ٪


আফালাম ইয়ারাও ইলা-মা-বাইনা আইদীহিম ওয়ামা- খালফাহুম মিনাছছামাই ওয়াল আরদি ইন নাশা’ নাখছিফ বিহিমূল আরদা আও নুছকিতআলাইহিম কিছাফাম মিনাছছামাই ইন্না ফী যা-লিকা লাআ-য়াতাল লিকুল্লি ‘আবদিম মুনীব।


মুফতী তাকী উসমানী

তবে কি তারা আসমান ও যমীনের প্রতি লক্ষ করেনি, যা তাদের সামনেও বিদ্যমান আছে এবং পিছনেও? আমি ইচ্ছা করলে তাদেরকে ভূমিতে ধসিয়ে দেব অথবা তাদের উপর আকাশের কিছু খণ্ড ফেলে দেব। বস্তুত এর মধ্যে নিদর্শন আছে প্রত্যেক এমন বান্দার জন্য, যে আল্লাহর দিকে রুজু হয়।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তারা কি তাদের সামনের ও পশ্চাতের আকাশ ও পৃথিবীর প্রতিলক্ষ্য করে না? আমি ইচ্ছা করলে তাদের সহ ভূমি ধসিয়ে দেব অথবা আকাশের কোন খন্ড তাদের উপর পতিত করব। আল্লাহ অভিমুখী প্রত্যেক বান্দার জন্য এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরা কি এদের সামনে ও পশ্চাতে আসমান ও যমীনে যা আছে তার প্রতি লক্ষ্য করে না ? আমি ইচ্ছা করলে এদেরকেসহ ভ‚মি ধসিয়ে দিব বা এদের ওপর আকাশখণ্ডের পতন ঘটাব ; আল্লাহ্ র অভিমুখী প্রতিটি বান্দার জন্যে এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে।


মাওলানা জহুরুল হক

তারা কি তবে দেখে না তাদের সামনে কী রয়েছে আর কী রয়েছে তাদের পেছনে -- মহাকাশে ও পৃথিবীতে। আমরা যদি চাইতাম তবে তাদের সঙ্গে পৃথিবীকে ধসিয়ে দিতাম, অথবা তাদের উপরে আকাশ থেকে একটি চাঙড় ফেলে দিতাম। নিঃসন্দেহ এতে তো এক নিদর্শন রয়েছে প্রত্যাবৃত প্রত্যেক বান্দার জন্য।


১০


وَلَقَدۡ اٰتَیۡنَا دَاوٗدَ مِنَّا فَضۡلًا ؕ  یٰجِبَالُ اَوِّبِیۡ مَعَہٗ وَالطَّیۡرَ ۚ  وَاَلَنَّا لَہُ الۡحَدِیۡدَ ۙ


ওয়া লাকাদ আ-তাইনা দা-ঊদা মিন্না-ফাদলাইঁ ইয়া-জিবা-লুআওব্বিী মা‘আহূ ওয়াত্তাইরা ওয়া আলান্না-লাহুল হাদীদ।


মুফতী তাকী উসমানী

নিশ্চয়ই আমি দাঊদকে বিশেষভাবে আমার নিকট থেকে অনুগ্রহ দান করেছিলাম। হে পাহাড়-পর্বত! তোমরাও দাঊদের সঙ্গে আমার তাসবীহ পড় এবং হে পাখিরা তোমরাও। ৪ আর আমি তার জন্য লোহাকে নরম করে দিয়েছিলাম।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি দাউদের প্রতি অনুগ্রহ করেছিলাম এই আদেশ মর্মে যে, হে পর্বতমালা, তোমরা দাউদের সাথে আমার পবিত্রতা ঘোষণা কর এবং হে পক্ষী সকল, তোমরাও। আমি তাঁর জন্য লৌহকে নরম করে ছিলাম।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আমি নিশ্চয়ই দাঊদের প্রতি অনুগ্রহ করেছিলাম এবং আদেশ করেছিলাম, ‘হে পর্বতমালা ! তোমরা দাঊদের সঙ্গে আমার পবিত্রতা ঘোষণা কর’ এবং বিহঙ্গকুলকেও, তার জন্যে নমনীয় করেছিলাম লৌহ-


মাওলানা জহুরুল হক

আর আমরা নিশ্চয়ই দাউদকে আমাদের কাছ থেকে দিয়েছিলাম করুণাভান্ডার। "হে পাহাড়গুলো! তাঁর সঙ্গে একমুখো হও, আর পাখীরাও।" আর লোহাকেও আমরা তাঁর জন্য গলিয়েছিলাম,


তাফসীরঃ

৪. হযরত দাঊদ আলাইহিস সালাম অত্যন্ত মধুরকণ্ঠী ছিলেন, আল্লাহ তাআলা পাহাড়-পর্বত ও পাখিদেরকেও তার সাথে তাসবীহ পাঠে রত থাকার জন্য নিয়োজিত করে দিয়েছিলেন। ফলে তারাও তাঁর সাথে তাসবীহ পাঠে রত থাকত। এতে পরিবেশ এক অপার্থিব সুর-মূর্ছনায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ত। পাহাড় ও পাখীদের তাসবীহ পাঠের ক্ষমতা লাভ ছিল হযরত দাঊদ আলাইহিস সালামের এক বিশেষ মুজিযা।


১১


اَنِ اعۡمَلۡ سٰبِغٰتٍ وَّقَدِّرۡ فِی السَّرۡدِ وَاعۡمَلُوۡا صَالِحًا ؕ اِنِّیۡ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ بَصِیۡرٌ


আনি‘মাল ছা-বিগা-তিওঁ ওয়া কাদ্দির ফিছছারদি ওয়া‘মালূসা-লিহান ইন্নী বিমাতা‘মালূনা বাসীর।


মুফতী তাকী উসমানী

যাতে তুমি পূর্ণ মাপের বর্ম তৈরি কর এবং কড়াসমূহ জোড়ার ক্ষেত্রে পরিমাপ রক্ষা কর। ৫ তোমরা সকলে সৎকর্ম কর। তোমরা যা-কিছুই কর আমি তার দ্রষ্টা।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এবং তাকে আমি বলে ছিলাম, প্রশস্ত বর্ম তৈরী কর, কড়াসমূহ যথাযথভাবে সংযুক্ত কর এবং সৎকর্ম সম্পাদন কর। তোমরা যা কিছু কর, আমি তা দেখি।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘যাতে তুমি পূর্ণ মাপের বর্ম তৈয়ার করতে এবং বুননে পরিমাণ রক্ষা করতে পার’ এবং তোমরা সৎকর্ম কর, তোমরা যা কিছু কর আমি এর সম্যক দ্রষ্টা।


মাওলানা জহুরুল হক

এই বলে -- "তুমি চওড়া বর্ম তৈরি কর, আর আংটাসমূহে যথাযথ পরিমাপ দাও, আর তোমরা সৎকর্ম কর। নিঃসন্দেহ তোমরা যা করছ আমি তার সম্যক দ্রষ্টা।"


তাফসীরঃ

৫. এটা হযরত দাঊদ আলাইহিস সালামের আরেকটি মুজিযার বর্ণনা। সেকালে শত্রুর অস্ত্রের আঘাত থেকে আত্মরক্ষার জন্য যে বর্ম পরিধান করা হত তা তৈরি করার বিশেষ নৈপুণ্য আল্লাহ তাআলা তাঁকে দান করেছিলেন, এ শিল্পে তাঁর বিশেষত্ব ছিল এই যে, লোহা তার হাতের স্পর্শ মাত্র মোমের মত নরম হয়ে যেত। তিনি যেভাবে ইচ্ছা তা বাঁকাতে পারতেন। এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা বিশেষভাবে একথাও উল্লেখ করে দিয়েছেন যে, তিনি হযরত দাঊদ আলাইহিস সালামকে নির্দেশনা দিয়েছিলেন, যেন বর্মের কড়াসমূহের ভেতর পারস্পরিক পরিমাণ ও সামঞ্জস্য রক্ষা করেন। এর ভেতর আমাদের জন্য এই শিক্ষা রয়েছে যে প্রতিটি কাজ ও প্রতিটি শিল্পে যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখা এবং তাতে যথাযথ পরিমাণ ও ভারসাম্য রক্ষা করা আল্লাহ তাআলার পছন্দ।


১২


وَلِسُلَیۡمٰنَ الرِّیۡحَ غُدُوُّہَا شَہۡرٌ وَّرَوَاحُہَا شَہۡرٌ ۚ وَاَسَلۡنَا لَہٗ عَیۡنَ الۡقِطۡرِ ؕ وَمِنَ الۡجِنِّ مَنۡ یَّعۡمَلُ بَیۡنَ یَدَیۡہِ بِاِذۡنِ رَبِّہٖ ؕ وَمَنۡ یَّزِغۡ مِنۡہُمۡ عَنۡ اَمۡرِنَا نُذِقۡہُ مِنۡ عَذَابِ السَّعِیۡرِ


ওয়া লিছুলাইমা-নাররীহা গুদুওউহা-শাহরুওঁ ওয়ারাওয়া-হুহা-শাহরুওঁ ওয়া আছালনালাহু ‘আইনাল কিতরি ওয়ামিনাল জিন্নি মাইঁ ইয়া‘মালুবাইনা ইয়াদাইহি বিইযনি রাব্বিহী ওয়া মাইঁ ইয়াঝিগ মিনহুম ‘আন আমরিনা-নুযিকহু মিন ‘আযা-বিছছা‘ঈর।


মুফতী তাকী উসমানী

আমি বায়ুকে সুলায়মানের আজ্ঞাধীন করে দিয়েছিলাম। তার ভোরের সফর হত এক মাসের দূরত্বে এবং সন্ধ্যার সফরও হত এক মাসের দূরত্বে। ৬ আর আমি তার জন্য গলিত তামার এক প্রস্রবণ প্রবাহিত করেছিলাম। ৭ কতক জিন ছিল, যারা তার প্রতিপালকের নির্দেশে তার সামনে কাজ করত। ৮ (আমি তাদের কাছে একথা পরিষ্কার করে দিয়েছিলাম যে,) তাদের মধ্যে যে-কেউ আমার আদেশ অমান্য করে বাঁকা পথ অবলম্বন করবে আমি তাকে জ্বলন্ত আগুনের স্বাদ গ্রহণ করাব।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আর আমি সোলায়মানের অধীন করেছিলাম বায়ুকে, যা সকালে এক মাসের পথ এবং বিকালে এক মাসের পথ অতিক্রম করত। আমি তার জন্যে গলিত তামার এক ঝরণা প্রবাহিত করেছিলাম। কতক জিন তার সামনে কাজ করত তার পালনকর্তার আদেশে। তাদের যে কেউ আমার আদেশ অমান্য করবে, আমি জ্বলন্ত অগ্নির-শাস্তি আস্বাদন করাব।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আমি সুলায়মানের অধীন করেছিলাম বায়ুকে যা প্রভাতে এক মাসের পথ অতিক্রম করত এবং সন্ধ্যায় এক মাসের পথ অতিক্রম করত। আমি তার জন্যে গলিত তাম্রের এক প্রস্রবণ প্রবাহিত করেছিলাম। তার প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে জিনদের কতক তার সামনে কাজ করত। এদের মধ্যে যে আমার নির্দেশ অমান্য করে তাকে আমি জ্বলন্ত অগ্নি-শাস্তি আস্বাদন করাব।


মাওলানা জহুরুল হক

আর সুলাইমানের জন্য বায়ূপ্রবাহ। এর সকালবেলাকার গতি একমাস এবং এর বিকেলবেলার গতি একমাস, আর আমরা তার জন্য তামার নদী বইয়ে দিয়েছিলাম। আর তাদের মধ্যের যে কেউ আমাদের নির্দেশ থেকে সরে যেত তাকে আমরা আস্বাদন করাতাম জ্বলন্ত আগুনের শাস্তি থেকে।


তাফসীরঃ

৬. এটা হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালামকে প্রদত্ত একটি মুজিযা। আল্লাহ তাআলা বাতাসকে তার আজ্ঞাবহ করে দিয়েছিলেন। তিনি বাতাসের গতিকে কাজে লাগিয়ে দূর-দূরান্তের সফর সংক্ষিপ্ত সময়ের ভেতর সেরে ফেলতেন। কুরআন মাজীদ এ মুজিযার বিস্তারিত বিবরণ পেশ করেনি। কোন কোন বর্ণনা দ্বারা জানা যায়, তার সিংহাসনকে বাতাসে উড়ে চলার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল। ফলে সাধারণত যে সফর করতে এক মাস সময় ব্যয় হত, তিনি তা এক সকাল বা এক বিকালেই অতিক্রম করতে পারতেন।


৭. এটাও হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালামকে প্রদত্ত আল্লাহ তাআলার আরেকটি নি‘আমত। তামার একটি খনি তাঁর হস্তগত ছিল। আল্লাহ তাআলা তাঁর জন্য সে তামাকে তরল করে দিয়েছিলেন। ফলে অতি সহজেই তামার আসবাবপত্র তৈরি হয়ে যেত।


৮. হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালামের আরেকটি মুজিযা হল তাঁর প্রতি জিন্নদের আনুগত্য। যে সকল দুষ্ট জিন কারও বশ মানত না আল্লাহ তাআলা তাদেরকে হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালামের আজ্ঞাবহ বানিয়ে দিয়েছিলেন। ফলে তাঁকে বিভিন্ন রকমের সেবা দান করত। তাদের সেবার কিছু নমুনা সামনে উল্লেখ করা হচ্ছে। প্রকাশ থাকে যে, জিন্নদেরকে হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালামের বশীভূত করে দিয়েছিলেন আল্লাহ তাআলা নিজেই। আজকাল যে লোকে বিভিন্ন বশীকরণ পদ্ধতির মাধ্যমে জিন্ন্দেরকে বশ বানানোর দাবি করে থাকে, মনে রাখতে হবে সাধারণভাবে তা কিছুতেই জায়েয নয়। যদি সে দাবি সঠিক হয় এবং বশীকরণের জন্য কোন অবৈধ পন্থা অবলম্বন করা না হয়ে থাকে, তবে এটা কেবল এ অবস্থায়ই বৈধ হতে পারে যখন উদ্দেশ্য হবে দুষ্ট জিন্নদের ক্ষতি থেকে আত্মরক্ষা করা। অন্যথায় ক্ষতিকর নয় এমন কোন স্বাধীন জিন্নকে দাস বানিয়ে রাখা কি করে জায়েয হতে পারে?


১৩


یَعۡمَلُوۡنَ لَہٗ مَا یَشَآءُ مِنۡ مَّحَارِیۡبَ وَتَمَاثِیۡلَ وَجِفَانٍ کَالۡجَوَابِ وَقُدُوۡرٍ رّٰسِیٰتٍ ؕ اِعۡمَلُوۡۤا اٰلَ دَاوٗدَ شُکۡرًا ؕ وَقَلِیۡلٌ مِّنۡ عِبَادِیَ الشَّکُوۡرُ


ইয়া‘মালূনা লাহু মা-ইয়াশাউ মিম মাহা-রীবা ওয়া তামা-ছীলা ওয়া জিফা-নিন কাল জাওয়া-বি ওয়া কুদূ রির রা-ছিয়া-তিন ই‘মালূআ-লা দা-ঊদা শুকরাওঁ ওয়া কালীলুম মিন ‘ইবা-দিয়াশশাকূর।


মুফতী তাকী উসমানী

সুলায়মান যা চাইত, তারা তার জন্য তা বানিয়ে দিত উঁচু উঁচু ইমারত, ছবি, ৯ হাউজের মত বড় বড় পাত্র এবং ভূমিতে দৃঢ়ভাবে স্থাপিত ডেগ। হে দাঊদের খান্দান! তোমরা (ইবাদত-আনুগত্যের) কাজ কর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনার্থে। আমার বান্দাদের মধ্যে শোকরগুজার লোক অল্পই।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তারা সোলায়মানের ইচ্ছানুযায়ী দুর্গ, ভাস্কর্য, হাউযসদৃশ বৃহদাকার পাত্র এবং চুল্লির উপর স্থাপিত বিশাল ডেগ নির্মাণ করত। হে দাউদ পরিবার! কৃতজ্ঞতা সহকারে তোমরা কাজ করে যাও। আমার বান্দাদের মধ্যে অল্পসংখ্যকই কৃতজ্ঞ।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরা সুলায়মানের ইচ্ছানুযায়ী প্রাসাদ, ভাস্কর্য, হাওযসদৃশ বৃহদাকার পাত্র এবং সুদৃঢ়ভাবে স্থাপিত ডেগ নির্মাণ করত। আমি বলেছিলাম, ‘হে দাঊদ-পরিবার! কৃতজ্ঞতার সঙ্গে তোমরা কাজ করতে থাক। আমার বান্দাদের মধ্যে অল্পই কৃতজ্ঞ!’


মাওলানা জহুরুল হক

তারা তাঁর জন্য তৈরি করত যা তিনি চাইতেন, যথা দুর্গপ্রাসাদ ও ভাস্কর্য-প্রতিমূর্তি, আর গামলার ন্যায় থালা, আর অনড়-হয়ে- বসা ডেগ। "হে দাউদের পরিবার! কৃতজ্ঞতার সাথে কাজ করে যাও।" আর আমার বান্দাদের মধ্যে অল্পকয়জনই কৃতজ্ঞ।


তাফসীরঃ

৯. প্রকাশ থাকে যে, এসব ছবি হত নিষ্প্রাণ বস্তুর, যেমন গাছপালা, ইমারত ইত্যাদি। কেননা তাওরাত দ্বারা জানা যায়, হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালামের শরীয়তেও প্রাণীর ছবি আঁকা জায়েয ছিল না।


১৪


فَلَمَّا قَضَیۡنَا عَلَیۡہِ الۡمَوۡتَ مَا دَلَّہُمۡ عَلٰی مَوۡتِہٖۤ اِلَّا دَآبَّۃُ الۡاَرۡضِ تَاۡکُلُ مِنۡسَاَتَہٗ ۚ  فَلَمَّا خَرَّ تَبَیَّنَتِ الۡجِنُّ اَنۡ لَّوۡ کَانُوۡا یَعۡلَمُوۡنَ الۡغَیۡبَ مَا لَبِثُوۡا فِی الۡعَذَابِ الۡمُہِیۡنِ ؕ


ফালাম্মা-কাদাইনা-‘আলাইহিল মাওতা মা-দাল্লাহুম ‘আলা-মাওতিহী-ইল্লা-দাব্বাতুল আরদিতা’কুলুমিন ছাআতাহু ফালাম্মা-খাররা তাবাইয়ানাতিল জিন্নুআল্লাও কা-নূ ইয়া‘লামূনাল গাইবা মা-লাবিছূফিল ‘আযা-বিল মুহীন।


মুফতী তাকী উসমানী

অতঃপর আমি যখন সুলায়মানের মৃত্যুর সিদ্ধান্ত নিলাম তখন জিনদেরকে তার মৃত্যু বিষয়ে জানাল কেবল মাটির পোকা, যারা তার লাঠি খাচ্ছিল। ১০ সুতরাং যখন সে পড়ে গেল তখন জিনরা বুঝতে পারল, তারা যদি গায়েবের জ্ঞান রাখত তবে এই লাঞ্ছনাকর কষ্টে পড়ে থাকত না।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যখন আমি সোলায়মানের মৃত্যু ঘটালাম, তখন ঘুণ পোকাই জিনদেরকে তাঁর মৃত্যু সম্পর্কে অবহিত করল। সোলায়মানের লাঠি খেয়ে যাচ্ছিল। যখন তিনি মাটিতে পড়ে গেলেন, তখন জিনেরা বুঝতে পারল যে, অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান থাকলে তারা এই লাঞ্ছনাপূর্ণ শাস্তিতে আবদ্ধ থাকতো না।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যখন আমি সুলায়মানের মৃত্যু ঘটাইলাম তখন জিনদেরকে তার মৃত্যু বিষয় জানাল কেবল মাটির পোকা যা তার লাঠি খাচ্ছিল। যখন সে পড়ে গেল তখন জিনেরা বুঝতে পারল যে, এরা যদি অদৃশ্য বিষয় অবগত থাকত তা হলে এরা লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তিতে আবদ্ধ থাকত না।


মাওলানা জহুরুল হক

তারপর যখন আমরা তাঁর প্রতি মৃত্যুবিধান করেছিলাম তখন কিছুই তাদের কাছে তাঁর মৃত্যু সন্বন্ধে জানতে দেয় নি শুধু এক মাটির কীট ব্যতীত, সে খেয়ে ফেলেছিল তাঁর শাঁস। তারপর যখন তার পতন ঘটল তখন জিনেরা পরিস্কারভাবে বুঝলো যে যদি তারা অদৃশ্যটা জানতো তাহলে তারা লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তিতে অবস্থান করত না।


তাফসীরঃ

১০. হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম বায়তুল মুকাদ্দাসের নির্মাণ কার্যে জিনদেরকে নিযুক্ত করেছিলেন। সে জিনগুলো ছিল অত্যন্ত দুষ্টপ্রকৃতির ও অবাধ্য। তারা কেবল হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালামের তত্ত্বাবধানেই কাজ করত। অন্য কাউকে মানত না। তাই আশঙ্কা ছিল হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালামের জীবদ্দশায় যদি বায়তুল মুকাদ্দাসের নির্মাণ কার্য শেষ না হয়, তবে পরে এ কাজ সম্পূর্ণ করা কঠিন হয়ে যাবে। কেননা জিনরা কাজ ছেড়ে দেবে। অথচ সুলাইমান আলাইহিস সালামের আয়ুও শেষ হয়ে গিয়েছিল। কাজেই তিনি এই কৌশল অবলম্বন করলেন যে, মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে আসলে তিনি জিনদের চোখের সামনে নিজ ইবাদতখানায় একটি লাঠিতে ভর করে দাঁড়িয়ে গেলেন, যাতে তারা মনে করে তিনি যথারীতি তদারকি করছেন। তাঁর ইবাদতখানা ছিল স্বচ্ছ কাঁচনির্মিত। বাইরে থেকে সব দেখা যেত। দাঁড়ানো অবস্থায়ই তাঁর ওফাত হয়ে গেল। কিন্তু আল্লাহ তাআলা তাকে লাঠিতে ভররত অবস্থায় দাঁড় করিয়ে রাখলেন। জিনরা মনে করছিল তিনি জীবিতই আছেন এবং তদারকি করছেন। কাজেই তারা একটানা কাজ করতে থাকল এবং নির্মাণকার্য এক সময় সম্পূর্ণ হয়ে গেল। ইতোমধ্যে আল্লাহ তাআলা তাঁর লাঠিতে উইপোকা লাগিয়ে দিলেন। তারা লাঠিটি খেতে থাকল। ফলে সেটি দুর্বল হয়ে ভেঙ্গে গেল এবং সুলাইমান আলাইহিস সালামের দেহ মাটিতে পড়ে গেল। তখন জিনরা উপলব্ধি করতে পারল, তারা যে নিজেদেরকে অদৃশ্যের জান্তা মনে করত তা কত বড় ভুল ছিল! গায়েব জানলে তাদেরকে এতদিন পর্যন্ত ভুলের মধ্যে থেকে নির্মাণকার্যের কষ্ট পোহাতে হত না।


১৫


لَقَدۡ کَانَ لِسَبَاٍ فِیۡ مَسۡکَنِہِمۡ اٰیَۃٌ ۚ جَنَّتٰنِ عَنۡ یَّمِیۡنٍ وَّشِمَالٍ ۬ؕ کُلُوۡا مِنۡ رِّزۡقِ رَبِّکُمۡ وَاشۡکُرُوۡا لَہٗ ؕ بَلۡدَۃٌ طَیِّبَۃٌ وَّرَبٌّ غَفُوۡرٌ


লাকাদ কা-না লিছাবাইন ফী মাছকানিহিম আ-য়াতুন জান্নাতা-নি আইঁ ইয়ামীনিওঁ ওয়াশিমা-লিন কুলূমির রিযকিরাব্বিকুম ওয়াশকুরূলাহূ বালদাতুন তাইয়িবাতুওঁ ওয়া রাব্বুন গাফূর।


মুফতী তাকী উসমানী

নিশ্চয়ই সাবা সম্প্রদায়ের জন্য তাদের বাসভূমিতে ছিল এক নিদর্শন। ১১ ডান ও বাম উভয় দিকে ছিল বাগানের সারি। নিজ প্রতিপালকের দেওয়া রিযক খাও এবং তাঁর শোকর আদায় কর। একদিকে তো উৎকৃষ্ট নগর, অন্যদিকে ক্ষমাশীল প্রতিপালক!


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

সাবার অধিবাসীদের জন্যে তাদের বাসভূমিতে ছিল এক নিদর্শন-দুটি উদ্যান, একটি ডানদিকে, একটি বামদিকে। তোমরা তোমাদের পালনকর্তার রিযিক খাও এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। স্বাস্থ্যকর শহর এবং ক্ষমাশীল পালনকর্তা।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

সাবাবাসীদের জন্যে তো এদের বাসভ‚মিতে ছিল এক নিদর্শন : দুইটি উদ্যান, একটি ডান দিকে, অপরটি বাম দিকে, এদেরকে বলা হয়েছিল, ‘তোমরা তোমাদের প্রতিপালক-প্রদত্ত রিযিক ভোগ কর এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। উত্তম নগরী এবং ক্ষমাশীল প্রতিপালক।’


মাওলানা জহুরুল হক

সাবা’র জন্য তাদের বাসভূমিতে নিশ্চয়ই একটি নিদর্শন ছিল -- দুইটি বাগান, ডান দিকে ও বাঁয়ে। "তোমাদের প্রভুর রিযেক থেকে আহার করো ও তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো। এক উৎকৃষ্ট ভূখন্ড এবং একজন পরিত্রাণকারী প্রভু।


তাফসীরঃ

১১. সাবা সম্প্রদায় ইয়ামানে বাস করত। এক কালে সভ্যতা-সংস্কৃতিতে এ জাতি অসাধারণ উৎকর্ষ লাভ করেছিল। কুরআন মাজীদের ভাষ্য মতে তাদের ভূমি ছিল অত্যন্ত উর্বর। প্রচুর ফসল তাতে জন্মাত। তাদের মহা সড়কের দু’পাশে ছিল সারি সারি ফলের বাগান এবং তা বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। অর্থ-সম্পদে যেমন ছিল সমৃদ্ধ তেমনি রাজনৈতিকভাবেও ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী। কিন্তু কালক্রমে তারা ভোগ-বিলাসিতায় এমনভাবে মগ্ন হয়ে পড়ল যে, তারা আল্লাহ তাআলাকে ভুলে গেল, তাঁর বিধি-বিধান পরিত্যাগ করল এবং শিরকী কর্মকাণ্ডকে নিজেদের ধর্ম বানিয়ে নিল। আল্লাহ তাআলা তাদেরকে সতর্ক করার জন্য তাদের কাছে কয়েকজন নবী পাঠালেন। হাফেজ ইবনে কাছীর (রহ.)-এর বর্ণনা মতে তাদের কাছে একের পর এক তেরজন নবীর আগমন হয়েছিল। নবীগণ তাদেরকে নানাভাবে বোঝানোর চেষ্টা করলেন এবং তারা যাতে সুপথে চলে আসে সেজন্য মেহনত করতে থাকলেন, কিন্তু তারা তাঁদের কথা মানল না। পরিশেষে তাদের উপর শাস্তি আসল। ‘মাআরিব’ নামক স্থানে একটি বাঁধ ছিল। সেই বাঁধের পানি দিয়ে তাদের জমি চাষাবাদ করা হত। আল্লাহ তাআলা সেই বাঁধটি ভেঙ্গে দিলেন। ফলে গোটা জনপদ পানিতে ভেসে গেল এবং বাগান গেল ধ্বংস হয়ে।


১৬


فَاَعۡرَضُوۡا فَاَرۡسَلۡنَا عَلَیۡہِمۡ سَیۡلَ الۡعَرِمِ وَبَدَّلۡنٰہُمۡ بِجَنَّتَیۡہِمۡ جَنَّتَیۡنِ ذَوَاتَیۡ اُکُلٍ خَمۡطٍ وَّاَثۡلٍ وَّشَیۡءٍ مِّنۡ سِدۡرٍ قَلِیۡلٍ


ফাআ‘রাদূ ফাআরছালনা-‘আলাইহিম ছাইলাল ‘আরিমি ওয়া বাদ্দালনা-হুম বিজান্নাতাইহিম জান্নাতাইনি যাওয়া-তাই উকুলিন খামতিওঁ ওয়া আছলিওঁ ওয়া শাইয়িম মিন ছিদরিন কালীল।


মুফতী তাকী উসমানী

তা সত্ত্বেও তারা (হেদায়াত থেকে) মুখ ফিরিয়ে নিল। ফলে আমি তাদের উপর বাঁধভাঙ্গা বন্যা ছেড়ে দিলাম এবং তাদের দু’পাশের বাগান দু’টিকে এমন দু’টি বাগান দ্বারা পরিবর্তিত করে দিলাম, যা ছিল বিস্বাদ ফল, ঝাউ গাছ ও সামান্য কিছু কুল গাছ সম্বলিত।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

অতঃপর তারা অবাধ্যতা করল ফলে আমি তাদের উপর প্রেরণ করলাম প্রবল বন্যা! আর তাদের উদ্যানদ্বয়কে পরিবর্তন করে দিলাম এমন দুই উদ্যানে, যাতে উদগত হয় বিস্বাদ ফলমূল, ঝাউ গাছ এবং সামান্য কুলবৃক্ষ।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

পরে এরা অবাধ্য হল। ফলে আমি এদের ওপর প্রবাহিত করলাম বাঁধভাঙ্গা বন্যা এবং এদের উদ্যান দুইটিকে পরিবর্তন করে দিলাম এমন দুইটি উদ্যানে যাতে উৎপন্ন হয় বিস্বাদ ফলমূল, ঝাউ গাছ এবং কিছু কুল গাছ।


মাওলানা জহুরুল হক

কিন্তু তারা বিমুখ হয়েছিল, তাই আমরা তাদের উপরে পাঠিয়েছিলাম আল্‌-আরিমের বন্যা, আর তাদের জন্য আমরা বদলে দিয়েছিলাম তাদের দুই বাগানের স্থলে দুই বাগান যাতে ফলে বিস্বাদ ফলমূল আর ঝোপঝাড় ও কিছু-কিছু বন্যফল।


১৭


ذٰلِکَ جَزَیۡنٰہُمۡ بِمَا کَفَرُوۡا ؕ وَہَلۡ نُجٰزِیۡۤ اِلَّا الۡکَفُوۡرَ


যা-লিকা জাঝাইনা-হুম বিমা-কাফারূ ওয়া হাল নুজা-ঝীইল্লাল কাফূর।


মুফতী তাকী উসমানী

আমি তাদেরকে এ শাস্তি দিয়েছিলাম এ কারণে যে, তারা অকৃতজ্ঞতায় লিপ্ত হয়েছিল। আর আমি তো শাস্তি দেই কেবল ঘোর অকৃতজ্ঞদেরকেই।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এটা ছিল কুফরের কারণে তাদের প্রতি আমার শাস্তি। আমি অকৃতজ্ঞ ব্যতীত কাউকে শাস্তি দেই না।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আমি এদেরকে এই শাস্তি দিয়েছিলাম এদের কুফরীর জন্যে। আমি কৃতঘ্ন ব্যতীত আর কাউকেও এমন শাস্তি দেই না।


মাওলানা জহুরুল হক

এইটিই আমরা তাদের প্রতিদান দিয়েছিলাম যেহেতু তারা অবিশ্বাস করেছিল। আর আমরা কি প্রাপ্য শোধ করি অকৃতজ্ঞদের ব্যতীত।


১৮


وَجَعَلۡنَا بَیۡنَہُمۡ وَبَیۡنَ الۡقُرَی الَّتِیۡ بٰرَکۡنَا فِیۡہَا قُرًی ظَاہِرَۃً وَّقَدَّرۡنَا فِیۡہَا السَّیۡرَ ؕ سِیۡرُوۡا فِیۡہَا لَیَالِیَ وَاَیَّامًا اٰمِنِیۡنَ


ওয়া জা‘আলনা-বাইনাহুম ওয়া বাইনাল কুরাল্লাতী বা-রাকনা-ফীহা-কুরান জা-হিরাতাওঁ ওয়াকাদ্দারনা-ফীহাছছাইরা ছীরূফীহা-লায়া-লিয়া ওয়া আইইয়া-মান আ-মিনীন।


মুফতী তাকী উসমানী

আমি তাদের এবং যে সকল জনপদে বরকত দান করেছিলাম, ১২ তাদের মধ্যবর্তী স্থানে স্থাপিত করেছিলাম, (দূর থেকে) দৃশ্যমান বহু জনপদ এবং তার মধ্যে ভ্রমণকে মাপাজোখা বিভিন্ন ধাপে বণ্টন করে দিয়েছিলাম ১৩ (এবং বলেছিলাম) এসব জনপদে দিনে ও রাতে নিরাপদে ভ্রমণ কর।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তাদের এবং যেসব জনপদের লোকদের প্রতি আমি অনুগ্রহ করেছিলম সেগুলোর মধ্যবর্তী স্থানে অনেক দৃশ্যমান জনপদ স্থাপন করেছিলাম এবং সেগুলোতে ভ্রমণ নির্ধারিত করেছিলাম। তোমরা এসব জনপদে রাত্রে ও দিনে নিরাপদে ভ্রমণ কর।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এদের ও যেসব জনপদের প্রতি আমি অনুগ্রহ করেছিলাম সেইগুলির মধ্যবর্তী স্থানে দৃশ্যমান বহু জনপদ স্থাপন করেছিলাম এবং ঐসব জনপদে ভ্রমণের যথাযথ ব্যবস্থা করেছিলাম এবং এদেরকে বলেছিলাম, ‘তোমরা এইসব জনপদে নিরাপদে ভ্রমণ কর দিবস ও রজনীতে।’


মাওলানা জহুরুল হক

আর তাদের ও সেই শহরগুলোর যাতে আমরা অনুগ্রহ অর্পণ করেছিলাম, তাদের মাঝে আমরা স্থাপন করেছিলাম দৃশ্যমান জনবসতি, আর তাদের মধ্যে ভ্রমণস্তর ঠিক করে দিয়েছিলাম, -- "তোমরা এসবে রাতে ও দিনে নিরাপদে পরিভ্রমণ কর।"


তাফসীরঃ

১২. এর দ্বারা শাম ও ফিলিস্তিন অঞ্চলকে বোঝানো হয়েছে। আল্লাহ তাআলা এ অঞ্চলকে বাহ্যিকভাবে যেমন মনোরম ও সবুজ-শ্যামল করেছেন, তেমনি একে আম্বিয়া আলাইহিমুস সালামের ভূমি হিসেবেও বিশেষ মর্যাদা দান করেছেন।


১৩. এটা সাবা সম্প্রদায়ের উপর বর্ষিত আরেকটি অনুগ্রহ। তারা বাণিজ্য ব্যাপদেশে ইয়ামান থেকে শামের সফর করত। আল্লাহ তাআলা তাদের ভ্রমণের সুবিধার্থে ইয়ামান থেকে শাম পর্যন্ত গোটা অঞ্চলকে অত্যন্ত সুষমভাবে সাজিয়ে দিয়েছিলেন। জনপদগুলি ছিল অল্প-অল্প দূরত্বে স্থাপিত। সফরকালে একটু পর-পর একেকটা বসতি নজরে আসত। এর ফায়দা ছিল বহুবিধ। যেমন এর ফলে সফরকে সুবিধাজনক মনজিলে বণ্টন করা যেত। মুসাফির যেখানে ইচ্ছা পানাহার ও বিশ্রামের জন্য থেমে যেতে পারত। তাছাড়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ফায়দা ছিল এই যে, একের পর এক বসতি থাকার কারণে চুরি-ডাকাতি ও পথ হারানোর ভয় ছিল না এবং খাদ্য-সামগ্রী শেষ হয়ে গেলে সহজেই তার ব্যবস্থা হতে পারত। তাদের তো উচিত ছিল আল্লাহ তাআলার এসব অনুগ্রহের কদর করা এবং এজন্য তার শোকর আদায়ে রত থাকা। কিন্তু তারা তো তা করলই না, উল্টো আল্লাহ তাআলাকে বলতে লাগল, জনপদসমূহের এরূপ ক্রমবিন্যাসের কারণে আমরা অ্যাডভেঞ্চারের মজাটাই হারাচ্ছি। কাজেই এসব বসতি তুলে দিয়ে মনজিলসমূহের দূরত্ব বাড়িয়ে দিন, যাতে বন-জঙ্গল ও মরুভূমিতে সফরের ভেতর যে আতঙ্ক-ঘেরা আনন্দ আছে আমরা তা আস্বাদন করতে পারি।


১৯


فَقَالُوۡا رَبَّنَا بٰعِدۡ بَیۡنَ اَسۡفَارِنَا وَظَلَمُوۡۤا اَنۡفُسَہُمۡ فَجَعَلۡنٰہُمۡ اَحَادِیۡثَ وَمَزَّقۡنٰہُمۡ کُلَّ مُمَزَّقٍ ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیٰتٍ لِّکُلِّ صَبَّارٍ شَکُوۡرٍ


ফাকা-লূরাব্বানা-বা-‘ইদ বাইনা আছফা-রিনা-ওয়া জালামূআনফুছাহুম ফাজা‘আলনাহুম আহা-দীছা ওয়া মাঝঝাকনা-হুম কুল্লা মুমাঝঝাকিন ইন্না ফী যা-লিকা লাআ-য়াতিল লিকুল্লি সাব্বা-রিন শাকূর।


মুফতী তাকী উসমানী

তারা বলতে লাগল, হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের সফরের (মনজিলসমূহের) মধ্যে ব্যবধান বাড়িয়ে দাও। আর এভাবে তারা নিজেদের প্রতি জুলুম করল, যার পরিণামে আমি তাদেরকে কাহিনীর বিষয়বস্তু বানিয়ে দিলাম এবং তাদেরকে সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন-ভিন্ন করে বিক্ষিপ্ত করে ফেললাম। ১৪ নিশ্চয়ই এ ঘটনার মধ্যে প্রত্যেক ধৈর্যশীল, শোকরগুজার লোকের জন্য বহু নিদর্শন আছে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

অতঃপর তারা বলল, হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের ভ্রমণের পরিসর বাড়িয়ে দাও। তারা নিজেদের প্রতি জুলুম করেছিল। ফলে আমি তাদেরকে উপাখ্যানে পরিণত করলাম এবং সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে দিলাম। নিশ্চয় এতে প্রত্যেক ধৈর্যশীল কৃতজ্ঞের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

কিন্তু এরা বলল, ‘হে আমাদের প্রতিপালক ! আমাদের সফরের মন্যিলের ব্যবধান বর্ধিত কর।’ এরা নিজেদের প্রতি জুলুম করেছিল। ফলে আমি এদেরকে কাহিনীর বিষয়বস্তুতে পরিণত করলাম এবং এদেরকে ছিন্নভিন্ন করে দিলাম। এতে প্রত্যেক ধৈর্যশীল, কৃতজ্ঞ ব্যক্তির জন্যে নিদর্শন রয়েছে।


মাওলানা জহুরুল হক

কিন্তু তারা বললে -- "আমাদের প্রভু! আমাদের পর্যটন-স্তরগুলোর মধ্যে দূরত্ব বাড়িয়ে দাও।" আর তাদের নিজেদেরই প্রতি তারা অন্যায় করেছিল, ফলে আমরা তাদের বানিয়েছিলাম কাহিনীর বিষয়বস্তু, আর আমরা তাদের ভেঙ্গেচুরে দিয়েছিলাম পুরোপুরি চুরমার করে। নিঃসন্দেহ এতে তো নিদর্শনসমূহ রয়েছে প্রত্যেক অধ্যবসায়ী কৃতজ্ঞের জন্য।


তাফসীরঃ

১৪. অর্থাৎ আযাবের আগে সাবা সম্প্রদায় তো একই জায়গায় মিলেমিশে বসবাস করত, কিন্তু আযাবের পর তারা সম্পূর্ণ বিক্ষিপ্ত হয়ে গেল।


২০


وَلَقَدۡ صَدَّقَ عَلَیۡہِمۡ اِبۡلِیۡسُ ظَنَّہٗ فَاتَّبَعُوۡہُ اِلَّا فَرِیۡقًا مِّنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ


ওয়া লাকাদ সাদ্দাকা ‘আলাইহিম ইবলীছূজান্নাহূফাত্তাবা‘ঊহু ইল্লা-ফারীকাম মিনাল মু’মিনীন।


মুফতী তাকী উসমানী

বস্তুত ইবলিস তাদের সম্পর্কে নিজ ধারণাকে সঠিক পেল। সুতরাং তারা তার অনুগামী হল, কেবল মুমিনদের একটি দল ছাড়া। ১৫


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আর তাদের উপর ইবলীস তার অনুমান সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করল। ফলে তাদের মধ্যে মুমিনদের একটি দল ব্যতীত সকলেই তার পথ অনুসরণ করল।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এদের সম্বন্ধে ইবলিস তার ধারণা সত্য প্রমাণ করল, ফলে এদের মধ্যে একটি মু’মিন দল ব্যতীত সকলেই তার অনুসরণ করল ;


মাওলানা জহুরুল হক

আর ইবলিস নিশ্চয়ই তার অনুমানকে সঠিক ঠাওরেছিল, কেননা মুমিনদের একটি দল ব্যতীত তারা তার অনুসরণ করেছিল।


তাফসীরঃ

১৫. অর্থাৎ হযরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করার সময় ইবলিস ধারণা করেছিল সে তাঁর আওলাদকে বিপথগামী করতে পারবে। তো এই অবাধ্যদের সম্পর্কে তার ধারণা সত্যেই পরিণত হল যে, তারা তার অনুসারী হয়ে গেল।


২১


وَمَا کَانَ لَہٗ عَلَیۡہِمۡ مِّنۡ سُلۡطٰنٍ اِلَّا لِنَعۡلَمَ مَنۡ یُّؤۡمِنُ بِالۡاٰخِرَۃِ مِمَّنۡ ہُوَ مِنۡہَا فِیۡ شَکٍّ ؕ  وَرَبُّکَ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ حَفِیۡظٌ ٪


ওয়া মা-কা-না লাহূ‘আলাইহিম মিন ছুলতা-নিন ইল্লা-লিনা‘লামা মাইঁ ইউ’মিনুবিলআখিরাতি মিম্মান হুওয়া মিনহা-ফী শাক্কিওঁ ওয়া রাব্বুকা ‘আলা-কুল্লি শাইয়িন হাফীজ।


মুফতী তাকী উসমানী

তাঁদের উপর ইবলিসের কোন আধিপত্য ছিল না। তবে (মানুষকে বিভ্রান্ত করার ক্ষমতা আমি তাকে এজন্য দিয়েছিলাম যে,) আমি দেখতে চাচ্ছিলাম কে আখেরাতের প্রতি ঈমান আনে আর কে সে সম্বন্ধে থাকে সন্দেহে পতিত। ১৬ তোমার প্রতিপালক সকল বিষয়ের তত্ত্বাবধায়ক।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তাদের উপর শয়তানের কোন ক্ষমতা ছিল না, তবে কে পরকালে বিশ্বাস করে এবং কে তাতে সন্দেহ করে, তা প্রকাশ করাই ছিল আমার উদ্দেশ্য। আপনার পালনকর্তা সব বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এদের ওপর শয়তানের কোন আধিপত্য ছিল না। কাহারা আখিরাতে বিশ্বাসী এবং কারা এতে সন্দিহান তা প্রকাশ করে দেওয়াই ছিল আমার উদ্দেশ্য। তোমার প্রতিপালক সর্ববিষয়ে হিফাযতকারী।


মাওলানা জহুরুল হক

কিন্তু তাদের উপরে আধিপত্যের কোনো অস্তিত্ব তার জন্য নেই এই ব্যতীত যে আমরা যেন জানতে পারি তাকে যে পরকালে বিশ্বাস করে তার থেকে যে সে-সন্বন্ধে সন্দেহের মধ্যে রয়েছে। আর তোমার প্রভু সব-কিছুর উপরে হেফাজতকারী।


তাফসীরঃ

১৬. অর্থাৎ আমি ইবলিসকে তো এমন কোন শক্তি দেইনি যে, সে মানুষের উপর আধিপত্য বিস্তার করে তাদেরকে নাফরমানীতে লিপ্ত হতে বাধ্য করবে। আমি তাকে কেবল প্ররোচনা দেওয়ার শক্তি দিয়েছিলাম। তাতে অন্তরে গুনাহ করার আগ্রহ সৃষ্টি হয় ঠিকই, কিন্তু কেউ গুনাহ করতে বাধ্য হয়ে যায় না। কেউ যদি নিজের জ্ঞান-বুদ্ধিকে কাজে লাগায় এবং শরীয়তের উপর অবিচলিতথাকার সংকল্প করে নেয় তবে শয়তান তার কিছুই করতে পারে না। প্ররোচনা দেওয়ার শক্তিও তাকে এজন্য দেওয়া হয়েছে যে, এর দ্বারা আল্লাহ তাআলা মানুষকে পরীক্ষা করতে চান, কে আখেরাতের জীবনকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে শয়তানের প্ররোচনাকে প্রত্যাখ্যান করে আর কে দুনিয়াকে লক্ষবস্তু বানিয়ে শয়তানের কথা মেনে নেয়।


২২


قُلِ ادۡعُوا الَّذِیۡنَ زَعَمۡتُمۡ مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ ۚ لَا یَمۡلِکُوۡنَ مِثۡقَالَ ذَرَّۃٍ فِی السَّمٰوٰتِ وَلَا فِی الۡاَرۡضِ وَمَا لَہُمۡ فِیۡہِمَا مِنۡ شِرۡکٍ وَّمَا لَہٗ مِنۡہُمۡ مِّنۡ ظَہِیۡرٍ


কুলিদ ‘উল্লাযীনা ঝা‘আমতুম মিন দূ নিল্লা-হি লা-ইয়ামলিকূনা মিছকা-লা যাররাতিন ফিছ ছামা-ওয়া-তি ওয়ালা-ফিল আরদিওয়ামা-লাহুম ফীহিমা-মিন শিরকিওঁ ওয়ামা-লাহূ মিনহুম মিন জাহীর।


মুফতী তাকী উসমানী

(হে রাসূল! ওই কাফেরদেরকে) বলে দাও, তোমরা যাদেরকে আল্লাহর পরিবর্তে উপাস্য মনে করতে তাদেরকে ডাক। আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে তারা অণু পরিমাণ কিছুরও মালিক নয় এবং আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে (কোনও বিষয়ে আল্লাহর সাথে) তাদের কোন অংশীদারিত্ব নেই এবং তাদের মধ্যে কেউ তাঁর সাহায্যকারীও নয়।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

বলুন, তোমরা তাদেরকে আহবান কর, যাদেরকে উপাস্য মনে করতে আল্লাহ ব্যতীত। তারা নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলের অনু পরিমাণ কোন কিছুর মালিক নয়, এতে তাদের কোন অংশও নেই এবং তাদের কেউ আল্লাহর সহায়কও নয়।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

বল, ‘তোমরা আহ্বান কর এদেরকে যাদেরকে তোমরা আল্লাহ্ র পরিবর্তে ইলাহ্ মনে করতে। এরা আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে অণু পরিমাণ কিছুর মালিক নয় এবং এতদুভয়ে এদের কোন অংশও নেই এবং এদের কেউ তাঁর সহায়কও নয়।’


মাওলানা জহুরুল হক

তুমি বলো -- "আল্লাহ্‌কে বাদ দিয়ে যাদের তোমরা কল্পনা করেছ তাদের ডাকো, তারা অণুর পরিমাপেও কোনো ক্ষমতা রাখে না মহাকাশমন্ডলীতে আর পৃথিবীতেও নয়, আর তাদের জন্য এই দুইয়ের মধ্যে কোনো একটা শরিকানাও নেই, আর তাদের মধ্যে থেকে তার জন্য কোনো পৃষ্ঠপোষকতাও নেই।"


২৩


وَلَا تَنۡفَعُ الشَّفَاعَۃُ عِنۡدَہٗۤ اِلَّا لِمَنۡ اَذِنَ لَہٗ ؕ حَتّٰۤی اِذَا فُزِّعَ عَنۡ قُلُوۡبِہِمۡ قَالُوۡا مَاذَا ۙ قَالَ رَبُّکُمۡ ؕ قَالُوا الۡحَقَّ ۚ وَہُوَ الۡعَلِیُّ الۡکَبِیۡرُ


ওয়ালা-তানফা‘উশশাফা-‘আতু‘ইনদাহূইল্লা-লিমান আযিনা লাহূ হাত্তাইযাফুঝঝি‘আ ‘আন কুলূবিহিম কা-লূমা-যা- কা-লা রাব্বুকুম কা-লুল হাক্কা ওয়া হুওয়াল ‘আলিইয়ুল কাবীর।


মুফতী তাকী উসমানী

যার জন্য তিনি (সুপারিশের) অনুমতি দেন, তার ছাড়া (অন্য কারও) কোন সুপারিশ আল্লাহর সামনে কাজে আসবে না। পরিশেষে যখন তাদের অন্তর থেকে ভয় দূর করে দেওয়া হয়, তখন তারা বলে, তোমাদের প্রতিপালক কী বলেছেন? তারা উত্তর দেয়, সত্য (কথা বলেছেন) এবং তিনিই সমুচ্চ, মহান। ১৭


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যার জন্যে অনুমতি দেয়া হয়, তার জন্যে ব্যতীত আল্লাহর কাছে কারও সুপারিশ ফলপ্রসূ হবে না। যখন তাদের মন থেকে ভয়-ভীতি দূর হয়ে যাবে, তখন তারা পরস্পরে বলবে, তোমাদের পালনকর্তা কি বললেন? তারা বলবে, তিনি সত্য বলেছেন এবং তিনিই সবার উপরে মহান।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যাকে অনুমতি দেওয়া হয় সে ব্যতীত আল্লাহ্ র নিকট কারও সুপারিশ ফলপ্রসূ হবে না। পরে যখন এদের অন্তর হতে ভয় বিদূরিত হবে তখন এরা পরস্পরের মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করবে, ‘তোমাদের প্রতিপালক কী বললেন ?’ তদুত্তরে তারা বলবে, ‘যা সত্য তিনি তাই বলেছেন।’ তিনি সমুচ্চ, মহান।


মাওলানা জহুরুল হক

আর তাঁর কাছে সুপারিশে কোনো সুফল দেবে না, তার ক্ষেত্রে ব্যতীত যাকে তিনি অনুমতি দিয়েছেন, যে পর্যন্ত না তাদের অন্তর থেকে ভয়-ভাবনা দূর হয়ে যাবে, তারা বলবে -- "কি সেটা যা তোমাদের প্রভু বলেছিলেন?" তারা বলবে -- "সত্য। আর তিনিই মহোচ্চ, মহামহিম।"


তাফসীরঃ

১৭. ২২ ও ২৩ নং আয়াতে মুশকিরদের বিভিন্ন আকীদা-বিশ্বাস রদ করা হয়েছে। কতক মুশরিক তাদের হাতে গড়া প্রতিমাকে ঈশ্বর মনে করত এবং তাদের সম্পর্কে বিশ্বাস পোষণ করত যে, তারা সরাসরি আমাদের প্রয়োজন পূর্ণ করে। তাদের এ বিশ্বাস খণ্ডন করার জন্য ২২ নং আয়াতে বলা হয়েছে, তারা আসমান ও যমীনে অণু পরিমাণ কোন জিনিসেরও মালিক নয় এবং আসমান ও যমীনের কোনও বিষয়ে তাদের কোনরূপ অংশীদারিত্ব নেই। অপর এক শ্রেণীর মুশরিকদের বিশ্বাস ছিল, এসব প্রতিমা আল্লাহ তাআলাকে তাঁর কাজকর্মে সাহায্য করে। তাদেরকে রদ করার জন্য ইরশাদ হয়েছে, ‘তাদের মধ্যে কেউ আল্লাহর সাহায্যকারী নয়’। আবার এক শ্রেণীর মুশরিক দেব-দেবীকে আল্লাহর প্রভুত্বে অংশীদার বা তার সাহায্যকারী মনে করত না বটে, কিন্তু বিশ্বাস রাখত যে, তারা আল্লাহ তাআলার দরবারে তাদের জন্য সুপারিশ করবে। তাদের ধারণা খণ্ডনের জন্য ২৩ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ যাকে অনুমতি দেন তারা ছাড়া অন্য কারও সুপারিশ তাঁর সামনে কোন কাজে আসবে না’। অর্থাৎ দেব-দেবীর সম্পর্কে তোমাদের তো বিশ্বাস ‘তারা আল্লাহর অতি ঘনিষ্ঠ ও সমাদৃত, ফলে তাঁর দরবারে তাদের সুপারিশ করার এখতিয়ার আছে, অথচ আল্লাহর দরবারে না আছে তাদের কোন ঘনিষ্ঠতা ও গ্রহণযোগ্যতা এবং না আছে তাদের নিজেদের পক্ষ থেকে সুপারিশ করার যোগ্যতা। যাদের বাস্তবিকই ঘনিষ্ঠতা আছে, সেই ফেরেশতাগণও তো আল্লাহ তাআলার অনুমতি ছাড়া কারও পক্ষে কোন সুপারিশ করতে পারে না। তারপর বলা হয়েছে, সেই ফেরেশতাদের অবস্থা তো এই যে, তারা সর্বদাই আল্লাহ তাআলার ভয়ে তটস্থ থাকে। এমনকি আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে তাদেরকে যখন কোন হুকুম দেওয়া হয়, কিংবা সুপারিশের অনুমতি দেওয়া হয়, তখন তারা এতটাই ভয় পায় যে, বেহুঁশ মত হয়ে যায়। যখন ভয় কেটে যায় তখন একে অন্যকে জিজ্ঞেস করে, তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ কী বলেছেন? তারপর তারা আল্লাহ তাআলার নির্দেশ মত কাজ করেন। যখন সেই ঘনিষ্ঠ ও নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতাদের অবস্থাই এমন, তখন এসব হাতে গড়া মূর্তি, যাদের কোন মর্যাদা ও নৈকট্য আল্লাহর কাছে নেই, তারা কিভাবে তাঁর দরবারে সুপারিশ করতে পারে?


২৪


قُلۡ مَنۡ یَّرۡزُقُکُمۡ مِّنَ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضِ ؕ قُلِ اللّٰہُ ۙ وَاِنَّاۤ اَوۡ اِیَّاکُمۡ لَعَلٰی ہُدًی اَوۡ فِیۡ ضَلٰلٍ مُّبِیۡنٍ


কুল মাইঁ ইয়ার ঝুকুকুম মিনাছছামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদি কুল্লিলা-হু ওয়া ইন্নাআও ইয়্যা-কুম লা‘আলা-হুদান আও ফী দালা-লিম মুবীন।


মুফতী তাকী উসমানী

বল, কে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী থেকে তোমাদেরকে রিযক দান করে? বল, তিনি আল্লাহ! এবং আমরা অথবা তোমরা হয়ত হেদায়াতের উপর আছি অথবা স্পষ্ট গোমরাহীতে। ১৮


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

বলুন, নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডল থেকে কে তোমাদের কে রিযিক দেয়। বলুন, আল্লাহ। আমরা অথবা তোমরা সৎপথে অথবা স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে আছি ও আছ?


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

বল, ‘আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী হতে কে তোমাদেরকে রিযিক প্রদান করেন?’ বল, ‘আল্লাহ্। হয় আমরা না হয় তোমরা সৎপথে স্থিত বা স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে পতিত।’


মাওলানা জহুরুল হক

বলো -- "কে তোমাদের রিষেক দান করেন মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবী থেকে?" তুমি বলে দাও -- "আল্লাহ্‌। আর নিঃসন্দেহ আমরা অথবা তোমরা নিশ্চয়ই সঠিক পথে রয়েছি, নয়তো স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে আছি।"


তাফসীরঃ

১৮. এটা তো জানা কথা যে, যারা আল্লাহর ইবাদত করে তারাই হিদায়াতপ্রাপ্ত আর যারা কোন মাখলুকের পূজা করে তারা বিপথগামী। তা সত্ত্বেও আয়াতে বিষয়টিকে অমীমাংসিতরূপে ব্যক্ত করা হয়েছে ন্যায়নিষ্ঠতার পরাকাষ্ঠাস্বরূপ। এর দ্বারা সূক্ষ্মভাবে তাদেরকে সত্যগ্রহণের দাওয়াত দেওয়া হয়েছে এবং প্রচ্ছন্নভাবে জানানো হয়েছে যে, তারাই গোমরাহীতে লিপ্ত। সরাসরি বলা অপেক্ষা এরূপ ইঙ্গিতে বলার ধার অনেক বেশি হয়ে থাকে। যেমন প্রতিপক্ষের মিথ্যুক হওয়া সম্পর্কে নিশ্চিত থাকা সত্ত্বেও বলা হয়ে থাকে, ‘তোমার ও আমার মধ্যে যে মিথ্যুক তার প্রতি আল্লাহর লানত’। এটা সরাসরি মিথ্যুক বলা অপেক্ষা ঢের তীক্ষ্ণ। -অনুবাদক


২৫


قُلۡ لَّا تُسۡـَٔلُوۡنَ عَمَّاۤ اَجۡرَمۡنَا وَلَا نُسۡـَٔلُ عَمَّا تَعۡمَلُوۡنَ


কুল লা-তুছআলূনা ‘আম্মাআজরামনা-ওয়ালা-নুছআলু‘আম্মা-তা‘মালূন।


মুফতী তাকী উসমানী

বল, আমরা যে অপরাধ করেছি সে সম্পর্কে তোমাদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে না এবং তোমরা যা করছ সে সম্পর্কেও আমাদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে না।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

বলুন, আমাদের অপরাধের জন্যে তোমরা জিজ্ঞাসিত হবে না এবং তোমরা যা কিছু কর, সে সম্পর্কে আমরা জিজ্ঞাসিত হব না।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

বল, ‘আমাদের অপরাধের জন্যে তোমাদেরকে জবাবদিহি করতে হবে না এবং তোমরা যা কর সে সম্পর্কে আমাদেরকেও জবাবদিহি করতে হবে না।’


মাওলানা জহুরুল হক

বলো -- "তোমাদের জবাবদিহি করতে হবে না আমরা যা অপরাধ করেছি সেজন্য, আর আমাদেরও জবাবদিহি করতে হবে না তোমরা যা কর সে-সন্বন্ধে।


২৬


قُلۡ یَجۡمَعُ بَیۡنَنَا رَبُّنَا ثُمَّ یَفۡتَحُ بَیۡنَنَا بِالۡحَقِّ ؕ وَہُوَ الۡفَتَّاحُ الۡعَلِیۡمُ


কুল ইয়াজমা‘উ বাইনানা-রাব্বুনা-ছু ম্মা ইয়াফতাহূবাইনানা-বিল হাক্কি ওয়া হুওয়াল ফাত্তা-হুল ‘আলীম।


মুফতী তাকী উসমানী

বল, আমাদের প্রতিপালক আমাদের সকলকে একত্র করবেন তারপর আমাদের মধ্যে ন্যায্য ফায়সালা করবেন। তিনিই শ্রেষ্ঠ ফায়সালাকারী, সর্বজ্ঞ।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

বলুন, আমাদের পালনকর্তা আমাদেরকে সমবেত করবেন, অতঃপর তিনি আমাদের মধ্যে সঠিকভাবে ফয়সালা করবেন। তিনি ফয়সালাকারী, সর্বজ্ঞ।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

বল, ‘আমাদের প্রতিপালক আমাদের সকলকে একত্র করবেন, এরপর তিনি আমাদের মধ্যে সঠিকভাবে ফয়সালা করে দিবেন, তিনিই শ্রেষ্ঠ ফয়সালাকারী, সর্বজ্ঞ।’


মাওলানা জহুরুল হক

তুমি বলো -- "আমাদের প্রভু আমাদের পরস্পরের সঙ্গে সমবেত করবেন, তারপর তিনি আমাদের মধ্যে মীমাংসা করবেন ন্যায়ের সাথে। আর তিনিই শ্রেষ্ঠ বিচাকর, পরমজ্ঞানী।"


২৭


قُلۡ اَرُوۡنِیَ الَّذِیۡنَ اَلۡحَقۡتُمۡ بِہٖ شُرَکَآءَ کَلَّا ؕ بَلۡ ہُوَ اللّٰہُ الۡعَزِیۡزُ الۡحَکِیۡمُ


কুল আরূনিয়াল্লাযীনা আলহাকতুম বিহী শুরাকাআ কাল্লা- বাল হুওয়াল্লা-হুল ‘আঝীঝুল হাকীম।


মুফতী তাকী উসমানী

বল, আমাকে দেখাও, তারা কারা, যাদেরকে তোমরা শরীক বানিয়ে আল্লাহর সাথে জুড়ে দিয়েছ? কক্ষণও নয়, (তাঁর কোন শরীক নেই); বরং তিনিই আল্লাহ, যিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

বলুন, তোমরা যাদেরকে আল্লাহর সাথে অংশীদাররূপে সংযুক্ত করেছ, তাদেরকে এনে আমাকে দেখাও। বরং তিনিই আল্লাহ, পরাক্রমশীল, প্রজ্ঞাময়।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

বল, ‘তোমরা আমাকে দেখাও যাদেরকে শরীকরূপে তাঁর সঙ্গে জুড়িয়া দিয়েছ তাদেরকে। না, কখনও না, বরং তিনি আল্লাহ্ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’


মাওলানা জহুরুল হক

তুমি বলো -- "আমাকে তাদের দেখাও যাদের তোমরা তাঁর সঙ্গে অংশী স্থির করেছ। কখনও না! বরং তিনিই আল্লাহ্ -- মহাশক্তিশালী, পরমজ্ঞানী।"


২৮


وَمَاۤ اَرۡسَلۡنٰکَ اِلَّا کَآفَّۃً لِّلنَّاسِ بَشِیۡرًا وَّنَذِیۡرًا وَّلٰکِنَّ اَکۡثَرَ النَّاسِ لَا یَعۡلَمُوۡنَ


ওয়ামাআরছালনা-কা ইল্লা-কাফফাতাল লিন্না-ছি বাশীরাওঁ ওয়ানাযীরাওঁ ওয়ালা-কিন্না আকছারান্না-ছি লা-ইয়া‘লামূন।


মুফতী তাকী উসমানী

এবং (হে নবী!) আমি তোমাকে সমস্ত মানুষের জন্য একজন সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপেই পাঠিয়েছি, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ বুঝছে না।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি আপনাকে সমগ্র মানবজাতির জন্যে সুসংবাদাতা ও সতর্ককারী রূপে পাঠিয়েছি; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা জানে না।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আমি তো তোমাকে সমগ্র মানবজাতির প্রতি সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে প্রেরণ করেছি ; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না।


মাওলানা জহুরুল হক

আর আমরা তোমাকে পাঠাই নি সমগ্র মানবজাতির জন্য সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে ভিন্ন, কিন্তু অধিকাংশ লোকেই জানে না।


২৯


وَیَقُوۡلُوۡنَ مَتٰی ہٰذَا الۡوَعۡدُ اِنۡ کُنۡتُمۡ صٰدِقِیۡنَ


ওয়া ইয়াকূলূনা মাতা-হা-যাল ওয়া‘দুইন কুনতুম সা-দিকীন।


মুফতী তাকী উসমানী

এবং তারা (তোমাকে) বলে, তোমরা সত্যবাদী হলে (বল কিয়ামতের) এ প্রতিশ্রুতি কবে পূরণ হবে?


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তারা বলে, তোমরা যদি সত্যবাদী হও, তবে বল, এ ওয়াদা কখন বাস্তবায়িত হবে?


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তারা জিজ্ঞাসা করে, ‘তোমরা যদি সত্যবাদী হও তবে বল, এই প্রতিশ্রুতি কখন বাস্তবায়িত হবে ?’


মাওলানা জহুরুল হক

আর তারা বলে -- "কখন এই ওয়াদা হবে, যদি তোমরা সত্যবাদী হও?"


৩০


قُلۡ لَّکُمۡ مِّیۡعَادُ یَوۡمٍ لَّا تَسۡتَاۡخِرُوۡنَ عَنۡہُ سَاعَۃً وَّلَا تَسۡتَقۡدِمُوۡنَ ٪


কুল্লাকুম মী‘আ-দু ইয়াওমিল লা-তাছতা’খিরূনা ‘আনহু ছা-‘আতাওঁ ওয়ালাতাছতাকদিমূন।


মুফতী তাকী উসমানী

বলে দাও, তোমাদের জন্য এমন এক দিনের মেয়াদ নির্দিষ্ট আছে, যা থেকে তোমরা এক মুহূর্ত পিছাতে পারবে না এবং সামনেও যেতে পারবে না।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

বলুন, তোমাদের জন্যে একটি দিনের ওয়াদা রয়েছে যাকে তোমরা এক মহূর্তও বিলম্বিত করতে পারবে না এবং ত্বরান্বিত ও করতে পারবে না।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

বল, ‘তোমাদের জন্যে আছে এক নির্ধারিত দিবস, যা তোমরা মুহূর্তকাল বিলম্বিত করতে পারবে না, আর ত্বরান্বিতও করতে পারবে না।’


মাওলানা জহুরুল হক

তুমি বলো -- "তোমাদের জন্য একটি দিনের মেয়াদ ধার্য রয়েছে যা থেকে তোমরা এক ঘড়ির জন্যেও পিছিয়ে থাকতে পারবে না, আর এগিয়েও আসতে পারবে না!"


৩১


وَقَالَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا لَنۡ نُّؤۡمِنَ بِہٰذَا الۡقُرۡاٰنِ وَلَا بِالَّذِیۡ بَیۡنَ یَدَیۡہِ ؕ وَلَوۡ تَرٰۤی اِذِ الظّٰلِمُوۡنَ مَوۡقُوۡفُوۡنَ عِنۡدَ رَبِّہِمۡ ۚۖ یَرۡجِعُ بَعۡضُہُمۡ اِلٰی بَعۡضِۣ الۡقَوۡلَ ۚ یَقُوۡلُ الَّذِیۡنَ اسۡتُضۡعِفُوۡا لِلَّذِیۡنَ اسۡتَکۡبَرُوۡا لَوۡلَاۤ اَنۡتُمۡ لَکُنَّا مُؤۡمِنِیۡنَ


ওয়াকা-লাল্লাযীনা কাফারূ লান নু’মিনা বিহা-যাল কুরআ-নি ওয়ালা-বিল্লাযীবাইনা ইয়াদাইহি ওয়ালাও তারাইযিজ্জা-লিমূনা মাওকূফূনা ‘ইনদা রাব্বিহিম ইয়ারজি‘উ বা‘দুহুম ইলা-বা‘দিনিল কাওলা ইয়াকূলুল্লাযীনাছতুদ‘ইফূলিল্লাযীনাছতাকবারূ লাওলাআনতুম লাকুন্না-মু’মিনীন।


মুফতী তাকী উসমানী

যারা কুফর অবলম্বন করেছে, তারা বলে, আমরা কখনও এ কুরআনের প্রতি ঈমান আনব না এবং এর পূর্ববর্তী কিতাবসমূহের প্রতিও নয়। তুমি যদি সেই সময়ের দৃশ্য দেখতে যখন জালেমদেরকে তাদের প্রতিপালকের সামনে দাঁড় করানো হবে আর তারা একে অন্যের কথা রদ করবে। (দুনিয়ায়) যাদেরকে দুর্বল মনে করা হয়েছিল তারা ক্ষমতা-দর্পীদেরকে বলবে, তোমরা না হলে আমরা অবশ্যই মুমিন হয়ে যেতাম।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

কাফেররা বলে, আমরা কখনও এ কোরআনে বিশ্বাস করব না এবং এর পূর্ববর্তী কিতাবেও নয়। আপনি যদি পাপিষ্ঠদেরকে দেখতেন, যখন তাদেরকে তাদের পালনকর্তার সামনে দাঁড় করানো হবে, , তখন তারা পরস্পর কথা কাটাকাটি করবে। যাদেরকে দুর্বল মনে করা হত, তারা অহংকারীদেরকে বলবে, তোমরা না থাকলে আমরা অবশ্যই মুমিন হতাম।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

কাফিররা বলে, ‘আমরা এই কুরআনে কখনও বিশ্বাস করব না, এটার পূর্ববর্তী কিতাবসমূহেও নয়। হায়! তুমি যদি দেখতে জালিমদেরকে যখন তাদের প্রতিপালকের সামনে দণ্ডায়মান করা হবে তখন এরা পরস্পর বাদ-প্রতিবাদ করতে থাকবে, যাদেরকে দুর্বল মনে করা হত তারা ক্ষমতাদর্পীদেরকে বলবে, ‘তোমরা না থাকলে আমরা অবশ্যই মু’মিন হতাম।’


মাওলানা জহুরুল হক

আর যারা অবিশ্বাস করে তারা বলে -- "আমরা কিছুতেই এই কুরআনে বিশ্বাস করব না, আর এর আগে যা রয়েছে তাতেও না।" আর তুমি যদি দেখতে যখন অন্যায়াচারীদের দাঁড় করানো হবে তাদের প্রভুর সামনে! তাদের কেউ কেউ অপরদের প্রতি বাক্যবান ফিরিয়ে দিতে থাকবে! যাদের দুর্বল করা হয়েছিল তারা তখন বলবে তাদের যারা মাতব্বরি করেছিল -- "তোমাদের জন্য না হলে আমরা নিশ্চয়ই বিশ্বাসী হতাম।"


৩২


قَالَ الَّذِیۡنَ اسۡتَکۡبَرُوۡا لِلَّذِیۡنَ اسۡتُضۡعِفُوۡۤا اَنَحۡنُ صَدَدۡنٰکُمۡ عَنِ الۡہُدٰی بَعۡدَ اِذۡ جَآءَکُمۡ بَلۡ کُنۡتُمۡ مُّجۡرِمِیۡنَ


কা-লাল্লাযীনাছতাকবারূলিল্লাযীনাছতুদ‘ইফূ আনাহনুসাদাদ না-কুম ‘আনিল হুদা-বা‘দা ইযজাআকুম বাল কুনতুম মুজরিমীন।


মুফতী তাকী উসমানী

যারা ক্ষমতাদর্পী ছিল তারা, যাদেরকে দুর্বল মনে করা হত তাদেরকে বলবে, হেদায়াত তোমাদের কাছে এসে যাওয়ার পর আমরাই কি তোমাদেরকে তা থেকে ফিরিয়ে রেখেছি? প্রকৃতপক্ষে তোমরা নিজেরাই অপরাধী ছিলে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

অহংকারীরা দুর্বলকে বলবে, তোমাদের কাছে হেদায়েত আসার পর আমরা কি তোমাদেরকে বাধা দিয়েছিলাম? বরং তোমরাই তো ছিলে অপরাধী।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যারা ক্ষমতাদর্পী ছিল তারা, যাদেরকে দুর্বল মনে করা হত তাদেরকে বলবে, ‘তোমাদের নিকট সৎপথের দিশা আসার পর আমরা কি তোমাদেরকে তা হতে নিবৃত্ত করেছিলাম ? বস্তুত তোমরাই তো ছিলে অপরাধী ।’


মাওলানা জহুরুল হক

যারা মাতব্বরি করেছিল তারা বলবে তাদের যাদের দুর্বল করা হয়েছিল -- "আমরা কি তোমাদের বাধা দিয়েছিলাম পথনির্দেশ থেকে এটি তোমাদের কাছে আসার পরে? বরং তোমারই তো ছিলে অপরাধী?"


৩৩


وَقَالَ الَّذِیۡنَ اسۡتُضۡعِفُوۡا لِلَّذِیۡنَ اسۡتَکۡبَرُوۡا بَلۡ مَکۡرُ الَّیۡلِ وَالنَّہَارِ اِذۡ تَاۡمُرُوۡنَنَاۤ اَنۡ نَّکۡفُرَ بِاللّٰہِ وَنَجۡعَلَ لَہٗۤ اَنۡدَادًا ؕ وَاَسَرُّوا النَّدَامَۃَ لَمَّا رَاَوُا الۡعَذَابَ ؕ وَجَعَلۡنَا الۡاَغۡلٰلَ فِیۡۤ اَعۡنَاقِ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا ؕ ہَلۡ یُجۡزَوۡنَ اِلَّا مَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ


ওয়াকা-লাল্লাযীনাছতুদ‘ইফূলিল্লাযীনাছতাকবারূবাল মাকরুল লাইলি ওয়ান্নাহা-রি ইয তা’মুরূনানাআন নাকফুরা বিল্লা-হি ওয়ানাজ‘আলা লাহূআনদা-দাওঁ ওয়া আছাররুন্নাদামাতা লাম্মা-রাআউল ‘আযা-বা ওয়াজা‘আলনাল আগলা-লা ফীআ‘নাকিল্লাযীনা কাফারূ হাল ইউজঝাওনা ইল্লা-মা-কা-নূইয়া‘মালূন।


মুফতী তাকী উসমানী

যাদেরকে দুর্বল মনে করা হয়েছিল তারা ক্ষমতাদর্পীদেরকে বলবে, না, বরং এটা তো তোমাদের দিবা-রাত্রের চক্রান্তই ছিল (যা আমাদেরকে হেদায়াত থেকে ফিরিয়ে রেখেছিল), যখন তোমরা আমাদেরকে আদেশ করছিলে আমরা যেন আল্লাহর কুফরী করি এবং তাঁর সাথে (অন্যদেরকে) শরীক সাব্যস্ত করি। তারা যখন আযাব দেখবে তখন তারা অনুতাপ গোপন করবে ১৯ এবং যারা কুফরী অবলম্বন করেছিল আমি তাদের সকলের গলায় বেড়ি পরাব। তাদেরকে তো কেবল তাদের কৃতকর্মেরই প্রতিদান দেওয়া হবে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

দুর্বলরা অহংকারীদেরকে বলবে, বরং তোমরাই তো দিবারাত্রি চক্রান্ত করে আমাদেরকে নির্দেশ দিতে যেন আমরা আল্লাহকে না মানি এবং তাঁর অংশীদার সাব্যস্ত করি তারা যখন শাস্তি দেখবে, তখন মনের অনুতাপ মনেই রাখবে। বস্তুতঃ আমি কাফেরদের গলায় বেড়ী পরাব। তারা সে প্রতিফলই পেয়ে থাকে যা তারা করত।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যাদেরকে দুর্বল মনে করা হত তারা ক্ষমতাদর্পীদেরকে বলবে, ‘প্রকৃতপক্ষে তোমরাই তো দিবারাত্র চক্রান্তে লিপ্ত ছিলে, আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছিলে যেন আমরা আল্লাহ্কে অমান্য করি এবং তাঁর শরীক স্থাপন করি।’ যখন তারা শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে তখন তারা অনুতাপ গোপন রাখবে এবং আমি কাফিরদের গলদেশে শৃংখল পরাইব। এদেরকে এরা যা করত তারই প্রতিফল দেওয়া হবে।


মাওলানা জহুরুল হক

আর যাদের দুর্বল করা হয়েছিল তারা বলবে তাদের যারা গর্ব করছিল -- "বস্তুত রাত ও দিনের চক্রান্ত, যখন তোমরা আমাদের হুকুম করতে যেন আমরা আল্লাহ্‌কে অবিশ্বাস করি এবং তাঁর সঙ্গে অংশী স্থাপন করি।" আর তারা যখন শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে তখন তারা আফসোসে আকুল হবে। আর যারা অবিশ্বাস পোষণ করত তাদের গলায় আমরা শিকল পরাব। তাদের কি প্রতিদান দেওয়া হচ্ছে তারা যা করে চলেছিল তা ছাড়া অন্য কিছু দিয়ে।


তাফসীরঃ

১৯. অর্থাৎ তারা উভয় পক্ষই প্রকাশ্যে তো একে অন্যকে দোষারোপ করবে, কিন্তু মনে মনে ঠিকই বুঝবে যে, প্রকৃতপক্ষে আমরা সকলেই সমান অপরাধী। এ উপলব্ধির কারণে তারা প্রত্যেকেই মনে মনে অনুতপ্ত হবে, কিন্তু প্রথমে তা প্রকাশ করবে না।


৩৪


وَمَاۤ اَرۡسَلۡنَا فِیۡ قَرۡیَۃٍ مِّنۡ نَّذِیۡرٍ اِلَّا قَالَ مُتۡرَفُوۡہَاۤ ۙ اِنَّا بِمَاۤ اُرۡسِلۡتُمۡ بِہٖ کٰفِرُوۡنَ


ওয়ামা আরছালনা-ফী কারইয়াতিম মিন নাযীরিন ইল্লা-কা-লা মুতরাফূহা ইন্না বিমাউরছিলতুম বিহী কা-ফিরূন।


মুফতী তাকী উসমানী

আমি যে জনপদেই কোন সতর্ককারী (নবী) পাঠিয়েছি, তার বিত্তশালী লোকেরা বলেছে, তোমরা যে বার্তাসহ প্রেরিত হয়েছ আমরা তা প্রত্যাখ্যান করি।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

কোন জনপদে সতর্ককারী প্রেরণ করা হলেই তার বিত্তশালী অধিবাসীরা বলতে শুরু করেছে, তোমরা যে বিষয়সহ প্রেরিত হয়েছ, আমরা তা মানি না।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যখনই আমি কোন জনপদে সতর্ককারী প্রেরণ করেছি এর বিত্তশালী অধিবাসীরা বলেছে, ‘তোমরা যাসহ প্রেরিত হয়েছ আমরা তা প্রত্যাখ্যান করি।’


মাওলানা জহুরুল হক

আর আমরা কোনো জনপদে সতর্ককারীদের কাউকেও পাঠাই নি যার বিত্তবান লোকেরা না বলেছে -- "নিঃসন্দেহ তোমাদের যা দিয়ে পাঠানো হয়েছে তাতে আমরা অবিশ্বাসী!"


৩৫


وَقَالُوۡا نَحۡنُ اَکۡثَرُ اَمۡوَالًا وَّاَوۡلَادًا ۙ وَّمَا نَحۡنُ بِمُعَذَّبِیۡنَ


ওয়া কা-লূনাহনুআকছারু আমওয়া-লাওঁ ওয়াআওলা-দাওঁ ওয়ামা-নাহনু বিমু‘আযযাবীন।


মুফতী তাকী উসমানী

আরও বলেছে, আমরা ধনে-জনে তোমাদের চেয়ে বেশি আর আমরা শাস্তিপ্রাপ্ত হওয়ার নই।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তারা আরও বলেছে, আমরা ধনে-জনে সমৃদ্ধ, সুতরাং আমরা শাস্তিপ্রাপ্ত হব না।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরা আরও বলত, ‘আমরা ধনে-জনে সমৃদ্ধিশালী ; সুতরাং আমাদেরকে কিছুতেই শাস্তি দেওয়া হবে না।’


মাওলানা জহুরুল হক

আর তারা বলত -- "আমরা ধনসম্পত্তি ও সন্তানসন্ততিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ, সুতরাং আমরা তো শাস্তি পাবার পাত্র নই।"


৩৬


قُلۡ اِنَّ رَبِّیۡ یَبۡسُطُ الرِّزۡقَ لِمَنۡ یَّشَآءُ وَیَقۡدِرُ وَلٰکِنَّ اَکۡثَرَ النَّاسِ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ٪


কুল ইন্না রাববী ইয়াবছুতু ররিঝকালিমাইঁ ইয়াশাউওয়াইয়াকদিরু ওয়া লা-কিন্না আকছারান্না-ছি লা-ইয়া‘লামূন।


মুফতী তাকী উসমানী

বলে দাও, আমার প্রতিপালক যার জন্য ইচ্ছা করেন রিযক প্রশস্ত করে দেন এবং (যার জন্য ইচ্ছা) সংকীর্ণ করে দেন, কিন্তু অধিকাংশ লোক একথা বোঝে না। ২০


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

বলুন, আমার পালনকর্তা যাকে ইচ্ছা রিযিক বাড়িয়ে দেন এবং পরিমিত দেন। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা বোঝে না।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

বল, ‘আমার প্রতিপালক যার প্রতি ইচ্ছা তার রিযিক বর্ধিত করেন বা সীমিত করেন; কিন্তু অধিকাংশ লোকই এটা জানে না।’


মাওলানা জহুরুল হক

তুমি বলো -- "আমার প্রভু যার জন্য ইচ্ছা করেন জীবিকা বাড়িয়ে দেন এবং সীমিতও করেন, কিন্তু অধিাকাংশ লোকেই জানে না।"


তাফসীরঃ

২০. প্রকৃত বিষয় না বোঝার কারণেই তাদের ধারণা হয়েছে, দুনিয়ায় যখন আমরা ধনে-জনে অন্যদের উপরে, তখন বোঝাই যাচ্ছে আমরা আল্লাহ তাআলার প্রিয় বান্দা। অথচ দুনিয়ায় অর্থ-সম্পদ দেওয়ার ক্ষেত্রে আল্লাহর মাপকাঠি এই নয় যে, যে আল্লাহর যত বেশি প্রিয় হবে তাকে তত বেশি সম্পদ দেওয়া হবে। প্রকৃতপক্ষে এটা নির্ভর করে কেবলই আল্লাহ তাআলার ইচ্ছার উপর। এখানে তিনি নিজ ইচ্ছা ও হেকমত অনুযায়ী যাকে ইচ্ছা বেশি সম্পদ দেন এবং যাকে ইচ্ছা কম দেন। তাঁর প্রিয় হওয়া বা না হওয়ার সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই।


৩৭


وَمَاۤ اَمۡوَالُکُمۡ وَلَاۤ اَوۡلَادُکُمۡ بِالَّتِیۡ تُقَرِّبُکُمۡ عِنۡدَنَا زُلۡفٰۤی اِلَّا مَنۡ اٰمَنَ وَعَمِلَ صَالِحًا ۫ فَاُولٰٓئِکَ لَہُمۡ جَزَآءُ الضِّعۡفِ بِمَا عَمِلُوۡا وَہُمۡ فِی الۡغُرُفٰتِ اٰمِنُوۡنَ


ওয়ামাআমওয়া-লুকুম ওয়ালাআওলা-দুকুম বিল্লাতী তুকাররিবুকুম ‘ইনদানা-ঝুলফা ইল্লামান আ-মানা ওয়া ‘আমিলা সা-লিহান ফাউলাইকা লাহুম জাঝাউদ দি‘ফি বিমা‘আমিলূওয়াহুম ফিল গুরূফা-তি আ-মিনূন।


মুফতী তাকী উসমানী

তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি এমন কিছু নয়, যা তোমাদেরকে আল্লাহর নৈকট্য দান করবে। কিন্তু যে ব্যক্তি ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, এরূপ ব্যক্তিবর্গ তাদের কর্মের দ্বিগুণ সওয়াব লাভ করবে এবং তারা (জান্নাতের) প্রাসাদে নিরাপদে থাকবে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তোমাদেরকে আমার নিকটবর্তী করবে না। তবে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, তারা তাদের কর্মের বহুগুণ প্রতিদান পাবে এবং তারা সুউচ্চ প্রাসাদে নিরাপদে থাকবে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি এমন কিছু নয় যা তোমাদেরকে আমার নিকটবর্তী করে দিবে ; তবে যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তারাই তাদের কর্মের জন্যে পাবে বহুগুণ পুরস্কার; আর তারা প্রাসাদে নিরাপদে থাকবে।


মাওলানা জহুরুল হক

আর না তোমাদের ধনদৌলত ও না তোমাদের সন্তানসন্ততি এমন জিনিস যা আমাদের কাছে তোমাদের মর্যাদায় নৈকট্য দেবে, বরং যে ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে। সুতরাং এরাই -- এদেরই জন্য রয়েছে দ্বিগুণ পুরস্কার যা তারা করেছে সেজন্য, আর তারা বাগান-বাড়িতে নিরাপদে রইবে।


৩৮


وَالَّذِیۡنَ یَسۡعَوۡنَ فِیۡۤ اٰیٰتِنَا مُعٰجِزِیۡنَ اُولٰٓئِکَ فِی الۡعَذَابِ مُحۡضَرُوۡنَ


ওয়াল্লাযীনা ইয়াছ‘আওনা ফীআ-য়া-তিনা-মু‘আ-জিঝীনা উলাইকা ফিল ‘আযা-বি মুহদারূন।


মুফতী তাকী উসমানী

আর যারা আমার আয়াতসমূহকে ব্যর্থ করে দেওয়ার চেষ্টা করে, তাদেরকে শাস্তিতে গ্রেফতার করা হবে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আর যারা আমার আয়াতসমূহকে ব্যর্থ করার অপপ্রয়াসে লিপ্ত হয়, তাদেরকে আযাবে উপস্থিত করা হবে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যারা আমার আয়াতকে ব্যর্থ করার চেষ্টা করবে তারা শাস্তি ভোগ করতে থাকবে।


মাওলানা জহুরুল হক

পক্ষান্তরে যারা আমাদের নির্দেশাবলীর বিরুদ্ধাচরণে প্রচেষ্টা চালায় এদেরই হাজির করা হবে শাস্তির মাঝে।


৩৯


قُلۡ اِنَّ رَبِّیۡ یَبۡسُطُ الرِّزۡقَ لِمَنۡ یَّشَآءُ مِنۡ عِبَادِہٖ وَیَقۡدِرُ لَہٗ ؕ وَمَاۤ اَنۡفَقۡتُمۡ مِّنۡ شَیۡءٍ فَہُوَ یُخۡلِفُہٗ ۚ وَہُوَ خَیۡرُ الرّٰزِقِیۡنَ


কুল ইন্না রাববী ইয়াবছুতু র রিঝকালিমাইঁ ইয়াশাউ মিন ‘ইবা-দিহী ওয়া ইয়াকদিরু লাহূ ওয়ামাআনফাকতুম মিন শাইয়িন ফাহুওয়া ইউখলিফুহূ ওয়াহুওয়া খাইরুর রা-ঝিকীন।


মুফতী তাকী উসমানী

বল, আমার প্রতিপালক নিজ বান্দাদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা রিযকের প্রাচুর্য দান করেন এবং (যার জন্য ইচ্ছা) তা সংকীর্ণ করে দেন। তোমরা যা-কিছুই ব্যয় কর, তিনি তদস্থলে অন্য জিনিস দিয়ে দেন। তিনি শ্রেষ্ঠ রিযিকদাতা।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

বলুন, আমার পালনকর্তা তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা রিযিক বাড়িয়ে দেন এবং সীমিত পরিমাণে দেন। তোমরা যা কিছু ব্যয় কর, তিনি তার বিনিময় দেন। তিনি উত্তম রিযিক দাতা।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

বল, ‘আমার প্রতিপালক তো তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার প্রতি ইচ্ছা রিযিক বর্ধিত করেন এবং যার প্রতি ইচ্ছা সীমিত করেন। তোমরা যা কিছু ব্যয় করবে তিনি তার প্রতিদান দিবেন। তিনিই শ্রেষ্ঠ রিযিকদাতা।’


মাওলানা জহুরুল হক

বলো, "নিঃসন্দেহ আমার প্রভু জীবিকা বাড়িয়ে দেন তাঁর বান্দাদের মধ্যের যার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন, আর তার জন্য সীমিতও করেন। আর যা-কিছু তোমরা ব্যয় কর তিনি তো তার প্রতিদান দেন, কেননা তিনিই জীবিকাদাতাদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ।"


৪০


وَیَوۡمَ یَحۡشُرُہُمۡ جَمِیۡعًا ثُمَّ یَقُوۡلُ لِلۡمَلٰٓئِکَۃِ اَہٰۤؤُلَآءِ اِیَّاکُمۡ کَانُوۡا یَعۡبُدُوۡنَ


ওয়া ইয়াওমা ইয়াহশুরুহুম জামী‘আন ছু ম্মা ইয়াকূ লুলিলমালাইকাতি আহাউলাই ইয়্যাকুম কা-নূইয়া‘বুদূন।


মুফতী তাকী উসমানী

সেই দিন (-কে ভুলে যেও না), যখন আল্লাহ সকলকে একত্র করবেন তারপর ফেরেশতাদেরকে বলবেন, সত্যিই কি এরা তোমাদের ইবাদত করত?


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যেদিন তিনি তাদের সবাইকে একত্রিত করবেন এবং ফেরেশতাদেরকে বলবেন, এরা কি তোমাদেরই পূজা করত?


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

স্মরণ কর, যেদিন তিনি এদের সকলকে একত্র করবেন, এরপর ফিরিশতাদেরকে জিজ্ঞাসা করবেন, ‘এরা কি তোমাদেরই পূজা করত ?’


মাওলানা জহুরুল হক

আর সেইদিন তিনি তাদের একত্রিত করবেন সমবেতভাবে, তখন তিনি ফিরিশ্‌তাদের বলবেন -- "এরাই কি তোমাদের পূজা করে থাকতো?"


৪১

(ads1)

(getButton) #text=(আল কোরআন বাংলা অনুবাদ সহ এক সাথে ) #icon=(link) #color=(#084dc4)

قَالُوۡا سُبۡحٰنَکَ اَنۡتَ وَلِیُّنَا مِنۡ دُوۡنِہِمۡ ۚ بَلۡ کَانُوۡا یَعۡبُدُوۡنَ الۡجِنَّ ۚ اَکۡثَرُہُمۡ بِہِمۡ مُّؤۡمِنُوۡنَ


কা-লূছুবহা-নাকা আনতা ওয়ালিইয়ুনা-মিন দূ নিহিম বাল কা-নূইয়া‘বুদূ নাল জিন্না আকছারুহুম বিহিম মু’মিনূন।


মুফতী তাকী উসমানী

তারা বলবে, আমরা আপনার পবিত্রতা বর্ণনা করি। আমাদের সম্পর্ক আপনার সাথে; তাদের সাথে নয়। প্রকৃতপক্ষে তারা জিনদের ইবাদত করত। ২১ তাদের অধিকাংশ তাদেরই প্রতি বিশ্বাসী ছিল।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

ফেরেশতারা বলবে, আপনি পবিত্র, আমরা আপনার পক্ষে, তাদের পক্ষে নই, বরং তারা জিনদের পূজা করত। তাদের অধিকাংশই শয়তানে বিশ্বাসী।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

ফেরেশতারা বলবে, ‘তুমি পবিত্র, মহান! তুমিই আমাদের অভিভাবক, এরা নয়; বরং এরা তো পূজা করত জিনদের এবং এদের অধিকাংশই ছিল এদের প্রতি বিশ্বাসী।


মাওলানা জহুরুল হক

তারা বলবে -- "তোমারই মহিমা হোক! তুমিই আমাদের মনিব, তারা নয়, বরং তারা উপাসনা করত জিনদের, তাদের অধিকাংশই ছিল ওদের প্রতি বিশ্বাসী।"


তাফসীরঃ

২১. এখানে জিন দ্বারা শয়তানদেরকে বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ তারা শয়তানদের দ্বারা নিজেদের বহু কাজ-কর্ম করিয়ে নেয় এবং তাদের কথা অনুযায়ী চলে। শয়তানরাই তাদেরকে শিরকী আকীদা-বিশ্বাসের প্ররোচনা দিয়েছে। কাজেই তারা প্রকৃত প্রস্তাবে শয়তানদেরই পূজারী ছিল।


৪২


فَالۡیَوۡمَ لَا یَمۡلِکُ بَعۡضُکُمۡ لِبَعۡضٍ نَّفۡعًا وَّلَا ضَرًّا ؕ وَنَقُوۡلُ لِلَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡا ذُوۡقُوۡا عَذَابَ النَّارِ الَّتِیۡ کُنۡتُمۡ بِہَا تُکَذِّبُوۡنَ


ফালইয়াওমা লা-ইয়ামলিকুবা‘দুকুম লিবা‘দিন নাফ‘আওঁ ওয়ালা-দাররাওঁ ওয়ানাকূলু লিল্লাযীনা জালামূযূকূ‘আযা-বান্না-রিল্লাতী কুনতুম বিহা-তুকাযযিবূন।


মুফতী তাকী উসমানী

সুতরাং আজ তোমরা পরস্পরে একে অন্যের কোন উপকার করতে পারবে না এবং অপকারও নয়। আর যারা জুলুমে লিপ্ত হয়েছিল, তাদেরকে বলব, তোমরা আস্বাদন কর আগুনের শাস্তি, যা তোমরা অবিশ্বাস করতে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

অতএব আজকের দিনে তোমরা একে অপরের কোন উপকার ও অপকার করার অধিকারী হবে না আর আমি জালেমদেরকে বলব, তোমরা আগুনের যে শাস্তিকে মিথ্যা বলতে তা আস্বাদন কর।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘আজ তোমাদের একে অন্যের উপকার কিংবা অপকার করার ক্ষমতা নেই।’ যারা জুলুম করেছিল তাদেরকে বলিব, ‘তোমরা যে অগ্নি-শাস্তি অস্বীকার করতে তা আস্বাদন কর।’


মাওলানা জহুরুল হক

সুতরাং সেইদিন তোমাদের কেউ অপর কারোর জন্য উপকার করার ক্ষমতা রাখবে না, অপকার করারও নয়। আর যারা অন্যায়াচরণ করেছিল তাদের আমরা বলব -- "আগুনের শাস্তি আস্বাদন কর যেটি তোমরা মিথ্যা বলতে!"


৪৩


وَاِذَا تُتۡلٰی عَلَیۡہِمۡ اٰیٰتُنَا بَیِّنٰتٍ قَالُوۡا مَا ہٰذَاۤ اِلَّا رَجُلٌ یُّرِیۡدُ اَنۡ یَّصُدَّکُمۡ عَمَّا کَانَ یَعۡبُدُ اٰبَآؤُکُمۡ ۚ وَقَالُوۡا مَا ہٰذَاۤ اِلَّاۤ اِفۡکٌ مُّفۡتَرًی ؕ وَقَالَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا لِلۡحَقِّ لَمَّا جَآءَہُمۡ ۙ اِنۡ ہٰذَاۤ اِلَّا سِحۡرٌ مُّبِیۡنٌ


ওয়া ইযা-তুতলা-‘আলাইহিম আ-য়া-তুনা-বাইয়িনা-তিন কা-লূ মা-হা-যাইল্লা-রাজূলুইঁ ইউরীদুআইঁ ইয়াসুদ্দাকুম ‘আম্মা-কা-না ইয়া‘বুদুআ-বাউকুম ওয়াকা-লূমা-হাযাইল্লাইফকুম মুফতারাওঁ- ওয়া কা-লাল্লাযীনা কাফারূলিল হাক্কিলাম্মাজাআহুম ইন হা-যাইল্লা-ছিহরুম মুবীন।


মুফতী তাকী উসমানী

তাদেরকে যখন আমার সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ পড়ে শোনানো হয়, তখন তারা (আমার রাসূল সম্পর্কে) বলে, এই ব্যক্তি আর কিছুই নয়, কেবল এটাই চায় যে, সে তোমাদেরকে তোমাদের সেই মাবুদদের থেকে ফিরিয়ে দেবে, যাদেরকে তোমাদের বাপ-দাদা পূজা করে আসছে এবং তারা বলে, এ কুরআন এক মনগড়া মিথ্যা ছাড়া আর কিছুই নয়। আর যখন কাফেরদের কাছে সত্যের বাণী এসে গেল, তখন তারা সে সম্পর্কে বলল, এটা সুস্পষ্ট যাদু ছাড়া কিছুই নয়।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যখন তাদের কাছে আমার সুস্পষ্ট আয়াত সমূহ তেলাওয়াত করা হয়, তখন তারা বলে, তোমাদের বাপ-দাদারা যার এবাদত করত এ লোকটি যে তা থেকে তোমাদেরকে বাধা দিতে চায়। তারা আরও বলে, এটা মনগড়া মিথ্যা বৈ নয়। আর কাফেরদের কাছে যখন সত্য আগমন করে, তখন তারা বলে, এতো এক সুস্পষ্ট যাদু।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এদের নিকট যখন আমার সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করা হয় তখন এরা বলে, ‘তোমাদের পূর্বপুরুষ যার ‘ইবাদত করত এই ব্যক্তিই তো তার ‘ইবাদতে তোমাদেরকে বাধা দিতে চায়।’ এরা আরও বলে, ‘এটা তো মিথ্যা উদ্ভাবন ব্যতীত কিছু নয়,’ এবং কাফিরদের নিকট যখন সত্য আসে তখন এরা বলে, ‘এটা তো এক সুস্পষ্ট জাদু।’


মাওলানা জহুরুল হক

আর যখন তাদের কাছে আমাদের সুস্পষ্ট নির্দেশাবলী আবৃত্তি করা হয় তখন তারা বলে -- "এ তো একজন মানুষ ছাড়া আর কেউ নয় যে তোমাদের ফিরিয়ে রাখতে চায় তা থেকে যার উপাসনা করত তোমাদের পিতৃপুরুষরা।" আর তারা বলে -- "এ একটি বানানো মিথ্যা ব্যতীত আর কিছু নয়।" আর যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা সত্য-সন্বন্ধে, এটি যখন তাদের কাছে আসে তখন, বলে -- "এ স্পষ্ট জাদু বৈ তো নয়।"


৪৪


وَمَاۤ اٰتَیۡنٰہُمۡ مِّنۡ کُتُبٍ یَّدۡرُسُوۡنَہَا وَمَاۤ اَرۡسَلۡنَاۤ اِلَیۡہِمۡ قَبۡلَکَ مِنۡ نَّذِیۡرٍ ؕ


ওয়ামাআ-তাইনা-হুম মিন কুতুবিইঁ ইয়াদরুছূনাহা-ওয়ামাআরছালনাইলাইহিম কাবলাকা মিন নাযীর।


মুফতী তাকী উসমানী

অথচ আমি তাদেরকে (এর আগে) এমন কোন কিতাব দেইনি, যার পঠন-পাঠন তারা করে এবং (হে নবী!) তোমার আগে আমি তাদের কাছে কোন সতর্ককারী (নবী) পাঠাইনি। ২২


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি তাদেরকে কোন কিতাব দেইনি, যা তারা অধ্যয়ন করবে এবং আপনার পূর্বে তাদের কাছে কোন সতর্ককারী প্রেরণ করিনি।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আমি এদেরকে পূর্বে কোন কিতাব দেই নাই যা এরা অধ্যয়ন করত এবং তোমার পূর্বে এদের নিকট কোন সতর্ককারীও প্রেরণ করি নাই।


মাওলানা জহুরুল হক

আর আমরা গ্রন্থাবলীর কোনো-কিছু তাদের দিই নি যেটি তারা পড়তে পাবে, আর তোমার পূর্বে তাদের কাছে আমরা সতর্ককারীদের কাউকেও পাঠাই নি।


তাফসীরঃ

২২. অর্থাৎ কাফেরগণ কুরআনকে মনগড়া কিতাব বলছে (নাউযুবিল্লাহ) অথচ মনগড়া তো খোদ তাদের ধর্ম। কেননা এর আগে তাদের কাছে না কোন আসমানী কিতাব এসেছে না কোন নবী। সুতরাং তারা যে ধর্ম তৈরি করে নিয়েছে, সেটা তো সম্পূর্ণই তাদের মনগড়া। তাছাড়া তাদেরকে এই প্রথমবারের মত কিতাব ও নবী দেওয়া হয়েছে। এর তো দাবি ছিল তারা এই নি‘আমতের কদর করবে, অথচ উল্টো তারা এর বিরোধী হয়ে গেছে।


৪৫


وَکَذَّبَ الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِہِمۡ ۙ  وَمَا بَلَغُوۡا مِعۡشَارَ مَاۤ اٰتَیۡنٰہُمۡ فَکَذَّبُوۡا رُسُلِیۡ ۟  فَکَیۡفَ کَانَ نَکِیۡرِ ٪


ওয়া কাযযাবাল্লাযীনা মিন কাবলিহিম ওয়ামা-বালাগূমি‘শা-রা মাআ-তাইনা-হুম ফাকাযযাবূরুছুলী ফাকাইফা কা-না নাকীর।


মুফতী তাকী উসমানী

তাদের পূর্ববর্তী লোকেরাও (নবীদেরকে) অস্বীকার করেছিল। তাদেরকে আমি যা (অর্থ-সম্পদ) দিয়েছিলাম এরা (অর্থাৎ আরবের মুশরিকগণ) তার এক-দশমাংশেও পৌঁছতে পারেনি। তা সত্ত্বেও তারা আমার রাসূলগণকে অস্বীকার করেছিল। সুতরাং (তুমি দেখে নাও) আমার প্রদত্ত শাস্তি কেমন (কঠোর) ছিল।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তাদের পূর্ববর্তীরাও মিথ্যা আরোপ করেছে। আমি তাদেরকে যা দিয়েছিলাম, এরা তার এক দশমাংশও পায়নি। এরপরও তারা আমার রাসূলগনকে মিথ্যা বলেছে। অতএব কেমন হয়েছে আমার শাস্তি।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এদের পূর্ববর্তীরাও মিথ্যা আরোপ করেছিল। এদেরকে আমি যা দিয়েছিলাম, এরা তার এক-দশমাংশও পায় নাই, তবুও এরা আমার রাসূলদেরকে মিথ্যাবাদী বলেছিল। ফলে কত ভয়ংকর হয়েছিল আমার শাস্তি।


মাওলানা জহুরুল হক

আর এদের পূর্বে যারা ছিল তারাও মিথ্যারোপ করেছিল, আর আমরা তাদের যা দিয়েছিলাম তার এক দশমাংশেও এরা পৌঁছায় নি, তারপর তারা আমার রসূলগণকে প্রত্যাখ্যান করেছিল, ফলে কেমন হয়েছিল আমার বিতৃষ্ণা!


৪৬


قُلۡ اِنَّمَاۤ اَعِظُکُمۡ بِوَاحِدَۃٍ ۚ اَنۡ تَقُوۡمُوۡا لِلّٰہِ مَثۡنٰی وَفُرَادٰی ثُمَّ تَتَفَکَّرُوۡا ۟ مَا بِصَاحِبِکُمۡ مِّنۡ جِنَّۃٍ ؕ اِنۡ ہُوَ اِلَّا نَذِیۡرٌ لَّکُمۡ بَیۡنَ یَدَیۡ عَذَابٍ شَدِیۡدٍ


কুল ইন্নামাআ‘ইজুকুম বিওয়া-হিদাতিন আন তাকূমূলিল্লা-হি মাছনা-ওয়া ফুরা-দা-ছু ম্মা তাতাফাক্কারূ মা-বিসা-হিবিকুম মিন জিন্নাতিন ইন হুওয়া ইল্লা-নাযীরুল লাকুম বাইনা ইয়াদাই ‘আযা-বিন শাদীদ।


মুফতী তাকী উসমানী

(হে রাসূল!) তাদেরকে বল, আমি তোমাদেরকে কেবল একটি বিষয়ে উপদেশ দিচ্ছি। তা এই যে, তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে দু-দু’জন অথবা এক-একজন করে দাঁড়িয়ে যাও, ২৩ তারপর চিন্তা কর (তা করলে অবিলম্বেই বুঝে এসে যাবে যে,) তোমাদের এ সাথীর (অর্থাৎ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের) মধ্যে কোন বিকারগ্রস্ততা নেই। সে তো সুকঠিন এক শাস্তির আগে তোমাদের জন্য এক সতর্ককারী মাত্র।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

বলুন, আমি তোমাদেরকে একটি বিষয়ে উপদেশ দিচ্ছিঃ তোমরা আল্লাহর নামে এক একজন করে ও দু, দু জন করে দাঁড়াও, অতঃপর চিন্তা-ভাবনা কর-তোমাদের সঙ্গীর মধ্যে কোন উম্মাদনা নেই। তিনি তো আসন্ন কাঠোর শাস্তি সম্পর্কে তোমাদেরকে সতর্ক করেন মাত্র।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

বল, ‘আমি তোমাদেরকে একটি বিষয়ে উপদেশ দিচ্ছি : তোমরা আল্লাহ্ র উদ্দেশ্যে দুই-দু’জন বা এক-একজন করে দাঁড়াও, এরপর তোমরা চিন্তা করে দেখ-তোমাদের সঙ্গী আদৌ উন্মাদ নয়। সে তো আসন্ন কঠিন শাস্তি সম্পর্কে তোমাদের সতর্ককারী মাত্র।


মাওলানা জহুরুল হক

তুমি বলো -- "আমি তো তোমাদের একটি বিষয়ে উপদেশ দিচ্ছি -- তোমরা যেন আল্লাহ্‌র উদ্দেশ্যে দুজন করে অথবা একা একা উঠে দাঁড়াও, তারপর ভেবে দেখো -- তোমাদের সঙ্গীর মধ্যে কোনো জিন-ভূত নেই।" তিনি তোমাদের জন্য একজন সতর্ককারী বৈ তো নন, আসন্ন কঠোর শাস্তি সম্পর্কে।


তাফসীরঃ

২৩. ‘দাঁড়িয়ে যাও’ দ্বারা বিশেষ গুরুত্ব ও মনোযোগ দানের প্রতি ইশারা করা হয়েছে। বলা হচ্ছে যে, তোমরা তো এখনও পর্যন্ত ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তাই করনি। তাই এসব ভিত্তিহীন কথাবার্তা বলছ। আর মন্তব্য করছ যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উন্মাদ (নাউযুবিল্লাহ)। মুক্ত মনে ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তার দাবি হল, প্রথমে বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করবে এবং আল্লাহ তাআলাকে সন্তুষ্ট করার নিয়তে চিন্তা করবে। কখনও একাকী চিন্তা করলেই ভালো ফল পাওয়া যায় আবার কখনও সমষ্টিগত চিন্তাই ফলপ্রসূ হয়। তাই উভয় পন্থায় চিন্তা করতে বলা হয়েছে।


৪৭


قُلۡ مَا سَاَلۡتُکُمۡ مِّنۡ اَجۡرٍ فَہُوَ لَکُمۡ ؕ اِنۡ اَجۡرِیَ اِلَّا عَلَی اللّٰہِ ۚ وَہُوَ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ شَہِیۡدٌ


কুল মা-ছাআলতুকুম মিন আজরিন ফাহুওয়া লাকুম ইন আজরিয়া ইল্লা-‘আলাল্লা-হি ওয়া হুওয়া ‘আলা-কুল্লি শাইয়িন শাহীদ।


মুফতী তাকী উসমানী

বল, আমি এ কাজের বিনিময়ে তোমাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চাইলে তা তোমাদেরই থাকুক। আমার পারিশ্রমিক তো কেবল আল্লাহরই কাছে। তিনি সমস্ত কিছুর দ্রষ্টা।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

বলুন, আমি তোমাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চাই না বরং তা তোমরাই রাখ। আমার পুরস্কার তো আল্লাহর কাছে রয়েছে। প্রত্যেক বস্তুই তাঁর সামনে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

বল, ‘আমি তোমাদের নিকট কোন পারিশ্রমিক চাই না, তা তো তোমাদেরই ; আমার পুরস্কার তো আছে আল্লাহ্ র নিকট এবং তিনি সর্ববিষয়ে দ্রষ্টা।’


মাওলানা জহুরুল হক

তুমি বলো -- "যা-কিছু পারিশ্রমিক আমি তোমাদের কাছে চেয়েছি, সে তো তোমাদেরই জন্য! আমার পারিশ্রমিক আল্লাহ্‌র কাছে বৈ তো নয়, কেননা তিনি সব-কিছুর উপরে প্রত্যক্ষদশ।"


৪৮


قُلۡ اِنَّ رَبِّیۡ یَقۡذِفُ بِالۡحَقِّ ۚ عَلَّامُ الۡغُیُوۡبِ


কুল ইন্না রাববী ইয়াকযিফুবিলহাক্কি‘আল্লা-মুল গুয়ুব।


মুফতী তাকী উসমানী

বলে দাও, আমার প্রতিপালক উপর থেকে সত্য পাঠাচ্ছেন। ২৪ তিনি গায়েবের যাবতীয় বিষয় ভালোভাবে জানেন।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

বলুন, আমার পালনকর্তা সত্য দ্বীন অবতরণ করেছেন। তিনি আলেমুল গায়ব।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

বল, ‘আমার প্রতিপালক সত্যের দিয়ে অসত্যকে আঘাত করেন ; তিনি অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা।’


মাওলানা জহুরুল হক

তুমি বলো -- "নিঃসন্দেহ আমার প্রভু সত্য ছুঁড়ে থাকেন, তিনি অদৃশ্য বিষয়ে পরিজ্ঞাত।"


তাফসীরঃ

২৪. ‘সত্যকে উপর থেকে পাঠাচ্ছেন’ এর মানে সত্য বাণী ওহীর মাধ্যমে উপর থেকে আসছে। এর দ্বিতীয় অর্থ হল, আল্লাহ তাআলা উপর থেকে সত্য নাযিল করে তাকে মিথ্যার উপর প্রবল করে তুলছেন। সুতরাং তোমরা যতই বিরোধিতা কর না কেন মিথ্যা ক্রমশ ধ্বংস হয়ে যাবে এবং সত্য হবে জয়যুক্ত।


৪৯


قُلۡ جَآءَ الۡحَقُّ وَمَا یُبۡدِئُ الۡبَاطِلُ وَمَا یُعِیۡدُ


কুল জাআল হাক্কুওয়ামা-ইউবদিউল বা-তিলুওয়ামা-ইউ‘ঈদ।


মুফতী তাকী উসমানী

বলে দাও, সত্য এসে গেছে আর মিথ্যা না পারে কিছু শুরু করতে, না পুনরাবৃত্তি করতে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

বলুন, সত্য আগমন করেছে এবং অসত্য না পারে নতুন কিছু সৃজন করতে এবং না পারে পূনঃ প্রত্যাবর্তিত হতে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

বল, ‘সত্য এসেছে এবং অসত্য না পারে নূতন কিছু সৃজন করতে, আর না পারে পুনরাবৃত্তি করতে।’


মাওলানা জহুরুল হক

তুমি বলো -- "সত্য এসেই গেছে, আর মিথ্যার উৎপত্তি হবে না, আর এর পুনরুদ্ভবও হবে না।"


৫০


قُلۡ اِنۡ ضَلَلۡتُ فَاِنَّمَاۤ اَضِلُّ عَلٰی نَفۡسِیۡ ۚ وَاِنِ اہۡتَدَیۡتُ فَبِمَا یُوۡحِیۡۤ اِلَیَّ رَبِّیۡ ؕ اِنَّہٗ سَمِیۡعٌ قَرِیۡبٌ


কুল ইন দালালতুফাইন্নামাআদিল্লু‘আলা-নাফছী ওয়াইনিহতাদাইতুফাবিমা-ইউহী ইলাইয়া রাববী ইন্নাহূছামী‘উন কারীব।


মুফতী তাকী উসমানী

বলে দাও, আমি যদি বিপথগামী হয়ে থাকি, তবে আমার বিপথগামিতার ক্ষতি আমাকেই ভোগ করতে হবে আর আমি যদি সরল পথ পেয়ে থাকি, তবে এটা সেই ওহীরই বদৌলতে, যা আমার প্রতিপালক আমার প্রতি অবতীর্ণ করছেন। নিশ্চয়ই তিনি সবকিছুর শ্রোতা, সকলের নিকটবর্তী।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

বলুন, আমি পথভ্রষ্ট হলে নিজের ক্ষতির জন্যেই পথভ্রষ্ট হব; আর যদি আমি সৎপথ প্রাপ্ত হই, তবে তা এ জন্যে যে, আমার পালনকর্তা আমার প্রতি ওহী প্রেরণ করেন। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, নিকটবর্তী।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

বল, ‘আমি বিভ্রান্ত হলে বিভ্রান্তির পরিণাম আমারই এবং যদি আমি সৎপথে থাকি তবে তা এইজন্যে যে, আমার প্রতি আমার প্রতিপালক ওহী প্রেরণ করেন। তিনি সর্বশ্রোতা, সন্নিকট।’


মাওলানা জহুরুল হক

তুমি বলো -- "যদি আমি বিপথে যাই তাহলে আমি তো আমার নিজেরই বিরুদ্ধে বিপথে গেছি, আর আমি যদি সৎপথে চলি তাহলে সেটি আমার প্রভু আমার কাছে যা প্রত্যাদেশ করেছিলেন তার জন্য। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, অতি নিকটবর্তী।"


৫১


وَلَوۡ تَرٰۤی اِذۡ فَزِعُوۡا فَلَا فَوۡتَ وَاُخِذُوۡا مِنۡ مَّکَانٍ قَرِیۡبٍ ۙ


ওয়া লাও তারাইয ফাঝি‘ঊ ফালা -ফাওতা ওয়া উখিযূমিম মাকা-নিন কারীব।


মুফতী তাকী উসমানী

(হে নবী!) তুমি যদি সেই দৃশ্য দেখতে, যখন তারা ভীত-বিহ্বল হয়ে পড়বে এবং পালিয়ে যাওয়ার কোন জায়গা থাকবে না আর তাদেরকে নিকট থেকেই পাকড়াও করা হবে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যদি আপনি দেখতেন, যখন তারা ভীতসস্ত্রস্ত হয়ে পড়বে, অতঃপর পালিয়েও বাঁচতে পারবে না এবং নিকটবর্তী স্থান থেকে ধরা পড়বে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তুমি যদি দেখতে যখন এরা ভীত-বিহŸল হয়ে পড়বে, তখন এরা অব্যাহতি পাবে না এবং এরা নিকটস্থ স্থান হতে ধৃত হবে,


মাওলানা জহুরুল হক

আর তুমি যদি দেখতে পেতে যখন তারা ভীত-বিহল হয়ে পড়বে, তখন কোনো নিস্তার থাকতে না, আর তাদের পাকড়ানো হবে নিকটবর্তী স্থান থেকেই,


৫২


وَّقَالُوۡۤا اٰمَنَّا بِہٖ ۚ  وَاَنّٰی لَہُمُ التَّنَاوُشُ مِنۡ مَّکَانٍۭ بَعِیۡدٍ ۚۖ


ওয়া কা-লূআ-মান্না-বিহী ওয়া আন্না-লাহুমুততানা-উশু মিম মাকা-নিম বা‘ঈদ।


মুফতী তাকী উসমানী

এবং (তখন তারা) বলবে, আমরা তার প্রতি ঈমান আনলাম। কিন্তু এতটা দূরবর্তী স্থান থেকে তারা কোন জিনিসের নাগাল পাবে কী করে? ২৫


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তারা বলবে, আমরা সত্যে বিশ্বাস স্থাপন করলাম। কিন্তু তারা এতদূর থেকে তার নাগাল পাবে কেমন করে?


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এবং এরা বলবে, ‘আমরা তাতে ঈমান আনলাম।’ কিন্তু এত দ‚রবর্তী স্থান হতে এরা নাগাল পাবে কিরূপে ?


মাওলানা জহুরুল হক

আর তারা বলবে -- "আমরা এতে বিশ্বাস করি।" কিন্তু কেমন করে সুদূর স্থান থেকে তাদের জন্য পুনরাগমন সম্ভব হবে?


তাফসীরঃ

২৫. অর্থাৎ ঈমান আনার আসল জায়গা ছিল দুনিয়া। তা এখন বহু দূরে। সেখানে থেকে এতদূর এই আখেরাতে পৌঁছার পর সেই ঈমানের নাগাল তোমরা পেতে পার না, যা দুনিয়াতেই তোমাদের কাছে কাম্য ছিল। সেখানে তো এটাই দেখার ছিল যে, দুনিয়ার রঙ-ঢঙের মধ্যে হারিয়ে গিয়ে তোমরা আল্লাহ তাআলাকে ভুলে যাও, না সর্বাবস্থায় তাঁকে স্মরণ রাখ। এখন আখেরাতের সকল দৃশ্য সামনে এসে যাওয়ার পর ঈমান আনার ভেতর কৃতিত্ব কিসের যে, তার ভিত্তিতে তোমাদেরকে ক্ষমা করা হবে?


৫৩


وَّقَدۡ کَفَرُوۡا بِہٖ مِنۡ قَبۡلُ ۚ وَیَقۡذِفُوۡنَ بِالۡغَیۡبِ مِنۡ مَّکَانٍۭ بَعِیۡدٍ


ওয়া কাদ কাফারূবিহী মিন কাবলু ওয়া ইয়াকযিফূনা বিলগাইবি মিম মাকা-নিম বা‘ঈদ।


মুফতী তাকী উসমানী

তারা তো পূর্বে তাকে অস্বীকার করেছিল এবং অনেক দূরবর্তী স্থান থেকে অদৃশ্য বিষয়ে অনুমানে ঢিল ছুঁড়ত।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

অথচ তারা পূর্ব থেকে সত্যকে অস্বীকার করছিল। আর তারা সত্য হতে দূরে থেকে অজ্ঞাত বিষয়ের উপর মন্তব্য করত।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরা তো পূর্বে তা প্রত্যাখ্যান করেছিল ; এরা দূরবর্তী স্থান হতে অদৃশ্য বিষয়ে বাক্য ছুঁড়িয়া মারিত।


মাওলানা জহুরুল হক

আর তারা এর আগেই তো এতে অবিশ্বাস করেছিল। আর অদৃশ্য সন্বন্ধে তারা অনুমান করত সুদূর স্থান থেকে।


৫৪


وَحِیۡلَ بَیۡنَہُمۡ وَبَیۡنَ مَا یَشۡتَہُوۡنَ کَمَا فُعِلَ بِاَشۡیَاعِہِمۡ مِّنۡ قَبۡلُ ؕ  اِنَّہُمۡ کَانُوۡا فِیۡ شَکٍّ مُّرِیۡبٍ ٪


ওয়া হীলা বাইনাহুম ওয়া বাইনা মা-ইয়াশতাহূনা কামা-ফু‘ইলা বিআশইয়া-‘ইহিম মিন কাবলু ইন্নাহুম কা-নূফী শাক্কিম মুরীব।


মুফতী তাকী উসমানী

তখন তারা যার (অর্থাৎ যে ঈমানের) আকাঙ্ক্ষা করবে তার ও তাদের মধ্যে অন্তরাল করে দেওয়া হবে, যেমন করা হয়েছিল তাদের পূর্বে তাদের অনুরূপ লোকদের সাথে। প্রকৃতপক্ষে তারা এক বিভ্রান্তকর সন্দেহে পতিত ছিল।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তাদের ও তাদের বাসনার মধ্যে অন্তরাল হয়ে গেছে, যেমন-তাদের সতীর্থদের সাথেও এরূপ করা হয়েছে, যারা তাদের পূর্বে ছিল। তারা ছিল বিভ্রান্তিকর সন্দেহে পতিত।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এদের ও এদের বাসনার মধ্যে অন্তরাল করা হয়েছে, যেমন পূর্বে করা হয়েছিল এদের সমপন্থীদের ক্ষেত্রে। এরা ছিল বিভ্রান্তিকর সন্দেহের মধ্যে।


Post a Comment

0 Comments