কোরআন ও হাদিসের আলোতে সূরা সোয়াদ সকল তথ্য আল,সোয়াদ আলমল ও ফজিলত, সূরা সোয়াদ কতো বার পাঠ করলে কোন আলম ও ফজিলত, সূরা সোয়াদ নাযিলের কারন গুলো কি কি

  


৩৮ . ছ্ব---দ - ( ص ) | আরবি বর্ণ

মাক্কী, মোট আয়াতঃ ৮৮


بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ


صٓ وَالۡقُرۡاٰنِ ذِی الذِّکۡرِ ؕ


সাদ ওয়াল কুরআ-নি যিযযিকরি।


Mufti Taqi Usmani

Sād . I swear by the Qur’ān, (the book) containing advice, (this is true,)


মুফতী তাকী উসমানী

সোয়াদ, ১ কসম উপদেশপূর্ণ কুরআনের।

(ads1)

(getButton) #text=(আল কোরআন বাংলা অনুবাদ সহ এক সাথে ) #icon=(link) #color=(#f50707)

মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

ছোয়াদ। শপথ উপদেশপূর্ণ কোরআনের,


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

সোয়াদ, শপথ উপদেশপূর্ণ কুরআনের! তুমি অবশ্যই সত্যবাদী।


মাওলানা জহুরুল হক

ছোয়াদ! উপদেশ পরিপূর্ণ কুরআনের শপথ।


তাফসীরঃ

১. এটা সেই আল-হুরূফুল মুকাত্তাআত (বিভিন্ন হরফসমূহ)-এর একটি, যার অর্থ আল্লাহ তাআলা ছাড়া কেউ জানে না। সূরা বাকারার প্রথম আয়াতের টীকা দেখুন। কুরআন মাজীদে যেসব বস্তু দ্বারা শপথ করা হয়েছে, তার তাৎপর্য সম্পর্কে দেখুন সূরা আস-সাফফাত-এর ১নং টীকা।



بَلِ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا فِیۡ عِزَّۃٍ وَّشِقَاقٍ


বালিল্লাযীনা কাফারূফী ‘ইঝঝাতিওঁ ওয়াশিকা-ক।


Mufti Taqi Usmani

but those who disbelieve are (involved) in false pride and opposition.


মুফতী তাকী উসমানী

যারা কুফর অবলম্বন করেছে, তারা কেবল (এ কারণেই তা অবলম্বন করেছে যে, তারা) আত্মম্ভরিতা ও হঠকারিতায় লিপ্ত রয়েছে। ২


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

বরং যারা কাফের, তারা অহংকার ও বিরোধিতায় লিপ্ত।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

কিন্তু কাফিররা ঔদ্ধত্য ও বিরোধিতায় ডুবিয়া আছে।


মাওলানা জহুরুল হক

কিন্ত যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা আ‌ত্মাভিমানে ও দলপাকানোয় মগ্ন রয়েছে।


তাফসীরঃ

২. আল্লামা আলূসী (রহ.) اظهر (বেশি স্পষ্ট) বলে আয়াতের যে তারকীব (বিন্যাস প্রণালী) বর্ণনা করেছেন (রূহুল মাআনী, ২৩ খণ্ড ২১৭ পৃষ্ঠা) সে হিসেবেই এ তরজমা করা হয়েছে।



کَمۡ اَہۡلَکۡنَا مِنۡ قَبۡلِہِمۡ مِّنۡ قَرۡنٍ فَنَادَوۡا وَّلَاتَ حِیۡنَ مَنَاصٍ


কাম আহলাকনা-মিন কাবলিহিম মিন কারনিন ফানা-দাওঁ ওয়ালা-তাহীনা মানা-স।


Mufti Taqi Usmani

How many a generation have We destroyed before them, so they cried out (for mercy), while no time was left for having any refuge.


মুফতী তাকী উসমানী

আমি তাদের পূর্বে কত মানব গোষ্ঠীকেই ধ্বংস করেছি! তখন তারা আর্তচিৎকার করেছিল, কিন্তু তখন তো মুক্তি পাওয়ার সময়ই ছিল না।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তাদের আগে আমি কত জনগোষ্ঠীকে ধ্বংস করেছি, অতঃপর তারা আর্তনাদ করতে শুরু করেছে কিন্তু তাদের নিষ্কৃতি লাভের সময় ছিল না।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এদের পূর্বে আমি কত জনগোষ্ঠী ধ্বংস করেছি; তখন এরা আর্তচিৎকার করেছিল। কিন্তু তখন পরিত্রাণের কোনই উপায় ছিল না।


মাওলানা জহুরুল হক

এদের পূর্বে মানবগোষ্ঠীর কতকে যে আমরা ধ্বংস করেছি! তখন তারা চীৎকার করেছিল। কিন্ত সেই সময়ে পরিত্রাণের আর উপায় ছিল না।



وَعَجِبُوۡۤا اَنۡ جَآءَہُمۡ مُّنۡذِرٌ مِّنۡہُمۡ ۫  وَقَالَ الۡکٰفِرُوۡنَ ہٰذَا سٰحِرٌ کَذَّابٌ ۖۚ


ওয়া ‘আজিবূআন জাআহুম মুনযিরুম মিনহুম ওয়াকা-লাল কাফিরূনা হা-যা-ছাহিরূন কাযযা-ব।


Mufti Taqi Usmani

They (the pagans) wonder that a warner has come to them from among themselves. And the disbelievers say, “This is a magician, a sheer liar.


মুফতী তাকী উসমানী

তারা (কুরাইশ কাফেরগণ) এ কারণে বিস্ময়বোধ করছে যে, তাদের কাছে একজন সতর্ককারী এসেছে তাদেরই মধ্য হতে! এবং কাফেরগণ বলে, সে মিথ্যাচারী যাদুকর।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তারা বিস্ময়বোধ করে যে, তাদেরই কাছে তাদের মধ্যে থেকে একজন সতর্ককারী আগমন করেছেন। আর কাফেররা বলে এ-তো এক মিথ্যাচারী যাদুকর।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরা বিস্ময় বোধ করছে যে, এদের নিকট এদেরই মধ্য হতে একজন সতর্ককারী এলো এবং কাফিররা বলে, ‘এ তো এক জাদুকর, মিথ্যাবাদী।’


মাওলানা জহুরুল হক

আর তারা আশ্চর্য হয় যে তাদের মধ্য থেকেই তাদের কাছে একজন সতর্ককারী এসেছেন, আর অবিশ্বাসীরা বলে -- "এ তো একজন জাদুকর, ধোকাবাজ।



اَجَعَلَ الۡاٰلِہَۃَ اِلٰـہًا وَّاحِدًا ۚۖ اِنَّ ہٰذَا لَشَیۡءٌ عُجَابٌ


আ জা‘আলাল আ-লিহাতা ইলা-হাও ওয়া-হিদান ইন্না হা-যা-লাশাইউন ‘উজা-ব।


Mufti Taqi Usmani

Has he (not) turned all the gods into a single God? It is a very strange thing indeed.”


মুফতী তাকী উসমানী

সে কি সমস্ত মাবুদকে এক মাবুদে পরিণত করেছে? এটা তো বড় আজব কথা!


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

সে কি বহু উপাস্যের পরিবর্তে এক উপাস্যের উপাসনা সাব্যস্ত করে দিয়েছে। নিশ্চয় এটা এক বিস্ময়কর ব্যাপার।

(ads2)

(getButton) #text=(আল কোরআন বাংলা অনুবাদ সহ এক সাথে ) #icon=(link) #color=(#f50707)

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘সে কি বহু ইলাহ্কে এক ইলাহ্ বানিয়ে নিয়েছে ? এটা তো এক অত্যাশ্চর্য ব্যাপার!’


মাওলানা জহুরুল হক

কী! সে কি উপাস্যগণকে একইজন উপাস্য বানিয়েছে? এ তো নিশ্চয়ই এক আজব ব্যাপার!



وَانۡطَلَقَ الۡمَلَاُ مِنۡہُمۡ اَنِ امۡشُوۡا وَاصۡبِرُوۡا عَلٰۤی اٰلِہَتِکُمۡ ۚۖ  اِنَّ ہٰذَا لَشَیۡءٌ یُّرَادُ ۖۚ


ওয়ান তালাকাল মালাউ মিনহুম আনিমশূওয়াসবিরূ‘আলাআ-লিহাতিকুম ইন্না হা-যালাশাইয়ুইঁ ইউরা-দ।


Mufti Taqi Usmani

And the leaders among them walked out saying (to their followers), “Walk away (from the Prophet,) and stay firm on (adhering to) your gods. This (call of the Prophet) is surely something designed (for his personal benefit).


মুফতী তাকী উসমানী

তাদের মধ্যকার নেতৃবর্গ এই বলে সরে পড়ল যে, চল এবং তোমাদের উপাস্যদের পূজায় অবিচলিত থাক। নিশ্চয়ই এটা এক উদ্দেশ্যমূলক বিষয়। ৩


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তাদের কতিপয় বিশিষ্ট ব্যক্তি একথা বলে প্রস্থান করে যে, তোমরা চলে যাও এবং তোমাদের উপাস্যদের পূজায় দৃঢ় থাক। নিশ্চয়ই এ বক্তব্য কোন বিশেষ উদ্দেশ্যে প্রণোদিত।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এদের প্রধানেরা সরে পড়ে এই বলে, ‘তোমরা চলে যাও এবং তোমাদের দেবতাগুলির পূজায় তোমরা অবিচলিত থাক। নিশ্চয়ই এই ব্যাপারটি উদ্দেশ্যমূলক।’


মাওলানা জহুরুল হক

আর তাদের মধ্যের প্রধানরা সরে পড়ে এই বলে -- "তোমরা যাও এবং তোমাদের উপাস্যদের প্রতি আকঁড়ে থাকো। নিঃসন্দেহ এটি হচ্ছে অভিসন্ধিমূলক ব্যাপার।


তাফসীরঃ

৩. উদ্দেশ্যমূলক বলে তারা ইশারা করছিল, অর্থাৎ মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসবের মাধ্যমে নিজ ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করতে চান (নাউযুবিল্লাহ)।



مَا سَمِعۡنَا بِہٰذَا فِی الۡمِلَّۃِ الۡاٰخِرَۃِ ۚۖ  اِنۡ ہٰذَاۤ اِلَّا اخۡتِلَاقٌ ۖۚ


মা-ছামি‘না-বিহা-যা-ফিল মিল্লাতিল আ-খিরাতি ইন হা-যাইল্লাখ তিলা-ক।


Mufti Taqi Usmani

We never heard of it in the classical faith (of ours). This is nothing but a false invention.


মুফতী তাকী উসমানী

আমরা তো অন্য ধর্মে এরূপ কথা শুনিনি। আসলে এটা এক মনগড়া কথা।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমরা সাবেক ধর্মে এ ধরনের কথা শুনিনি। এটা মনগড়া ব্যাপার বৈ নয়।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘আমরা তো অন্য ধর্মাদর্শে এরূপ কথা শুনি নাই; এটা এক মনগড়া উক্তি মাত্র।


মাওলানা জহুরুল হক

"আমরা শেষের ধর্মবিধানে এমন কথা শুনি নি, এটি মনগড়া উক্তি বৈ তো নয়।



ءَاُنۡزِلَ عَلَیۡہِ الذِّکۡرُ مِنۡۢ بَیۡنِنَا ؕ  بَلۡ ہُمۡ فِیۡ شَکٍّ مِّنۡ ذِکۡرِیۡ ۚ  بَلۡ لَّمَّا یَذُوۡقُوۡا عَذَابِ ؕ


আউনঝিলা ‘আলাইহিযযিকরু মিম বাইনিনা- বালহুম ফী শাক্কিম মিন যিকরী বাল লাম্মা-ইয়াযূকূ‘আযা-ব।


Mufti Taqi Usmani

Is it (believable) that the message of advice has been sent down to him (alone) from among all of us?” The fact is that they are in doubt about My message; rather, they have not yet tasted My punishment.


মুফতী তাকী উসমানী

এই উপদেশ-বাণী আমাদের পরিবর্তে তার উপর নাযিল করা হল? বস্তুত তারা আমার উপদেশ সম্পর্কে সন্দেহে পতিত; বরং তারা এখনও পর্যন্ত আমার শাস্তির স্বাদ গ্রহণ করেনি।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমাদের মধ্য থেকে শুধু কি তারই প্রতি উপদেশ বানী অবতীর্ণ হল? বস্তুতঃ ওরা আমার উপদেশ সম্পর্কে সন্দিহান; বরং ওরা এখনও আমার মার আস্বাদন করেনি।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘আমাদের মধ্য হতে কি তারই ওপর কুরআন অবতীর্ণ হল ?’ প্রকৃতপক্ষে এরা তো আমার কুরআনে সন্দিহান, এরা এখনও আমার শাস্তি আস্বাদন করে নাই।


মাওলানা জহুরুল হক

"কী! আমাদের মধ্য থেকে বুঝি তারই কাছে স্মারক-গ্রন্থ অবতীর্ণ হল?" বস্তুতঃ তারা আমার স্মারক গ্রন্থ সন্বন্ধে সন্দেহের মধ্যেই রয়েছে? প্রকৃতপক্ষে তারা এখনও আমার শাস্তি আস্বাদন করে নি।



اَمۡ عِنۡدَہُمۡ خَزَآئِنُ رَحۡمَۃِ رَبِّکَ الۡعَزِیۡزِ الۡوَہَّابِ ۚ


আম ‘ইনদাহুম খাঝাইনুরাহমাতি রাব্বিকাল ‘আঝীঝিল ওয়াহহা-ব।


Mufti Taqi Usmani

Do they have the treasures of the mercy of your Lord, the Mighty, the Bountiful?


মুফতী তাকী উসমানী

তবে কি তাদের কাছে তোমার সেই রব্বের রহমতের ভাণ্ডারসমূহ রয়েছে যিনি ক্ষমতাময়, মহাদাতা?


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

না কি তাদের কাছে আপনার পরাক্রান্ত দয়াবান পালনকর্তার রহমতের কোন ভান্ডার রয়েছে?


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এদের নিকট কি আছে তোমার প্রতিপালকের অনুগ্রহের ভাণ্ডার, যিনি পরাক্রমশালী, মহান দাতা ?


মাওলানা জহুরুল হক

অথবা তাদের কাছে কি রয়েছে তোমার প্রভুর করুণার ভান্ডার -- মহাশক্তিশালী, মহাদাতা?


১০


اَمۡ لَہُمۡ مُّلۡکُ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضِ وَمَا بَیۡنَہُمَا ۟ فَلۡیَرۡتَقُوۡا فِی الۡاَسۡبَابِ


আম লাহুম মুলকুছ ছামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদিওয়ামা-বাইনাহুমা- ফালইয়ারতাকূ ফিল আছবা-ব।


Mufti Taqi Usmani

Or do they have the ownership of the heavens and the earth and what lies between them? Then let them ascend (to the sky) by ropes.


মুফতী তাকী উসমানী

নাকি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী এবং এর মধ্যবর্তী সবকিছুর রাজত্ব তাদের হাতে? ৪ তা থাকলে তারা যেন রশি টানিয়ে উপরে আরোহণ করে। ৫


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

নাকি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছুর উপর তাদের সাম্রাজ্য রয়েছে? থাকলে তাদের আকাশে আরোহণ করা উচিত রশি ঝুলিয়ে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এদের কি কর্তৃত্ব আছে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী এবং এদের অন্তর্বর্তী সমস্ত কিছুর ওপর ? থাকলে, এরা সিঁড়ি বেয়ে আরোহণ করুক!


মাওলানা জহুরুল হক

অথবা তাদের কি সার্বভৌমত্ব আছে মহাকাশমন্ডলীর ও পৃথিবীর এবং এই দুইয়ের মধ্যে যা-কিছু আছে তার? তাহলে তারা মাল- আসবাবের মধ্যে উঠতে থাকুক।


তাফসীরঃ

৪. অর্থাৎ তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওয়াত সম্পর্কে এভাবে প্রশ্ন তুলছে, যেন নবুওয়াত, যা কিনা আল্লাহ তাআলার এক বিশেষ রহমত, তাদের মুঠোয় ও তাদের এখতিয়ারে। তারা যাকে চাবে নবী বানানো হবে আর যাকে অপছন্দ করবে, তাকে নবুওয়াত দেওয়া হবে না।


৫. অর্থাৎ তাদের যদি এতটাই ক্ষমতা, তবে তো রশি টানিয়ে আকাশে চড়ার ক্ষমতাও তাদের থাকার কথা। অথচ সে ক্ষমতা তাদের নেই। তা যখন নেই, তখন আসমান ও যমীনের বিষয়াবলী সম্পর্কে তাদের কী এখতিয়ার থাকতে পারে, যার ভিত্তিতে তারা রায় দেবে যে, অমুককে নবী না বানিয়ে অমুককে বানানো হোক?


১১


جُنۡدٌ مَّا ہُنَالِکَ مَہۡزُوۡمٌ مِّنَ الۡاَحۡزَابِ


জুনদুম মা-হুনা-লিকা মাহঝূমুম মিনাল আহঝা-ব।


Mufti Taqi Usmani

What is there (in Makkah) is just a host of the (opposing) groups that has to be defeated.


মুফতী তাকী উসমানী

(তাদের অবস্থা তো এই যে,) তারা যেন বিরোধী দলসমূহের একটি বাহিনী, যারা ওখানেই পরাস্ত হবে। ৬


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এক্ষেত্রে বহু বাহিনীর মধ্যে ওদেরও এক বাহিনী আছে, যা পরাজিত হবে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

বহু দলের এই বাহিনীও সেক্ষেত্রে অবশ্যই পরাজিত হবে।


মাওলানা জহুরুল হক

এখানেই সম্মিলিত সৈন্যদলের এক বাহিনী পরাজিত হবে।


তাফসীরঃ

৬. বোঝানো উদ্দেশ্য যে, পূর্বে যে বড়-বড় সম্প্রদায় গত হয়েছে, তাদের তুলনায় এরা তো ক্ষুদ্র এক বাহিনী তুল্য, যারা নিজ দেশেই পরাভূত হবে। এটা মক্কা বিজয়ের ভবিষ্যদ্বাণী। ঘটনা সে রকমই ঘটেছিল। এতসব বড়াইকারী এ সম্প্রদায়টি মক্কা মুকাররমায়, নিজ বাসভূমিতে এমনভাবে পর্যুদস্ত হল যে, এখানে তাদের কোন ক্ষমতাই অবশিষ্ট থাকল না।


১২


کَذَّبَتۡ قَبۡلَہُمۡ قَوۡمُ نُوۡحٍ وَّعَادٌ وَّفِرۡعَوۡنُ ذُو الۡاَوۡتَادِ ۙ


কাযযাবাত কাবলাহুম কাওমুনূহিওঁ ওয়া ‘আ-দুওঁ ওয়া ফির‘আওনুযুল আওতা-দ।


Mufti Taqi Usmani

Even before them, the people of NūH and ‘Ād and Fir‘aun (Pharaoh), the man of stakes,


মুফতী তাকী উসমানী

তাদের আগে নূহের সম্প্রদায়, আদ জাতি এবং কীলকবিশিষ্ট ফির‘আউনও ৭ নবীগণকে মিথ্যাবাদী বলেছিল।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তাদের পূর্বেও মিথ্যারোপ করেছিল নূহের সম্প্রদায়, আদ, কীলক বিশিষ্ট ফেরাউন,


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এদের পূর্বেও রাসূলদেরকে অস্বীকার করেছিল নূহের সম্প্রদায়, ‘আদ ও বহু শিবিরের অধিপতি ফির‘আওন,


মাওলানা জহুরুল হক

এদের আগে নূহের ও 'আদের ও বহু শিবিরের মালিক ফিরআউনের লোকদল মিথ্যারোপ করেছিল,


তাফসীরঃ

৭. কীলক বিশিষ্ট দ্বারা বোঝানো হয়েছে, সে ছিল মহাক্ষমতাবান। তার ছিল বিশাল বাহিনী। কেউ বলেন, ফির‘আউনকে এ নামে অভিহিত করার কারণ হল, সে যাকে শাস্তি দিতে চাইত, তাকে গ্রেপ্তার করে তার হাত-পায়ে চারটি কীলক গেঁথে ঝুলিয়ে রাখত আর এ অবস্থায়ই তার মৃত্যু ঘটত। কারও মতে الاوتاد অর্থ জমকালো অট্টালিকা। ফির‘আউন মিসরে বড় বড় স্থাপনা বিশেষত ‘পিরামিড’ তৈরি করে রেখেছিল বলেই তাকে ذوالاوتاد বা ‘বিশাল স্থাপনার স্থপতি’ বলা হয়েছে। আবার এর দ্বারা তার রাজত্বের দীর্ঘস্থায়িত্বের প্রতিও ইঙ্গিত হতে পারে। -অনুবাদক


১৩


وَثَمُوۡدُ وَقَوۡمُ لُوۡطٍ وَّاَصۡحٰبُ لۡـَٔیۡکَۃِ ؕ اُولٰٓئِکَ الۡاَحۡزَابُ


ওয়াছামূদুওয়া কাওমুলুতিওঁ ওয়া আসহা-বুল আইকাতি উলাইকাল আহঝা-ব।


Mufti Taqi Usmani

and Thamūd and the people of LūT and the people of Aaikah have rejected (the messengers). They were the (strong) groups.


মুফতী তাকী উসমানী

এবং ছামূদ জাতি, লূতের সম্প্রদায় এবং আয়কাবাসীগণও। ৮ তারা ছিল বিরোধী দলসমূহের লোক। ৯


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

সামুদ, লূতের সম্প্রদায় ও আইকার লোকেরা। এরাই ছিল বহু বাহিনী।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

সামূদ, লূত সম্প্রদায় ও ‘আয়কা‘র অধিবাসী; এরা ছিল এক-একটি বিশাল বাহিনী।


মাওলানা জহুরুল হক

আর ছামুদজাতি ও লুতের স্বজাতি ও অরণ্যের বাসিন্দারা। ওরাও ছিল বিশাল বাহিনী।


তাফসীরঃ

৮. ‘আয়কা’ অর্থ বন-বনানী, এর দ্বারা হযরত শুআয়ব (আ.)-এর এলাকাকে বোঝানো হয়েছে। -অনুবাদক


৯. বিরোধী দল বলে বোঝানো হয়েছে, এসব জাতি আপন-আপন কালে সংঘবদ্ধ হয়ে নবী-রাসূলগণের বিরুদ্ধাচরণে লিপ্ত হয়েছিল। পরিণামে আল্লাহ তাআলা তাদেরকে ধ্বংস করে দেন। -অনুবাদক


১৪


اِنۡ کُلٌّ اِلَّا کَذَّبَ الرُّسُلَ فَحَقَّ عِقَابِ ٪


ইন কুল্লুন ইল্লা-কাযযাবার রুছুলা ফাহাক্কা ‘ইকা-ব।


Mufti Taqi Usmani

All of them did nothing but declare the messengers as liars; hence, My punishment became due.


মুফতী তাকী উসমানী

তাদের মধ্যে এমন কেউ ছিল না, যে রাসূলগণকে মিথ্যাবাদী বলেনি। ফলে তাদের উপর আমার শাস্তি অবতীর্ণ হয়েছে যথাযথভাবে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এদের প্রত্যেকেই পয়গম্বরগণের প্রতি মিথ্যারোপ করেছে। ফলে আমার আযাব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এদের প্রত্যেকেই রাসূলগণকে অস্বীকার করেছে। ফলে এদের ক্ষেত্রে আমার শাস্তি হয়েছে বাস্তব।


মাওলানা জহুরুল হক

সকলেই রসূলগণের প্রতি মিথ্যারোপ করেছিল বৈ তো নয়, সেজন্য আমার শাস্তিদান ছিল ন্যায়সঙ্গত।

(ads1)

(getButton) #text=(আল কোরআন বাংলা অনুবাদ সহ এক সাথে ) #icon=(link) #color=(#f50707)

১৫


وَمَا یَنۡظُرُ ہٰۤؤُلَآءِ اِلَّا صَیۡحَۃً وَّاحِدَۃً مَّا لَہَا مِنۡ فَوَاقٍ


ওয়ামা-ইয়ানজুরু হাউলাই ইল্লা-সাইহাতাওঁ ওয়া-হিদাতাম মা-লাহা-মিন ফাওয়া-ক।


Mufti Taqi Usmani

And these people are waiting for nothing but for a single Cry (the sound of the Trumpet to be blown on Doomsday) that will have no pause.


মুফতী তাকী উসমানী

এবং তারাও (অর্থাৎ মক্কাবাসীগণ) এমন এক মহা নাদ-এর অপেক্ষা করছে, যাতে কোন বিরতি থাকবে না। ১০


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

কেবল একটি মহানাদের অপেক্ষা করছে, যাতে দম ফেলার অবকাশ থাকবে না।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরা তো অপেক্ষা করছে একটি মাত্র প্রচণ্ড নিনাদের, যাতে কোন বিরাম থাকবে না।


মাওলানা জহুরুল হক

আর এরা তো প্রতীক্ষা করে না একটিমাত্র মহাগর্জন ব্যতীত আর কিছুর, তা থেকে কোনো অবকাশ থাকবে না।


তাফসীরঃ

১০. এর দ্বারা শিঙ্গার ফুঁৎকার ধ্বনি বোঝানো উদ্দেশ্য, যার সাথে-সাথে কিয়ামত হয়ে যাবে।


১৬


وَقَالُوۡا رَبَّنَا عَجِّلۡ لَّنَا قِطَّنَا قَبۡلَ یَوۡمِ الۡحِسَابِ


ওয়া কা-লূরাব্বানা-‘আজ্জিল্লানা-কিত্তানা-কাবলা ইয়াওমিল হিছা-ব।


Mufti Taqi Usmani

And they say, “O our Lord, give us our share (of the punishment) sooner, before the Day of Reckoning.”


মুফতী তাকী উসমানী

এবং তারা বলে, হে আমাদের প্রতিপালক! বিচার দিবসের আগেই আমাদের প্রাপ্য আমাদেরকে নগদ দিয়ে দিন। ১১


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তারা বলে, হে আমাদের পরওয়ারদেগার, আমাদের প্রাপ্য অংশ হিসাব দিবসের আগেই দিয়ে দাও।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরা বলে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! বিচারদিবসের পূর্বেই আমাদের প্রাপ্য আমাদেরকে শীঘ্র দিয়ে দাও না।’


মাওলানা জহুরুল হক

আর তারা বলে -- "আমাদের প্রভু! হিসেব-নিকেশের দিনের আগেই আমাদের অংশ আমাদের জন্য ত্বরান্বিত কর।"


তাফসীরঃ

১১. ‘আমাদের প্রাপ্য আমাদেরকে নগদ দিয়ে দিন’এটা কাফেরদের সেই দাবি, যার কথা পূর্বে বহুবার উল্লেখ করা হয়েছে। তারা বলত, আমাদেরকে যে শাস্তি দেওয়া হবে বলে শোনানো হচ্ছে তা এখনই কেন দেওয়া হচ্ছে না?


১৭


اِصۡبِرۡ عَلٰی مَا یَقُوۡلُوۡنَ وَاذۡکُرۡ عَبۡدَنَا دَاوٗدَ ذَا الۡاَیۡدِ ۚ اِنَّہٗۤ اَوَّابٌ


ইসবির ‘আলা-মা-ইয়াকূলূনা ওয়াযকুর ‘আবদানা-দা-ঊদা যাল আইদি ইন্নাহূআওওয়া-ব।


Mufti Taqi Usmani

Bear patiently with what they say, and remember Our servant Dawūd, the man of might. Surely he was ever-turning to Allah.


মুফতী তাকী উসমানী

(হে রাসূল!) তারা যা-কিছু বলে তাতে সবর কর এবং স্মরণ কর আমার বান্দা দাঊদ (আলাইহিস সালাম)কে, যে ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী। ১২ নিশ্চয়ই সে ছিল অত্যন্ত আল্লাহ-অভিমুখী।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তারা যা বলে তাতে আপনি সবর করুন এবং আমার শক্তিশালী বান্দা দাউদকে স্মরণ করুন। সে ছিল আমার প্রতি প্রত্যাবর্তনশীল।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরা যা বলে তাতে তুমি ধৈর্য ধারণ কর এবং স্মরণ কর, আমার শক্তিশালী বান্দা দাঊদের কথা; সে ছিল অতিশয় আল্লাহ্ অভিমুখী।


মাওলানা জহুরুল হক

তারা যা বলে তা সত্ত্বেও তুমি অধ্যবসায় চালিয়ে যাও, আর আমাদের বান্দা হাত থাকা দাউদকে স্মরণ কর, তিনি নিশ্চয়ই সতত ফিরতেন!


তাফসীরঃ

১২. কাফেরদের যেসব কথায় মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ব্যথিত হতেন, সূরার শুরুতে তা খণ্ডন করা হয়েছিল। এবার মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলা হচ্ছে, তাদের এসব বেহুদা কথা অগ্রাহ্য করুন, সবর অবলম্বন করুন এবং নিজ কাজে লেগে থাকুন। এ প্রসঙ্গে কয়েকজন নবীর ঘটনা বর্ণনা করা হচ্ছে, যা দ্বারা তিনি সান্তনা লাভ করতে পারেন। সর্বপ্রথম বর্ণিত হচ্ছে হযরত দাঊদ আলাইহিস সালামের ঘটনা।


১৮


اِنَّا سَخَّرۡنَا الۡجِبَالَ مَعَہٗ یُسَبِّحۡنَ بِالۡعَشِیِّ وَالۡاِشۡرَاقِ ۙ


ইন্না-ছাখখারনাল জিবা-লা মা‘আহূইউছাব্বিহনা বিল‘আশিইয়ি ওয়াল ইশরা-ক।


Mufti Taqi Usmani

We had subjugated the mountains to join him (in) making tasbīH (i.e. pronouncing Allah’s purity) at evening and sunrise,


মুফতী তাকী উসমানী

আমি পর্বতমালাকে নিয়োজিত করেছিলাম, যাতে তারা তার সঙ্গে সন্ধ্যাবেলা ও সূর্যোদয়কালে তাসবীহ পাঠ করে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি পর্বতমালাকে তার অনুগামী করে দিয়েছিলাম, তারা সকাল-সন্ধ্যায় তার সাথে পবিত্রতা ঘোষণা করত;


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আমি নিয়োজিত করেছিলাম পর্বতমালাকে, যেন এরা সকাল-সন্ধ্যায় তার সঙ্গে আমার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে,


মাওলানা জহুরুল হক

আমরা তো পাহাড়গুলোকে বশীভূত করেছিলাম তাঁর সঙ্গে জপ করতে রাত্রিকালে ও সূর্যোদয়ে, --


১৯


وَالطَّیۡرَ مَحۡشُوۡرَۃً ؕ کُلٌّ لَّہٗۤ اَوَّابٌ


ওয়াত্তাইরা মাহশূরাতান কুল্লুল্লাহূআওওয়া-ব।


Mufti Taqi Usmani

and the birds as well, mustered together. All were turning to Allah with him.


মুফতী তাকী উসমানী

এবং পাখিদেরকেও, যাদেরকে একত্র করে নেওয়া হত। তারা তার সঙ্গে মিলে আল্লাহর যিকিরে লিপ্ত থাকত। ১৩


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আর পক্ষীকুলকেও, যারা তার কাছে সমবেত হত। সবাই ছিল তাঁর প্রতি প্রত্যাবর্তনশীল।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এবং সমবেত বিহঙ্গকুলকেও; সকলেই ছিল তাঁর অভিমুখী।


মাওলানা জহুরুল হক

আর পাখীরা সমবেত হতো। সবাই ছিল তাঁর প্রতি অনুগত।


তাফসীরঃ

১৩. সূরা আম্বিয়ায় (২১ : ৭৯) বলা হয়েছে, আল্লাহ তাআলা হযরত দাঊদ আলাইহিস সালামকে সুমধুর কণ্ঠ দিয়েছিলেন। তাঁর বিশেষ মুজিযা ছিল, তিনি যখন আল্লাহ তাআলার যিকির করতেন, তখন পাহাড়ও তাঁর সাথে যিকির ও তাসবীহ পাঠে রত হত। এমনকি উড়ন্ত পাখিরাও থেমে গিয়ে তাঁর সঙ্গে যিকিরে মশগুল হয়ে যেত।


২০


وَشَدَدۡنَا مُلۡکَہٗ وَاٰتَیۡنٰہُ الۡحِکۡمَۃَ وَفَصۡلَ الۡخِطَابِ


ওয়া শাদাদ না-মুলকাহূওয়া আ-তাইনা-হুল হিকমাতা ওয়া ফাসলাল খিতা-ব।


Mufti Taqi Usmani

And We made his kingdom strong, and gave him wisdom and decisive speech.


মুফতী তাকী উসমানী

আমি তার রাজত্বকে করেছিলাম সুদৃঢ় এবং তাকে দান করেছিলাম জ্ঞানবত্তা ও মীমাংসাকর বাগ্মিতা।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি তাঁর সাম্রাজ্যকে সুদৃঢ় করেছিলাম এবং তাঁকে দিয়েছিলাম প্রজ্ঞা ও ফয়সালাকারী বাগ্নীতা।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আমি তার রাজ্যকে সুদৃঢ় করেছিলাম এবং তাকে দিয়েছিলাম প্রজ্ঞা ও ফয়সালাকারী বাগ্মিতা।


মাওলানা জহুরুল হক

আর আমরা তাঁর সাম্রাজ্যকে সুদৃঢ় করেছিলাম, আর তাঁকে দিয়েছিলাম জ্ঞান ও বিচারক্ষমতাসম্পন্ন সংবিধান।


২১


وَہَلۡ اَتٰىکَ نَبَؤُا الۡخَصۡمِ ۘ  اِذۡ تَسَوَّرُوا الۡمِحۡرَابَ ۙ


ওয়া হাল আতা-কা নাবাউল খাসম । ইযতাসাওওয়ারুল মিহরা-ব।


Mufti Taqi Usmani

Has there come to you the story of the litigants, when they entered the sanctuary by climbing over the wall?


মুফতী তাকী উসমানী

তোমার কাছে কি সেই মোকদ্দমাকারীদের সংবাদ পৌঁছেছে, যখন তারা প্রাচীর ডিঙ্গিয়ে ইবাদতখানায় প্রবেশ করেছিল? ১৪


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আপনার কাছে দাবীদারদের বৃত্তান্ত পৌছেছে, যখন তারা প্রাচীর ডিঙ্গীয়ে এবাদত খানায় প্রবেশ করেছিল।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তোমার নিকট বিবদমান লোকদের বৃত্তান্ত পৌঁছেছে কি ? যখন এরা প্রাচীর ডিঙাইয়া এলো ‘ইবাদতখানায়,


মাওলানা জহুরুল হক

আর তোমার কাছে কি দুশমনের কাহিনী এসে পৌঁছেছে? কেমন করে তারা রাজকক্ষে বেয়ে উঠল?


তাফসীরঃ

১৪. এখান থেকে ২৪ নং আয়াত পর্যন্ত যে ঘটনা বর্ণিত হয়েছে, তার সারমর্ম এরূপ, হযরত দাঊদ আলাইহিস সালামের দ্বারা কোনও একটা ভুল হয়ে গিয়েছিল। আল্লাহ তাআলা সে ব্যাপারে তাকে সতর্ক করতে চাইলেন। তাই তাঁর কাছে দু’জন লোককে অস্বাভাবিকভাবে পাঠিয়ে দিলেন। তিনি তখন নিজ ইবাদতখানায় ছিলেন। আগন্তুকদ্বয় তাদের একটা বিবাদের ব্যাপারে তাঁর কাছে বিচার চাইল। তিনি বিচার করে দিলেন, কিন্তু সাথে সাথে তিনি বুঝে ফেললেন, আল্লাহ তাআলা-এর মাধ্যমে সূক্ষ্মভাবে তাঁকে সতর্ক করে দিয়েছেন। সুতরাং তিনি তখনই সিজদায় পড়ে গেলেন এবং তাওবা ও ইস্তিগফারে লিপ্ত হলেন। তাঁর দ্বারা কি ভুল হয়ে গিয়েছিল, কুরআন মাজীদ তা বয়ান করেনি এবং মোকদ্দমা দ্বারা তিনি সে বিষয়ে সচকিতই-বা হলেন কিভাবে তারও ব্যাখ্যা দেয়নি। কুরআন মাজীদ কেবল এই সবক দিতে চেয়েছে যে, ভুলচুক তো মানুষের স্বভাবেই আছে। বড়-বড় বুযুর্গ এমনকি নবীগণের দ্বারা মাঝে-মধ্যে মামুলি ধরনের ভুল-বিচ্যুতি ঘটে গেছে, কিন্তু তারা কখনও আপন ভুলের উপর গোঁ ধরে বসে থাকেন না, একই ভুল বারবার করেন না; বরং তাদের কাছে নিজের ভুল স্পষ্ট হয়ে যাওয়া মাত্রই আল্লাহ তাআলার দিকে রুজু হন এবং তাওবা- ইস্তিগফারে লিপ্ত হন। এ শিক্ষা গ্রহণের বিষয়টা হযরত দাঊদ আলাইহিস সালামের ঘটনা বিশদভাবে জানার উপর নির্ভরশীল নয়, যদিও অনেকে এর বিশদ অনুসন্ধানের পেছনে পড়েছেন। মুফাসসিরগণ এ সম্পর্কে নানা কথা বলেছেন। এ প্রসঙ্গে বিভিন্ন কিসসা-কাহিনীও রচিত হয়েছে। একটা বেহুদা কিসসা তো বাইবেলেও বর্ণিত হয়েছে। বলা হয়েছে যে, হযরত দাঊদ আলাইহিসসালাম ‘উরিয়া’ নামক তার এক সেনাপতির স্ত্রীর সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হয়েছিলেন (নাউযুবিল্লাহ)। এসব কিসসা বর্ণনার উপযুক্ত নয়। একজন মহান নবী, কুরআন মাজীদের বর্ণনা মোতাবেক যিনি আল্লাহ তাআলার বিশেষ প্রিয়পাত্র ছিলেন এবং যিনি অত্যধিক পরিমাণে আল্লাহর যিকিরে মশগুল থাকতেন, তাঁর সম্পর্কে এ জাতীয় গল্প যে বিলকুল মনগড়া তাতে সন্দেহের অবকাশ নেই। কোন কোন মুফাসসির বর্ণনা করেছেন সেকালে কারও বিবাহিতা স্ত্রীকে বিবাহ করার আগ্রহ প্রকাশ করে স্বামীকে যদি অনুরোধ করা হত সে যেন তাকে তালাক দিয়ে দেয়, সেটাকে দূষনীয় মনে করা হত না। সেকালে এর ব্যাপক রেওয়াজ ছিল। তাই এরূপ করলে তাকে কেউ খারাপ মনে করত না। উরিয়ার স্ত্রী ছিল অত্যন্ত বুদ্ধিমতী। তাই হযরত দাঊদ আলাইহিস সালাম সেকালের রেওয়াজ অনুযায়ী উরিয়াকে অনুরোধ করলেন যেন স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দেয়, যাতে তিনি নিজে তাকে বিবাহ করতে পারেন। এরূপ অনুরোধ তাঁর পক্ষে কোন গুনাহের কাজ ছিল না, যেহেতু তা রক্ষা করা না করার সম্পূর্ণ এখতিয়ার উরিয়ার ছিল। তাছাড়া সমাজের প্রচলন অনুযায়ী সেটা দোষেরও ছিল না। কিন্তু তা সত্ত্বেও সেটা যেহেতু একজন মহান নবীর শান মোতাবেক ছিল না, তাই আল্লাহ তাআলা আয়াতে বর্ণিত সূক্ষ্ম পন্থায় তাকে সতর্ক করে দিলেন। সুতরাং তিনি এজন্য তাওবা-ইস্তিগফার করলেন। তিনি আর সে বিবাহ করলেন না। এ ব্যাখ্যা বাইবেলের কিসসার মত অবান্তর নয় বটে, কিন্তু কোন নির্ভরযোগ্য বর্ণনা দ্বারা এটা প্রমাণিত নয়। আসল কথা হচ্ছে, তাঁর ভুল যাই হোক না কেন আল্লাহ তাআলা তাঁর সে মহান নবীকে যে কেবল ক্ষমা করেছেন তাই নয়; বরং সে ভুলটিকে সম্পূর্ণরূপে পর্দার আড়াল করে রেখেছেন। কুরআন মাজীদে কোথাও সেটি উল্লেখ করেননি। সুতরাং আল্লাহ তাআলা নিজে যে ঘটনা গোপন রেখেছেন, তার অনুসন্ধানে লেগে পড়া কিছুতেই একজন মহান নবীর মর্যাদার অনুকূল নয়। তাছাড়া এর কোন প্রয়োজনও নেই। কুরআন যেমন বিষয়টাকে অস্পষ্ট রেখে দিয়েছে, আমাদেরও তেমনি অস্পষ্ট রেখে দেওয়া উচিত। কেননা কুরআন মাজীদ যে শিক্ষা দিতে চায় তা ঘটনা জানা ছাড়াও পুরোপুরি হাসিল হয়ে যায়।


২২


اِذۡ دَخَلُوۡا عَلٰی دَاوٗدَ فَفَزِعَ مِنۡہُمۡ قَالُوۡا لَا تَخَفۡ ۚ خَصۡمٰنِ بَغٰی بَعۡضُنَا عَلٰی بَعۡضٍ فَاحۡکُمۡ بَیۡنَنَا بِالۡحَقِّ وَلَا تُشۡطِطۡ وَاہۡدِنَاۤ اِلٰی سَوَآءِ الصِّرَاطِ


ইযদাখালূ‘আলা-দা-ঊদা ফাফাঝি‘আ মিনহুম কা-লূলা-তাখাফ খাছমা-নি বাগাবা‘দুনা-‘আলা-বা‘দিন ফাহকুম বাইনানা-বিলহাক্কিওয়ালা-তুশতিত ওয়াহদিনাইলা-ছাওয়াইসসিরা-ত।


Mufti Taqi Usmani

When they entered upon Dawūd, and he was scared of them, they said, “Be not scared. We are two litigants; one of us has wronged the other, so decide between us with truth, and do not cross the limits, and guide us to the right path.


মুফতী তাকী উসমানী

যখন তারা দাঊদের কাছে পৌঁছল, সে তাদের দেখে ঘাবড়ে গেল। তারা বলল, ভয় পাবেন না। আমরা বিবাদমান দু’টি পক্ষ। আমাদের একে অন্যের প্রতি জুলুম করেছে। সুতরাং আপনি আমাদের মধ্যে ন্যায়বিচার করে দিন এবং অবিচার করবেন না এবং আমাদেরকে সঠিক পথ-নির্দেশ করুন।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যখন তারা দাউদের কাছে অনুপ্রবেশ করল, তখন সে সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ল। তারা বললঃ ভয় করবেন না; আমরা বিবদমান দুটি পক্ষ, একে অপরের প্রতি বাড়াবাড়ি করেছি। অতএব, আমাদের মধ্যে ন্যায়বিচার করুন, অবিচার করবেন না। আমাদেরকে সরল পথ প্রদর্শন করুন।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এবং দাঊদের নিকট পৌঁছিল, তখন তাদের কারণে সে ভীত হয়ে পড়ল। এরা বলল, ‘ভীত হবেন না, আমরা দুই বিবদমান পক্ষ-আমাদের একে অপরের ওপর জুলুম করেছে; অতএব আমাদের মধ্যে ন্যায়বিচার করুন ; অবিচার করবেন না এবং আমাদেরকে সঠিক পথনির্দেশ করুন।


মাওলানা জহুরুল হক

যখন তারা দাউদের সামনে ঢুকে পড়ল তখন তিনি তাদের সন্বন্ধে সন্ত্রস্থ হলেন। তারা বললে -- "ভয় করবেন না, দুজন দুশমন, আমাদের একজন অন্যজনের প্রতি শত্রুতা করেছে, অতএব আমাদের মধ্যে ন্যায়ের সাথে বিচার করে দিন, আর অন্যায় করবেন না, আর আমাদের সঠিক পথে পরিচালিত করুন।


২৩


اِنَّ ہٰذَاۤ اَخِیۡ ۟ لَہٗ تِسۡعٌ وَّتِسۡعُوۡنَ نَعۡجَۃً وَّلِیَ نَعۡجَۃٌ وَّاحِدَۃٌ ۟ فَقَالَ اَکۡفِلۡنِیۡہَا وَعَزَّنِیۡ فِی الۡخِطَابِ


ইন্না হা-যাআখী লাহূতিছউওঁ ওয়া তিছ‘ঊনা না‘জাতাওঁ ওয়ালিয়া না‘জাতুওঁ ওয়াহিদাতুন ফাকা-লা আকফিলনীহা-ওয়া ‘আঝঝানী ফিল খিতা-ব।


Mufti Taqi Usmani

This is my brother; he has ninety nine ewes, and I have a single ewe; still he said, ‘Give it into my charge.’ And he overpowered me in speech.”


মুফতী তাকী উসমানী

এ আমার ভাই। তার নিরানব্বইটি দুম্বা আছে। আর আমার আছে একটি মাত্র দুম্বা। সে বলছে, এটিও আমার যিম্মায় দিয়ে দাও এবং সে কথার জোরে আমাকে দুর্বল করে দিয়েছে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

সে আমার ভাই, সে নিরানব্বই দুম্বার মালিক আর আমি মালিক একটি মাদী দুম্বার। এরপরও সে বলেঃ এটিও আমাকে দিয়ে দাও। সে কথাবার্তায় আমার উপর বল প্রয়োগ করে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘এই ব্যক্তি আমার ভাই, এটার আছে নিরানব্বইটি দুম্বা এবং আমার আছে মাত্র একটি দুম্বা। তবুও সে বলে, ‘আমার যিম্মায় এইটি দিয়ে দাও’, এবং কথায় সে আমার প্রতি কঠোরতা প্রদর্শন করেছে।


মাওলানা জহুরুল হক

এইজন অবশ্য আমার ভাই, তার রয়েছে নিরানব্বুইটি ভেড়ী আর আমার আছে একটিমাত্র ভেড়ী, কিন্ত সে বলে -- 'ওটি আমাকে দিয়ে দাও’, আর সে আমাকে তর্কাতর্কিতে হারিয়ে দিয়েছে।


২৪


قَالَ لَقَدۡ ظَلَمَکَ بِسُؤَالِ نَعۡجَتِکَ اِلٰی نِعَاجِہٖ ؕ  وَاِنَّ کَثِیۡرًا مِّنَ الۡخُلَطَآءِ لَیَبۡغِیۡ بَعۡضُہُمۡ عَلٰی بَعۡضٍ اِلَّا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَقَلِیۡلٌ مَّا ہُمۡ ؕ  وَظَنَّ دَاوٗدُ اَنَّمَا فَتَنّٰہُ فَاسۡتَغۡفَرَ رَبَّہٗ وَخَرَّ رَاکِعًا وَّاَنَابَ ٛ


কা-লা লাকাদ জালামাকা বিছুআ-লি না‘জাতিকা ইলা-নি‘আ-জিহী ওয়া ইন্না কাছীরাম মিনাল খুলাতাই লাইয়াবগী বা‘দুহুম ‘আলা-বা‘দিন ইল্লাল্লাযীনা আ-মানূওয়া ‘আমিলুসসা-লিহা-তি ওয়া কালীলুম মা-হুম ওয়া জান্না দা-ঊদা আন্নামা-ফাতান্না-হু ফাছতাগফারা রাব্বাহূওয়া খাররা রা -কি‘আওঁ ওয়া আনা-ব (ছিজদাহ-১০)।


Mufti Taqi Usmani

He (Dawūd) said, “He has certainly wronged you by demanding your ewe to be added to his ewe. Many partners oppress one another, except those who believe and do righteous deeds, and very few they are.” And Dawūd realized that We had put him to a test, so he prayed to his Lord for forgiveness, and bowing down, he fell in prostration, and turned (to Allah).


মুফতী তাকী উসমানী

দাঊদ বলল, সে তার দুম্বাদের সাথে মেলানোর জন্য তোমার দুম্বাটিকে দাবি করে নিশ্চয়ই তোমার উপর জুলুম করেছে। যাদের মধ্যে অংশীদারিত্ব থাকে, তাদের অনেকেই একে অন্যের প্রতি জুলুম করে থাকে। ব্যতিক্রম কেবল তারা, যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে। কিন্তু তারা বড় কম। তখন দাঊদ উপলব্ধি করল যে, মূলত আমি তাকে পরীক্ষা করেছি। কাজেই সে তার প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করল এবং সিজদায় লুটিয়ে পড়ল আর আল্লাহর অভিমুখী হল। ১৫


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

দাউদ বললঃ সে তোমার দুম্বাটিকে নিজের দুম্বাগুলোর সাথে সংযুক্ত করার দাবী করে তোমার প্রতি অবিচার করেছে। শরীকদের অনেকেই একে অপরের প্রতি জুলুম করে থাকে। তবে তারা করে না, যারা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ও সৎকর্ম সম্পাদনকারী। অবশ্য এমন লোকের সংখ্যা অল্প। দাউদের খেয়াল হল যে, আমি তাকে পরীক্ষা করছি। অতঃপর সে তার পালনকর্তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করল, সেজদায় লুটিয়ে পড়ল এবং তাঁর দিকে প্রত্যাবর্তন করল।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

দাঊদ বলল, ‘তোমার দুম্বাটিকে তার দুম্বাগুলির সঙ্গে যুক্ত করার দাবি করে সে তো তোমার প্রতি জুলুম করেছে। শরীকদের অনেকে একে অন্যের ওপর তো অবিচার করে থাকে-করে না কেবল মু’মিন ও সৎকর্মপরায়ণ ব্যক্তিগণ এবং তারা সংখ্যায় স্বল্প।’ দাঊদ বুঝতে পারল, আমি তাকে পরীক্ষা করলাম। এরপর সে তার প্রতিপালকের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করল এবং নত হয়ে লুটিয়ে পড়ল ও তাঁর অভিমুখী হল।


মাওলানা জহুরুল হক

তিনি বললেন -- "তোমার ভেড়ীকে তার ভেড়ীদের সঙ্গে দাবি করে সে তোমার প্রতি আলবৎ অন্যায় করেছে। নিঃসন্দেহ অংশীদারদের মধ্যের অনেকেই -- তাদের কেউ কেউ অন্যের প্রতি শত্রুতা করে, তারা ব্যতীত যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করছে, আর যারা তেমন তারা অল্পসংখ্যক।" আর দাউদ ভেবেছিলেন যে আমরা নিশ্চয়ই তাঁকে পরীক্ষা করছিলাম, সেজন্য তিনি তাঁর প্রভুর কাছে পরিত্রাণ খুজঁছিলেন, আর তিনি লুটিয়ে পড়লেন আনত হয়ে এবং বারবার ফিরতে থাকলেন।


তাফসীরঃ

১৫. এটি সিজদার আয়াত। যে ব্যক্তি আরবীতে এটি পড়বে বা শুনবে তার উপর সিজদা ওয়াজিব হয়ে যাবে।


২৫


فَغَفَرۡنَا لَہٗ ذٰلِکَ ؕ وَاِنَّ لَہٗ عِنۡدَنَا لَزُلۡفٰی وَحُسۡنَ مَاٰبٍ


ফাগাফারনা-লাহূযা-লিকা ওয়া ইন্না লাহু ‘ইনদানা-লাঝুলফা-ওয়া হুছনা মাআ-ব।


Mufti Taqi Usmani

So we forgave him that (lapse), and surely he has a place of nearness in Our presence, and an excellent resort.


মুফতী তাকী উসমানী

অনন্তর আমি তাকে ক্ষমা করে দিলাম। প্রকৃতপক্ষে আমার কাছে রয়েছে তার বিশেষ নৈকট্য ও উত্তম ঠিকানা।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি তার সে অপরাধ ক্ষমা করলাম। নিশ্চয় আমার কাছে তার জন্যে রয়েছে উচ্চ মর্তবা ও সুন্দর আবাসস্থল।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরপর আমি তার ত্রুটি ক্ষমা করলাম। আমার নিকট তার জন্যে রয়েছে নৈকট্যের মর্যাদা ও শুভ পরিণাম।


মাওলানা জহুরুল হক

কাজেই এই ব্যাপারে আমরা তাঁকে পরিত্রাণ করেছিলাম। আর নিশ্চয়ই তাঁর জন্য আমাদের কাছে তো নৈকট্য রয়েছে, আর রয়েছে এক সুন্দর গন্তব্যস্থল।


২৬


یٰدَاوٗدُ اِنَّا جَعَلۡنٰکَ خَلِیۡفَۃً فِی الۡاَرۡضِ فَاحۡکُمۡ بَیۡنَ النَّاسِ بِالۡحَقِّ وَلَا تَتَّبِعِ الۡہَوٰی فَیُضِلَّکَ عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ ؕ  اِنَّ الَّذِیۡنَ یَضِلُّوۡنَ عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ لَہُمۡ عَذَابٌ شَدِیۡدٌۢ بِمَا نَسُوۡا یَوۡمَ الۡحِسَابِ ٪


ইয়া-দা-ঊদুইন্না-জা‘আলনা-কা খালীফাতান ফিল আরদিফাহকুম বাইনান্না-ছি বিলহাক্কি ওয়ালা-তাত্তাবি‘ইল হাওয়া-ফাইউদিল্লাকা ‘আন ছাবীলিল্লা-হি ইন্নাল্লাযীনা ইয়াদিল্লুনা ‘আন ছাবীলিল্লা-হি লাহুম ‘আযা-বুন শাদীদুম বিমা-নাছূইয়াওমাল হিছা-ব।


Mufti Taqi Usmani

O Dawūd, We have made you a vicegerent on earth, so judge between people with truth, and do not follow the selfish desire, lest it should lead you astray from Allah’s path. Surely those who go astray from Allah’s path will have a severe punishment, because they had forgotten the Day of Reckoning.


মুফতী তাকী উসমানী

হে দাঊদ! আমি পৃথিবীতে তোমাকে খলীফা বানিয়েছি। সুতরাং তুমি মানুষের মধ্যে ন্যায়বিচার করো এবং খেয়াল-খুশীর অনুগামী হয়ো না। অন্যথায় তা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করবে। নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত হয় তাদের জন্য আছে কঠিন শাস্তি, যেহেতু তারা হিসাব দিবসকে বিস্মৃত হয়েছিল।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

হে দাউদ! আমি তোমাকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেছি, অতএব, তুমি মানুষের মাঝে ন্যায়সঙ্গতভাবে রাজত্ব কর এবং খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করো না। তা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করে দেবে। নিশ্চয় যারা আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত হয়, তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর শাস্তি, এ কারণে যে, তারা হিসাবদিবসকে ভূলে যায়।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘হে দাঊদ! আমি তোমাকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেছি, অতএব তুমি লোকদের মধ্যে সুবিচার কর এবং খেয়াল-খুশির অনুসরণ কর না, কেননা এটা তোমাকে আল্লাহ্ র পথ হতে বিচ্যুত করবে।’ যারা আল্লাহ্ র পথ হতে ভ্রষ্ট হয় তাদের জন্যে রয়েছে কঠিন শাস্তি, কারণ তারা বিচারদিবসকে বিস্মৃত হয়ে আছে।


মাওলানা জহুরুল হক

হে দাউদ! আমরা তোমাকে পৃথিবীতে খলিফা বানিয়েছি, সেজন্য তুমি লোকজনের মধ্যে বিচার করো ন্যায়সঙ্গতভাবে, আর খেয়ালখুশীর অনুসরণ করো না, পাছে তা তোমাকে আল্লাহ্‌র পথ থেকে ভ্রষ্ট করে ফেলে। নিঃসন্দেহ যারা আল্লাহ্‌র পথ থেকে বিপথে যায় তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি। কেননা তারা ভুলে গিয়েছিল হিসেব-নিকেশের দিনের কথা।


২৭


وَمَا خَلَقۡنَا السَّمَآءَ وَالۡاَرۡضَ وَمَا بَیۡنَہُمَا بَاطِلًا ؕ  ذٰلِکَ ظَنُّ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا ۚ  فَوَیۡلٌ لِّلَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا مِنَ النَّارِ ؕ


ওয়ামা-খালাকনাছ ছামাআ ওয়াল আরদা ওয়ামা-বাইনাহুমা-বা-তিলান যা-লিকা জান্নুল্লাযীনা কাফারূ ফাওয়াইলুলিলল্লাযীনা কাফারূমিনান্না-র।


Mufti Taqi Usmani

We did not create the heavens and the earth and what is between them in vain. That is the thinking of those who disbelieve. So, woe to the disbelievers because of the Fire (they have to face).


মুফতী তাকী উসমানী

আমি আকাশমণ্ডলী, পৃথিবী এবং এর মাঝখানে যা-কিছু আছে, তা নিরর্থক সৃষ্টি করিনি। এটা যারা কুফর অবলম্বন করেছে তাদের ধারণা মাত্র। সুতরাং কাফেরদের জন্য রয়েছে ধ্বংস জাহান্নামরূপে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি আসমান-যমীন ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী কোন কিছু অযথা সৃষ্টি করিনি। এটা কাফেরদের ধারণা। অতএব, কাফেরদের জন্যে রয়েছে দূর্ভোগ অর্থাৎ জাহান্নাম।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আমি আকাশ, পৃথিবী এবং এতদুভয়ের মধ্যবর্তী কোন কিছুই অনর্থক সৃষ্টি করি নাই। অনর্থক সৃষ্টি করার ধারণা এদের যারা কাফির, সুতরাং কাফিরদের জন্যে রয়েছে জাহান্নামের দুর্ভোগ।


মাওলানা জহুরুল হক

আর আমরা মহাকাশ ও পৃথিবী এবং এ দুয়ের মধ্যে যা-কিছু আছে তা বৃথা সৃষ্টি করি নি। এরকম ধারণা হচ্ছে তাদের যারা অবিশ্বাস পোষণ করে। সুতরাং আগুনের কারণে ধিক্ তাদের জন্য যারা অবিশ্বাস পোষণ করে।


২৮


اَمۡ نَجۡعَلُ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ کَالۡمُفۡسِدِیۡنَ فِی الۡاَرۡضِ ۫ اَمۡ نَجۡعَلُ الۡمُتَّقِیۡنَ کَالۡفُجَّارِ


আম নাজ‘আলুল্লাযীনা আ-মানূওয়া ‘আমিলুসসা-লিহা-তি কালমুফছিদীনা ফিল আরদি আম নাজ‘আলুল মুত্তাকীনা কালফুজ্জা-র ।


Mufti Taqi Usmani

Shall We make those who believe and do righteous deeds equal to those who commit mischief on the earth? Or shall We make the God-fearing equal to the sinners?


মুফতী তাকী উসমানী

যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে, আমি কি তাদেরকে সেই সব লোকের সমান গণ্য করব, যারা পৃথিবীতে অশান্তি বিস্তার করে? না কি আমি মুত্তাকীদেরকে পাপাচারীদের সমান গণ্য করব? ১৬


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি কি বিশ্বাসী ও সৎকর্মীদেরকে পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টিকারী কাফেরদের সমতুল্য করে দেব? না খোদাভীরুদেরকে পাপাচারীদের সম্মান করে দেব।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে এবং যারা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়ায়, আমি কি তাদেরকে সমান গণ্য করব? আমি কি মুত্তাকীদেরকে অপরাধীদের সমান গণ্য করব ?


মাওলানা জহুরুল হক

যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করছে তাদের কি আমরা পৃথিবীতে ফ্যাসাদ-সৃষ্টিকারীদের ন্যায় গণ্য করব? অথবা ধর্মভীরুদের কি আমরা জ্ঞান করব পাপিষ্ঠদের ন্যায়?


তাফসীরঃ

১৬. আখেরাত যে অপরিহার্য এটা তার দলীল। পূর্বের আয়াতসমূহের সাথে এর যোগসূত্র এই যে, আল্লাহ তাআলা হযরত দাঊদ আলাইহিস সালামকে আদেশ করেছিলেন, তাকে যখন তাঁর খলীফা বানানো হয়েছে, তখন তিনি যেন মানুষের মধ্যে ন্যায়বিচার করেন। আল্লাহ তাআলা যেন বলছেন, আমি আমার খলীফাকে যখন ন্যায়বিচারের আদেশ করেছি, তখন আমি নিজে কি করে অবিচার করতে পারি? এই ন্যায়বিচারের জন্যই আখেরাত হবে এবং সেখানে ভালো-মন্দের হিসাব-নিকাশ হবে। তা না হলে অর্থ দাঁড়াবে, আমি ভালো লোক ও মন্দ লোকের মধ্যে কোন পার্থক্য রাখিনি এবং দুনিয়ায় কোন ব্যক্তি যতই ভালো কাজ করুক কিংবা যতই মন্দ কাজ করুক, সেজন্য কোন জিজ্ঞাসাবাদ হবে না এবং সৎকর্মশীলদেরকেও দেওয়া হবে না কোন পুরস্কার। এরূপ বেইনসাফী আমি কী করে করতে পারি?


২৯


کِتٰبٌ اَنۡزَلۡنٰہُ اِلَیۡکَ مُبٰرَکٌ لِّیَدَّبَّرُوۡۤا اٰیٰتِہٖ وَلِیَتَذَکَّرَ اُولُوا الۡاَلۡبَابِ


কিতা-বুন আনঝালনা-হুইলাইকামুবা-রাকুল লিইয়াদ্দাব্বারূআ-য়া-তিহী ওয়া লিইয়াতাযাক্কারা উলুল আলবা-ব।


Mufti Taqi Usmani

This is a blessed Book We have revealed to you, so that they deliberate in its verses, and so that the men of understanding may heed to advice.


মুফতী তাকী উসমানী

(হে রাসূল!) এটি এক বরকতময় কিতাব, যা আমি তোমার প্রতি নাযিল করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতের মধ্যে চিন্তা করে এবং যাতে বোধসম্পন্ন ব্যক্তিগণ উপদেশ গ্রহণ করে। ১৭


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এটি একটি বরকতময় কিতাব, যা আমি আপনার প্রতি বরকত হিসেবে অবতীর্ণ করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতসূহ লক্ষ্য করে এবং বুদ্ধিমানগণ যেন তা অনুধাবন করে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এক কল্যাণময় কিতাব, এটা আমি তোমার প্রতি অবতীর্ণ করেছি, যাতে মানুষ এটার আয়াতসমূহ অনুধাবন করে এবং বোধশক্তিসম্পন্ন ব্যক্তিগণ গ্রহণ করে উপদেশ।


মাওলানা জহুরুল হক

একখানা গ্রন্থ -- আমরা এটি তোমার কাছে অবতারণ করছি, কল্যাণময়, যেন তারা এর আয়াতগুলো সন্বন্ধে ভাবতে পারে, আর বুদ্ধিশুদ্ধি থাকা লোকেরা যেন উপদেশ গ্রহণ করতে পারে।


তাফসীরঃ

১৭. অর্থাৎ আখেরাত ও হিসাব-নিকাশের আবশ্যিকতা যখন বুঝে আসল, তখন এটাও বুঝে নাও যে, মানুষকে আগেভাগে সতর্ক করার জন্য তাদেরকে হেদায়াতের বাণী দান করা তাঁর ইনসাফেরই দাবি, যাতে মানুষ সেই হেদায়াত অনুযায়ী কাজ করে নিজ আখেরাতকে নির্মাণ করতে পারে। তাই আল্লাহ তাআলা এই বরকতময় গ্রন্থ আল-কুরআন নাযিল করেছেন।


৩০


وَوَہَبۡنَا لِدَاوٗدَ سُلَیۡمٰنَ ؕ  نِعۡمَ الۡعَبۡدُ ؕ  اِنَّہٗۤ اَوَّابٌ ؕ


ওয়া ওয়াহাবনা-লিদা-ঊদা ছুলাইমা-না নি‘মাল ‘আবদু; ইন্নাহূআওওয়া-ব।


Mufti Taqi Usmani

And We blessed Dawūd with Sulaimān. He was an excellent servant (of Allah). Surely, he was great in turning (to Us, in penitence and praise).


মুফতী তাকী উসমানী

আমি দাঊদকে দান করলাম সুলাইমান (-এর মত পুত্র)। সে ছিল উত্তম বান্দা। নিশ্চয়ই সে ছিল অতিশয় আল্লাহ অভিমুখী।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি দাউদকে সোলায়মান দান করেছি। সে একজন উত্তম বান্দা। সে ছিল প্রত্যাবর্তনশীল।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আমি দাঊদকে দান করলাম সুলায়মান। সে ছিল উত্তম বান্দা এবং সে ছিল অতিশয় আল্লাহ্ অভিমুখী।


মাওলানা জহুরুল হক

আর আমরা দাউদের জন্য সুলাইমানকে দিয়েছিলাম। অতি উত্তম বান্দা! নিঃসন্দেহ তিনি বারবার ফিরতেন।


৩১


اِذۡ عُرِضَ عَلَیۡہِ بِالۡعَشِیِّ الصّٰفِنٰتُ الۡجِیَادُ ۙ


ইয‘উরিদা ‘আলাইহি বিল ‘আশিইয়িসসা-ফিনা-তুল জিয়া-দ।


Mufti Taqi Usmani

(Worth remembering is the incident) when the swift horses of high breeding were presented before him in the evening.


মুফতী তাকী উসমানী

(সেই সময়টি স্মরণীয়) যখন সন্ধ্যাবেলা তার সামনে উৎকৃষ্ট প্রজাতির ভালো-ভালো ঘোড়া পেশ করা হল।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যখন তার সামনে অপরাহ্নে উৎকৃষ্ট অশ্বরাজি পেশ করা হল,


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

যখন অপরাহ্নে তার সামনে ধাবনোদ্যত উৎকৃষ্ট অশ্বরাজিকে উপস্থিত করা হল,


মাওলানা জহুরুল হক

দেখো! বিকেলবেলা তাঁর সমক্ষে দ্রতগামী ঘোড়াদের হাজির করা হল,


৩২


فَقَالَ اِنِّیۡۤ اَحۡبَبۡتُ حُبَّ الۡخَیۡرِ عَنۡ ذِکۡرِ رَبِّیۡ ۚ  حَتّٰی تَوَارَتۡ بِالۡحِجَابِ ٝ


ফাকা-লা ইন্নীআহবাবতুহুব্বাল খাইরি ‘আন যিকরি রাববী হাত্তা-তাওয়া-রাত বিলহিজা-ব।


Mufti Taqi Usmani

He said, “I held the love of the good things (i.e. these horses) because of the remembrance of my Lord.” until it went behind the veil.


মুফতী তাকী উসমানী

তখন সে বলল, আমি আমার প্রতিপালকের স্মরণার্থেই এই সম্পদকে ভালোবেসেছি। অবশেষে তা পর্দার আড়াল হয়ে গেল।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তখন সে বললঃ আমি তো আমার পরওয়ারদেগারের স্মরণে বিস্মৃত হয়ে সম্পদের মহব্বতে মুগ্ধ হয়ে পড়েছি-এমনকি সূর্য ডুবে গেছে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তখন সে বলল, ‘আমি তো আমার প্রতিপালকের স্মরণ হতে বিমুখ হয়ে ঐশ্বর্য প্রীতিতে মগ্ন হয়ে পড়েছি, এদিকে সূর্য অস্তমিত হয়ে গেছে;


মাওলানা জহুরুল হক

তখন তিনি বললেন -- "আমি অবশ্য ভালবস্তুর ভাললাগাকে ভাল পেয়ে গেছি আমার প্রভুকে স্মরণ রাখার জন্যে," -- যে পর্যন্ত না তারা পর্দার আড়ালে অদৃশ্য হয়ে গেল।


৩৩


رُدُّوۡہَا عَلَیَّ ؕ فَطَفِقَ مَسۡحًۢا بِالسُّوۡقِ وَالۡاَعۡنَاقِ


রুদ্দূহা-‘আলাইইয়া ফাতাফিকা মাছহাম বিছছূকিওয়াল আ‘না-ক।


Mufti Taqi Usmani

(Then he said,) “Bring them back to me” - and he started passing his hands over the shanks and the necks (of the horses).


মুফতী তাকী উসমানী

(অনন্তর সে বলল,) ওগুলোকে আমার কাছে ফিরিয়ে আন। অতঃপর সে (তাদের) পায়ের গোছা ও ঘাড়ে হাত বুলাতে লাগল। ১৮


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এগুলোকে আমার কাছে ফিরিয়ে আন। অতঃপর সে তাদের পা ও গলদেশ ছেদন করতে শুরু করল।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘এইগুলিকে পুনরায় আমার সামনে আনয়ন কর।’ এরপর সে এদের পদ ও গলদেশ ছেদন করতে লাগল।


মাওলানা জহুরুল হক

"ওদের আমার কাছে নিয়ে এসো।" তখন তিনি পা ও ঘাড় মালিশ করতে লাগলেন।


তাফসীরঃ

১৮. জিহাদের জন্য যে উৎকৃষ্ট প্রজাতির ঘোড়া সংগ্রহ করা হয়েছিল, যেগুলো দ্বারা তাঁর রাজ-ক্ষমতার জৌলুসও প্রকাশ পাচ্ছিল, একদিন সেগুলো তাঁর সামনে পেশ করা হল। কিন্তু সেই জমকালো দৃশ্য দেখে যে তিনি আল্লাহ তাআলাকে ভুলে গেলেন এমন নয়; বরং তিনি বললেন, আমি তো এগুলোকে ভালোবাসি আল্লাহরই জন্য। এজন্য নয় যে, এর দ্বারা আমার ক্ষমতার গৌরব প্রকাশ পাচ্ছে। এগুলো তো সংগ্রহই করা হয়েছে জিহাদের জন্য আর জিহাদ করা হয় আল্লাহ তাআলার ভালোবাসায়। অতঃপর ঘোড়াগুলো এগুতে এগুতে তাঁর চোখের আড়ালে চলে গেল। তিনি সেগুলোকে আবারও তার সামনে আনতে বললেন। এবার তিনি সেগুলোর পায়ের গোছা ও গর্দানে আদর বুলিয়ে দিলেন। কুরআন মাজীদ এ ঘটনাটি উল্লেখ করে মানুষকে শিক্ষা দিচ্ছে যে, দুনিয়ার ধন-দৌলত অর্জিত হলে সেজন্য আল্লাহর শোকর আদায় করা উচিত। এমন যেন না হয় যে, তার মোহ ব্যক্তিকে গর্বিত করে তুলল এবং আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল করে দিল; বরং বিনয়ের সাথে তাকে এমন কাজেই ব্যবহার করা চাই, যা হবে আল্লাহ তাআলার আদেশ মোতাবেক। আয়াতের উপরিউক্ত তাফসীর হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাযি.) থেকে বর্ণিত আছে এবং এটা আয়াতের শব্দাবলীরও বেশি কাছাকাছি। ইবনে জারির (রহ.) ইমাম রাযী (রহ.) প্রমুখ এ তাফসীরকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। মুফাসসিরদের একটি বড় দল আয়াতের আরও একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন এবং সে ব্যাখ্যাই বেশি প্রসিদ্ধ। তার সারমর্ম নিম্নরূপ ঘোড়াগুলি দেখতে দেখতে তাঁর নামায কাযা হয়ে গিয়েছিল, যে কারণে তাঁর খুব আফসোস হল। তিনি বলে উঠলেন, দেখা যাচ্ছে, এই অর্থ-সম্পদের মহব্বত আমাকে আল্লাহ তাআলার মহব্বত থেকে গাফেল করে দিয়েছে। কাজেই তিনি ঘোড়াগুলিকে আবার তাঁর সামনে আনতে বললেন। এবার তিনি সেগুলো কুরবানী করে দিতে মনস্থ করলেন এবং সে উদ্দেশ্যে তরবারি দ্বারা তাদের পায়ের গোছা ও গর্দান কাটা রে দিলেন। এ তাফসীর অনুযায়ী আয়াতের তরজমা করতে হবে এ রকম, ‘যখন তার সামনে উৎকৃষ্ট প্রজাতির ভালো-ভালো ঘোড়া পেশ করা হল, তখন তিনি বললেন, এই ধন-দৌলতের ভালোবাসা আমাকে আল্লাহর মহব্বত থেকে গাফেল করে দিয়েছে। পরিশেষে ঘোড়াগুলি যখন তার চোখের আড়ালে চলে গেল, তখন তিনি বললেন, সেগুলো ফিরিয়ে আন। তারপর তিনি সেগুলোর পায়ের গোছা ও গর্দানে (তরবারি দ্বারা) হাত চালাতে লাগলেন’।


৩৪


وَلَقَدۡ فَتَنَّا سُلَیۡمٰنَ وَاَلۡقَیۡنَا عَلٰی کُرۡسِیِّہٖ جَسَدًا ثُمَّ اَنَابَ


ওয়া লাকাদ ফাতান্না-ছুলাইমা-না ওয়া আলকাইনা-‘আলা-কুরছিইয়িহী জাছাদান ছু ম্মা আনা-ব।


Mufti Taqi Usmani

And indeed We tested Sulaimān while We threw on his throne a body after which he turned (to Us).


মুফতী তাকী উসমানী

অবশ্যই আমি সুলাইমানকে পরীক্ষা করেছিলাম এবং তার সিংহাসনে একটি ধড় এনে ফেলে দিয়েছিলাম। ১৯ অনন্তর সে (আল্লাহর) অভিমুখী হল।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি সোলায়মানকে পরীক্ষা করলাম এবং রেখে দিলাম তার সিংহাসনের উপর একটি নিস্প্রাণ দেহ। অতঃপর সে রুজু হল।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আমি তো সুলায়মানকে পরীক্ষা করলাম এবং তার আসনের ওপর রাখলাম একটি ধড়; এরপর সুলায়মান আমার অভিমুখী হল।


মাওলানা জহুরুল হক

আর আমরা নিশ্চয়ই সুলাইমানকে পরীক্ষা করেছিলাম, আর তাঁর সিংহাসনে আমরা স্থাপন করেছিলাম একটি দেহ মাত্র, তখন তিনি ফিরলেন।


তাফসীরঃ

১৯. এটি আরেকটি ঘটনা। কুরআন মাজীদে এ ঘটনারও বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হয়নি এবং নির্ভরযোগ্য হাদীসেও এমন কোন ঘটনা পাওয়া যায় না, যাকে এ আয়াতের ব্যাখ্যায় পেশ করা যায়। এর তাফসীরে যেসব বর্ণনা পাওয়া যায়, তা নেহাত দুর্বল অথবা সম্পূর্ণ অবান্তর। কিংবা তা এ আয়াতের তাফসীর হিসেবে প্রমাণিত নয়। সুতরাং নিরাপদ পথ হল যে বিষয়টাকে খোদ কুরআন মাজীদ আড়াল রেখে দিয়েছে, তাকে আড়ালেই রেখে দেওয়া। যে উদ্দেশ্যে ঘটনার বরাত দেওয়া হয়েছে, ঘটনার বিশদ জানা ছাড়াও তা হাসিল হয়ে যায়। বোঝানো উদ্দেশ্য এই যে, আল্লাহ তাআলা হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালামকে কোন একটা পরীক্ষা করেছিলেন, যার পর তিনি আল্লাহরই দিকে রুজু হন।


৩৫


قَالَ رَبِّ اغۡفِرۡ لِیۡ وَہَبۡ لِیۡ مُلۡکًا لَّا یَنۡۢبَغِیۡ لِاَحَدٍ مِّنۡۢ بَعۡدِیۡ ۚ اِنَّکَ اَنۡتَ الۡوَہَّابُ


কা-লা রাব্বিগ ফিরলী ওয়া হাবলী মুলকাল লা-ইয়ামবাগী লিআহাদিম মিম বা‘দী ইন্নাকা আনতাল ওয়াহহা-ব।


Mufti Taqi Usmani

He said, “O my Lord, forgive me, and bless me with a kingdom that will not be available to anyone after me. Surely, You are the Bountiful.”


মুফতী তাকী উসমানী

সে বলতে লাগল, হে আমার প্রতিপালক! আমাকে ক্ষমা কর এবং আমাকে এমন রাজত্ব দান কর, যা আমার পর অন্য কারও জন্য বাঞ্ছনীয় হবে না। ২০ নিশ্চয়ই তুমি মহাদাতা।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

সোলায়মান বললঃ হে আমার পালনকর্তা, আমাকে মাফ করুন এবং আমাকে এমন সাম্রাজ্য দান করুন যা আমার পরে আর কেউ পেতে পারবে না। নিশ্চয় আপনি মহাদাতা।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

সে বলল, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে ক্ষমা কর এবং আমাকে দান কর এমন এক রাজ্য যার অধিকারী আমি ছাড়া কেউ না হয়। তুমি তো পরম দাতা।’


মাওলানা জহুরুল হক

তিনি বললেন -- "আমার প্রভু! আমাকে পরিত্রাণ করো আর আমাকে এমন এক সাম্রাজ্য প্রদান করো যা আমার পরে আর করোর জন্যে যোগ্য না হয়। নিঃসন্দেহ তুমি -- তুমিই মহাদাতা।"


তাফসীরঃ

২০. হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম যে রাজত্ব লাভ করেছিলেন, তা বাতাস, জিন্ন জাতি ও পাখীদের উপরও ব্যাপ্ত ছিল। এরূপ রাজত্ব তাঁর পরে কেউ কখনও লাভ করেনি।


৩৬


فَسَخَّرۡنَا لَہُ الرِّیۡحَ تَجۡرِیۡ بِاَمۡرِہٖ رُخَآءً حَیۡثُ اَصَابَ ۙ


ফাছাখখারনা-লাহুররীহা তাজরী বিআমরিহী রুখাআন হাইছুআসা-ব।


Mufti Taqi Usmani

Then We subjugated the wind for him that blew smoothly on his command to wherever he wished,


মুফতী তাকী উসমানী

সুতরাং আমি বাতাসকে তার অধীন করে দিলাম, যা তার আদেশে সে যেথায় চাইত মন্থর গতিতে বয়ে যেত। ২১


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তখন আমি বাতাসকে তার অনুগত করে দিলাম, যা তার হুকুমে অবাধে প্রবাহিত হত যেখানে সে পৌছাতে চাইত।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তখন আমি তার অধীন করে দিলাম বায়ুকে, যা তার আদেশে, সে যেখানে ইচ্ছা করত সেখানে মৃদুমন্দভাবে প্রবাহিত হত,


মাওলানা জহুরুল হক

তারপর আমরা বাতাসকে তাঁর জন্য অনুগত করে দিলাম, তাঁর আদেশে তা স্বচ্ছন্দগতিতে চলত যেখানে তিনি পাঠাতেন,


তাফসীরঃ

২১. এর ব্যাখ্যা সূরা আম্বিয়ায় (২১ : ৮১) চলে গেছে।


৩৭


وَالشَّیٰطِیۡنَ کُلَّ بَنَّآءٍ وَّغَوَّاصٍ ۙ


ওয়াশশায়া-তীনা কুল্লা বান্নাইওঁ ওয়া গাওওয়াছ।


Mufti Taqi Usmani

and (We subjugated to him) the devils (among Jinns), all builders and divers,


মুফতী তাকী উসমানী

এবং দুষ্ট জিনদেরকেও তাঁর আজ্ঞাধীন করে দিয়েছিলাম, যার মধ্যে ছিল সব রকমের নির্মাতা ও ডুবুরি।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আর সকল শয়তানকে তার অধীন করে দিলাম অর্থৎ, যারা ছিল প্রাসাদ নির্মাণকারী ও ডুবুরী।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এবং শয়তানদেরকে, যারা সকলেই ছিল প্রাসাদ নির্মাণকারী ও ডুবুরী,


মাওলানা জহুরুল হক

আর শয়তানদের -- সবক’টি মিস্ত্রী ও ডুবুরী,


৩৮


وَّاٰخَرِیۡنَ مُقَرَّنِیۡنَ فِی الۡاَصۡفَادِ


ওয়া আ-খারীনা মুকাররানীনা ফিল আসফা-দ।


Mufti Taqi Usmani

and many others held in chains.


মুফতী তাকী উসমানী

এবং এমন কিছু জিন্নকেও, যারা শিকলে বাঁধা ছিল। ২২


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এবং অন্য আরও অনেককে অধীন করে দিলাম, যারা আবদ্ধ থাকত শৃঙ্খলে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এবং শৃ´খলে আবদ্ধ আরও অনেককে।


মাওলানা জহুরুল হক

আর অন্যদের শৃঙ্খলাবদ্ধ অবস্থায়।


তাফসীরঃ

২২. এসব জিন হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালামের কী কী কাজ করত তা বিস্তারিতভাবে সূরা সাবায় (৩৪ : ১৩, ১৪) গত হয়েছে। এখানে অতিরিক্ত জানানো হয়েছে যে, তারা সাগরে ডুব দিয়ে তাঁর জন্য মণি-মুক্তা সংগ্রহ করত। কিছু জিন ছিল অতি দুষ্ট। মানুষকে তাদের ক্ষতি থেকে রক্ষা করার জন্য তাদেরকে শিকলে বেঁধে রাখা হয়েছিল।


৩৯


ہٰذَا عَطَآؤُنَا فَامۡنُنۡ اَوۡ اَمۡسِکۡ بِغَیۡرِ حِسَابٍ


হা-যা-‘আতাউনা-ফামনুন আও আমছিক বিগাইরি হিছা-ব।


Mufti Taqi Usmani

This is Our gift. So, do favor (to someone) or withhold (it), with no (requirement to give) account.


মুফতী তাকী উসমানী

(তাকে বলেছিলাম) এসব আমার দান। চাইলে তুমি অনুগ্রহ করে কাউকে (এর থেকে) কিছু দান করতে পার অথবা নিজের কাছে রেখেও দিতে পার, কোন হিসাবের দায় ছাড়া। ২৩


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এগুলো আমার অনুগ্রহ, অতএব, এগুলো কাউকে দাও অথবা নিজে রেখে দাও-এর কোন হিসেব দিতে হবে না।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘এইসব আমার অনুগ্রহ, এটা হতে তুমি অন্যকে দিতে বা নিজে রাখতে পার। এটার জন্যে তোমাকে হিসেব দিতে হবে না।’


মাওলানা জহুরুল হক

এ হচ্ছে আমাদের দান, অতএব তুমি দান কর বা রেখে দাও -- কোনো হিসাবপত্র লাগবে না।


তাফসীরঃ

২৩. হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালামকে এ রাজত্ব দান করা হয়েছিল মালিকানা হিসেবে। তাঁকে এই এখতিয়ার দেওয়া হয়েছিল যে, যা ইচ্ছা তিনি নিজে রাখতে পারেন এবং যা ইচ্ছা অন্যকে দানও করতে পারেন।


৪০


وَاِنَّ لَہٗ عِنۡدَنَا لَزُلۡفٰی وَحُسۡنَ مَاٰبٍ ٪


ওয়া ইন্না লাহূ‘ইনদানা-লাঝুলফা-ওয়াহুছনা মাআ-ব।


Mufti Taqi Usmani

He has a place of nearness in Our presence, and an excellent end.


মুফতী তাকী উসমানী

বস্তুত আমার কাছে তার রয়েছে বিশেষ নৈকট্য ও উত্তম ঠিকানা।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

নিশ্চয় তার জন্যে আমার কাছে রয়েছে মর্যাদা ও শুভ পরিণতি।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এবং আমার নিকট রয়েছে তার জন্যে নৈকট্যের মর্যাদা ও শুভ পরিণাম।


মাওলানা জহুরুল হক

আর নিঃসন্দেহ তাঁর জন্য আমাদের কাছে তো নৈকট্য অবধারিত রয়েছে, আর রয়েছে এক সুন্দর গন্তব্যস্থান।


৪১


وَاذۡکُرۡ عَبۡدَنَاۤ اَیُّوۡبَ ۘ  اِذۡ نَادٰی رَبَّہٗۤ اَنِّیۡ مَسَّنِیَ الشَّیۡطٰنُ بِنُصۡبٍ وَّعَذَابٍ ؕ


ওয়াযকুর ‘আবদানাআইইঊব । ইযনা-দা-রাব্বাহূআন্নী মাছছানিয়াশ শায়তা-নু বিনুসবিওঁ ওয়া ‘আযা-ব।


Mufti Taqi Usmani

And remember Our servant, Ayyūb - when he called his Lord saying, “The ShaiTān (Satan) has inflicted weariness and pain upon me.”


মুফতী তাকী উসমানী

আমার বান্দা আয়্যূবকে স্মরণ কর, যখন সে নিজ প্রতিপালককে ডেকে বলেছিল, শয়তান আমাকে দুঃখ ও কষ্টে জড়িয়েছে। ২৪


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

স্মরণ করুণ, আমার বান্দা আইয়্যুবের কথা, যখন সে তার পালনকর্তাকে আহবান করে বললঃ শয়তান আমাকে যন্ত্রণা ও কষ্ট পৌছিয়েছে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

স্মরণ কর, আমার বান্দা আইউবকে, যখন সে তার প্রতিপালককে আহবান করে বলেছিল, ‘শয়তান তো আমাকে যন্ত্রণা ও কষ্টে ফেলেছে’,


মাওলানা জহুরুল হক

আর আমাদের বান্দা আইয়ূবকে স্মরণ করো। দেখো, তিনি তাঁর প্রভুকে ডেকে বলেছিলেন -- "শয়তান আমাকে পীড়ন করছে ক্লান্তি ও কষ্ট দিয়ে।"


তাফসীরঃ

২৪. সূরা আম্বিয়ায় বলা হয়েছে (২১ : ৮৪) হযরত আয়্যূব আলাইহিস সালাম দীর্ঘকালীন এক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তিনি সবরের সাথে আল্লাহ তাআলার কাছে দুআ করতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা তাকে শেফা দান করেন। ৪২ নং আয়াতে তাঁর শেফা লাভের ঘটনা বর্ণিত হয়েছে যে, আল্লাহ তাআলা তাকে পা দ্বারা মাটিতে আঘাত করতে বললেন। তিনি মাটিতে আঘাত করলেন। অমনি সেখান থেকে একটি প্রস্রবণ উৎসারিত হল। আল্লাহ তাআলা তাকে সেই পানি দ্বারা গোসল করতে ও তা পান করতে হুকুম করলেন। তিনি তাই করলেন। ফলে তিনি আরোগ্য লাভ করলেন।


৪২


اُرۡکُضۡ بِرِجۡلِکَ ۚ ہٰذَا مُغۡتَسَلٌۢ بَارِدٌ وَّشَرَابٌ


উরকুদবিরিজলিকা হা-যা-মুগতাছালুম বা-রিদুওঁ ওয়া শারা-ব।


Mufti Taqi Usmani

(Allah said to him,) “Strike (the ground) with your foot: Here is a cool water to bathe, and a drink!”


মুফতী তাকী উসমানী

(আমি তাকে বললাম) তুমি তোমার পা দ্বারা মাটিতে আঘাত কর। নাও, এই তো গোসলের ঠাণ্ডা পানি, এবং পানীয়।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তুমি তোমার পা দিয়ে ভূমিতে আঘাত কর। ঝরণা নির্গত হল গোসল করার জন্যে শীতল ও পান করার জন্যে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আমি তাকে বললাম, ‘তুমি তোমার পদ দিয়ে ভূমিতে আঘাত কর, এই তো গোসলের সুশীতল পানি আর পানীয়।’


মাওলানা জহুরুল হক

তোমার পা দিয়ে আঘাত করো, এটি এক ঠান্ডা গোসলের জায়গা ও পানীয়।


৪৩


وَوَہَبۡنَا لَہٗۤ اَہۡلَہٗ وَمِثۡلَہُمۡ مَّعَہُمۡ رَحۡمَۃً مِّنَّا وَذِکۡرٰی لِاُولِی الۡاَلۡبَابِ


ওয়া ওয়াহাবনা- লাহূআহলাহূওয়া মিছলাহুম মা‘আহুম রাহমাতাম মিন্না- ওয়াযিকরালিঊলিল আলবা-ব।


Mufti Taqi Usmani

And We let him have his family and the like of them besides, as a mercy from Us, and a reminder for the people of understanding.


মুফতী তাকী উসমানী

এবং (এভাবে) আমি তাকে দান করলাম তার পরিবারবর্গ এবং তাদের সাথে অনুরূপ আরও ২৫ তার প্রতি আমার রহমত এবং বোধসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য উপদেশস্বরূপ।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি তাকে দিলাম তার পরিজনবর্গ ও তাদের মত আরও অনেক আমার পক্ষ থেকে রহমতস্বরূপ এবং বুদ্ধিমানদের জন্যে উপদেশস্বরূপ।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আমি তাকে দান করলাম তার পরিজনবর্গ ও তাদের মত আরও, আমার অনুগ্রহস্বরূপ এবং বোধশক্তিসম্পন্ন লোকদের জন্যে উপদেশস্বরূপ।


মাওলানা জহুরুল হক

আর আমরা তাঁকে দিয়েছিলাম তাঁর পরিজনবর্গ আর তাদের সঙ্গে তাদের মতো অন্যদের, -- আমাদের তরফ থেকে অনুগ্রহস্বরূপ এবং বোধশক্তির অধিকারীদের জন্য উপদেশ-স্বরূপ!


তাফসীরঃ

২৫. রোগাক্রান্ত অবস্থায় তাঁর বিশ্বস্ত স্ত্রী ছাড়া সকলেই তাঁকে ত্যাগ করেছিল। কিন্তু সুস্থ হয়ে যাওয়ার পর তারা সকলে তো ফিরে এসেছিলই, সেই সঙ্গে আল্লাহ তাআলা তাঁকে আরও বহু নাতি-নাতনী দান করেছিলেন। আর এভাবে তার খান্দানের লোক সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে গেল।


৪৪


وَخُذۡ بِیَدِکَ ضِغۡثًا فَاضۡرِبۡ بِّہٖ وَلَا تَحۡنَثۡ ؕ اِنَّا وَجَدۡنٰہُ صَابِرًا ؕ نِعۡمَ الۡعَبۡدُ ؕ اِنَّہٗۤ اَوَّابٌ


ওয়া খুযবিয়াদিকা দিগছান ফাদরিব্বিহী ওয়ালা-তাহনাছ ইন্না-ওয়াজাদনা-হু সাবিরান নি‘মাল ‘আবদু ইন্নাহূআওওয়া-ব।


Mufti Taqi Usmani

And (We said to him,) “Take (a bundle of) thin twigs in your hand, and strike with it, and do not violate your oath. Surely, We found him very enduring. He was really an excellent servant. Surely, he was great in turning (to Us, in penitence and praise).


মুফতী তাকী উসমানী

(আমি তাকে আরও বললাম) তোমার হাতে এক মুঠো তৃণ নাও এবং তা দ্বারা আঘাত কর আর শপথ ভঙ্গ করো না। ২৬ বস্তুত আমি তাকে পেয়েছি একজন সবরকারী। সে ছিল অতি উত্তম বান্দা। প্রকৃতপক্ষে সে ছিল অত্যন্ত আল্লাহ-অভিমুখী।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তুমি তোমার হাতে এক মুঠো তৃণশলা নাও, তদ্বারা আঘাত কর এবং শপথ ভঙ্গ করো না। আমি তাকে পেলাম সবরকারী। চমৎকার বান্দা সে। নিশ্চয় সে ছিল প্রত্যাবর্তনশীল।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আমি তাকে আদেশ করলাম, ‘একমুষ্টি তৃণ লও ও তা দিয়ে আঘাত কর এবং শপথ ভঙ্গ কর না।’ আমি তো তাকে পেলাম ধৈর্যশীল। কত উত্তম বান্দা সে! সে ছিল আমার অভিমুখী।


মাওলানা জহুরুল হক

আর "তোমার হাতে একটি ডাল নাও এবং তা দিয়ে আঘাত করো, আর তুমি সংকল্প ত্যাগ করো না।" নিঃসন্দেহ আমরা তাঁকে পেয়েছিলাম অধ্যবসায়ী। কত উত্তম বান্দা! তিনি নিশ্চয়ই বারবার ফিরতেন।


তাফসীরঃ

২৬. একবার শয়তান হযরত আয়্যূব আলাইহিস সালামের স্ত্রীকে এভাবে প্ররোচনা দিল যে, সে এক চিকিৎসকের বেশে তার কাছে আসল। স্বামীর রুগ্নাবস্থার কারণে তিনি খুবই পেরেশান ছিলেন। কাজেই শয়তানকে সত্যিকারের চিকিৎসক মনে করে বললেন, আমার স্বামীর চিকিৎসা করুন। আসলে তো সে ছিল শয়তান। কাজেই এখানেও সে শয়তানী চাল চালল। বলল, চিকিৎসা করতে রাজি আছি। তবে শর্ত হল, আরোগ্য লাভের পর তোমাকে বলতে হবে, এই চিকিৎসকই তাকে ভালো করে দিয়েছে। তিনি যেহেতু স্বামীর অসুস্থতার কারণে পেরেশান ছিলেন, তাই তার কথা মানার প্রতি তার মনে ঝোঁক সৃষ্টি হচ্ছিল। তিনি বিষয়টা হযরত আয়্যূব আলাইহিস সালামকে জানালে তিনি খুবই মর্মাহত হলেন। তাঁর মনে আক্ষেপ জাগল যে, শয়তান তার স্ত্রীর কাছেও পৌঁছে গেল এবং এমনকি স্ত্রীর মনে তার কথা মানার প্রতি ঝোঁকও সৃষ্টি হয়ে যাচ্ছে! এই বেদনাহত অবস্থায় তিনি কসম খেয়ে ফেললেন, আরোগ্য লাভের পর আমি স্ত্রীকে একশত বেত্রাঘাত করব। কিন্তু যখন তিনি আরোগ্য লাভ করলেন, তখন এ কসমের জন্য তাঁর খুব অনুশোচনা হল। তিনি চিন্তা করতে লাগলেন, এ রকম অসাধারণ বিশ্বস্ত স্ত্রীকে তিনি কিভাবে শাস্তি দেবেন? আর যদি শাস্তি না দেন তবে তো কসম ভেঙ্গে যাবে! তাঁর এ রকম কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থায় আল্লাহ তাআলা মেহেরবানী করলেন। ওহীর মাধ্যমে তাকে হুকুম দেওয়া হল, তিনি যেন একশ তৃণের একটি মুঠো নিয়ে তা দ্বারা স্ত্রীকে মাত্র একবার আঘাত করেন। এ পন্থায় তার কসমও রক্ষা করা হবে আবার স্ত্রীও তাতে বিশেষ কষ্ট পাবে না।


৪৫


وَاذۡکُرۡ عِبٰدَنَاۤ اِبۡرٰہِیۡمَ وَاِسۡحٰقَ وَیَعۡقُوۡبَ اُولِی الۡاَیۡدِیۡ وَالۡاَبۡصَارِ


ওয়াযকুর ‘ইবা-দানাইবরা-হীমা ওয়া ইছহা-কাওয়াইয়া‘কূ বা ঊলিল আইদী ওয়াল আবসা-র।


Mufti Taqi Usmani

And remember Our servants - Ibrāhīm and IsHāq and Ya‘qūb - the men of strength and the men of vision.


মুফতী তাকী উসমানী

আমার বান্দা ইবরাহীম, ইসহাক ও ইয়াকুবের কথা স্মরণ কর, যারা (সৎকর্মশীল) হাত ও (দৃষ্টিশক্তি সম্পন্ন) চোখের অধিকারী ছিল।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

স্মরণ করুন, হাত ও চোখের অধিকারী আমার বান্দা ইব্রাহীম, ইসহাক ও ইয়াকুবের কথা।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

স্মরণ কর, আমার বান্দা ইব্রাহীম, ইস্হাক ও ইয়া‘ক‚বের কথা, এরা ছিল শক্তিশালী ও সূক্ষ্মদর্শী।


মাওলানা জহুরুল হক

আর স্মরণ করো আমাদের দাস ইব্রাহীম ও ইসহাক ও ইয়াকুবকে, তাঁরা ছিলেন ক্ষমতার ও অন্তদৃষ্টির অধিকারী।


৪৬


اِنَّاۤ اَخۡلَصۡنٰہُمۡ بِخَالِصَۃٍ ذِکۡرَی الدَّارِ ۚ


ইন্নাআখলাসনা-হুম বিখা-লিসাতিন যিকরাদ্দা-র।


Mufti Taqi Usmani

We chose them for a trait of remembering the (eternal) Home (in the Hereafter).


মুফতী তাকী উসমানী

আমি একটি বিশেষ গুণের জন্য তাদেরকে বেছে নিয়েছিলাম। তা ছিল (আখেরাতের) প্রকৃত নিবাসের স্মরণ।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমি তাদের এক বিশেষ গুণ তথা পরকালের স্মরণ দ্বারা স্বাতন্ত্র্য দান করেছিলাম।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আমি তাদেরকে অধিকারী করেছিলাম এক বিশেষ গুণের, তা ছিল পরলোকের স্মরণ।


মাওলানা জহুরুল হক

নিঃসন্দেহ আমরা তাঁদের বানিয়েছিলাম এক অকৃত্রিম গুণে নিষ্ঠাবান -- বাসস্থানের স্মরণ।


৪৭


وَاِنَّہُمۡ عِنۡدَنَا لَمِنَ الۡمُصۡطَفَیۡنَ الۡاَخۡیَارِ ؕ


ওয়া ইন্নাহুম ‘ইনদানা-লামিনাল মুছতাফাইনাল আখইয়া-র।


Mufti Taqi Usmani

And surely they are, in Our sight, among the chosen, the best of the righteous.


মুফতী তাকী উসমানী

প্রকৃতপক্ষে তারা ছিল আমার কাছে মনোনীত, উত্তম লোকদের অন্তর্ভুক্ত।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আর তারা আমার কাছে মনোনীত ও সৎলোকদের অন্তর্ভুক্ত।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

অবশ্যই তারা ছিল আমার মনোনীত উত্তম বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত।


মাওলানা জহুরুল হক

আর তাঁরা নিশ্চয়ই আমাদের কাছে ছিলেন মনোনীত ও সজ্জনদের অন্তর্ভুক্ত।


৪৮


وَاذۡکُرۡ اِسۡمٰعِیۡلَ وَالۡیَسَعَ وَذَا الۡکِفۡلِ ؕ  وَکُلٌّ مِّنَ الۡاَخۡیَارِ ؕ


ওয়াযকুর ইছমা-‘ঈলা ওয়াল ইয়াছা‘আ ওয়াযাল কিফলি ওয়া কুল্লুম মিনাল আখইয়া-র।


Mufti Taqi Usmani

And remember Ismā‘īl and Al-Yasa‘ and Dhul-Kifl. Each one of them was among the best of the righteous.


মুফতী তাকী উসমানী

এবং স্মরণ কর ইসমাঈল, আল- ইয়াসা ও যুল-কিফলকে। ২৭ তারা সকলে ছিল উত্তম ব্যক্তিবর্গের অন্তর্ভুক্ত।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

স্মরণ করুণ, ইসমাঈল, আল ইয়াসা ও যুলকিফলের কথা। তারা প্রত্যেকেই গুনীজন।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

স্মরণ কর, ইসমাঈল, আল-ইয়াসা‘আ ও যুল-কিফ্লের কথা, এরা প্রত্যেকেই ছিল সজ্জন।


মাওলানা জহুরুল হক

আর স্মরণ কর ইসমাইল ও ইয়াসাআ ও যুল-কিফলকে, কারণ তাঁরা সবাই ছিলেন সজ্জনদের অন্যতম।


তাফসীরঃ

২৭. আল-ইয়াসা আলাইহিস সালাম একজন নবী। কুরআন মাজীদে মাত্র দু’ জায়গায় তার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এক তো এই স্থানে এবং আরেক সূরা আনআমে (৬ : ৮৬)। উভয় স্থানে তার শুধু নামই বলা হয়েছে। বিস্তারিত কোন তথ্য দেওয়া হয়নি। ঐতিহাসিক বর্ণনাসমূহ দ্বারা জানা যায় তিনি ছিলেন বনী ইসরাঈলের একজন নবী এবং হযরত ইলিয়াস আলাইহিস সালামের চাচাত ভাই। বাইবেলের ‘রাজাবলী’ পুস্তকের ১৯ নং পরিচ্ছেদে তাঁর ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। এমনিভাবে হযরত যুলকিফল আলাইহিস সালামের নামও কেবল দু’ জায়গায়ই পাওয়া যায়। এখানে এবং সূরা আম্বিয়ায় (২১ : ৮৫)। কোন কোন মুফাসসির তাঁকে হযরত আল-ইয়াসা আলাইহিস সালামের খলীফা বলেছেন। কারও মতে তিনি নবী নন, বরং একজন ওলী ছিলেন।


৪৯


ہٰذَا ذِکۡرٌ ؕ  وَاِنَّ لِلۡمُتَّقِیۡنَ لَحُسۡنَ مَاٰبٍ ۙ


হা-যা-যিকরুওঁ ওয়া ইন্না লিলমুত্তাকীনা লাহুছনা মাআ-ব।


Mufti Taqi Usmani

This is a reminder (of what has passed). And surely the God-fearing will have the best place to return:


মুফতী তাকী উসমানী

এসব হল উপদেশ-বাণী। নিশ্চয়ই যারা তাকওয়া অবলম্বন করে, তাদের জন্য রয়েছে উৎকৃষ্ট ঠিকানা


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এ এক মহৎ আলোচনা। খোদাভীরুদের জন্যে রয়েছে উত্তম ঠিকানা-


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এটা এক স্মরণীয় বর্ণনা। নিশ্চয়ই মুত্তাকীদের জন্যে রয়েছে উত্তম আবাস-


মাওলানা জহুরুল হক

এ এক স্মারকগ্রন্থ, আর নিশ্চয়ই ধর্মভীরুদের জন্য তো রয়েছে উত্তম গন্তব্যস্থল, --


৫০


جَنّٰتِ عَدۡنٍ مُّفَتَّحَۃً لَّہُمُ الۡاَبۡوَابُ ۚ


জান্না-তি ‘আদনিম মুফাত্তাহাল লাহুমুল আবওয়া-ব।


Mufti Taqi Usmani

- everlasting gardens, with (their) doors opened for them.


মুফতী তাকী উসমানী

অর্থাৎ স্থায়ী বসবাসের জান্নাত, যার দরজাসমূহ তাদের জন্য সম্পূর্ণরূপে উন্মুক্ত থাকবে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তথা স্থায়ী বসবাসের জান্নাত; তাদের জন্যে তার দ্বার উম্মুক্ত রয়েছে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

চিরস্থায়ী জান্নাত, যার দ্বার তাদের জন্যে উন্মুক্ত।


মাওলানা জহুরুল হক

নন্দন কানন, তাদের জন্য খোলা রয়েছে দরজাগুলো।


৫১


مُتَّکِـِٕیۡنَ فِیۡہَا یَدۡعُوۡنَ فِیۡہَا بِفَاکِہَۃٍ کَثِیۡرَۃٍ وَّشَرَابٍ


মুত্তাকিঈনা ফীহা-ইয়াদ‘ঊনা ফীহা-বিফা-কিহাতিন কাছীরাতিওঁ ওয়া শারা-ব।


Mufti Taqi Usmani

They will be relaxing in it, calling there for plenteous fruits and drinks;


মুফতী তাকী উসমানী

সেখানে তারা হেলান দিয়ে বসে বহু ফলমূল ও পানীয়ের ফরমায়েশ করবে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

সেখানে তারা হেলান দিয়ে বসবে। তারা সেখানে চাইবে অনেক ফল-মূল ও পানীয়।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

সেখানে তারা আসীন হবে হেলান দিয়ে, সেখানে তারা বহুবিধ ফলমূল ও পানীয় চাইবে।


মাওলানা জহুরুল হক

সেখানে তারা হেলান দিয়ে সমাসীন হবে, আহ্বান করবে সেখানে প্রচুর ফলমূল ও পানীয় দ্রব্যের জন্য।


৫২


وَعِنۡدَہُمۡ قٰصِرٰتُ الطَّرۡفِ اَتۡرَابٌ


ওয়া ‘ইনদাহুম কা-সিরা-তুত্তারফি আতরা-ব।


Mufti Taqi Usmani

and in their company there will be females restricting their glances (to their husbands, and) of matching ages.


মুফতী তাকী উসমানী

আর তাদের কাছে থাকবে এমন সমবয়স্কা নারী, যাদের দৃষ্টি (আপন-আপন স্বামীতে) নিবদ্ধ থাকবে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তাদের কাছে থাকবে আনতনয়না সমবয়স্কা রমণীগণ।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এবং তাদের পার্শ্বে থাকবে আনতনয়না সমবয়স্কাগণ।


মাওলানা জহুরুল হক

তার তাদের কাছে থাকবে সলাজ-নম্র আয়তলোচন, সমবয়স্ক।


৫৩


ہٰذَا مَا تُوۡعَدُوۡنَ لِیَوۡمِ الۡحِسَابِ ؓ


হা-যা-মা-তূ‘আদূনা লিইয়াওমিল হিছা-ব।


Mufti Taqi Usmani

This is what you are being promised for the Day of Reckoning.


মুফতী তাকী উসমানী

এটাই তাই (অর্থাৎ নি‘আমতপূর্ণ জীবন), হিসাব দিবসের জন্য তোমাদেরকে যার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তোমাদেরকে এরই প্রতিশ্রুতি দেয়া হচ্ছে বিচার দিবসের জন্যে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এটা হিসেব দিবসের জন্যে তোমাদেরকে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি।


মাওলানা জহুরুল হক

"এটিই সেই যা তোমাদের ওয়াদা করা হয়েছিল হিসেব-নিকেশের দিনের জন্য।

(ads2)

(getButton) #text=(আল কোরআন বাংলা অনুবাদ সহ এক সাথে ) #icon=(link) #color=(#f50707)

৫৪


اِنَّ ہٰذَا لَرِزۡقُنَا مَا لَہٗ مِنۡ نَّفَادٍ ۚۖ


ইন্না হা-যা-লারিঝকূনা-মা লাহূমিন নাফা-দ।


Mufti Taqi Usmani

Surely, that is provision provided by Us, to which there is no end.


মুফতী তাকী উসমানী

নিশ্চয়ই এটা আমার এমন দান, যা কখনও নিঃশেষ হবে না।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এটা আমার দেয়া রিযিক যা শেষ হবে না।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এটা তো আমার দেওয়া রিযিক যা নিঃশেষ হবে না,


মাওলানা জহুরুল হক

এইই আলবৎ আমাদের দেওয়া রিযেক, এর কোনো নিঃশেষ নেই।


৫৫


ہٰذَا ؕ  وَاِنَّ لِلطّٰغِیۡنَ لَشَرَّ مَاٰبٍ ۙ


হা-যা- ওয়া ইন্না লিত্তা-গীনা লাশাররা মাআ-ব।


Mufti Taqi Usmani

Having said this, the transgressors will surely have the most evil place to return:


মুফতী তাকী উসমানী

একদিকে তো এই। (অন্যদিকে) যারা অবাধ্য নিশ্চয়ই তাদের জন্য আছে নিকৃষ্ট ঠিকানা।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এটাতো শুনলে, এখন দুষ্টদের জন্যে রয়েছে নিকৃষ্ট ঠিকানা


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এটাই। আর সীমালংঘনকারীদের জন্যে রয়েছে নিকৃষ্টতম পরিণাম-


মাওলানা জহুরুল হক

এটিই! আর নিঃসন্দেহ সীমালংঘনকারীদের জন্য তো রয়েছে নিকৃষ্ট গন্তব্যস্থল, --


৫৬


جَہَنَّمَ ۚ یَصۡلَوۡنَہَا ۚ فَبِئۡسَ الۡمِہَادُ


জাহান্নামা ইয়াসলাওনাহা- ফাবি’ছাল মিহা-দ।


Mufti Taqi Usmani

the Jahannam , in which they will enter. So, how evil is that place to rest?


মুফতী তাকী উসমানী

অর্থাৎ জাহান্নাম, যাতে তারা প্রবেশ করবে। অতঃপর তা হবে তাদের নিকৃষ্ট বিছানা।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তথা জাহান্নাম। তারা সেখানে প্রবেশ করবে। অতএব, কত নিকৃষ্ট সেই আবাস স্থল।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

জাহান্নাম, সেখানে এরা প্রবেশ করবে, কত নিকৃষ্ট ঠিকানা!


মাওলানা জহুরুল হক

জাহান্নাম, তারা তাতে প্রবেশ করবে, সুতরাং কত মন্দ সেই বিশ্রামস্থান!


৫৭


ہٰذَا ۙ  فَلۡیَذُوۡقُوۡہُ حَمِیۡمٌ وَّغَسَّاقٌ ۙ


হা-যা- ফাল ইয়াযূকূহু হামীমুওঁগাছছা-ক।


Mufti Taqi Usmani

Let them taste this: hot water and pus,


মুফতী তাকী উসমানী

এই হচ্ছে গরম পানি ও পুঁজ! সুতরাং তারা এর স্বাদ গ্রহণ করুক।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এটা উত্তপ্ত পানি ও পঁূজ; অতএব তারা একে আস্বাদন করুক।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এটা সীমালংঘনকারীদের জন্যে। সুতরাং এরা আস্বাদন করুক ফুটন্ত পানি ও পুঁজ।


মাওলানা জহুরুল হক

এই-ই! অতএব তারা এটি আস্বাদন করুক -- ফুটন্ত-গরম ও হিমশীতল, --


৫৮


وَّاٰخَرُ مِنۡ شَکۡلِہٖۤ اَزۡوَاجٌ ؕ


ওয়া আ-খারু মিন শাকলিহী আঝওয়া-জ।


Mufti Taqi Usmani

and other things similar to it of various kinds.


মুফতী তাকী উসমানী

আরও আছে অনুরূপ বিভিন্ন রকমের শাস্তির ব্যবস্থা।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এ ধরনের আরও কিছু শাস্তি আছে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আরও আছে এইরূপ বিভিন্ন ধরনের শাস্তি।


মাওলানা জহুরুল হক

আর অন্যান্য রয়েছে এই ধরনের -- জোড়ায়-জোড়ায়।


৫৯


ہٰذَا فَوۡجٌ مُّقۡتَحِمٌ مَّعَکُمۡ ۚ لَا مَرۡحَبًۢا بِہِمۡ ؕ اِنَّہُمۡ صَالُوا النَّارِ


হা-যা-ফাওজুম মুকতাহিমুম মা‘আকুম লা-মারহাবাম বিহিম ইন্নাহুম সা-লুন্নার।


Mufti Taqi Usmani

(When the leaders of the infidels will see their followers entering the Hell after them, they will say to each other,) “This is a multitude rushing into (the Hell) with you - they are not welcome - they are to burn in the Fire.”


মুফতী তাকী উসমানী

(যখন তারা তাদের অনুগামীদেরকে আসতে দেখবে, তখন তারা একে অপরকে বলবে,) এই আরেকটি দল, যারা তোমাদের সঙ্গে প্রবেশ করেছে। তাদের জন্য অভিনন্দন নেই। এরা সকলেই আগুনে জ্বলবে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এই তো একদল তোমাদের সাথে প্রবেশ করছে। তাদের জন্যে অভিনন্দন নেই তারা তো জাহান্নামে প্রবেশ করবে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘এই তো এক বাহিনী, তোমাদের সঙ্গে প্রবেশ করতেছে।’ ‘এদের জন্যে নেই অভিনন্দন, এরা তো জাহান্নামে জ্বলিবে।’


মাওলানা জহুরুল হক

এই এক বাহিনী -- তোমাদের সঙ্গে দিগ্বিদিগ্‌জ্ঞানশূন্য হয়ে ছুটছে, তাদের জন্য কোনো অভিনন্দন নেই? তারা নিশ্চয়ই আগুনে পুড়বে।


৬০


قَالُوۡا بَلۡ اَنۡتُمۡ ۟ لَا مَرۡحَبًۢا بِکُمۡ ؕ اَنۡتُمۡ قَدَّمۡتُمُوۡہُ لَنَا ۚ فَبِئۡسَ الۡقَرَارُ


কা-লূবাল আনতুম লা-মার হাবম বিকুম আনতুম কাদ্দামতুমূহু লানা- ফাবি’ছাল কারা-র।


Mufti Taqi Usmani

They (the followers) will say (to their leaders) “No, it is you who are not welcome; you are the ones who brought this upon us.” So, how evil is the place to stay (for ever)!”


মুফতী তাকী উসমানী

তারা (আগমনকারীরা) বলবে, না, বরং অভিনন্দন নেই তোমাদের জন্য। তোমরাই তো আমাদের সম্মুখে এ মুসিবত নিয়ে এসেছ। কত নিকৃষ্ট থাকার জায়গা এটি।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তারা বলবে, তোমাদের জন্যে ও তো অভিনন্দন নেই। তোমরাই আমাদেরকে এ বিপদের সম্মুখীন করেছ। অতএব, এটি কতই না ঘৃণ্য আবাসস্থল।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

অনুসারীরা বলবে, ‘বরং তোমরাও, তোমাদের জন্যেও অভিনন্দন নেই। তোমরাই তো পূর্বে তা আমাদের জন্যে ব্যবস্থা করেছ। কত নিকৃষ্ট এই আবাসস্থল!’


মাওলানা জহুরুল হক

তারা বলবে -- "বরং তোমরা, তোমাদের জন্যও তো কোনো অভিনন্দন নেই! তোমরাই স্বয়ং আমাদের জন্য এটি আগবাড়িয়েছ, সুতরাং কত নিকৃষ্ট এ আবাসস্থল!"


৬১


قَالُوۡا رَبَّنَا مَنۡ قَدَّمَ لَنَا ہٰذَا فَزِدۡہُ عَذَابًا ضِعۡفًا فِی النَّارِ


কা-লূরাব্বানা-মান কাদ্দামা লানা-হা-যা-ফাঝিদহু ‘আযা-বান দি‘ফান ফিন্না-র।


Mufti Taqi Usmani

They (the followers) will say, “Our Lord, whoever has brought this on us, do increase his punishment twofold in the Fire.”


মুফতী তাকী উসমানী

(তারপর তারা আল্লাহ তাআলাকে বলবে,) হে আমাদের প্রতিপালক! যে ব্যক্তিই আমাদের সামনে এ মুসিবত এনেছে তাকে জাহান্নামে দ্বিগুণ শাস্তি দিন।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তারা বলবে, হে আমাদের পালনকর্তা, যে আমাদেরকে এর সম্মুখীন করেছে, আপনি জাহান্নামে তার শাস্তি দ্বিগুণ করে দিন।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরা বলবে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! যে এটা আমাদের সম্মুখীন করেছে, জাহান্নামে তার শাস্তি তুমি দ্বিগুণ বর্ধিত কর।’


মাওলানা জহুরুল হক

তারা বলবে -- "আমাদের প্রভু! যে-ই আমাদের জন্য এটি আগবাড়িয়েছে, তাকে তবে শাস্তি বাড়িয়ে দাও -- আগুনের মধ্যে দ্বিগুণ।"


৬২


وَقَالُوۡا مَا لَنَا لَا نَرٰی رِجَالًا کُنَّا نَعُدُّہُمۡ مِّنَ الۡاَشۡرَارِ ؕ


ওয়া কা-লূমা-লানা-লা-নারা-রিজা-লান কুন্না-না‘উদ্দুহুম মিনাল আশরা-র।


Mufti Taqi Usmani

And they (the infidels) will say, “What is the matter with us that we do not see those men (here in Hell) whom we used to count amongst the worst? (i.e the Muslims whom the infidels used to treat as the worst people among them)


মুফতী তাকী উসমানী

এবং তারা (একে অপরকে) বলবে, কী ব্যাপার! আমরা যাদেরকে মন্দ লোকদের মধ্যে গণ্য করতাম, সেই লোকগুলোকে যে (জাহান্নামে) দেখতে পাচ্ছি না? ২৮


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তারা আরও বলবে, আমাদের কি হল যে, আমরা যাদেরকে মন্দ লোক বলে গণ্য করতাম, তাদেরকে এখানে দেখছি না।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এরা আরও বলবে, ‘আমাদের কী হল যে, আমরা যে সকল লোককে মন্দ বলে গণ্য করতাম তাদেরকে দেখতে পেতেছি না!


মাওলানা জহুরুল হক

আর তারা বলবে -- "আমাদের কি হলো, আমরা সেই লোকদের দেখছি না যাদের আমরা দুষ্টদের অন্তর্ভুক্ত বলে গণনা করতাম?


তাফসীরঃ

২৮. এর দ্বারা মুমিনদেরকে বোঝানো হয়েছে। কাফেরগণ দুনিয়ায় তাদেরকে নিকৃষ্ট মনে করত এবং তাদেরকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করত। তারা তাদেরকে জাহান্নামে না দেখে এসব কথা বলবে।


৬৩


اَتَّخَذۡنٰہُمۡ سِخۡرِیًّا اَمۡ زَاغَتۡ عَنۡہُمُ الۡاَبۡصَارُ


আত্তাখাযনা-হুম ছিখরিইয়ান আম ঝা-গাত ‘আনহুম আবসা-র।


Mufti Taqi Usmani

Had we taken them as a laughing-stock (unjustly), or have our eyes missed them?”


মুফতী তাকী উসমানী

আমরা কি তবে তাদেরকে (অন্যায়ভাবে) ঠাট্টা-বিদ্রূপের পাত্র বানিয়েছিলাম, নাকি তাদেরকে দেখার ব্যাপারে আমাদের চোখের বিচ্যুতি ঘটেছে?


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমরা কি অহেতুক তাদেরকে ঠাট্টার পাত্র করে নিয়েছিলাম, না আমাদের দৃষ্টি ভুল করছে?


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘তবে কি আমরা এদেরকে অহেতুক ঠাট্টা-বিদ্রুপের পাত্র মনে করতাম, না এদের ব্যাপারে আমাদের দৃষ্টিবিভ্রম ঘটেছে ?’


মাওলানা জহুরুল হক

আমরা কি তাদের হাসিতামাশার পাত্র ভাবতাম, না কি দৃষ্টি তাদের থেকে অপারগ হয়ে গেছে?


৬৪


اِنَّ ذٰلِکَ لَحَقٌّ تَخَاصُمُ اَہۡلِ النَّارِ ٪


ইন্না যা-লিকা লাহাক্কুন তাখা-সুমুআহলিন্না-র।


Mufti Taqi Usmani

That is going to happen definitely, that is, the mutual quarrel of the people of the Fire.


মুফতী তাকী উসমানী

জাহান্নামবাসীদের এই বাক-বিতণ্ডা। এটা নির্ঘাত সত্য।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এটা অর্থাৎ জাহান্নামীদের পারস্পরিক বাক-বিতন্ডা অবশ্যম্ভাবী।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এটা নিশ্চিত সত্য-জাহান্নামীদের এই বাদ-প্রতিবাদ।


মাওলানা জহুরুল হক

এটিই তো আলবৎ সত্য, আগুনের বাসিন্দাদের বাদপ্রতিবাদ।


৬৫


قُلۡ اِنَّمَاۤ اَنَا مُنۡذِرٌ ٭ۖ  وَّمَا مِنۡ اِلٰہٍ اِلَّا اللّٰہُ الۡوَاحِدُ الۡقَہَّارُ ۚ


কুল ইন্নামাআনা-মুনযিরুওঁ ওয়া মা-মিন ইলা-হিন ইল্লাল্লা-হুল ওয়া-হিদুল কাহহার।


Mufti Taqi Usmani

Say, “I am only a warner, and there is no god but Allah, the One, the All-Dominant,


মুফতী তাকী উসমানী

(হে রাসূল!) বলে দাও, আমি তো একজন সতর্ককারী মাত্র। আল্লাহ ছাড়া কেউ ইবাদতের উপযুক্ত নয়, যিনি এক, সকলের উপর প্রবল।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

বলুন, আমি তো একজন সতর্ককারী মাত্র এবং এক পরাক্রমশালী আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

বল, ‘আমি তো একজন সতর্ককারী মাত্র এবং কোন ইলাহ্ নেই আল্লাহ্ ব্যতীত, যিনি এক, যিনি প্রবল প্রতাপশালী,


মাওলানা জহুরুল হক

তুমি বলো -- "আমি তো একজন সতর্ককারী মাত্র, আর আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কোনো উপাস্য নেই -- একক, সর্বজয়ী, --


৬৬


رَبُّ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضِ وَمَا بَیۡنَہُمَا الۡعَزِیۡزُ الۡغَفَّارُ


রাব্বুছছামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদিওয়ামা-বাইনাহুমাল ‘আঝীঝুল গাফফা-র।


Mufti Taqi Usmani

the Lord of the heavens and the earth and what is between them, the Mighty, the Very-Forgiving.”


মুফতী তাকী উসমানী

যিনি আকাশমণ্ডলী, পৃথিবী এবং এ দুয়ের মধ্যবর্তী সবকিছুর মালিক, যার ক্ষমতা সবকিছু জুড়ে ব্যাপ্ত, যিনি অতি ক্ষমাশীল।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তিনি আসমান-যমীন ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সব কিছুর পালনকর্তা, পরাক্রমশালী, মার্জনাকারী।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘যিনি আকাশমণ্ডলী, পৃথিবী ও এদের মধ্যবর্তী সমস্ত কিছুর প্রতিপালক, যিনি পরাক্রমশালী, মহাক্ষমাশীল।’


মাওলানা জহুরুল হক

মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর এবং এ দুইয়ের মধ্যে যা-কিছু আছে তার প্রভু -- মহাশক্তিশালী, পরিত্রাণকারী।


৬৭


قُلۡ ہُوَ نَبَؤٌا عَظِیۡمٌ ۙ


কুল হুওয়া নাবাউন ‘আজীম।


Mufti Taqi Usmani

Say, “It is a great news


মুফতী তাকী উসমানী

বলে দাও, এটা এক মহা (সত্যের) সংবাদ।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

বলুন, এটি এক মহাসংবাদ,

(ads1)

(getButton) #text=(আল কোরআন বাংলা অনুবাদ সহ এক সাথে ) #icon=(link) #color=(#f50707)

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

বল, ‘এটা এক মহাসংবাদ,


মাওলানা জহুরুল হক

বলো -- "এ এক বিরাট সংবাদ, --


৬৮


اَنۡتُمۡ عَنۡہُ مُعۡرِضُوۡنَ


আনতুম ‘আনহু মু‘রিদূন।


Mufti Taqi Usmani

to which you are averse.


মুফতী তাকী উসমানী

যা থেকে তোমরা মুখ ফিরিয়ে রেখেছ। ২৯


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যা থেকে তোমরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছ।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘যা হতে তোমরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছ।


মাওলানা জহুরুল হক

"এ থেকে তোমরা বিমুখ হচ্ছ।


তাফসীরঃ

২৯. নবীদের ঘটনাবলী ও কিয়ামতের অবস্থাদি বর্ণনার পর মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলা হচ্ছে, কাফেরদেরকে বলুন, তোমরা এসব ঘটনার মধ্যে চিন্তা করলে এর ভেতর আমার নবুওয়াতের প্রমাণ পাবে। কেননা আমার কাছে এসব বিষয়ে জ্ঞান লাভের আর কোন মাধ্যম নেই। আমি যা কিছু বলছি নিঃসন্দেহে তা ওহীর মাধ্যমেই জানতে পেরেছি। কিন্তু তোমরা তো ওহী দ্বারা প্রাপ্ত এ উপদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখছ।


৬৯


مَا کَانَ لِیَ مِنۡ عِلۡمٍۭ بِالۡمَلَاِ الۡاَعۡلٰۤی اِذۡ یَخۡتَصِمُوۡنَ


মা-কা-না লিয়া মিন ‘ইলমিম বিল মালাইল আ‘লা ইযইয়াখতাসিমূন।


Mufti Taqi Usmani

I had no knowledge of the Heavenly Beings when they were debating (about the creation of ’Ādam).


মুফতী তাকী উসমানী

ঊর্ধ্বজগতে তারা (অর্থাৎ ফেরেশতাগণ) যখন সওয়াল-জওয়াব করছিল, সে সম্পর্কে আমার কোন জ্ঞান ছিল না, ৩০


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

ঊর্ধ্ব জগৎ সম্পর্কে আমার কোন জ্ঞান ছিল না যখন ফেরেশতারা কথাবার্তা বলছিল।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘ঊর্ধ্বলোকে তাদের বাদানুবাদ সম্পর্কে আমার কোন জ্ঞান ছিল না।


মাওলানা জহুরুল হক

"ঊর্ধ্বলোকের প্রধানদের সন্বন্ধে আমার কোন জ্ঞান নেই যখন তারা বাদানুবাদ করে।


তাফসীরঃ

৩০. এর দ্বারা ইশারা ফেরেশতাদের সেই কথাবার্তার প্রতি, যা হযরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টির সময় তারা বলেছিলেন। তা বিস্তারিত সূরা বাকারায় (২ : ৩১) বর্ণিত হয়েছে। সামনেও কিছুটা আসবে।


৭০


اِنۡ یُّوۡحٰۤی اِلَیَّ اِلَّاۤ اَنَّمَاۤ اَنَا نَذِیۡرٌ مُّبِیۡنٌ


ইয়ঁইঊহাইলাইয়া ইল্লাআন্নামাআনা নাযীরুম মুবীন।


Mufti Taqi Usmani

Revelation is sent to me only because I am a plain warner.


মুফতী তাকী উসমানী

আমার কাছে ওহী আসে কেবল এজন্য যে, আমি একজন সুস্পষ্ট সতর্ককারী।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আমার কাছে এ ওহীই আসে যে, আমি একজন স্পষ্ট সতর্ককারী।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘আমার নিকট তো এই ওহী এসেছে যে, আমি একজন স্পষ্ট সতর্ককারী।’


মাওলানা জহুরুল হক

আমার কাছে প্রত্যাদিষ্ট হয়েছে এটি বৈ তো নয় যে, আমি তো একজন স্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র।


৭১


اِذۡ قَالَ رَبُّکَ لِلۡمَلٰٓئِکَۃِ اِنِّیۡ خَالِقٌۢ بَشَرًا مِّنۡ طِیۡنٍ


ইযকা-লা রাব্বুকা লিল মালাইকাতি ইন্নী খা-লিকুম বাশারাম মিন তীন।


Mufti Taqi Usmani

When your Lord said to the angels, “I am going to create man from clay.


মুফতী তাকী উসমানী

স্মরণ কর, যখন তোমার প্রতিপালক ফেরেশতাদেরকে বললেন, আমি কাদা দ্বারা এক মানুষ সৃষ্টি করতে চাই।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যখন আপনার পালনকর্তা ফেরেশতাগণকে বললেন, আমি মাটির মানুষ সৃষ্টি করব।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

স্মরণ কর, তোমার প্রতিপালক ফেরেশতাদেরকে বলেছিলেন, ‘আমি মানুষ সৃষ্টি করছি কর্দম হতে,


মাওলানা জহুরুল হক

স্মরণ করো! তোমার প্রভু ফিরিশ্‌তাদের বললেন -- "আমি নিশ্চয়ই কাদা থেকে মানুষ সৃষ্টি করতে যাচ্ছি।


৭২


فَاِذَا سَوَّیۡتُہٗ وَنَفَخۡتُ فِیۡہِ مِنۡ رُّوۡحِیۡ فَقَعُوۡا لَہٗ سٰجِدِیۡنَ


ফাইযা-ছাওওয়াইতুহূওয়া নাফাখতুফীহি মিররূহী ফাকা‘ঊ লাহূছা-জিদীন।


Mufti Taqi Usmani

So, once I make him perfectly and breath My spirit into him, you must fall down in prostration before him.”


মুফতী তাকী উসমানী

আমি যখন তাকে সম্পূর্ণরূপে তৈরি করে ফেলব এবং তার ভেতর আমার রূহ ফুঁকে দেব, তখন তোমরা তার সামনে সিজদায় পড়ে যেও।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

যখন আমি তাকে সুষম করব এবং তাতে আমার রূহ ফুঁকে দেব, তখন তোমরা তার সম্মুখে সেজদায় নত হয়ে যেয়ো।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘যখন আমি একে সুষম করব এবং এতে আমার রূহ্ সঞ্চার করব, তখন তোমরা এর প্রতি সিজ্দাবনত হয়ো।’


মাওলানা জহুরুল হক

তারপর আমি যখন তাকে সুঠাম করব এবং আমার রূহ্ থেকে তাতে দম দেব তখন তার প্রতি সিজদাবনত হয়ে লুটিয়ে পড়ো।


৭৩


فَسَجَدَ الۡمَلٰٓئِکَۃُ کُلُّہُمۡ اَجۡمَعُوۡنَ ۙ


ফাছাজাদাল মালাইকাতুকুল্লুহুম আজমা‘ঊন।


Mufti Taqi Usmani

Then, the angels prostrated themselves, all of them together -


মুফতী তাকী উসমানী

অতঃপর সমস্ত ফেরেশতাই তো সিজদা করল


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

অতঃপর সমস্ত ফেরেশতাই একযোগে সেজদায় নত হল,


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তখন ফেরেশতারা সকলেই সিজ্দাবনত হল-


মাওলানা জহুরুল হক

তখন ফিরিশ্‌তারা সিজদা করল, তাদের সবাই একই সঙ্গে, --


৭৪


اِلَّاۤ اِبۡلِیۡسَ ؕ اِسۡتَکۡبَرَ وَکَانَ مِنَ الۡکٰفِرِیۡنَ


ইল্লাইবলীছ ইছতাকবারা ওয়া কা-না মিনাল কা-ফিরীন।


Mufti Taqi Usmani

except Iblīs (Satan). He waxed proud, and became one of the disbelievers.


মুফতী তাকী উসমানী

কিন্তু ইবলীস করল না। সে অহংকার করল এবং কাফেরদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

কিন্তু ইবলীস; সে অহংকার করল এবং অস্বীকারকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

কেবল ইবলীস ব্যতীত, সে অহংকার করল এবং কাফিরদের অন্তর্ভুক্ত হল।


মাওলানা জহুরুল হক

ইবলিস ব্যতীত। সে অহংকার করল, আর সে ছিল অবিশ্বাসীদের অন্তর্গত।


৭৫


قَالَ یٰۤاِبۡلِیۡسُ مَا مَنَعَکَ اَنۡ تَسۡجُدَ لِمَا خَلَقۡتُ بِیَدَیَّ ؕ اَسۡتَکۡبَرۡتَ اَمۡ کُنۡتَ مِنَ الۡعَالِیۡنَ


কা-লা ইয়াইবলীছুমা-মানা‘আকা আন তাছজু দা লিমা-খালাকতুবিয়াদাইইয়া আছতাকবারতা আম কুনতা মিনাল ‘আ-লীন।


Mufti Taqi Usmani

He (Allah) said, “O Iblīs, what did prevent you from prostrating yourself before what I created with My hands? Did you wax proud or were you among the lofty ones?”


মুফতী তাকী উসমানী

আল্লাহ বললেন, হে ইবলিস! আমি যাকে নিজ হাতে সৃষ্টি করেছি, তাকে সিজদা করতে কোন জিনিস তোমাকে বাধা দিল? তুমি কি অহংকার করলে, নাকি তুমি উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন কিছু?


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আল্লাহ বললেন, হে ইবলীস, আমি স্বহস্তে যাকে সৃষ্টি করেছি, তার সম্মুখে সেজদা করতে তোমাকে কিসে বাধা দিল? তুমি অহংকার করলে, না তুমি তার চেয়ে উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন?


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তিনি বললেন, ‘হে ইবলীস! আমি যাকে নিজ হাতে সৃষ্টি করেছি, তার প্রতি সিজদাবনত হতে তোমাকে কিসে বাধা দিল ? তুমি কি ঔদ্ধত্য প্রকাশ করলে, না তুমি উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন ?’


মাওলানা জহুরুল হক

তিনি বললেন -- "হে ইবলিস, কী তোমাকে নিষেধ করলে তাকে সিজদা করতে, যাকে আমি আমার দুই হাতে সৃষ্টি করেছি? তুমি কি গর্ববোধ করলে, না কি তুমি উচ্চমর্যাদাসম্পন্নদের একজন হয়ে গেছ?


৭৬


قَالَ اَنَا خَیۡرٌ مِّنۡہُ ؕ خَلَقۡتَنِیۡ مِنۡ نَّارٍ وَّخَلَقۡتَہٗ مِنۡ طِیۡنٍ


কা-লা আনা খাইরুম মিনহু খালাকতানী মিন না-রিওঁ ওয়া খালাকতাহূমিন তীন।


Mufti Taqi Usmani

He said, “I am better than him. You created me from fire, and created him from clay.”


মুফতী তাকী উসমানী

সে বলল, আমি তার (অর্থাৎ আদম) চেয়ে শ্রেষ্ঠ। আপনি আমাকে আগুন দ্বারা সৃষ্টি করেছেন আর তাকে সৃষ্টি করেছেন কাদা দ্বারা।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

সে বললঃ আমি তার চেয়ে উত্তম আপনি আমাকে আগুনের দ্বারা সৃষ্টি করেছেন, আর তাকে সৃষ্টি করেছেন মাটির দ্বারা।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

সে বলল, ‘আমি তা হতে শ্রেষ্ঠ। আপনি আমাকে আগুন হতে সৃষ্টি করেছেন এবং একে সৃষ্টি করেছেন কর্দম হতে।’


মাওলানা জহুরুল হক

সে বললে -- "আমি তার চেয়েও শ্রেষ্ঠ। আমাকে তুমি আগুন থেকে সৃষ্টি করেছ, আর তাকে সৃষ্টি করেছ কাদা থেকে।”


৭৭


قَالَ فَاخۡرُجۡ مِنۡہَا فَاِنَّکَ رَجِیۡمٌ ۚۖ


কা-লা ফাখরুজ মিনহা-ফাইন্নাকা রাজীম।


Mufti Taqi Usmani

He said, “Then, get out from here, for you are accursed,


মুফতী তাকী উসমানী

আল্লাহ বললেন, তুই এখান থেকে বের হয়ে যা। কেননা তুই বিতাড়িত।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আল্লাহ বললেনঃ বের হয়ে যা, এখান থেকে। কারণ, তুই অভিশপ্ত।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তিনি বললেন, ‘তুমি এখান হতে বের হয়ে যাও, নিশ্চয়ই তুমি বিতাড়িত।


মাওলানা জহুরুল হক

তিনি বললেন -- "তবে এখান থেকে তুমি বেরিয়ে যাও, কেননা তুমি অবশ্যই বিতাড়িত,


৭৮


وَّاِنَّ عَلَیۡکَ لَعۡنَتِیۡۤ اِلٰی یَوۡمِ الدِّیۡنِ


ওয়া ইন্না ‘আলাইকা লা‘নাতী ইলা- ইয়াওমিদ্দীন।


Mufti Taqi Usmani

and on you shall remain My curse till the Day of Judgment.”


মুফতী তাকী উসমানী

নিশ্চিতভাবে কিয়ামত দিবস পর্যন্ত তোর প্রতি থাকল আমার লানত।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তোর প্রতি আমার এ অভিশাপ বিচার দিবস পর্যন্ত স্থায়ী হবে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘এবং তোমার ওপর আমার লা‘নত স্থায়ী হবে, কর্মফল দিবস পর্যন্ত।’


মাওলানা জহুরুল হক

আর নিঃসন্দেহ তোমার উপরে তো আমার অসন্তষ্টি রইবে মহাবিচারের দিন পর্যন্ত।


৭৯


قَالَ رَبِّ فَاَنۡظِرۡنِیۡۤ اِلٰی یَوۡمِ یُبۡعَثُوۡنَ


কা-লা রাব্বি ফাআনজিরনীইলা-ইয়াওমি ইউব‘আছূন।


Mufti Taqi Usmani

He said, “O my Lord, then give me respite till the day they are raised again.”


মুফতী তাকী উসমানী

সে বলল, হে আমার প্রতিপালক! তাহলে আপনি আমাকে সেই দিন পর্যন্ত অবকাশ দিন, যে দিন মানুষকে পুনর্জীবিত করা হবে।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

সে বললঃ হে আমার পালনকর্তা, আপনি আমাকে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত অবকাশ দিন।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

সে বলল, ‘হে আমার প্রতিপালক! আপনি আমাকে অবকাশ দিন উত্থান দিবস পর্যন্ত।’


মাওলানা জহুরুল হক

সে বললে -- "আমার প্রভু! তবে আমাকে অবকাশ দাও তাদের পুনরুত্থান করানোর দিন পর্যন্ত।"


৮০


قَالَ فَاِنَّکَ مِنَ الۡمُنۡظَرِیۡنَ ۙ


কা-লা ফাইন্নাকা মিনাল মুনজারীন।


Mufti Taqi Usmani

He said, “Then, you have been given respite,


মুফতী তাকী উসমানী

আল্লাহ বললেন, তথাস্তু, তোকে অবকাশ প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত করে দেওয়া হল।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আল্লঅহ বললেনঃ তোকে অবকাশ দেয়া হল।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তিনি বললেন, ‘তুমি অবকাশপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হলে-


মাওলানা জহুরুল হক

তিনি বললেন -- "তুমি তাহলে নিশ্চয়ই অবকাশপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত --


৮১


اِلٰی یَوۡمِ الۡوَقۡتِ الۡمَعۡلُوۡمِ


ইলা-ইয়াওমিল ওয়াকতিল মা‘লূম।


Mufti Taqi Usmani

until the Day of the Appointed Time.”


মুফতী তাকী উসমানী

(কিন্তু) নির্দিষ্ট একটা সময় পর্যন্ত। ৩১


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

সে সময়ের দিন পর্যন্ত যা জানা।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘অবধারিত সময় উপস্থিত হওয়ার দিন পর্যন্ত।’


মাওলানা জহুরুল হক

সেই জানিয়ে দেওয়া সময়টির দিন পর্যন্ত।


তাফসীরঃ

৩১. এ ঘটনার পূর্ণ বিবরণ সূরা বাকারায় গত হয়েছে (দেখুন ২ : ৩১-৩৬)। শয়তান যে অবকাশ চেয়েছিল সেটা ছিল হাশর দিবস পর্যন্ত, কিন্তু আল্লাহ তাআলা তাকে সে প্রতিশ্রুতি দেননি; বরং বলে দিয়েছেন ‘তোকে একটা নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত অবকাশ দেওয়া যাচ্ছে’। নির্দিষ্ট সে সময় হল শিঙ্গার প্রথম ফুঁৎকার পর্যন্ত। সে ফুঁৎকারে যখন সমস্ত সৃষ্টি মারা যাবে, তখন শয়তানেরও মৃত্যু ঘটবে, যেমন সূরা হিজর (১৫ : ৩৮)-এ বলা হয়েছে।


৮২


قَالَ فَبِعِزَّتِکَ لَاُغۡوِیَنَّہُمۡ اَجۡمَعِیۡنَ ۙ


কা-লা ফাবি ‘ইঝঝাতিকা লাউগবিয়ান্নাহুম আজমা‘ঈন।


Mufti Taqi Usmani

He said, “Then, I swear by Your Might, that I will definitely lead them astray, all of them -


মুফতী তাকী উসমানী

সে বলল, তবে আপনার ক্ষমতার শপথ! আমি তাদের সকলকে বিপথগামী করে ছাড়ব।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

সে বলল, আপনার ইযযতের কসম, আমি অবশ্যই তাদের সবাইকে বিপথগামী করে দেব।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

সে বলল, ‘আপনার ক্ষমতার শপথ! আমি এদের সকলকেই পথভ্রষ্ট করব,


মাওলানা জহুরুল হক

সে বললে -- "তবে তোমার মহিমা দ্বারা, আমি আলবৎ তাদের সবক’জনকে বিপথে নিয়ে যাব,


৮৩


اِلَّا عِبَادَکَ مِنۡہُمُ الۡمُخۡلَصِیۡنَ


ইল্লা-‘ইবা-দাকা মিনহুমুল মুখলাসীন।


Mufti Taqi Usmani

except Your chosen servants among them.”


মুফতী তাকী উসমানী

তবে তাদের মধ্যকার আপনার মনোনীত বান্দাদের ছাড়া।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তবে তাদের মধ্যে যারা আপনার খাঁটি বান্দা, তাদেরকে ছাড়া।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘তবে এদের মধ্যে আপনার একনিষ্ঠ বান্দাদেরকে নয়।’


মাওলানা জহুরুল হক

কেবলমাত্র তাদের মধ্যের তোমার খাঁটি বান্দাদের ব্যতীত।


৮৪


قَالَ فَالۡحَقُّ ۫  وَالۡحَقَّ اَقُوۡلُ ۚ


কা-লা ফালহাক্কু ওয়াল হাক্কা আকূল।


Mufti Taqi Usmani

He (Allah) said, “Then, the truth is-and it is (always) the truth that I speak-


মুফতী তাকী উসমানী

আল্লাহ বললেন, তবে সত্য কথা হল আর আমি তো সত্যই বলে থাকি


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

আল্লাহ বললেনঃ তাই ঠিক, আর আমি সত্য বলছি-


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

তিনি বললেন, ‘তবে এটাই সত্য, আর আমি সত্যই বলি-


মাওলানা জহুরুল হক

তিনি বললেন -- "তবে এটাই সত্য, আর সত্যই আমি বলছি,


৮৫


لَاَمۡلَـَٔنَّ جَہَنَّمَ مِنۡکَ وَمِمَّنۡ تَبِعَکَ مِنۡہُمۡ اَجۡمَعِیۡنَ


লাআমলাআন্না জাহান্নামা মিনকা ওয়া মিম্মান তাবি‘আকা মিনহুম আজমা‘ঈন।


Mufti Taqi Usmani

that I will definitely fill the Jahannam with you and with those who will follow you from among them, all together.”


মুফতী তাকী উসমানী

আমি তোকে দ্বারা আর তাদের মধ্যে যারা তোর অনুগামী হবে তাদের সকলের দ্বারা জাহান্নাম ভরে ফেলব।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তোর দ্বারা আর তাদের মধ্যে যারা তোর অনুসরণ করবে তাদের দ্বারা আমি জাহান্নাম পূর্ণ করব।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

‘তোমার দিয়ে ও তোমার অনুসারীদের দিয়ে আমি জাহান্নাম পূর্ণ করবই।’


মাওলানা জহুরুল হক

আমি অবশ্যই জাহান্নামকে পূর্ণ করব তোমাকে দিয়ে ও তাদের মধ্যের যারা তোমাকে অনুসরণ করে তাদের সব ক’জনকে দিয়ে।


৮৬


قُلۡ مَاۤ اَسۡـَٔلُکُمۡ عَلَیۡہِ مِنۡ اَجۡرٍ وَّمَاۤ اَنَا مِنَ الۡمُتَکَلِّفِیۡنَ


কুল মাআছআলুকুম ‘আলাইহি মিন আজরিওঁ ওয়ামাআনা মিনাল মুতাকালিলফীন।


Mufti Taqi Usmani

Say (O Prophet to the unbelievers,) “I do not demand from you any fee for it, nor am I from among those who make up things artificially.


মুফতী তাকী উসমানী

(হে রাসূল! মানুষকে) বল, আমি এর (ইসলামের দাওয়াতের) কারণে তোমাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চাই না এবং আমি ভনিতাকারীদের অন্তর্ভুক্ত নই।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

বলুন, আমি তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চাই না আর আমি লৌকিকতাকারীও নই।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

বল, ‘আমি এটার জন্যে তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চাই না এবং যারা মিথ্যা দাবি করে আমি তাদের অন্তর্ভুক্ত নই।’


মাওলানা জহুরুল হক

তুমি বল -- "আমি তোমাদের কাছ থেকে এর জন্য কোনো পারিশ্রমিক চাইছি না, আর আমি প্রবঞ্চকদেরও মধ্যেকার নই।


৮৭


اِنۡ ہُوَ اِلَّا ذِکۡرٌ لِّلۡعٰلَمِیۡنَ


ইন হুওয়া ইল্লা-যিকরুলিলল ‘আ-লামীন।


Mufti Taqi Usmani

It is nothing but an advice for all the worlds.


মুফতী তাকী উসমানী

এটা তো জগদ্বাসীদের জন্য এক উপদেশ মাত্র।


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

এটা তো বিশ্ববাসীর জন্যে এক উপদেশ মাত্র।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এটা তো বিশ্বজগতের জন্যে উপদেশ মাত্র।


মাওলানা জহুরুল হক

"এটি জগদ্বাসীদের জন্য স্মরণীয় বার্তা বৈ তো নয়।


৮৮


وَلَتَعۡلَمُنَّ نَبَاَہٗ بَعۡدَ حِیۡنٍ ٪


ওয়ালা তা‘লামুন্না নাবাআহূবা‘দা হীন।


Mufti Taqi Usmani

And you will come to know its reality after a while.”


মুফতী তাকী উসমানী

এবং কিছুকাল পরেই তোমরা এর সংবাদ জানতে পারবে। ৩২


মাওলানা মুহিউদ্দিন খান

তোমরা কিছু কাল পরে এর সংবাদ অবশ্যই জানতে পারবে।


ইসলামিক ফাউন্ডেশন

এটার সংবাদ তোমরা অবশ্যই জানিবে, কিয়ৎকাল পরে।


মাওলানা জহুরুল হক

আর তোমরা অবশ্যই এর বৃত্তান্ত সন্বন্ধে কিছুকাল পরেই জানতে পারবে।


তাফসীরঃ

৩২. অর্থাৎ হে মানুষ! মৃত্যুর পর তোমরা চাক্ষুস দেখে জানতে পারবে নবী-রাসূলের মাধ্যমে তোমাদেরকে যে সংবাদ ও উপদেশ দেওয়া হয়েছিল তা কতটা সত্য। এটা একটা ধমকি ও সতর্কবাণী। -অনুবাদক

Post a Comment

0 Comments