ইসলাম ধর্মে 'গর্ভপাত′ সম্পর্কে পাঠকরা যা লিখেছেন,গর্ভপাতে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি,ইসলামে গর্ভপাতের বিধান,ইসলামের দৃষ্টিতে জন্ম নিয়ন্ত্রন

বিষয়: বাচ্চা নষ্ট করা ইসলাম কি বলে,ইসলামে গর্ভপাতকে কীভাবে বিবেচনা করা হয়?, ইসলামে কত দিনের বাচ্চা নষ্ট করা যায়

গর্ভপাতের বিষয়ে আমার একটি প্রশ্ন আছে। আমাদের ধর্মে গর্ভপাতকে কীভাবে বিবেচনা করা হয়? যদি কেউ পাঁচ থেকে ছয় সপ্তাহ বয়সী সন্তান গর্ভপাত করান তাহলে তার পরিণাম কী হবে? কীভাবে তিনি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবেন? আল্লাহ কি তাকে ক্ষমা করবেন?)

উত্তর : গর্ভপাত যদি ইচ্ছাকৃতভাবে হয়ে থাকে, কোনো ধরনের কারণ যদি এর মধ্যে না আসে তাহলে এটি হারাম। এটি যে অবস্থা বা যত দিনেই হোক না কেন। কারণ যেহেতু একটি বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পরে সেটাকে ধ্বংস করা আর সেটা যদি মানবভ্রূণ হয়ে থাকে তাহলে কোনো অবস্থাতেই এটি হালাল নয়, যেহেতু রাসুল (স.) বলেছেন, ‘জা-লিকাল ওয়াদুল খাফি’ অর্থাৎ এটি গোপন হত্যা। এটি গোপনীয়ভাবেই ভ্রূণ হত্যা যেটি সম্পূর্ণ হারাম করা হয়েছে।

রাসুলুল্লাহ (স.) এ বিষয়ে তাহদিদ করেছেন, কঠিন শাস্তির কথা উল্লেখ করেছেন এবং সতর্কবাণী দিয়েছেন। তাই এটি হারাম তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কোরআনে কারিমের মধ্যে আল্লাহু সুবহানাহুতায়ালা বলেছেন, কেয়ামতের দিন তাদের এই প্রশ্ন করা হবে যারা ইচ্ছাকৃত ভাবে হত্যা করেছে, ইয়া আয়্যিদামবিন কুতিলাত। ওয়া ইজাল মায়ুদু তুছইলাত? (অর্থাৎ কোন অপরাধে এদেরকে হত্যা করা হয়েছে? ) এ প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যেতে হবে। এটি আমরা বলছিলাম ইনটেনশন সম্পর্কে।

আর আল্লাহু সুবহানাহুতায়ালা তাঁর বান্দাদের, তারা যদি অপরাধ করে থাকে, ক্ষমা করবেনই। অপরাধ বোধে সত্যিকারভাবে যদি কেউ অনুতপ্ত হতে পারে এবং তওবা করে আল্লাহু রাব্বুল আলামিনের কাছে প্রত্যাবর্তন করেন, ঠিক যেভাবে প্রত্যাবর্তন করা দরকার, অবশ্যই আল্লাহতায়ালা ক্ষমা করে দেবেন। হতাশ হওয়ার কারণ নেই।

আর রাসুলুল্লাহ (স.) এ বিষয়টি হাদিসের মধ্যে স্পষ্ট উল্লেখ করেছেন, তওবাকারী ব্যক্তি হচ্ছে ওই ব্যক্তির মতো যার কোনো গুনাহই নেই। সুতরাং আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যদি কাউকে ক্ষমা করেন, তাহলে বান্দাকে আল্লাহু সুবহানাহুতায়ালা শুধু তাকে ক্ষমা করবেন এটাই নয়, বরং তাকে একেবারে গুনাহমুক্ত করে দেবেন।


আরো পড়ুন :-


স্মরণ শক্তি বৃদ্ধির দোয়া,মেধা বৃদ্ধির দোয়া,স্মৃতি শক্তি বাড়ানোর দোয়া!নামাজের পর ২১ বাড় পড়ুন


দোয়াটি পড়লে সাথে সাথে রাগ কমে যায়, রাগ কমানোর দোয়া,শিশুদের রাগ কমানোর আমল



(ads1)

(getButton) #text=(আল কোরআন বাংলা অনুবাদ ) #file=(Al Quran Bangla) #icon=(download) #size=(25) #color=(#d10404) #info=(PDF Download) 



সম্প্রতি ক্লিনিকগুলোতে গর্ভপাতের ভয়াবহ অবস্থা। কারও ভাষায়, ক্লিনিকগুলো মানব হত্যার কেন্দ্রস্থল। রাতবিরাত ক্লিনিক আঙিনায় তরুণীদের আনাগোনা। কারও যৌক্তিক সমস্যা থাকলেও, অধিকাংশ গর্ভপাত সমাজের নষ্ট চরিত্রের মহামারীর চিত্র। সমাজজীবনে নতুন ভাইরাস এখন গর্ভপাত।

বাস্তবতা হলো, এই শ্রেণির লোকদের বেশিরভাগ অসৎ উদ্দেশে গর্ভপাত করে। তবে কেউ যৌক্তিক কারণেও গর্ভপাত করে, তাদের সংখ্যা নগন্য। বিষয়টি নিয়ে ইসলামি শরিয়ার মতামত কী?

সমাধান হলো, ভ্রুণের বয়স যখন তেতাল্লিশ দিনের কম হবে তখন ভ্রুণটি একটি রক্তপি- হিসেবে মায়ের গর্ভে অবস্থান করে। তখন পর্যন্ত তার কোনো অঙ্গপ্রত্যঙ্গ প্রকাশ পায় না। এ অবস্থায় ভ্রুণটিকে মানুষের শরীরের একটা অঙ্গ হিসেবে ধরে নেওয়া হবে। আর মানুষের প্রতিটি অংশের মালিক আল্লাহতায়ালা। অতএব শরীরের অন্যান্য অঙ্গের মতো এই অঙ্গটিও নষ্ট করা নাজায়েজ। তবে শরয়ি কোনো যৌক্তিক কারণে তা নষ্ট করা বা গর্ভপাতের অবকাশ আছে।

ফিকাহ শাস্ত্রের নির্ভরযোগ্য কিতাব আদ্দুররুল মুখতার খ. ৯ পৃ. ৬১৫ উল্লেখ আছে, গর্ভপাতের জন্য কোনো কিছু পান করা মাকরুহ তবে কোনো অঙ্গ প্রকাশ না পেলে ওজরবশত মাকরুহ নয়।

ফতওয়ায়ে কাজি খান খ. ৩ পৃ. ৪১০ উল্লেখ আছে, স্তনদানকারী গর্ভবতী হওয়ার কারণে যদি তার দুধ বন্ধ হয়ে যায় ও শিশুর পিতার অন্যকোনো স্তনদানকারী ভাড়া নেওয়ার সামর্থ্য না থাকে এবং বাচ্চা মারা যাওয়ার আশঙ্কা হয় এ অবস্থায় ফিকাহবিশেষজ্ঞরা বলেন, গর্ভে বীর্য, জমাট রক্ত কিংবা গোস্তের টুকরাকারে থাকলে এবং কোনো অঙ্গ প্রকাশ না পেলে তখন চিকিৎসার মাধ্যমে গর্ভপাত করানো জায়েজ আছে।

ভ্রুণের বয়স যখন তেতাল্লিশ দিন হয়ে যাবে তখন থেকে তার প্রয়োজনীয় ওরগান প্রস্তুত শুরু হয়। যেমন : ফুসফুস, নাক, হাত ও বিশেষ কিছু হাড় ইত্যাদি। অতএব যখন তার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ প্রকাশ হতে শুরু করে তখন থেকে চার মাস পর্যন্ত গর্ভপাতের মাধ্যমে বা অন্যকোনো প্রক্রিয়ায় ভ্রুণটি নষ্ট করে ফেলা মাকরুহে তাহরিমি। আদ্দুররুল মুখতার খ. ১০, পৃ. ২৫৪ উল্লেখ আছে, নখ, চুল ইত্যাদি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ প্রকাশ পাওয়া হুকুমের দিক থেকে সকল অঙ্গপ্রকাশ পাওয়ার মতো। তবে শরয়ি কোনো ওজর হলে মাকরুহ হবে না। যেমন, গর্ভধারিণীর জীবননাশের আশঙ্কা থাকা। বিজ্ঞ ডাক্তাররা যদি এ কথা বলেন, বাচ্চাকে পেটে রাখা হলে মায়ের মৃত্যুর কারণ হবে, তাহলে বড় ক্ষতি থেকে পরিত্রাণের লক্ষ্যে ভ্রুণটিকে গর্ভপাতের মাধ্যমে নষ্ট করার অবকাশ আছে।

 


 আরো পড়ুন :-

স্মরণ শক্তি বৃদ্ধির দোয়া,মেধা বৃদ্ধির দোয়া,স্মৃতি শক্তি বাড়ানোর দোয়া!নামাজের পর ২১ বাড় পড়ুন


দোয়াটি পড়লে সাথে সাথে রাগ কমে যায়, রাগ কমানোর দোয়া,শিশুদের রাগ কমানোর আমল


(ads2)

(getButton) #text=(আল কোরআন বাংলা অনুবাদ ) #file=(Al Quran Bangla) #icon=(download) #size=(25) #color=(#d10404) #info=(PDF Download) 


আলফাতওয়াল মুতাআল্লিকা বিততিব্বি ওয়া আহকামিল মারজা খ. ১ পৃ. ২৮১ উল্লেখ আছে, বাচ্চার বয়স চার মাস হয়ে গেলে এ বাচ্চা গর্ভপাত করা বৈধ নয়। হ্যাঁ, বাচ্চাকে বাঁচানোর যথাসাধ্য চেষ্টার পর একাধিক বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা এ কথা বলে, বচ্চাকে তার মায়ের পেটে রেখে দিতে গেলে এ বাচ্চা তার মায়ের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তাহলে দুই ক্ষতির মধ্য থেকে মারাত্মক ক্ষতিকে প্রতিহত করার ও বড় উপকার অর্জনের লক্ষ্যে বাচ্চা গর্ভপাত করা বৈধ হবে।

ভ্রুণের বয়স যখন একশ বিশ দিন বা চার মাস হয়ে যায় তখন আল্লাহতাআলা তার মধ্যে রুহ দান করেন। আর রুহ আসার পর বাচ্চাকে নষ্ট করা বা গর্ভপাত করা যেন কোনো মানুষকে হত্যা করা। তাই তা হারাম। ফতহুল আলিয়্যিল মালিক খ. ১ পৃ. ৩৯৯ উল্লেখ আছে, ‘ভ্রুণে রুহ আসার পর গর্ভপাত সর্বসম্মতিক্রমে হারাম। এ অবস্থায় গর্ভপাত হত্যাতুল্য’ এ অবস্থায় বাচ্চাকে হত্যা করা জীবন্ত বাচ্চাকে কবর দেওয়ার নামান্তর।

যা জাহেলি যুগে ছিল। যার সম্পর্কে আল্লাহতাআলা বলেন, স্মরণ কর ওই দিনকে যেদিন জীবন্ত দাফনকৃত নিষ্পাপ বাচ্চাকে জিজ্ঞেস করা হবে তোমাকে কোন অপরাধের কারণে হত্যা করা হয়েছে। সুরা তাকয়ির : ৮

মানবকুল ও সারাজাহানের সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহতাআলা কুরআনে পাকে এরশাদ করেন, যে কেউ কোনো প্রাণ হত্যা করল, সে যেন সকল মানুষকে হত্যা করল। আর যে কারও জীবন রক্ষা করল, সে যেন সব মানুষের জীবন রক্ষা করল। সুরা মায়িদা : ৩২ -

প্রশ্ন ও মতামত জানাতে পারেন আমাদের কে ইমেল : info@banglanewsexpress.com

আমরা আছি নিচের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে ও

Post a Comment

0 Comments